Saturday, March 8, 2014

‘জোর যার মুল্লুক তার’- নীতিতে বিশ্বাসী ভূমিদস্যুদের দখলে কপোতাক্ষ

দিব্যি সকলের চোখের সামনে একটি নদীর চর ভরাটী জায়গা স্থানীয় ভূমিদস্যুরা গিলে ফেলেছে। প্রায় তিন-চার কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর এতটুকু পরিমাণ অবশিষ্ট ফাঁকা জায়গা নেই। শুধু তাই’ই না, দখল পাল্টা-দখলের পর এবার শুরু হয়েছে দখলকৃত নদীর চর প্লট-প্লট আকারে বিক্রির প্রতিযোগিতা। অভিযোগ উঠেছে, নদীর চরভরাটী জায়গা বিক্রি করে ভূমিদস্যুরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কাটাখালীর কপোতাক্ষ নদের চর ভরাটী জায়গা যেন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে, যে যেভাবে পেরেছে নদীর বুকে বাঁধ দিয়ে দখল করে নিয়েছে। মরিচ্চাপের মুখ থেকে শিববাটী ইঁদুরকাটা মুখ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩-৪ কিলোমিটার নদীর চর ভরাটী জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে মৎস্য ঘের, বসত বাড়ি, দোকানপাটসহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এখন আর নদীর চিহ্ন পর্যন্ত নেই বললেও ভুল হবে না। নদীটির সম্পূর্ণ চর দখল হয়ে গেলে শুরু হয় পাল্টা দখল। অর্থাৎ একজনের (অবৈধ) দখলকৃত জমির উপর আরেকজন বাঁধ দিয়ে পাল্টা দখলের পাঁয়তারাও করে। যা নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে একাধিকবার। এমনই দখল পাল্টা-দখল ও সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন তহশিলদার ৩২ জন ভূমিদস্যুর নামে থানায় মামলা দায়েরও করেছেন। তবুও থেমে থাকেনি অবৈধ দখল প্রক্রিয়া।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণনগর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির দখলে থাকা প্রায় ১২ বিঘা জমির মধ্যে হতে সম্প্রতি ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তির নিকট প্রতি বিঘা জমি ৭০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ১০/১২ বছর আগে থেকে উক্ত কাটাখালী নদীর দু’ধারে পলি জমে ভরাট হতে থাকে। পাশাপাশি শুরু হয় ভূমি দস্যুদের অপতৎপরতা। ‘জোর যার মুল্লুক তার’- এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে যে যতটুকু পেরেছে বাঁধ দিয়ে নদীর চর দখল করে নিয়েছে। দখলের মহোৎসবে নদীটিতে বর্তমান এতটুকু জায়গা ফাঁকা নেই। যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না।