Saturday, November 26, 2016

আদৌ কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে?

প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা


প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছরেও বাস্তবায়ন হলো না সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপত আব্দুস ছাত্তারের ঘোষণার সুন্দরবন জেলা। একে একে পার হতে যাচ্ছে প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছর। আজও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা। অবহেলিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুন্দরবন জেলা দাবী নিষ্ফল ক্রোন্দনে পরিণত হতে চলেছে। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা এ ব্যাপারে জনগণকে বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিলেও পরে বেমালুম ভুলে যান। এবারও তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে না। সর্বমহলের একটাই প্রশ্ন আদৌও কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে? না কি সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোট ব্যাংক মজবুত করা কৌশল মাত্র।

খুলনা জেলা শহর থেকে ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সুন্দরবন কোল ঘেসে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা অবস্থিত। ১৯৮২ সালে কয়রা থানার জায়গীর মহলে এক বিশাল জনসভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি আব্দুস ছাত্তার জনগণের দাবিরমুখে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি থানা ও পার্শ্ববর্তী থানার কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা দেন। যা আজও প্রস্তাবিত হয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ থানা এবং আশাশুনি ও তালা থানার কয়েকটি ইউনিয়ন। ততকালিন সময় দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ব সাধারণ জেলা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদী হয়েছিল। দীর্ঘ ৩৪ বছর যাবত সকলই আশাহত হয়ে আছে। তবে প্রতিটা জাতীয় নির্বাচনের সময় বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বা জোটের প্রার্থীদের সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন করা হবে এমন প্রতিশ্রুতির অন্ত থাকে না।

অপার সম্ভবনাময় সুন্দরবন কোল ঘেষা এ অঞ্চল। উপজেলাবাসীর সুন্দরবন জেলার দাবী কেনো সঠিক এ ব্যপারে যৌতিকতা দেখিয়ে সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটির ও অন্যান্য সামাজিক কমিটি আন্দোলন করে যাচ্ছে। যার মধ্য পাইকগাছা কয়রায় পৃথক আদালত রয়েছে, ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের বিশাল অংশ এ এলাকায় অবস্থিত, হিমায়িত চিংড়িজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব উপার্জন করছে সরকার, পাইকগাছা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোনা পানি কেন্দ্র বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, লোনা সহিষ্ণু বীজ উৎপাদন খামার এবং “ক” শ্রেণীর
পাইকগাছা পৌরসভা ও দাকোপ পৌরসভা।

এখানে আরও রয়েছে দেশের ১৮টি বৃহত্তম পাইকারী বাজারের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি। কয়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের সুযোগ। নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ১৫/২০ লক্ষ মানুষের বসবাস। যোগাযোগ ব্যবস্তার মধ্যে নৌপথ, সড়ক পথ অন্যতম।

জেলার দাবীতে ৮০’র দশক থেকে সর্ব দক্ষিণে গঠিত হয় সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটি ও সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন ছাত্র সংগ্রাম কমিটি। সুন্দরবনজেলা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। উন্নয়নের পথ প্রদশক ও আধুনিক দেশ গঠনে অগ্রদ্রুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মেয়াদে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা করবেন এমনটি প্রত্যাশা সুধিজনের।