Wednesday, July 8, 2015

পাইকগাছায় আ’লীগের সাবেক চেয়ারম্যান কর্তৃক বর্তমান চেয়ারম্যানকে জুতা পেটা

৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ; ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন


পাইকগাছায় আ’লীগের বর্তমান ও সাবেক দু’ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে জুতা পেটা, বাড়িতে হামলা ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষের কেউ অভিযোগ না করলেও থানায় জিডি হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পূর্ব ঘটনার জের ও দু’নেতার নেতৃত্ব কর্তৃত্বের বিরোধকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন বাজারস্থ আ’লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব নিয়ে নব্য আ’লীগ নেতা গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চু ও একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গীর মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে। 

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৩ জুন আ’লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এর আগের দিন সন্ধ্যায় গদাইপুর ইউনিয়ন আ’লীগের এক প্রস্তুতি মূলক সভা আহবান করা হয়। সভায় কর্মসূচীতে কে কি পরিমাণ লোক সমাগম ঘটাতে পারবে এমন প্রশ্ন দু’নেতা একে অপরকে ছুড়ে দেয়। এমন প্রশ্ন একাধিকবার করার পর কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চু উত্তেজিত হয়ে আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গীকে জুতা মারতে উদ্যত হয়। 

এরই জের ধরে ঘটনার দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে ইফতারী শেষে উঠে আসার সময় সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চুকে জুতা পেটা করে। এর কিছুক্ষণ পর মলঙ্গী বাড়ী চলে গেলে বাচ্চুর দুই পুত্র ও সমর্থকরা মলঙ্গীর বাড়ীর সামনে গিয়ে জড়ো হয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে মলঙ্গী ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। 

ঘটনার পর উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ঐ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় ঐ রাতেই থানায় জিডি হয়েছে। 

এ ব্যাপারে ওসি আশরাফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় দু’পক্ষের কেউ এখনও পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। তবে এ ঘটনায় আর কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে এ জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে। 

বিষয়টি এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

পাইকগাছা-কয়রায় বিদ্যুৎ যায় না, মাঝেমধ্যে আসে

হেথায় পল্লী বিদ্যুৎ আশীর্বাদ নয়, অভিশাপ


পাইকগাছায় বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মধ্যে আসে ! এমনই এক অবস্থায় নাজেহাল হয়ে পড়েছেন খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনস্থ পাইকগাছা জোনাল অফিসের আওতাধীন (পাইকগাছা-কয়রা) প্রায় ২৫ হাজার গ্রাহক।

স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ পাইকগাছা-কয়রাবাসীর সাথে তামাশা শুরু করেছে। এমনিতেই প্রচন্ড দাবদাহে প্রাণীকূল অতিষ্ঠ তার ওপর বিদ্যুতের খেয়ালীপনার শিকার হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। যখন খুশি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে আর যখন ইচ্ছা তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হচ্ছে। প্রতিদিন ভোরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে এবং টানা ৬/৭ ঘন্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে। দুপুরের পর বিদ্যুতের দেখা মিলছে।

গত ১৭ মে থেকে জায়কা প্রকল্পের ‘সোর্স লাইনের’ উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে আর আগামী কতদিন চলবে তা পাইকগাছা জোনাল অফিসের ডিজিএম বদরুল আনাম নিজেও সঠিক করে বলতে পারছেন না।

এদিকে বিদ্যুতের অভাবে পাইকগাছার ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন ধ্বস নেমেছে, তেমনি প্রচন্ড দাবদাহে মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। আর শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া তো সিঁকেই উঠেছে। দিনের অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হলেও অন্য সময় যেমন বিকেল, সন্ধ্যা বা রাতেও লোডশেডিংয়ের হাত থেকে রেহায় পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে ঘন ঘন ট্রিপের কারণে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, বরাবরই বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে বৈষম্যের শিকার পাইকগাছা-কয়রাবাসি।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, দিনভর বিদ্যুৎ না থাকায় সরাসরি বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল এমন ব্যবসা-বাণিজ্য এক প্রকার বন্ধ হবার উপক্রম। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে লোডশেডিংয়ের কারণে। ফলে অভিভাবকমহল দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে।

সারা বছর প্রায়ই ঘোষণা দিয়ে ‘মেইন লাইন” রক্ষণাবেক্ষণের অযুহাতে দিনভর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। তার পরও আকাশে মেঘ জমতে দেখলেই পাইকগাছায় বিদ্যুৎ চলে যায়। আর সামান্য ঝড়ো হাওয়া হলে তো কথাই নেই। দু’এক দিনের মধ্যে আর বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায় না।

#প্রশ্ন হলো, সামান্য ঝড়ে যদি বিদ্যুতের খুটি বা তার ছিড়ে যাবে, তাহলে বিদ্যুতের সোর্স লাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অযুহাতে প্রায়ই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখার মানে কি? এ প্রশ্নের হিসাব মিলছে না কারোরই। সবমিলিয়ে পাইকগাছা-কয়রায় পল্লী বিদ্যুৎ আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপ হয়ে দেখা দিয়েছে।

--এম,আর মন্টু, পাইকগাছা।