চার মাস যাবৎ পাইকগাছায় প্রতিদিন ৮/১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকছে
পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ও তারের উন্নয়ন কাজের অজুহাতে পাইকগাছা উপজেলায়
বিগত চার মাস যাবৎ প্রতিদিন ৮/১০ ঘন্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
প্রতিদিন ভোর থেকে টানা বেলা ২/৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকায়
নাজেহাল হয়ে পড়েছেন খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিনস্থ পাইকগাছা জোনাল
অফিসের আওতাধীন (পাইকগাছা-কয়রা) প্রায় ২৫ হাজার গ্রাহক।
এদিকে
বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হোক বা না হোক প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল গুনতে হচ্ছে
গ্রাহকদের। শুধু তাই না বিদ্যুতের ব্যবহার কম হলেও প্রতি মাসেই বিদ্যুৎ বিল
বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকার কারণে ব্যবহার কম হয়, অথচ প্রতি মাসে
কিভাবে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাচ্ছে সেব্যাপারে কোন সদুত্তর নেই সংশ্লিষ্ট কারো
কাছে। অভিযোগ রয়েছে, যাদের প্রতি মাসে মিটার রিডিং দেখে বিল প্রস্তুত করার কথা তারা নিয়মিত মিটার রিডিং না দেখে অনুমানের উপর বিল প্রস্তুত করছে।
স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ পাইকগাছা-কয়রাবাসির সাথে নেহায়েত
খামখেয়ালী করছে। এমনিতেই প্রচন্ড দাবদাহে প্রাণীকূল অতিষ্ঠ তার ওপর
বিদ্যুতের খেয়ালীপনার শিকার হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধ্বস নেমেছে। যখন খুশি
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে, আর যখন ইচ্ছা তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা
হচ্ছে। প্রতিদিন ভোরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হচ্ছে এবং টানা ৮/১০ ঘন্টা
বন্ধ রাখা হচ্ছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেলে বিদ্যুতের দেখা মিলছে।
গত ১৭
মে থেকে জায়কা প্রকল্পের ‘সোর্স লাইনের’ উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু
হওয়ার পর থেকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এভাবে আর আগামী কতদিন
চলবে তা সঠিক করে বলতে পারছেন না বিদ্যুৎ বিভাগের কেউই।
এদিকে
বিদ্যুতের অভাবে পাইকগাছার ব্যবসা-বাণিজ্যে যেমন ধস নেমেছে, তেমনি প্রচন্ড
দাবদাহে মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। আর শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া তো সিঁকেই
উঠেছে। দিনের অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হলেও অন্য সময়
যেমন বিকেল, সন্ধ্যা বা রাতেও লোডশেডিংয়ের হাত থেকে রেহায় পাওয়া যাচ্ছেনা।
বিশেষ করে ঘন ঘন ট্রিপের কারণে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হয়ে
যাচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুতের স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, বরাবরই বিদ্যুৎ
প্রাপ্তিতে বৈষম্যের শিকার পাইকগাছা-কয়রাবাসী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন,
দিনভর বিদ্যুত না থাকায় সরাসরি বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল এমন ব্যবসা-বাণিজ্য
এক প্রকার বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মারাত্মক বিঘ্ন
ঘটছে লোডশেডিংয়ের কারণে। ফলে অভিভাবকমহল দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ছেলে
মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে।
সারা বছর প্রায়ই ঘোষণা দিয়ে ‘মেইন লাইন”
রক্ষণাবেক্ষণের অজুহাতে দিনভর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। তারপরও
আকাশে মেঘ জমতে দেখলেই পাইকগাছায় বিদ্যুৎ চলে যায়। আর সামান্য ঝড়ো হাওয়া
হলে তো কথাই নেই। দু’এক দিনের মধ্যে আর বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায়না।
--এম,আর মন্টু, পাইকগাছা।