Thursday, November 30, 2017

পাইকগাছা উপকূল সাহিত্য পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাইকগাছা উপকূল সাহিত্য পরিষদের এক প্রস্তুতি সভা বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনে সংগঠণের আহবায়ক সরদার মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপকূল সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে বিশেষ স্মরণিকা প্রকাশ এবং ৩০ ডিসেম্বর মাইকেল মধুসুধন দত্তের কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে সাহিত্য সফরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপকূল সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স. ম. বাবর আলী। উপস্থিত ছিলেন, শাহিনা বাবর, অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, প্রাক্তন অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক অপু মন্ডল, এ্যাডঃ শফিকুল ইসলাম কচি, মোজাফফার হাসান, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, হিরন্ময় রায়, প্রাণকৃষ্ণ দাশ, পঞ্চানন সরকার, কবি মুনছুর হাসান, প্রভা রঞ্জন বিশ্বাস ধীরাজ ও শংকর মন্ডল।

পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের বিজয় দিবসের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবসের এক প্রস্তুতি সভা বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আগামী ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স. ম. বাবর আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আব্দুল আউয়াল, ওসি (তদন্ত) এস,এম, শাহাদাৎ হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরণ সাধু।


উপস্থিত ছিলেন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুজন কুমার সরকার, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস, কৃষি অফিসার এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন, প্রকৌশলী আবু সাঈদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসান, সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দত্ত, বন কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়, একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী জয়া রাণী রায়, আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মারুফ হোসেন, প্রাক্তন অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার, প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার সরকার, অধ্যাপক জি,এম,এম, আজহারুল ইসলাম, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, রেবা আক্তার কুসুম, বজলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সরদার মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, সাংবাদিক মোঃ আব্দুল আজিজ, প্রকাশ ঘোষ বিধান, এন. ইসলাম সাগর, পৌর ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাওঃ সামছুদ্দীন, আজহারুল ইসলাম লাভলু'সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পাইকগাছায় ঢিলেঢালা হরতাল পালিত

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাম দলের ডাকা অর্ধদিবস হরতালে পাইকগাছায় উল্লেখযোগ্য সাড়া মেলেনি। সকাল থেকে অধিকাংশ দোকান-পাট খোলা ছিল। অফিস আদালতে চলেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। যানবাহন চলাচলও ছিল স্বাভাবিক।


এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় সিপিবি মিছিল সহকারে পাইকগাছা পৌর সদরে পথসভা করে ব্যবসায়ীদের হরতাল পালনের আহবান জানায়।

এদিকে সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে কোন পিকেটিং বা মিছিল লক্ষ্য করা যায়নি তবে থানা পুলিশের বড় একটি অংশ পৌর সদরের গুরুত্বপুর্ণ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছিল।

Wednesday, November 29, 2017

আটকের মাসখানেক পর পাইকগাছা বিএনপি'র তিন নেতার জামিন

আটকের প্রায় এক মাস পর জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পাইকগাছা উপজেলা বিএনপি'র আহ্বায়কসহ তিন নেতাকর্মী। বুধবার সকাল নয়টার দিকে খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান উপজেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক ডা. আব্দুল মজিদ, এক নম্বর যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ডাবলু এবং সাবেক ছাত্রনেতা ইসরাফিল আহম্মেদ।


গত  ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপি'র সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের বাবুরাবাদ গ্রামের বাড়ি থেকে কয়রা থানা পুলিশ আটক করে কয়রা উপজেলা বিএনপি'র সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলালের ভাই জাহিদুল বারি রনি, রূপসা উপজেলা বিএনপি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি বিকাশ মিত্র, পাইকগাছা উপজেলা আহ্বায়ক ডা. আব্দুল মজিদ, এক নম্বর যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন ডাবলু, সাবেক ছাত্রনেতা ইসরাফিল আহম্মেদ'সহ বিএনপি'র নয় নেতাকর্মীকে। পরে এসআই কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কয়রা থানায় নাশকতার মামলা করেন। এ মামলায় আটক নেতাকর্মীদের জেলহাজতে পাঠান আদালত।

আসামিদের পক্ষ থেকে প্রথমে খুলনার জজকোর্টে জামিন আবেদন করা হয়। আদালত শুধু অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন। পরে বাকি আসামিরা পৃথক পৃথকভাবে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। গত ২২ নভেম্বর পাইকগাছার চার নেতাকর্মী উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।

পাইকগাছায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের স্বামীর সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছায় সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অন্তস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৃতের স্বামী তারক চন্দ্র মন্ডল। উপজেলার খড়িয়া ঠাকুরবাড়ীর চক গ্রামের হরিপদ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে তারক চন্দ্র মন্ডল বুধবার সকালে পাইকগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অন্তস্বত্তা স্ত্রী ভারতী রানী মন্ডলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ও পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিককে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান।


তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাতে আমার স্ত্রীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশকে দেখানোর জন্য পরের দিন রোববার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে পাইকগাছায় যায়। পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে নিজস্ব চেম্বারে অবস্থান করছেন। সকাল ৭টার দিকে ক্লিনিকস্থ চেম্বারে নিয়ে গেলে ডাক্তার দেখার পর আমার স্ত্রীকে দ্রুত খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তখন আমরা ডাক্তারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তার পুরনায় স্ত্রীকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দুপুরের দিকে স্ত্রী কিছুটা সুস্থ্য হলে সোমবার তাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডাক্তার আমার স্ত্রীকে ক্লিনিকে দেখতে পেয়ে আমাদেরকে বলেন, তোমরা এখনো রোগীকে খুলনায় নিয়ে যাওনি। তখন আমরা পরের দিন নিয়ে যাওয়ার কথা বললে ডাক্তার আমাদেরকে দ্রুত খুলনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ডাক্তারের কথা শুনে রোগীকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকি।

এমতবস্থায় রাত ৮টার দিকে ভাত খাওয়া শেষ করারপর স্ত্রী ভারতী রানী মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ সময় ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ ও এমবিবিএস ডাঃ যতীন্দ্রনাথ মন্ডল রোগীকে সুস্থ্য করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। চেষ্টার এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করে। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পিছনে চিকিৎসকদের যেমন কোন গাফিলতি ছিল না। তেমনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষও কোন দায়ি ছিল না। কারণ মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়নি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তারক জানান, তার শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন অসুস্থ্য থাকায় এখানে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সিভিল সার্জন খুলনা, এএসএম আব্দুর রাজ্জাক পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিক বন্ধ রাখতে নির্দেশনা প্রদান ও খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমানকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে খুলনা সার্জিক্যাল অফিসের ডাঃ তানিয়া ইসলাম ও পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ সুজন কুমারকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

গ্রাম আদালত সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে পাইকগাছায় কর্মশালা অনুষ্ঠিত

পাইকগাছায় গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রীয়করণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর আওতায় মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান।


প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, ওসি (তদন্ত) এসএম শাহাদাৎ হোসেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মনিটরিং কো–অর্ডিনেটর মোঃ শামছুর রহমান। 

গ্রাম আদালত প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ মহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাহিদ ইকবাল, কৃষি অফিসার এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম, সমবায় কর্মকর্তা মুকুন্দ বিশ্বাস, প্রকৌশলী আবু সাঈদ, একাডেমীক সুপার ভাইজার মীর নূরে আলম সিদ্দিকী, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, এন ইসলাম সাগর, শাহানাজ পারভীন পপি, গ্রাম আদালত সহকারী নাজমুন নাহার, শুক্লা মিশ্র ও বাবুল আক্তারসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।

পাইকগাছায় স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা

পাইকগাছায় পিতা-মাতার উপর অভিমান করে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রী গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।


থানা পুলিশ ও এলাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা দেলুটি ইউনিয়নের সৈয়দখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সুমনা খাতুন লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে তার পিতা-মাতার উপর অভিমান করে নিজেদের বাড়ির ঘরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে।

পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে ওসি (তদন্ত) এসএম শাহাদাৎ হোসেন জানিয়েছেন।

Tuesday, November 28, 2017

রোগী মৃত্যুর ঘটনায় পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিক বন্ধ; তদন্ত কমিটি গঠন

পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ৮ মাসের অন্তস্বত্তা নারীর মৃত্যুর ঘটনায় খুলনা সিভিল সার্জন কর্তৃক ক্লিনিকটি সাময়িক বন্ধ রেখে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


সূত্রমতে, পাইকগাছা উপজেলার খড়িয়া গ্রামের তারক মন্ডলের ৮ মাসের অন্তস্বত্তা স্ত্রী ভারতী রাণী (২৫) অসুস্থ বোধ করলে ২৬ নভেম্বর সকালে তাকে ভর্তি করা হয় পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে। সারা দিন পার হওয়ার পর সন্ধ্যায় রোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে খবর দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশকে ক্লিনিকে আনে কর্তৃপক্ষ। ডাক্তার রোগী দেখার পর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভারতী রাণী'র মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ভারতী রাণী'র ভগ্নিপতি সুজিত সাংবাদিকদের জানান, কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় তার অন্তস্বত্তা শ্যালিকা ভারতীর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা প্রভাত কুমার দাশ জানান, প্রথম দিন ভোরে রোগীকে তার চেম্বারে নিলে রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে তিনি তাকে খুলনায় নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে সন্ধ্যায় তিনি ক্লিনিকে গিয়ে দেখেন রোগীকে ক্লিনিকেই রাখা হয়েছে। তার অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে, পুনরায় যতদ্রুত সম্ভব তাকে খুলনায় নেয়ার পরামর্শ দেন।

পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সিভিল সার্জন খুলনা, এএসএম আব্দুর রাজ্জাক ক্লিনিকটি পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশনা প্রদান ও খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমানকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে খুলনা সার্জিক্যাল অফিসের ডাঃ তানিয়া ইসলাম ও পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ সুজন কুমারকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, পাইকগাছা উপজেলার অধিকাংশ ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে স্বাস্থ্যনীতি উপেক্ষা করে। অধিকাংশ ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক ডাক্তার ও পর্যাপ্ত নার্স না থাকলেও দেদারসে চলছে ক্লিনিক ব্যবসা। ক্লিনিক মালিকরা বিভিন্ন অপারেশনের জন্য রোগী ভর্তি করে বাইরে থেকে ভাড়াটে ডাক্তার নিয়ে এসে অপারেশন করিয়ে থাকেন।

অস্তিত্ব সংকটে পাইকগাছার শিবসা নদী

ধীরে ধীরে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাচ্ছে পাইকগাছা উপজেলার শিবসা নদী। ‘শিবসা বাঁচাও’ আন্দোলন করেও বাঁচানো যাচ্ছে না ওই অঞ্চলের প্রাণ এ নদীটিকে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই নদী খননের কোন কার্যকরী পদক্ষেপও। ফলে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এলাকাবাসী।


কপোতাক্ষ, শিবসা ও মিনহাজ নদী বেষ্টিত পাইকগাছা উপজেলা। কয়েক বছর আগেও খুলনার সাথে ব্যবসায়িক ও যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এই নদীগুলো। কপোতাক্ষ ও মিনহাজ নদী সরু নালায় পরিণত হলেও নিজের অস্তিত্বের সংকট নিয়ে নিভু নিভু করছে শিবসা। নদীর প্রায় চার কিলোমিটার ভরাট হয়ে গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের দাবি, দ্রুত এ নদী খননের।

ছবি :: মোঃ সাইফুল ইসলাম
শিবসা নদী পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় ছাড়া নৌযান চলাচল করতে পারে না। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলেরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিবসা নদী খনন না করলে নদীর ওপর নির্ভরশীল প্রায় আড়াই হাজার পরিবারের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

Monday, November 27, 2017

কপোতাক্ষের ভয়াবহ ভাঙ্গনে বদলে যাচ্ছে পাইকগাছার মানচিত্র

পাইকগাছা উপজেলার আগরঘাটা এলাকায় কপোতাক্ষ নদের করাল গ্রাসে অসংখ্য ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন, হুমকির মুখে তীরবর্তী গ্রামগুলো। নেই সরকারি সাহায্য অথবা ভাঙ্গন প্রতিরোধে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। অনিশ্চয়তায় কপোতাক্ষ অববাহিকার হাজারো গ্রামবাসী।






ছবি তুলেছেন :: কামরুজ্জামান নায়েব

পাইকগাছায় বিনামূল্যে মাসিক চিকিৎসা সেবা প্রদান কেন্দ্রের উদ্বোধন

পাইকগাছায় অনির্বাণ লাইব্রেরির উদ্যোগে বিনামূল্যে মাসিক চিকিৎসা সেবা প্রদান কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার মাহামুদকাটীস্থ অনির্বাণ লাইব্রেরির নব নির্মিত ভবনে এই সেবা প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর আলী।


অনির্বাণ লাইব্রেরির সভাপতি সমিরন দে'র সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিঠুন দেবনাথ, ডাঃ বাসুদেব রায় ও ডাঃ দেবাশীষ দাশ।


সার্বিক সহযোগিতায়, উত্তরা আবাসন প্রকল্প, ঢাকা।


Saturday, November 25, 2017

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করায় পাইকগাছায় আনন্দ শোভাযাত্রা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করায় পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এসব কর্মসূচিতে পাইকগাছার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।


উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর আলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান'সহ অতিথিবৃন্দ।

পাইকগাছার ১০ ইউনিয়নে গ্রাম আদালত বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

পাইকগাছায় ১০ ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের উপর সচেতনতামূলক পৃথক যুব কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের গ্রাম আদালত প্রকল্পের আওতায় গত সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত উপজেলার হরিঢালী, কপিলমুনি, লতা, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর, গদাইপুর, রাড়ুলী, চাঁদখালী ও গড়ইখালী ইউনিয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।


ওয়েভ ফাউন্ডেশনের গ্রাম আদালত প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ মহিদুল ইসলামের পরিচালনায় পৃথক কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর সিদ্দিকী রাজু, কওছার আলী জোয়াদ্দার, দিবাকর বিশ্বাস, রিপন কুমার মন্ডল, এসএম এনামুল হক, কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, গাজী জুনায়েদুর রহমান, আব্দুল মজিদ গোলদার, জোয়াদুর রসুল বাবু, রুহুল আমিন বিশ্বাস, ইউপি সচিব, মেম্বর, গ্রাম আদালত সহকারীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

Friday, November 24, 2017

পাইকগাছায় ৩২ দলীয় দাবা টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাইকগাছায় ৩২ দলীয় রাজ-মিতুলী দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে বনানী সংঘ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী টুর্নামেন্টের  উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স. ম. বাবর আলী। টুর্নামেন্টে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের ১৮টি জেলার ৩২টি দল এবং আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের দাবাড়ুবৃন্দ  অংশগ্রহণ করেন।


প্রতিযোগিতা শেষে সন্ধ্যায় বনানী সংঘের সভাপতি অধ্যাপক জিএমএম আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সংঘের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোজাফফার হাসান, কাউন্সিলর শেখ মাহবুবুর রহমান রঞ্জু, জি,এম, ইমান আলী, এ্যাড. শফিকুল ইসলাম কচি, জাতীয় পর্যায়ের দাবাড়ু শেখ মোঃ খায়রুল ইসলাম, শেখ মঈন উদ্দীন, ফয়সাল হোসাইন, আবুল বাশার, ইমদাদুল হক ও সঞ্জয় সানা।

কপিলমুনি কাঁচা বাজারে শীতের সবজির উত্তাপ

শীত নামলেও পাইকগাছার কপিলমুনি কাঁচা বাজার এখনও গরম। বাজারে পর্যাপ্ত শীতকালীন সবজির সরবরাহ থাকলেও কাঁচা তরি-তরকারির দামের উত্তাপ এখনও কমেনি। তাছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি মনিটরিং না থাকায় বছরের প্রায় সিংহভাগ সময় কাঁচা বাজার থাকে চড়া।


পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা কম দামে কাঁচা পণ্য আমদানি করলেও খুচরা বাজারের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দর-দামের তোয়াক্কা না করে বরং ইচ্ছেমত বাজার নিয়ন্ত্রন করছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের।

এ ব্যাপারে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা তরকারি যে দামে কিনতে হয় তার উপর ভিত্তি করেই আমরা মূল্য নির্ধারণ করে থাকি। কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক আবুবকর জানান, কাঁচা তরকারি বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। সে ক্ষেত্রে পরিবহন খরচসহ দাম একটু বেশি পড়ে যায়।

কপিলমুনি হাটের দু'দিন রবি ও বৃহস্পতিবার কাঁচা মালের পাইকারি বাজারে এত পরিমান কাঁচা তরি-তরকারি আমদানি হয় যে, দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোর চাহিদা মেটাতে এই কপিলমুনি বাজারের উপর নির্ভর করেন ব্যবসায়ীরা। সে ক্ষত্রে কপিলমুনি খুচরা বাজারের অবস্থা এমনটি হওয়া অযৌক্তিক, বলছেন ক্রেতারা। 

বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাঝাল ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০, আলু ২০, বেগুন ৪০, মুলা ৩৫, পালন ২৫, রসুন ৬০, পাতাকপি ৩০, ফুলকপি ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও খুলনা থেকে তিন মাসে বারো শ' কোটি টাকার চিংড়ি রপ্তানি

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা প্রতিকূলতায় চলতি মৌসুমে জেলার চিংড়ি ঘের গুলোতে আশানুরুপ চিংড়ি উৎপাদন না হলেও চলতি অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে খুলনা থেকে ১১শ’ ৮৪ কোটি টাকার হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে। গেল অর্থ বছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমান ছিল ১ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। একদিকে উৎপাদন হ্রাস অন্যদিকে নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে দক্ষিণাঞ্চলের হিমায়িত বাগদা ও গলদার দাম প্রতি পাউন্ডে কমেছে দেড় থেকে দু’ডলার পর্যন্ত।


সূত্র জানায়, অপরিকল্পিতভাবে চাষাবাদের কারণে উন্নত বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় দক্ষিণাঞ্চলে বাগদা ও গলদার উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম। এরপর প্রাকৃতিক দুর্যোগ,কথিত ভাইরাসের সংক্রমণ সহ নানা কারণে প্রায় প্রতি বছরই দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি খামার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একারণে চাষীদের সিংহভাগই জড়িয়ে পড়ছেন ঋণের জালে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, চিংড়ি চাষে পরিকল্পনাহীনতা, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অসাধু ব্যবসায়ীরা এজন্য দায়ী।

বছরের এপ্রিলের দাবদাহ ও অতিবৃষ্টির ধকলে চিংড়ি খামারে দেখা দেয় মড়ক। যা প্রতিরোধে এখ নপর্যন্ত সরকারি বা বে-সরকারি পর্যায়ে কোন বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারেনি। মূলত মার্চ-এপ্রিলে তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। আবহাওয়া অফিস চলতি বছরের জুন মাসে ৩৫৬ মিলিমিটার, জুলাই মাসে ৬৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। আর সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৮ দিনে ২৫ মিলিমিটার বেশি এবং অক্টোবর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮০ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এছাড়া গেল বছরের ডিসেম্বরের ৩ দিনের মৃদু শৈত্য প্রবাহের সাথে চলতি বছরের জানুয়ারির তিন দিনের শৈত্য প্রবাহ ঘেরের চিংড়িতে বিরুপ প্রভাব ফেলে। শুর হয় মড়ক।

মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপ-পরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকারের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১১শ’ ৮৪ কোটি টাকা মূল্যের ১১ হাজার ৯৮৭ মেট্রিক টন হিমায়িত চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি হয়। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮৩ কোটি টাকা মূল্যের ১২ হাজার ৭৮২ মেট্রিক টন। জানাযায়,খুলনাঞ্চলের মোট ৪৩টি হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিদেশে চিংড়ি রপ্তানি করছে। রপ্তানিকৃত পণ্যের ৮৩ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নে।

সূত্র আরও জানায়, মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া থাকায় ইতোমধ্যে দু’টি হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে র‌্যাপিড এ্যালার্ট (সতর্ক বার্তা) দেওয়া হয়েছে। হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডার্ণ সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার (বিক্রয়) সাইফুদ্দিন তনু জানান, হিমায়িত পণ্যের সবচেয়ে বেশী অংশ রপ্তানি হয় বেলজিয়াম, জার্মান, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডে। সূত্র আরো জানায়, বাগদার পর চলতি গলদা আহরণ মৌসুমে প্রকারভেদে হিমায়িত দাম নিম্নমুখি। আগস্ট-সেপ্টেম্বরের তুলনায় বর্তমানে প্রতি পাউন্ডে দাম কমেছে দেড় থেকে দু’ডলার পর্যন্ত। এরপর শুধুমাত্র ইউকেতে গলদা রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে ৭০ শতাংশ। এর জন্য সেখানকার মুদ্রার মাণ নিম্নমুখি হওয়ার পাশাপাশি এদেশের অসাধু ব্যবসায়ীরাই দায়ী।

ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যেও বছরের প্রায় সারাটা সময় জুড়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা ওজন ও গ্রেড ভাল করতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করে থাকে। যা প্রতিরোধে প্রশাসনের পক্ষে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় যা খুবই অপ্রতুল। এজন্য প্রশাসনের পক্ষে অবশ্য জনবল সংকট থেকে শুরু করে বরাবরই নানা সংকটকে সামনে আনা হয়।

চাষীদের দাবি, ঠিক যেখানে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ হয় প্রশাসন সেখানে কখনো অভিযান দেয়না। পুশ প্রথা চালু রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের মাসোহারা গ্রহনের অভিযোগও সেই প্রথম থেকে। নানা কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চিংড়ির মূল্য হ্রাস, আমদানিতে অনাগ্রহ, উৎপাদন হ্রাস ও সর্বেপরি রপ্তানি কমেছে।

এমনটি চলতে থাকলে সম্ভাবনার মুখে থাকা চিংড়ি শিল্প হারিয়ে যেতে পারে। আর তা যদি হয়, শিল্পটির সাথে জড়িয়ে থাকা লাখ লাখ পরিবার উদ্বাস্তু হতে পারে। এমনটাই আশংকা করছেন চিংড়ির সাথে জড়িতরা।

ন্যাশনাল সী ফুডের প্রতিনিধি জানান, এক পাউন্ড ওজনের ৫ পিস হিমায়িত বাগদা চার মাসে আগে ১৩ ডলার মূল্যে বিক্রি হয়েছে। এখনকার মূল্য ১১ ডলার। এ সত্ত্বেও ন্যাশনাল সী ফুড তিন মাসে ৩০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে।

প্রসঙ্গত, খুলনা জেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৭০৬ হেক্টর জমিতে গলদা এবং ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে বাগদার উৎপাদন হয়েছে।

পাইকগাছার সালতা নদীর তালতলা ব্রিজের অসম্পূর্ণ এ্যাপ্রোচ সড়কে জনদুর্ভোগ

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সালতা নদীতে পাইকগাছার তালতলা-মাগুরখালী ব্রিজের কাজ প্রায় এক বছর আগে শেষ হলেও এ্যাপ্রোস সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিদিন দু’পারের হাজার হাজার মানুষকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এক পাশে পাইকগাছা, অপর পাশে ডুমুরিয়া। মাঝ দিয়ে সীমানা নির্ধারণী সালতা নদী। বিস্তীর্ণ জনপদের হাজার হাজার মানুষ জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন পার হয় এই নদী।


তবে স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর জাইকার অর্থায়নে ঐ এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ হলেও সুফল আসেনি। দু’পারে উর্ধ্বমুখী এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় নদী পারাপারে সমস্যা রয়ে গেছে সেই তিমিরে। বিশেষ করে দু’পারের সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের যেন আজ আর অন্ত নেই। কোন প্রকার গাড়ি পারাপার তো দুরের কথা, সামান্য বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল পার করতে নেমে উঁচু করে ব্রিজে তুলতে হয়। এছাড়া রোগীবাহী বাহন পারাপারে একমাত্র ভরসা এই ব্রিজই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায়।

দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সরকারের বিভাগীয় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


সূত্র জানায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের তালতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের কাঞ্চন নগর এলাকার সালতা নদীর উপর ২০১৪ সালের শেষের দিকে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন কোম্পানী জাইকার অর্থায়নে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শম্ভুক গতিতে চলমান ব্রীজের কাজ চলতি বছর কোন রকম শেষ হলেও শেষ হয়নি এর এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ। এপর্যন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ্যাপ্রোচ সড়কে শুধু মাত্র বালু দিয়ে ফেলে রাখায় সমস্যা বেড়েছে বহুগুণে। আর ঠিক কবে নাগাদ শেষ হবে তাও জানা নেই কারো। এমন অবস্থায় নানা আশংকায় এলাকাবাসী রীতিমত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর ধারণা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চরম খামখেয়ালীপনা ও সরকারের তদারকির অভাবই এর জন্য দায়ী। 

প্রসঙ্গত ব্রিজটি চালু হলে খুলনার পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, দাকোপ, সাতক্ষীরার তালাসহ বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের সরাসরি জেলা সদর খুলনার সাথে সড়ক যোগাযোগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। লোনা পানির অবহেলিত দূর্গম জনপদের সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি নদীর এই অঞ্চলে একটি ব্রিজ বাস্তবায়ন।

খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থায় জনপদের মানুষ আশা করেছিল সালতা ব্রিজটি চালু হলে অভ্যন্তরীণ রুটটি এঅঞ্চলের মানুষের বিভাগীয় সদর খুলনা পৌছাতে বিকল্প ভুমিকা রাখবে। তবে ব্রিজ নির্মাণ হলেও এ্যাপ্রোচ সড়কের জটিলতায় তাদের সে আশা শুরুতেই হোঁচট খেতে বসেছে। নদী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা নাথাকায় বাধ্যতামূলক প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয মালামাল পরিবহনে বোঝাই ভ্যান, নসিমন-করিমন দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

সর্বশেষ এলাকাবাসীকে বোকা বানাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ব্রীজের শতভাগ কাজ শেষ না করে এটি উদ্ধোধন হওয়ার আগেই জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে যাতে ব্রিজ নির্মাণে শম্ভুক গতির জন্য এলাকাবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম না করে। তবে শেষ রক্ষা হচ্ছেনা তাদের। দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী সর্বশেষ আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একজন।

--শেখ দীন মাহমুদ, কপিলমুনি, পাইকগাছা।

স্ট্যাচু অফ কপিলমুনি!

পাইকগাছার কপিলমুনি বাজারে প্রধান সড়কের উপর এই স্থানটিতে সব সময়ই দাড়িয়ে থাকে পাইকগাছা-খুলনা রুটের কোন না কোন বাস। ফলে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজটের।


ফাইল ফটো

পাইকগাছা থেকে ছেড়ে আসা অন্য কোন বাস, দাড়িয়ে থাকা বাসটিকে ওভারটেক করার উপক্রম না করলে বাস ছাড়ার কোন লক্ষণ দেখা যায় না। পরের বাস ১০ মিনিট/ ২০ মিনিট/ ৩০ মিনিট যত দেরিতেই আসুক না কেন, কিছুই যেন আসে যায় না বাস শ্রমিকদের।

Thursday, November 23, 2017

দখল ও দূষণে মৃতপ্রায় শিবসা-কপোতাক্ষ

পাইকগাছার অভ্যন্তরে শিবসা আর কপোতাক্ষের একাংশে নেই কোন জোয়ার ভাটার ঢেউ। চিরচেনা সেই শিবসা-কপোতাক্ষ আজ ধীরে ধীরে পরিনত হয়েছে মরা খালে। হারিয়েছে যৌবন। এক সময়ের খরস্রোতা শিবসা নদী ও কপোতাক্ষ নদের দু’পাড়ে সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ দখল আর দূষণ ক্রমেই বাড়ছে।


শিবসা-কপোতাক্ষকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন সময় নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টরা নানান বাণী শোনালেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন উদ্যোগ নেয়নি কেউ। বরং যাদের কাধে নদী রক্ষার দায়িত্ব তারাই নদী ভরাট করে চলেছে। মাছ চাষের নামে নদীর বিভিন্ন স্থানে বাধ সৃষ্টি করে পানির স্বাভাবিক গতিকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। কেউবা নদীর চরে ময়লার স্তুপ বানাচ্ছে।

এক সময় দক্ষিণাঞ্চলের মালামাল আনা নেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের একমাত্র ভরসা ছিল নদী পথ তথা শিবসা কপোতাক্ষ। আর এখন সেই নদী যে যেভাবে পারছে দখল ও দুষণ করছে!


নদী এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাশিমনগরের উত্তরে, কপিলমুনি বাজারের পিছনে, গোলাবাড়ি মোড়, আগড়ঘাটা, বোয়ালিয়া খেয়াঘাট, রাড়ুলী, আলোকদীপ, শিববাটী, কাঁটাখালী বাজার, মরিচচাপ খেয়াঘাট, বড়দল খেয়াঘাট, চাঁদখালী বাজার এলাকা,ও পাইকগাছা বাজার, বয়রা গেট, হাড়িয়া নদীর মুখসহ শিবসা ও কপোতাক্ষের বিভিন্ন অংশ দখল হয়ে গেছে। ভূমিদস্যুরা নদীর মাঝখান বরাবর নানা ধরনের দখলদারি চালাচ্ছে। অনেক জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে ঘর। কেউবা গড়ে তুলেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। কেউ বা বানাচ্ছে ইটের ভাটা! 

এক সময়কার খরস্রোতা শিবসা আর কপোতাক্ষ স্থানভেদে ৫০০ থেকে ১৫০০ ফুট ও তার অধিক প্রসস্থ ছিল, যা বর্তমানে কোথাও কোথাও ১০০ থেকে ২০০ ফুটে পরিনত হয়েছে। নদীর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। এমতাবস্থায় নদী দুটি দখল ও দূষণমুক্ত করতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী জনসাধারণ।

তথ্য ও ছবি :: মোঃ সাইফুল ইসলাম, পাইকগাছা।
(আংশিক পরিমার্জিত)

আল কায়েদা সন্দেহে কলকাতায় আটক রিয়াজুলের বাড়ি পাইকগাছার কাশিমনগরে

তথ্য নেই স্থানীয় পুলিশের কাছে


ভারতের কলকাতা চিৎপুর স্টেশন থেকে এসটিএফ’র অভিযানে আল কায়েদা জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া ৩ জনের এক জন রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ (২৫) এর বাড়ি পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামে। তার পিতা এক জন ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ী।


পারিবারিক সূত্র জানায়, বছর দুয়েক হল সে তার এক খালু শ্বশুরের সাথে ভারতে যায় কাজের সন্ধানে। এর পর হাটুর ব্যথায় মাস দুয়েক আগে বাড়ি এসেছিল। প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক থেকে পুনরায় ডাক্তার দেখাতে ভারতে গিয়ে আর ফেরেনি। এরপর গত মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কোলকাতা পুলিশের হাতে তার গ্রেফতারের খবরে রীতিমত মুষঢ়ে পড়েছে গোটা পরিবার।

এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোটর সাইকেল যোগে দু’জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি বুধবার দুপুরে রিয়াজুলের গ্রামের বাড়ি কাশিমনগর থেকে নিজেদের মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে তার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম ও এক প্রতিবেশী আঃ রাজ্জাক শেখের ছেলে রাসেল (২২) ডেকে নিয়ে গেছে।

তবে এব্যাপারে স্থানীয় পুলিশের কাছে নেই কোন তথ্য। কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) তদন্ত মোঃ রফিকুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানান।

মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কাছ থেকে খবর পেয়ে কোলকাতা এসটিএফ সেখানকার চিৎপুর স্টেশনে তল্লাশি করে। এক পর্যায়ে দুই জন বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের বাসিন্দা সামসাদ মিঞা ওরফে তানভির ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬) ও খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের রিয়াজ ওরফে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন (২৫)। আর ৩য় জন ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের খোলাপোতার মনোতোষ দে (৪৬) কে গ্রেফতার করে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে কোলকাতা পুলিশের ডিসি মুরলিধর শর্মা জানান, ধৃতরা অস্ত্র কেনাবেচার জন্য কোলকাতা স্টেশন চত্বরে এসেছিল। প্রায় দেড় বছর ধরে বাংলায় ঘাঁটি গেড়েছিল আটক দুই বাংলাদেশি আল কায়েদা জঙ্গি। পুলিশের ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, বসিরহাটের মনোতোষ দে’ই মূলত অস্ত্র সরবরাহ করত। আটককৃতরা এদিন কোলকাতা স্টেশনে এসেছিল অস্ত্র কেনা-বেচা নিয়ে কথা বলতে, সেই খবর আগে থেকেই ছিল এসটিএফের কাছে। সেই মতোই জাল বিস্তার করেন সেখানকার গোয়েন্দারা। শেষমেশ তাদের হাতে আটক হয় তিন জঙ্গি।


এসময় ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় অত্যাধুনিক ওয়ানশাটার-সহ একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। উদ্ধার হয় আল কায়েদা সম্পর্কিত বই, ল্যাপটপ ও পেনড্রাইভ। আল কায়েদার লিফলেটও পাওয়া যায় তাদের কাছ থেকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ওই বইয়ে লেখা ছিল জেহাদের কথা। কী করে তারা রেইকি করবে, কী করে বিস্ফোরক তৈরি করবে- সেসব ছিল ল্যাপটপ ও পেনড্রাইভে।


ডিসি জানান, ধৃত তিনজনই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। এই আনসার বাংলা হল আল কায়েদার শাখা সংগঠন। ধৃত দুই বাংলাদেশির কাছে কোনও পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল না। তবে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ব্যাঙ্কের পাশবই, আধার কার্ড, প্যানকার্ড, ভিজিটিং কার্ড। এসবই ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করেছিল তারা।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর সূত্রে পুজোর সময় এ বিষয়ে এসটিএফকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছিল কোলকাতায় জঙ্গি অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে। সেই থেকেই নানা হোটেল, রেস্তোরা, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনে গোপনে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন সেখানকার গোয়েন্দারা কিন্তু কিছুতেই হদিশ মিলছিল না খতরনাক জঙ্গিদের। এসটিএফের কাছে তিন-চারদিন আগে খবর আসে, কোলকাতায় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা আর্মস ডিলার্সদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেই মতোই অভিযানের গতি মুখ বদল করেন কলকাতার গোয়েন্দারা। মনোতোষ ছিল মূলত আর্মসড ডিলার। সামসাদ ও রিয়াজ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতেই কলকাতা স্টেশনে এসেছিল। ডিসি মুরলীধর শর্মা জানান, ধৃত জঙ্গিরা কখনই হোটেলে থাকত না, তাঁরা বিভিন্ন স্টেশনে, যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে রাত কাটাত। তারপর বাকি সময়টা এখানে-ওখানে ঘুরেই নাকি কাটাত তারা।

এদিকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাইকগাছার কাশিমনগর গ্রামের রিয়াজের আটকের খবরে বুধবার তাদের বাড়িতে গেলে কথা হয় রিয়াজের পিতা মোসলেম সরদারের সাথে। তিনি জানান, তার ৩ ছেলে মফিজুল সরদার, সিরাজুল সরদার ও রিয়াজুল সরদার। এদের মধ্যে রিয়াজুল সবার ছোট। সে কয়েক বছর আগে কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করার পর অর্থাভাবে আর পড়া-লেখা করেনি। এর পর সাতক্ষীরার টিকারামপুরের জনৈক আছির উদ্দিন খাঁর মেয়েকে বিয়ে করে। এরপর প্রথমত বাড়িতে পানের বরজের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তবে বছর দুয়েক আগে তার এক খালু শ্বশুরের পরামর্শে স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে জাহিদকে বাড়িতে রেখে ভারতে ভাটায় যায় কাজ করতে। মাস দু’য়েক পূর্বে রিয়াজুল বাড়িতে আসে পায়ের ব্যাথা নিয়ে। প্রায় সপ্তাহ দু’য়েক থাকার পর ডাক্তার দেখাতে পুনরায় ভারতে গিয়ে আটক হয় সে।

রিয়াজুলের পিতা মোসলেম সরদারের ধারণা, ভিসা ও পার্সপোর্ট নাথাকায় ভুল বশত কোলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থাকতে পারে।

--শেখ দীন মাহমুদ, পাইকগাছা।

Tuesday, November 21, 2017

খুলনা-৬ আসনে তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে (পাইকগাছা-কয়রা) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য একাধিক তরুণ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকেই ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণা ও নানা মাধ্যমে প্রার্থী হওয়া কিংবা মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়টি তুলে ধরছেন। অনেকেই করছেন গণসংযোগ ও মতবিনিময়, অনেকের আবার প্রচার-প্রচারণা সীমাবদ্ধ রয়েছে প্যানা ও ফেস্টুনের মধ্যে। সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে অন্যান্য দলের একক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।


উল্লেখ্য, পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে খুলনা-৬ আসন গঠিত। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাদে প্রায় প্রত্যেকটি নির্বাচনে বিভিন্ন দলের প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিরায় মনোনয়ন পেয়ে আসছেন। একমাত্র ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুলনা-৬ আসন থেকে তরুণ উদীয়মান প্রার্থী হিসাবে এ্যাডঃ স ম বাবর আলী মুক্তিযোদ্ধাকে দলীয় মনোনয়ন দেন। তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারের সর্বকণিষ্ঠ সংসদ সদস্য ছিলেন স ম বাবর আলী। এরপর থেকে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে এ আসন থেকে বিভিন্ন দলের প্রবীণ ব্যক্তিরায় দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আসছেন।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী হিসাবে বিভিন্ন দলের একঝাক তরুণ উদীয়মান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করে নির্বাচনী ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ৩-৪ জন প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন। যার মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাডঃ শেখ মোঃ নূরুল হকের বড় ছেলে আলহাজ্ব শেখ মনিরুল ইসলাম, দলীয় ভাবে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য। এরআগে তিনি ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি। দীর্ঘদিন তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন।

আ’লীগের সম্ভাব্য অপর প্রার্থী হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল, এর আগে তিনি মনোনয়ন না চাইলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি দু’উপজেলার সর্বত্রই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরেক তরুণ প্রার্থী হলেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু, তিনিও দীর্ঘদিন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা জাপা’র আহবায়ক মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর। জাপা নেতা মোস্তফা ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলেও দলের সিদ্ধান্তের কারণে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

অনুরূপভাবে সম্ভাব্য একাধিক তরুণ প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র। বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক ও খুলনা জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে এ দু’প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে আ’লীগ ও জাপা প্রার্থীদের তুলনায় বিএনপি’র এই দুই প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা খুবই কম।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী হিসাবে উপজেলা সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সানা মহিম এর নাম শোনা যাচ্ছে।

খুলনা-৬ আসন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ, জামায়াত, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির উভয়ের জন্য এ আসনটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাংগঠনিক ও ভোটের দিক থেকে আ’লীগ ও জামায়াতের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। এ জন্য জোটগত নির্বাচন হলে তরুণ প্রার্থীদের দলীয় ভাবে কতটা মূল্যায়ন করা হতে পারে সেটা এখন সময়ের ব্যাপার বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

--মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা।

Monday, November 20, 2017

পাইকগাছার সন্তান মৃণাল হবিগঞ্জে গাছ চাপায় নিহত

পাইকগাছার সন্তান হবিগঞ্জের ব্র্যাক কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি মন্ডল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাছের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। হবিগঞ্জের কর্মস্থল থেকে ফিল্ডে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে আগে থেকে কাটতে থাকা গাছ হঠাৎ তার উপর পড়লে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।


মৃণালের বাড়ি পাইকগাছার সোলাদানা ইউনিয়নের খালিয়ার চক গ্রামে। তিনি পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, পাইকগাছা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং যশোর সরকারি এমএম কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

মৃণালের অকাল মৃত্যুতে পরিবার, বন্ধুমহলসহ ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সোমবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃতদেহ এলাকায় পৌছাতে পারে বলে জানাগেছে।

Sunday, November 19, 2017

কপোতাক্ষের ভাঙ্গনে গৃহহীন পাইকগাছার ছয় গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার

কপোতাক্ষের অব্যাহত ভয়াভহ ভাঙ্গনে পর্যায়ক্রমে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির ৬টি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে সম্পূর্ণ দরগামহল গ্রামটি। শুধু বাপ-দাদার ভিটা মাটিই নয়, ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কবরস্থান, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এককালে প্রচুর জমিজমার মালিক ছিল এমন পরিবারও আজ পরিবেশ উদ্বাস্তু হয়ে আশ্রয় নিয়েছে রাস্তার পাশে, ওয়াপদার উপর কিংবা কারো বসত ভিটায়।


গত প্রায় এক দশকে কপোতাক্ষের অব্যাহত চোখ রাঙানিতে নদী উপকূলের এমন করুণ পরিণতিতে ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারের বিভিন্ন দফতরে একের পর এক আবেদন-নিবেদন করলেও সমস্যা সমাধানে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি কেউ।


কপোতাক্ষের ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সরেজমিনে গেলে কথা হয়, দরগা মহলের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সালাম উল্লাহর সাথে। তিনি জানান, বসত ভিটাসহ তিনি প্রায় আড়াই বিঘা সম্পত্তি হারিয়েছেন কপোতাক্ষের ভাঙ্গনে।

প্রায় ২৫ বিঘা জমির মালিক ছিলেন শেখ আবু বক্কর। বসত ভিটা সহ সমুদয় সম্পত্তি আগ্রাসী কপোতাক্ষ গিলে খেয়েছে। বাস্তু-ভিটা, ফসলিসহ প্রায় ১২ বিঘা জমির মালিক ছিলেন শেখ আঃ মান্নান। গত প্রায় ১ দশকে চোখের সামনেই কপোতাক্ষ সব কিছু গ্রাস করেছে।

শুধু তাদেরই নয়, উপজেলার হরিঢালীর সোনাতনকাটি, মাহমুদকাটি, রামনাথপুর, কপিলমুনির শিলেমানপুর, মালথ, হাবিবনগর, দরগাহমহলের বিস্তীর্ণ এলাকা ইতোমধ্যে কপোতাক্ষ’র ভয়াবহ ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে।

বিশেষ করে মানচিত্র থেকে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে দরগাহমহল গ্রামটি। আজ আর কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই সেখানে। বিদ্যুতের খুঁটি গুলোও দাঁড়িয়ে রয়েছে পড়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। অথচ কারোরই যেন কিছু করার নেই।


প্রসঙ্গত, এর আগে পাইকগাছা-খুলনা প্রধান সড়ক ভাঙ্গনে নিপতিত হলে পার্শ্ববর্তী এলাকা অধিগ্রহন করে সড়কটি পূণঃনির্মাণ করা হলেও সেখানে বসবাসরত সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ফিওে তাকায়নি কেউ।

ভূক্তভোগীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে তারা সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দফতরে আবেদন করলেও কোন কাজ হয়নি।

সর্বশেষ এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত একটি আবেদন মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) এবং তার অনুলিপি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলী, বাপাউবোর খুলনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, বাপাউবোর যশোর ক খ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকেীশলী সহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর দাবি তাদের স্থায়ী সমস্যা সমাধানে চলমান কপোতাক্ষ খনন প্রকল্প মূল ম্যাপ অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হোক।

--শেখ দীন মাহমুদ, কপিলমুনি, পাইকগাছা।

Thursday, November 16, 2017

পাইকগাছায় আবারো সড়ক দুর্ঘটনা; আহত ৩

পাইকগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় দু’সহোদরসহ ৩ জন মারাত্মক আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে গদাইপুরের মানিকতলা নামক স্থানে। আহত নসিমন চালকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার পাইকগাছায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদখালী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিহত ও তার স্ত্রী আহত হওয়ার ঠিক পরদিনই আবারো ঘটলো সড়ক দুর্ঘটনা। থামছেই না অবৈধ যানবাহনের বেপরোয়া চলাচল!


জানা যায়, উপজেলার মেলেক পুরাইকাটি গ্রামের মৃত গৌর দাশ সাধুর পুত্র পাইকগাছা বাজারের ব্যবসায়ী সুবোল চন্দ্র সাধু ও তার ভাই শশাংক সাধু বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

পথিমধ্যে মানিকতলা নামক স্থানে পৌছালে, আগে থেকে মোটরচালিত কয়েকটি ভ্যান (সিমেন্ট বোঝাই) রাস্তার উপর থেমে থাকায় হঠাৎ মোটরসাইকেল থামাতে গেলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন দু’ভাই। 

এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি নসিমন এসে পার্শ্ববর্তী দোকান ঘরে আঘাত করলে নসিমন চালক গোপালপুর গ্রামের নুর ইসলাম গাজীর পুত্র ইমরান গাজী আহত হয়।

স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে উদ্ধার করে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। নসিমন চালকের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন।

সিসি ক্যামেরার আওতায় পাইকগাছা থানা

অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পাইকগাছা থানা এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বৃহস্পতিবার দিনভর ওসি আমিনুল ইসলামের তদারকিতে থানা ভবনের চারিপাশে এবং আবাসিক এলাকায় কমপক্ষে ১৬টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। 


এর আগে উপজেলা পরিষদ ও পৌর ভবনে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও এর আওতায় আনা হয়নি থানা এলাকা। অবশেষে গোটা থানা এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আসায় উপজেলার প্রশাসনিক ও আইন শৃংখলা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সমূহ প্রযুক্তিগত নিরাপত্তার আওতায় চলে এসেছে।

থানার সিসি ক্যামেরা স্থাপন প্রসঙ্গে এএসআই শরিফ আল মামুন জানান, থানার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি যারা কর্মরত রয়েছি আমরা সবাই স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে অধিক দায়িত্বশীল হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানান, থানার চারিপাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তা ঝুকি নিয়েই থানার সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশের অভ্যন্তরীন সন্ত্রসী ও অপরাধীদের অপরাধের ধরণ ও কৌশল প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এ জন্য গোটা থানা এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে থানার সবধরণের নিরাপত্তা ঝুকি কমার পাশাপাশি থানা অভ্যন্তরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

Wednesday, November 15, 2017

পাইকগাছার সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ নছিমন-করিমন

পাইকগাছার সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ নছিমন-করিমনসহ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহন। অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 
ছবিটি পৌরসভাস্থ বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের পেছন থেকে তোলা।



নছিমন-করিমনগুলোর দুর্ঘটনার জন্য নির্মাণজনিত ত্রুটি ও চালকদের অদক্ষতা মূলত দায়ী। চালকদের অনেকেই অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাদের লাইসেন্স থাকা তো দূরের কথা, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জ্ঞান নেই। এ কারণে এসব আনাড়ি চালক নিজেরা যেমন দুর্ঘটনায় পড়ছে, তেমনি সড়কের অন্য যানবাহনগুলোকেও দুর্ঘটনায় পড়তে বাধ্য করছে।

স্থানীয় ওয়ার্কশপে তৈরি বলে নছিমন-করিমনের ব্রেক, স্টিয়ারিং থেকে শুরু করে সবকিছুই দুর্বল। এগুলোর দৈহিক কাঠামোও ত্রুটিযুক্ত। এর ওপর এগুলোয় ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী ও মালামাল বহন করা হয়।

তারপরও অবৈধ এসব যানের বিরুদ্ধে পুলিশ বা সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। ফলে অবাধে চলছে নছিমন ও করিমন।

পাইকগাছায় নছিমন-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে স্কুল শিক্ষক নিহত

পাইকগাছায় নছিমন-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিক্ষক দম্পতি হতাহত হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাইকগাছা-কয়রা সড়কের শিববাটী ব্রিজ সংলগ্ন স্মরণখালী নামক স্থানে যাত্রীবাহী নছিমন ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে শিক্ষক মনিরুজ্জামান মোড়ল (৫৭) ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫) গুরুতর আহত হয়।

পরে মুমূর্ষু অবস্থায় আহত দম্পতিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মনিরুজ্জামান উপজেলার চাঁদখালী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) ও একই এলাকার মৃত ইব্রাহিম মোড়লের ছেলে।

ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানানা, ঘটনার দিন শিক্ষক দম্পতি মনিরুজ্জামান মোড়ল ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম বুধবার তাদের মেয়েকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে বাড়ি ফিরছিলেন।

পাইকগাছা উপজেলা সদর থেকে তারা ইজিবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন, পথিমধ্যে শিববাটী ব্রীজ সংলগ্ন স্মরনখালী নামক স্থানে পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগতির একটি নছিমন সামনের দিক থেকে ইজিবাইকে আঘাত করে। দুর্ঘটনায় শিক্ষক মনিরুজ্জামান নিহত হন।

এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে এবং দুর্ঘটনার স্থান থেকে নছিমনটি জব্দ করা হয়েছে।

Friday, November 10, 2017

বাড়িওয়ালাকে অচেতন করে ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে লাপাত্তা ভাড়াটিয়া

পাইকগাছায় ভাড়াটিয়া সেজে ঘর ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালা পরিবারকে অচেতন করে নগদ টাকাসহ ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়েছে প্রতারক চক্র। অচেতন একজনকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

পাইকগাছা পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের প্রয়াত এ্যাডঃ বিলাস চন্দ্র রায়ের বাড়ির নিচের তলায় তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা সাধনা রায় প্রতিবন্ধী জনৈক কালাম ও তার স্ত্রীকে এক সপ্তাহ পূর্বে ঘর ভাড়া দেন। ভাড়াটিয়া কালাম ও তার স্ত্রী বৃহস্পতিবার রাতে (বাড়ির মালিক সাধনা রায় তখন খাবার তৈরী করছিলেন) তাদেরকে জানায়, তাদের পরিচয়ের সমস্ত কাগজপত্র তারা শুক্রবার প্রদান করবেন। সুকৌশলে ঐ সময় রুটির সাথে চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে তারা নিজেদের ঘরে চলে যায়।

বাড়ির মালিক সাধনা রায়, মেয়ে সুস্মিতা রায়, বিশাখা ও শিশু পুত্র অসীম সরকার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সুযোগে গভীর রাতে ভাড়াটিয়া প্রতারক চক্র দোতলার গ্রীল কেটে ঘরে প্রবেশ করে আলমারী খুলে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়।

শুক্রবার ভোর বেলায় বাড়ির মালিকদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে অচেতন অবস্থায় সকলকে উদ্ধার করে। গুরুতর অবস্থায় বিশাখা (৪৫) কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

এ ঘটনায় থানার ওসি (অপারেশন) প্রবীন চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এ ঘটনার জন্য বাড়ির মালিকদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ি করেছেন। তিনি জানান, ভাড়াটিয়া সম্পর্কে পৌরসভায় মাইকিং ও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের অবহিত করার পরেও বিনা তথ্যে কিভাবে ভাড়া দিলেন এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

Friday, November 3, 2017

পৌর সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন; শত বছরের গ্যারান্টি মেয়রের

পাইকগাছায় ১০০ বছরের গ্যারান্টি দিয়ে নির্মাণাধীন আরসিসি সড়কের উদ্বোধন করেছেন মেয়র মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর। তিনি শুক্রবার সকালে পৌরসভার জনগুরুত্বপূর্ণ পৌর বাজার থেকে মৎস্য আড়ৎদারী মার্কেট সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মাণাধীন আরসিসি স্টোন চিপস সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ৬ ইঞ্চি উচ্চতা ১৬ ফুট প্রস্থ ও সাড়ে ৪শ ফুট দৈর্ঘের সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা।
উদ্বোধন শেষে মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, সড়কটি পৌর এলাকার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ, এ জন্য ১০০ বছরের গ্যারান্টি সহকারে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

পাইকগাছায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত ২

পাইকগাছায় ছিনতাই চেষ্টা কালে ছিনতাইকারীদের হামলায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে নাকশা স্কুলের সামনে হামলা ও ছিনতাই চেষ্টার এ ঘটনা ঘটে।
বাসমালিক সমিতির লাইন সেক্রেটারী শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের বাস মালিক সমিতির একটি বাস কয়রায় নষ্ট হয়ে পড়ে, পরে বারইডাঙ্গা গ্রামের মুলতান গাজীর ছেলে মোটরসাইকেল চালক সামিরুল গাজী (২৮) ও সিলেমানপুর গ্রামের মৃত সায়েদ মোড়লের ছেলে ম্যাকানিক শফিকুল ইসলাম (২৬) বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কয়রা যায়। গাড়ি মেরামত শেষে রাত ১টার দিকে বাড়ী ফিরে আসার সময় চাঁদখালী ইউনিয়নের ধামরাইল স্কুলের সামনে পৌছালে কয়েকজন ছিনতাইকারী তাদেরকে আটকায়।
পরে তারা ঘুরে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারীরা তাদেরকে ধাওয়া করে নাকশা স্কুলের সামনে পৌছালে সেখানে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মোটরসাইকেল চালক সামিরুল ও আরোহী শফিকুল কে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।