Tuesday, July 22, 2014

পাইকগাছায় সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ

পাইকগাছায় সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার কাজী আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ এনে শত শত এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় এমপি’সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।


প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার কাজী আসাদুজ্জামান নিজ ও তার জারীকারক মনজুর আহম্মেদ’সহ এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের সহযোগিতায় স্বত্বদখলবিহীন লোকজনের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা ঘুষ গ্রহন করে একজনের জমি অন্য জনের নামে রেকর্ড করেছেন। এতে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন এলাকার লোকজন।

গত বছরের ২৪ অক্টোবর উপজেলার লস্কর গ্রামের মৃত জহির উদ্দীন সরদারের পুত্র এরফান চৌকিদারের পৈত্রিক দখলীয় জমি রেকর্ড করে দেয়ার নাম করে তার বাড়িতে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিলেও মোটা অংকের ঘুষ পেয়ে স্বত্বদখলবিহীন ব্যক্তির নামে রেকর্ড করার পায়তারা করছেন।

এ ঘটনায় পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তার বিরুদ্ধে সিআর-৩২৭/১৪ নং মামলা করেন ভূক্তভোগী এরফান চৌকিদার।

অবশেষে দুর্নীতিবাজ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে শত শত এলাকাবাসী মঙ্গলবার সকালে প্রতিবাদ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন।

চিরচেনা দুঃখ পাইকগাছা-আঠারোমাইল সড়কে

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে যোগাযোগ মন্ত্রী রাস্তা সংস্কারে বেশ আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন। সে মাফিক কোথাও কোথাও দৃশ্যমান কিছু কাজও হচ্ছে। তবে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত আইলা দুর্গত খুলনার পাইকগাছা-আঠারোমাইল সড়কের বেহাল দশা কাটেনি। খোদ যোগাযোগমন্ত্রী সরেজমিন পরিদর্শনের পর বছর গড়িয়ে গেলেও সংস্কার কাজের তেমন অগ্রগতি হয়নি। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন।


স্থানীয়রা জানান, খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চারটি, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১১টি ও কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম আঠারো মাইল-পাইকগাছা সড়ক। আষাঢ় মাস থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত ছয় মাস এই রাস্তা কপোতাক্ষের উপচে পড়া পানির নিচে তলিয়ে থাকে। বাকি ছয় মাস ভাঙাচোরা গর্তে ভরা বিধ্বস্ত রাস্তায় যানবাহন চলে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আঠারো মাইল-পাইকগাছা সড়ক পুরোটাই গর্তে ভরা। কোথাও ভালো নেই। দেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে দক্ষিণ জনপদের তিনটি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ১৫ লাখ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো দুর্দশাগ্রস্ত এ রাস্তাটি। এলাকার সব শ্রেণী ও পেশার মানুষের এক কথা, সড়কের ও দুরাবস্থার কারণে উপকূলীয় এলাকাটি বিচ্ছিন্ন জনপদে পরিণত হয়েছে।

৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির কপিলমুনি থেকে আঠারো মাইল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার চলাচলের একবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তালা উপজেলা সদর থেকে পাইকগাছার গোলাবাটি এবং তালার গোনালী-খৈতলা এলাকার অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো চলার সময় বারে বারে গর্তে পড়ে উল্টে পড়ছে। মৌসুমের সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা গর্তগুলোতে পানি জমে ডোবার পরিণত হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটির এ সমস্যা নতুন বা দু’এক বছরের না। সড়ক উন্নয়নের নামে মাঝে মধ্যে কাজ হয় ঠিকই, কিন্তু তা এতোই জোড়াতালি দেয়া যে অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। গত বছর কোটি টাকা ব্যয়ে বর্ষা মৌসুমে কাজ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষা যেতে না যেতেই সে কাজের চিহ্ন আর চোখে পড়ছে না।

খুলনা সড়ক বিভাগের অতিরিক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ আলী জানান, সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। তবে এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তর সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বিস্তারিত জানতে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তবে তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পাইকগাছা পৌরসভায় যানজট মারাত্মক রূপ নিয়েছে

পাইকগাছা পৌর শহরে যানজট এখন প্রধানতম সমস্যায় রূপ নিয়েছে। যানজটের কারনে বাজার এলাকায় প্রবেশ করাই দায় হয়ে পড়েছে। শুধু বাজার এলাকা নয় পৌর বাসষ্ট্যান্ড (জিরোপয়েন্ট) থেকে পৌর বাজার পর্যন্ত প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে সারাক্ষণ যানজট লেগেই রয়েছে।

পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ বা ঘোষণা উপেক্ষা করে পৌর বাজার এলাকায় (ডাকবাংলো-বটতলা) প্রধান সড়ক সংলগ্ন দোকানীরা রাস্তার উপরে ট্রাক, পিকআপ ও ঠেলাগাড়ী রেখে (রড-সিমেন্ট) মালামাল লোড-আনলোড করছেন। ফলে যানজটের পাশাপাশি জনসাধারনের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের দায়দায়িত্ব শুধু ঘোষণা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতাল ক্রস রোড (প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উত্তর পাশে) এলাকায় ওয়ার্কশপ দোকানীরা রাস্তার পাশেই ফুটপাত দখল করে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করছে এবং লোহার পাত দিয়ে নির্মিত বিভিন্ন সামগ্রী রাস্তা জুড়েই রাখা হয়েছে। একই মার্কেটের অন্যান্য দোকানের সামনে ফুটপাত দখল করে ভ্যান-বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল মোরামতের কাজ করছে মিস্ত্রীরা।

শুধু তাই’না প্রধান সড়কের পাশেই রাস্তা জুড়ে বিভিন্ন স’মিল ও ফার্নিচারের দোকানীরা বড় বড় গাছ ফেলে রেখেছে, এমনকি বিক্রির জন্য ইট-বালিও সাজিয়েও রাখা হয়েছে রাস্তার উপর।

কোর্টরাস্তা ত্রিমোহিনী মোড়ে সারাক্ষণ যানজট লেগেই রয়েছে। যাত্রীবাহী নসিমন ও ভ্যান যত্রতত্র পার্কিং করে রাখা হয় এখানে। ব্যস্ততম এই সড়ক দিয়ে শিশু বিদ্যালয়, গার্লস স্কুল, পাইকগাছা সিনিয়র মাদ্রাসা, পাবলিক লাইব্রেরী, পৃথক তিনটি আদালত ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের যাতায়াত করতে হয়।

অত্র মোড়েই রয়েছে বাতিখালী সার্বজনীন পূজা মন্দির। সর্বপরী কোর্ট রাস্তা মোড় সংলগ্ন ঢাকাগামী পরিবহন কাউন্টারগুলো স্থাপিত হওয়ায় বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে জনসমাগম ঘটে মাত্রাতিরিক্তভাবে।

পৌরবাসীর অভিমত, বিষয়টি যাদের দেখার কথা তারা কেউ দেখছেন না, অথবা দেখেও না দেখার ভান করে আছেন, বিধায় জনদুর্ভোগ লোপ নয় দিন দিন শুধু বৃদ্ধিই পাচ্ছে।

কপিলমুনি দীপশিখা বহুমুখী সমবায় সমিতির গ্রাহক হয়রানি চরমে

কপিলমুনি দীপশিখা বহুমুখী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সঞ্চয়কৃত টাকা না পেয়ে অবশেষে ভূক্তভোগী সমিতির গ্রাহক কপিলমুনির তাপস সাধুর স্ত্রী সুনিতা সাধু (৩৮) সভাপতি কমল মজুমদার ও সম্পাদক মেঘনাথ বিশ্বাসের নামে পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিসট্রেট এর আদালতে মামলা করেছেন।

বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পাইকগাছা সমবায় কর্মকর্তার নিকট তদন্ত দিয়েছেন। এদিকে এতসব অপকর্ম করেও সভাপতি সম্পাদক রয়েছেন বহাল তবিয়তে।

মামলা সূত্রে প্রকাশ, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজারে দীপশিখা বহুমুখি সমবায় সমিতি নামে তথা কথিত সমিতি খুলে অসহায় গরীবের রক্ত চুষে আসছেন কর্মকর্তাদ্বয়। সমিতির সভাপতি সম্পাদকের নিকট মামলার বাদী সুনিতা সঞ্চয় খোলেন। ওই সঞ্চয় পত্রে তার জমা হয় লভ্যাংশ’সহ ৪৫০০ টাকা।

মামলার স্বাক্ষী তাপস সাধুর ছেলে সুমন সাধুর লভ্যাংশসহ ২৯০০ টাকা, তপন সাধুর ছেলে অমিত সাধুর লভ্যাংশ সহ ১১,১৬০ টাকা, তপন সাধুর স্ত্রী মিরা সাধুর ১০,২০০ টাকা পাওনা হয়। কিন্তু কর্র্তৃপক্ষ (সভাপতি/ সম্পাদক) গ্রাহকদের ওয়াদা অনুযায়ী টাকা দেন নি। শুধু তাই নয়, টাকা দিতে অস্বীকার করে অশালীন ভাষায় গালী দেওয়াসহ জীবন নাশের হুমকি প্রদর্শণ করেন।

আলোচিত কপিলমুনি দীপশিখা বহুমুখী সমবায় সমিতির গ্রাহক হয়রানির ইতিহাস এখানেই শেষ নয়, সভাপতি কোমল মজুমদার ও সম্পাদক মেঘনাথ বিশ্বাস শত শত গ্রাহকের সাথে এভাবে প্রতারণা করে চলেছেন। ‘আর্থিক নিরাপত্তাই আমাদের অঙ্গিকার’ এ শ্লোগান নিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও তাদের কর্মকান্ড যেন উল্টোটা।

এলাকার নিম্ন শ্রেণীর মানুষ থেকে শুরু করে বাজারের অসংখ্য ব্যবসায়ী এ সমিতিতে আর্থিক লেনদেন শুরু করেন। তিল তিল করে জমানো টাকা তারা সঞ্চয় করতে থাকেন সমিতিতে। বর্তমানে গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা নিয়ম-অনুযায়ী যথা সময়ে লভ্যাংশসহ ফেরৎ দিচ্ছেন না তারা। বিভিন্ন তাল বাহানা করে চলেছে সমিতি কর্তৃপক্ষ।

কয়রায় হোগলার খাল জলমহলটি অবমুক্ত করার দাবি

কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের হড্ডা মৌজার অধীন হোগলার খাল জলমহলটি খাস কালেকশনের কবল থেকে অবমুক্ত করে সেটি উম্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনসাধারণ। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০ একরের বেশী আয়তনের হোগলার খাল হতে পানি নিয়ে এলাকার সর্ব সাধারণ প্রায় ৫ হাজার একর জমিতে ঘের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এতে লোকজন আর্থিকভাবে স্বচ্ছলতা ফিরে পেতে শুরু করেছে।

সম্প্রতি গৌতম কুমার সরদার দিং এর নিকট জলমহলটি খাস কালেকশনে দেয়ায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এ জন্য সর্বসাধারণের আশা আকাংখার প্রতি খেয়াল রেখে হোগলার খাল জলমহল হতে খাস আদায়ের আদেশ বাতিল করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন মহেশ্বরীপুর এলাকার ভূক্তভোগী লোকজন।

কপিলমুনিতে গাঁজা বিক্রেতা শ্রীঘরে

কপিলমুনিতে কসমেটিকস্ ব্যবসার আড়ালে গাজার ব্যবসা চালাতে গিয়ে গাজা সম্রাট অমর সাধু অটকের পর এবার লন্ড্রি ব্যাবসা আড়ালে করা আরেক গাঁজা ব্যবসায়ীকে আটক করে শ্রীঘরে দিয়েছে ফাড়ি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জামাল দীর্ঘদিন ধরে লন্ড্রি ব্যবসা আড়ালে গাঁজার ব্যবসা করে আসছে। ইতোপূর্বে সে গাজাসহ পুলিশের কাছে বেশ কয়েক বার ধরা পড়ে জেল খাটে। কিছু দিন আগে সে জেল থেকে বাড়ী এসে আবারো পূর্বের ব্যবসায় ফিরে যায়।

লন্ড্রি ব্যবসার আড়ালে গাঁজা সহ মাদকের ব্যাবসা অনায়াসে চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ব্যাবসার প্রসার বৃদ্ধির জন্য সে সিংহ বাড়ির পার্শ্বে রেজাকপুরের মধ্যে একটি গোপন জায়গায় আরো একটি শাখা খুলে বসে। লন্ড্রি ব্যাবসা কমিয়ে জোরে সোরে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিলের ব্যাবসা শুরু করে।

এদিকে এ সংবাদ কপিলমুনি ফাড়ি পুলিশ জানতে পেরে গতকাল সোমবার বিকাল ৫টায় এস.আই হাসমত আলী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে রেজাকপুরে তার গোপন আস্থানায় অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জামাল পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে ঝাপটে ধরে তার দেহ তল্লাশি করে ২৪ পুরিয়া গাঁজা’সহ আটক করে।