ঐতিহ্য রক্ষা নয়, যেন বাণিজ্যের খাতিরেই এবারের বারুণী মেলা। স্নান উৎসব
২৮ মার্চ হলেও মেলা শুরু হয়েছে তারও প্রায় দু’সপ্তাহ আগে ১৭ মার্চ থেকে। গত
বছর মেলা না হলেও এবার ৭ দিনের স্থলে মেলার অনুমোদন
মিলেছে ২০ দিনের। চলবে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। এ বছর মেলাকে অশ্লীলতার সম্পূর্ণ
বাইরে রাখার জন্য পুতুল নাচের কোনো প্যান্ডেলের অনুমতি দেয়া না হলেও প্রথম
দিন থেকেই যাত্রার নামে শুরু হয়েছে নগ্ন নারীদের অশ্লীল কূরুচিপূর্ণ নগ্ন
নাচ।
ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি বারুণী মেলাকে ঘিরে প্রথম থেকেই
আয়োজকদের মধ্যে ছিল অন্যরকম প্রস্তুতি। তবে কমিটি গঠনে মতানৈক্য থেকে শুরু
করে নানা পসরার আয়োজনে প্রথম থেকেই অশ্লীলতাকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা
গুঞ্জন।
স্থানীয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ দু’টি মসজিদ ও কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কপোতাক্ষ পলিভরাটি জমিতে অনুষ্ঠিত মেলায় ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতসহ যুব সমাজ কলুষিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। অর্থনৈতিক সংকটে মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও যথেষ্ঠ অবনতি হয়েছে। প্রতিদিন ছোট-খাট অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আসছেই। মাদক দ্রব্যের ছড়াছড়িও বেড়েছে। ইতোমধ্যে মেলার মাঠ থেকে অজিয়ার নামে এক জলডাকাতকে গুলিসহ আটক করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে মেলাকে নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিদ্যমান থকলেও মহাসংকটে রয়েছে অভিভাবক মহল, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ সচেতন এলাকাবাসী।
মেলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৪শ বছর আগে দ্বাপর যুগে কপিল দেব নামে এক মুনি সিদ্ধি লাভ করেছিলেন কপিলমুনির কপোতাক্ষ পাড়ের কালীবাড়ি ঘাটের একটি বটগাছের গোড়ায়। তার নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় কপিলমুনি বাজার, গড়ে উঠেছিল কালী মন্দির। সেই থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর বাংলা চৈত্র মাসের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে কপোতক্ষ নদের এই স্থানে পালন করে আসছে বারুণী স্নানোৎসব।
তাদের ধারনা, এই তিথিতে গঙ্গার পানি এই স্থানে প্রবাহিত হয়। ফলে সেখানে স্নান করলে শরীর গঙ্গার জলের মতো পবিত্র হয়। আরেক অর্থে বরুণ জলের দেবতা আর তার স্ত্রী বারুণী। তবে বারুণীর ইতিহাস নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ঐতিহ্য নিয়ে কারো বিতর্ক নেই।
মেলা উপলক্ষে সেই স্মরণাতীত কাল থেকে কপিলমুনিতে মেলা উপলক্ষে আসে সার্কাস, যাত্রা, যাদু প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, নাগর দোলা। বসে হরেক পসরার বাহারী সব দোকান-পাট। তবে গত কয়েক বছর ধরে মেলায় আগত যাত্রা ও পুতুল নাচের নামে চলে নগ্ন নর্তকীদের উলঙ্গ নাচ। এতে যুবসমাজ চলে যায় অবক্ষয়ের অতল গর্ভে।
মেলায় অশ্লীলতার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচলানার নজিরও রয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রথম পর্বে মেলায় আগত আদি রংমহল অপেরার প্যান্ডেলে যাত্রার নামে সারারাত প্রদর্শিত হয়েছে নগ্ন প্রায় যুবতীদের অশ্লীল নাচ।
মেলায় আগত দর্শকদের অনেকেই বলেন, ‘অশ্লীল নৃত্য দেখতে প্যান্ডেলে লোক সমাগম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। নর্তকীদের যাত্রার নামে বেহায়াপনারও কমতি ছিলনা এতটুকু। বাহারী সব নামের নর্তকীরা একে একে মধ্য রাতে প্যান্ডেলের উন্মত্ত দর্শকদের মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। তারা মঞ্চে এতটাই বেসামাল ছিল যে, স্বল্প বসনা সত্ত্বেও ব্রা-পেটিকোট খুলে দর্শকদের মধ্যে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধা করেনি।
এ সময় প্যান্ডেলের মাইকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হতে থাকে যে, কেউ মোবাইলে নৃত্যের কোনো ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করবেন না। ধরা পড়লে তাদের মোবাইল সিজ করে নেয়া হবে। মোবাইল কেড়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে একাধিক।
এছাড়া দর্শক সমাগম বাড়াতে মেলায় আগত দি বুলবুল সার্কাসের নামে চিত্র তারকাদের মিলন মেলা ও তাদেরই আয়োজিত আনন্দ র্যাফেল ড্র-তে প্রতি রাতে গেট ও মাঠে বখাটে যুবকদের হাতে মহিলাদের শ্লীলতা হানি করা হচ্ছে। মান-সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগী মহিলারা অস্বস্তি বোধ করলেও প্রতিবাদ করছেন না।
এ প্রসঙ্গে যাত্রা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক শেখ আছাদুর রহমান পিয়ারুল সাংবাদিকদের সম্পর্কে কটুক্তি ও মেলা বন্ধে কেউ কিছুই করতে পারবে না বলে দম্ভোক্তি করেন। তাৎক্ষণিক এ খবরে স্থানীয় সকল সাংবাদিক সংগঠনগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি যুগোল কিশোর দে’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মসিউর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবীর উদ্দীন জানান, যাত্রার বিষয় তার কিছু জানা নেই, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
সর্বশেষ মেলার সার্বিক নোংরা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর দুর্ঘটনা। তবে সর্বশেষ দীর্ঘ মেয়াদী মেলায় অশ্লীলতা বর্তমান পরিস্থিতিকে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়ে যায় তাই এখন দেখার বিষয়।
স্থানীয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ দু’টি মসজিদ ও কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কপোতাক্ষ পলিভরাটি জমিতে অনুষ্ঠিত মেলায় ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতসহ যুব সমাজ কলুষিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। অর্থনৈতিক সংকটে মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও যথেষ্ঠ অবনতি হয়েছে। প্রতিদিন ছোট-খাট অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আসছেই। মাদক দ্রব্যের ছড়াছড়িও বেড়েছে। ইতোমধ্যে মেলার মাঠ থেকে অজিয়ার নামে এক জলডাকাতকে গুলিসহ আটক করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে মেলাকে নিয়ে আয়োজকদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিদ্যমান থকলেও মহাসংকটে রয়েছে অভিভাবক মহল, ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ সচেতন এলাকাবাসী।
মেলার ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৪শ বছর আগে দ্বাপর যুগে কপিল দেব নামে এক মুনি সিদ্ধি লাভ করেছিলেন কপিলমুনির কপোতাক্ষ পাড়ের কালীবাড়ি ঘাটের একটি বটগাছের গোড়ায়। তার নামানুসারে প্রতিষ্ঠিত হয় কপিলমুনি বাজার, গড়ে উঠেছিল কালী মন্দির। সেই থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর বাংলা চৈত্র মাসের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে কপোতক্ষ নদের এই স্থানে পালন করে আসছে বারুণী স্নানোৎসব।
তাদের ধারনা, এই তিথিতে গঙ্গার পানি এই স্থানে প্রবাহিত হয়। ফলে সেখানে স্নান করলে শরীর গঙ্গার জলের মতো পবিত্র হয়। আরেক অর্থে বরুণ জলের দেবতা আর তার স্ত্রী বারুণী। তবে বারুণীর ইতিহাস নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ঐতিহ্য নিয়ে কারো বিতর্ক নেই।
মেলা উপলক্ষে সেই স্মরণাতীত কাল থেকে কপিলমুনিতে মেলা উপলক্ষে আসে সার্কাস, যাত্রা, যাদু প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, নাগর দোলা। বসে হরেক পসরার বাহারী সব দোকান-পাট। তবে গত কয়েক বছর ধরে মেলায় আগত যাত্রা ও পুতুল নাচের নামে চলে নগ্ন নর্তকীদের উলঙ্গ নাচ। এতে যুবসমাজ চলে যায় অবক্ষয়ের অতল গর্ভে।
মেলায় অশ্লীলতার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচলানার নজিরও রয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রথম পর্বে মেলায় আগত আদি রংমহল অপেরার প্যান্ডেলে যাত্রার নামে সারারাত প্রদর্শিত হয়েছে নগ্ন প্রায় যুবতীদের অশ্লীল নাচ।
মেলায় আগত দর্শকদের অনেকেই বলেন, ‘অশ্লীল নৃত্য দেখতে প্যান্ডেলে লোক সমাগম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। নর্তকীদের যাত্রার নামে বেহায়াপনারও কমতি ছিলনা এতটুকু। বাহারী সব নামের নর্তকীরা একে একে মধ্য রাতে প্যান্ডেলের উন্মত্ত দর্শকদের মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। তারা মঞ্চে এতটাই বেসামাল ছিল যে, স্বল্প বসনা সত্ত্বেও ব্রা-পেটিকোট খুলে দর্শকদের মধ্যে ছুড়ে ফেলতে দ্বিধা করেনি।
এ সময় প্যান্ডেলের মাইকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হতে থাকে যে, কেউ মোবাইলে নৃত্যের কোনো ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করবেন না। ধরা পড়লে তাদের মোবাইল সিজ করে নেয়া হবে। মোবাইল কেড়ে নেয়ার ঘটনাও ঘটেছে একাধিক।
এছাড়া দর্শক সমাগম বাড়াতে মেলায় আগত দি বুলবুল সার্কাসের নামে চিত্র তারকাদের মিলন মেলা ও তাদেরই আয়োজিত আনন্দ র্যাফেল ড্র-তে প্রতি রাতে গেট ও মাঠে বখাটে যুবকদের হাতে মহিলাদের শ্লীলতা হানি করা হচ্ছে। মান-সম্মানের ভয়ে ভুক্তভোগী মহিলারা অস্বস্তি বোধ করলেও প্রতিবাদ করছেন না।
এ প্রসঙ্গে যাত্রা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক শেখ আছাদুর রহমান পিয়ারুল সাংবাদিকদের সম্পর্কে কটুক্তি ও মেলা বন্ধে কেউ কিছুই করতে পারবে না বলে দম্ভোক্তি করেন। তাৎক্ষণিক এ খবরে স্থানীয় সকল সাংবাদিক সংগঠনগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি যুগোল কিশোর দে’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মসিউর রহমান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কবীর উদ্দীন জানান, যাত্রার বিষয় তার কিছু জানা নেই, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
সর্বশেষ মেলার সার্বিক নোংরা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর দুর্ঘটনা। তবে সর্বশেষ দীর্ঘ মেয়াদী মেলায় অশ্লীলতা বর্তমান পরিস্থিতিকে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়ে যায় তাই এখন দেখার বিষয়।