Friday, March 24, 2017

কপিলমুনি বধ্যভূমি আজও অবহেলিত

স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর আজও অবহেলিত পাইকগাছার কপিলমুনিতে মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধে কপিলমুনির রয়েছে গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস।  রয়েছে একাধিক স্মৃতিচিহ্ন। তবে কপিলমুনির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় সে ভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অনেটা ভুলতে বসেছে নতুন প্রজন্মসহ এলাকাবাসী।
এমনকি কপিলমুনি মুক্তদিবস পালন করা হয় না এমন অভিযোগ স্থানীদের। ৯ ডিসেম্বর ১৯৭১, এদিন পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি পাক হায়েনা ও তাদের দোসরদের কবল থেকে মুক্ত হয়।

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে তথা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কপিলমুনির ভূমিকা অনস্বীকার্য। কপিলমুনি ছিল রাজাকারদের দুর্গ এবং শক্তিশালী ঘাঁটি। এ ঘাঁটির মাধ্যমে কপিলমুনি, তালা, ডুমুরিয়াসহ খুলনা ও সাতক্ষীরার বিশাল অংশ রাজাকাররা অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।
খুলনার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক নগরী বিনোদগঞ্জ প্রতিষ্ঠাতা রায় সাহেব বিনোদ বিহারীর বাড়িটি ছিল রাজাকারদের ঘাঁটি। প্রায় ২০০ রাজাকার ও মিলিশিয়ার ছিল সশস্ত্র অবস্থান। সুবিশাল দোতলা ভবন, চারদিকে উঁচু প্রাচীর অনেকটা মোগল আমলের দুর্গের মতো। সুরক্ষিত দুর্গে বসে চলতো তাদের অত্যাচার।
তাদের নির্যাতনের মাত্রা এতটা ভয়াবহ ছিল যে, আজো সে দিনের ঘটনা বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেকেই গা শিহরে ওঠেন। নিরহ মানুষদের নির্যাতন করে হত্যার পর গোপন সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে লাশ পাশের কপোতাক্ষ নদে ফেলে দেয়া হতো। নদের ফুলতলা নামক স্থানে মানুষদের হত্যা করা ফেলা হতো।

স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ প্রায় ৪২ বছর বধ্যভূমি সরক্ষণ করা হয়নি। ২০১৩ সালে বছরের প্রথম দিকে তৎকালীন সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সচিব মোঃ রশীদুজ্জামান মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ও বধ্যভূমি নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
কিন্তু পরবর্তী ক্ষমতার পালাবদল ও অর্থাভাবে মাঝ পথে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অর্ধনির্মীত স্মৃতিস্তম্ভ গত কয়েক বছর একালাবাসী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঅর্ঘ্য নিবেদন করে আসছে।
কিন্তু গত বছর কপোতাক্ষ নদ খননের নামে অর্ধনির্মীত স্মৃতিস্তম্ভ ধ্বংস করা হয়। আর বছরের অন্যসময় অর্ধনির্মীত অরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ থাকছে নোংরা অবস্থায়। এর আগে উপজেলা ভূমি অফিস বাংলা ১৪১৮/১৯ সালে বধ্যভূমির জায়গায় নক্শা প্রনয়ন করেন। সে মোতাবেক ডিসিআরও দেওয়া হয়।
বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্থম্ভ নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় বাংলা ১৪২০ সালের জন্য ডিসিআর নিয়ে কতিপয় ভূমিদস্যুরা স্মৃতিস্তম্ভ এর সামনের জায়গা দখলে যায়। তবে নদ খননে সে দখল টিকে থাকেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে জানান, স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র পরিকল্পিক ভাবে বধ্যভূমির স্মৃতি নষ্ট করতে চায়।
বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক ২৫ মার্চ ফুলতলা বধ্যভূমি ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন বলে ২৪ মার্চ দুপুর ১টার দিকে নাম ফলক বসানোর কাজ চলতে দেখা যায়।

--মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, কপিলমুনি, পাইকগাছা।

আন্তর্জাতিক মানের পাইকগাছা-কপিলমুনি সড়ক !

গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে কড়ুলিয়া খেয়াঘাটের রাস্তা সংস্কার

পাইকগাছা পৌরসভাস্থ কড়ুলিয়া খেয়াঘাটের রাস্তার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই শোচনীয়। রাস্তা খুবই সরু ও নিচু হওয়ায় যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয় পৌরসভার সাথে শিবসা নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন কড়ুলিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের।
কিন্তু কর্তৃপক্ষের জন্য বসে না থেকে নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধানের উদ্যোগ নেয় গ্রামবাসী। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে শুক্রবার সকাল থেকে মাটি কেটে রাস্তা চওড়া ও উচু করার কাজ শুরু করে কড়ুলিয়া গ্রামের লোকজন।
ছবি :: চন্দন সরকার



এই কাজের উদ্যোক্তা কড়ুলিয়া গ্রামের শিক্ষক সাধন চন্দ্র সানা এবং আশুতোষ কুমার মন্ডল জানান, শুক্রবার কাজের শেষে স্বেচ্ছাশ্রমীকদের ভোজনের ব্যবস্থা করা হবে।