Saturday, December 24, 2016

অবৈধভাবে কপোতাক্ষের মাটি উত্তোলন; ১ ব্যক্তিকে ১৫ দিনের কারাদন্ড

পাইকগাছায় সরকারি কাজে বাঁধা ও কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করার অভিযোগে আইনুদ্দীন শেখ (৪৭) নামে এক ব্যক্তিকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। 

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের মেলেক পুরাইকাটী গ্রামের মৃত সুলতান শেখের ছেলে আইনুদ্দীন হিতামপুর স্লুইচ গেট সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করছিলেন। 

প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আইনুদ্দীনকে মাটি উত্তোলন করতে নিষেধ করলে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে গ্রাম পুলিশকে মারপিট করা হয় এমন খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দণ্ডবিধি ১৮৮-১৮৯ ও বালুমহল ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ এর ৪ ধারা ভঙ্গে ১৫-১ ধারায় আইনুদ্দীনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।

পাইকগাছা সরঃ উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত

পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে বিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুল গফ্ফারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার রায়, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আলী মোড়ল, সুরাইয়া বানু ও অপু মন্ডল, প্রাক্তন শিক্ষক অখিল কুমার সরকার, সুকুমার বিশ্বাস, হরিপদ মন্ডল, আরশাদ আলী, রণজিত কুমার সরকার, শিক্ষক আশুতোষ কুমার মন্ডল, দীলিপ কুমার দাশ, ইসমাইল হোসেন, ইমরুল ইসলাম, প্রদীপ শীল, অনিমেষ হরি ও রহমতুল্লাহ।
 

পাইকগাছায় ২০ ক্যাথলিক মিশনে বড়দিনের প্রস্তুতি সম্পন্ন

পাইকগাছায় উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হচ্ছে শুভ বড়দিন। এ উপলক্ষে মিশনগুলোতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলার ২০টি ক্যাথলিক মিশনে আয়োজন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও পৌর সদরের কেন্দ্রীয় ক্যাথলিক চার্চ, ফকিরাবাদ, লক্ষ্মীখোলা, চাঁদখালী, বেতবুনিয়া, রাড়ুলী ফোর-স্কয়ার, কাটিপাড়া ম্যাথডিষ্ট, গদাইপুর এসডিএ, মামুদকাটী এসডিএ, কাশিমনগর এসডিএ, কাশিমনগর লাইট অফ ক্রাইস্ট, সলুয়া এফসিসিবি, উলুডাঙ্গা এফসিসিবি, হরিঢালী ফোর-স্কয়ার, পুরাইকাটী এফসিসিবি, কাশিমনগর গ্রেস, মামুদকাটি গ্রেস ব্যাপঃ, উত্তর কাশিমনগর এফসিসিবি, কাটিপাড়া ও উলুডাঙ্গা ফ্রি ব্যাপটিষ্টসহ প্রতিটি চার্চে আয়োজন করা হয়েছে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পাইকগাছা পৌর সদরের কেন্দ্রীয় ক্যাথলিক মিশনে আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মসূচি। প্রতিটি গৃহ করে তোলা হয়েছে রঙ তুলির আঁচড় দিয়ে পরিপাটি। কেউ কেউ বিভিন্ন কারুকাজের মাধ্যমে নান্দনিক সাজে সাজিয়ে তুলেছেন বসতবাড়ী ও আঙ্গিনা। মেহেদী ও নতুন পোশাকে সেজেছে কিশোর-কিশোরী ও শিশুরা।

কেন্দ্রীয় ক্যাথলিক মিশনের শিশু দিয়ামনি ও সুষ্মিতা রোজারিও জানান, বড়দিন উপলক্ষে হাতে ও পায়ে মেহেদী দিয়েছি। রঙ তুলি দিয়ে নিপুন কারুকাজ করে বাড়ীর আঙ্গিনা পরিপাটি করা হয়েছে বলে কিশোরী তিন্নী মন্ডল ও গৃহবধু পৌল গাইন জানান। বসতবাড়ীর সামনে আলোক সজ্জিত ক্রীসমাষ্টট্রি (গাছ) স্থাপন করা হয়েছে বলে শাওন ও মারিয়া সরকার জানান। শাপলা ফুলের আকৃতির ন্যায় গোশালা তৈরী করা হয়েছে বলে সাগর সরকার জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে, মিশনগুলোতে গেইট, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জাসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে খ্রীষ্টান এ্যাসোসিয়েশন পাইকগাছা-কয়রার সভাপতি আন্দ্রিয় ডি রোজারিও জানিয়েছেন।

এদিকে ২০টি ক্যাথলিক চার্চের অনুকূলে সরকারি ভাবে সহায়তা হিসাবে ১০ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক জানিয়েছেন।

পাখির চোখে পাইকগাছা পৌরসভাস্থ ক্যাথলিক মিশন

পরম পবিত্র ত্রিত্বের গীর্জা; পাইকগাছা ক্যাথলিক মিশন

Thursday, December 22, 2016

পাইকগাছায় ভোট কেন্দ্রে গুলিবর্ষণ ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন

পাইকগাছায় ইউপি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে গুলিবর্ষণের ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন, তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক।
 
ছবি :: প্রতীকী
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে উপজেলা সোলাদানা ইউনিয়নের দীঘা পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট চলাকালীন সময়ে প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ভোট গ্রহণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে আইন শৃংখলা বাহিনী সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় রিটার্ণিং অফিসার বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় অজ্ঞাত নামা আসামী করে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নির্বাচিত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষ গ্রহণের মাধ্যমে গুলি বর্ষণ ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করেন ইউএনও নাহিদ-উল-মোস্তাক। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক, রিটার্ণিং অফিসার ও (নির্বাচনকালীন) উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা এফএম সেলিম আখতার, প্রিজাইডিং অফিসার ও রূপালী ব্যাংক গড়ইখালী শাখার ব্যবস্থাপক হারুন-অর-রশিদ ও এসআই স্বপন রায়।

Tuesday, December 20, 2016

পাইকগাছায় ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু ও নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত

পাইকগাছায় শাপলা স্পোর্টিং ক্লাবের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু খেলা ও নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের বাতিখালীস্থ বালুর মাঠে অনুষ্ঠিত হয় হা-ডু-ডু খেলা। পরে শিবসা নদীতে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ৪টি দলের মধ্যে ভিলেজ পাইকগাছা নৌকা বাইচ দল চ্যাম্পিয়ন হয়। রানার্স আপ হয় বাসাখালী নৌকা বাইচ দল। দীর্ঘদিন পর হাজারও দর্শক উপভোগ করেন হারিয়ে যাওয়া গ্রামীন হা-ডু-ডু খেলা ও নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।

প্রতিযোগিতা শেষে শাপলা স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি বাবলু গাজীর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক, কাউন্সিলর কামাল আহম্মেদ সেলিম নেওয়াজ, এসএম তৈয়েবুর রহমান, গাজী আব্দুস সালাম, কবিতা দাশ, মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, শিক্ষক ইসমাইল হোসেন, রেজাউল করিম, নুরুল ইসলাম নান্নু, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম সাওন, মোঃ রফি, শামিম হোসেন, কুদ্দুস গাজী, আসলাম পারভেজ সুমন ও শরিফুল ইসলাম।

Monday, December 19, 2016

পাইকগাছা সরঃ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী ৩১ ডিসেম্বর

ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের নির্ধারিত তারিখ (২৩ ডিসেম্বর) পরিবর্তন করে ৩১ ডিসেম্বর পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। শীতকালীন ছুটির কারণে নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর শনিবার পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের দিন নির্ধারণ করা হয়।

উল্লেখ্য, প্রথম বারের মতো পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছেন ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আগামী ৩১ ডিসেম্বর শনিবার বিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে। পাইকগাছা পৌরসভাস্থ বিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আয়োজনে ১৯৭৮ থেকে ২০১৬ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবেন।

অনুষ্ঠান বিষয়ক তথ্য ও রেজিস্ট্রেশন জন্য ০১৭৭৮-৪৫৪২৬০ নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। (রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ২৪ ডিসেম্বর)

১৯৭৮ থেকে ২০০০ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ১ হাজার টাকা, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের শিক্ষার্থীদের ৮০০ টাকা এবং ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের শিক্ষার্থীদের ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আযোজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সমাগম ঘটবে। দিনব্যাপী থাকবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন।

Sunday, December 18, 2016

পাইকগাছার অনির্বাণ লাইব্রেরি পরিদর্শনে ডেপুটি স্পিকার

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া বলেছেন, মননশীল জাতি গঠনে লাইব্রেরির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাঙ্গালী সংস্কৃতির চেতনা জাগ্রত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সর্বত্র সংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে অনির্বাণ লাইব্রেরি প্রত্যন্ত অঞ্চলে আলোকিত মানুষ গড়তে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে একটি লাইব্রেরি ২৫ বছর পূর্ণ করেছে এটা সত্যই বিস্ময়কর। যেখানে নতুন প্রজন্ম বই পড়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, সেখানে অনির্বাণ লাইব্রেরি তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষা, খেলাধুলাসহ সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এভাবেই সারাদেশে লাইব্রেরি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, আর সরকার এসকল বিষয়ে উৎসাহিত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি রোববার সন্ধ্যায় খুলনার পাইকগাছা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম মামুদকাটীর অনির্বাণ লাইব্রেরি পরিদর্শন শেষে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে লাইব্রেরি চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।



অনির্বাণ লাইব্রেরির সভাপতি সমীরণ দে’র সভাপতিত্বে ও লাইব্রেরির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাংবাদিক নিখিল ভদ্রের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, গাইবান্ধা ১ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশিদুজ্জামান, ওসি (তদন্ত) এসএম জাবীদ হাসান, মনিরামপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার। বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক নিমাই মন্ডল, অধ্যাপক যামিনী সরকার, অধ্যাপক অশোক ঘোষ, অধ্যাপক বিধান ভদ্র, প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার শম্পা, নীলিমা ঢালী, লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দেবনাথ।

এরআগে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে অনির্বাণ লাইব্রেরির নির্মাণাধীন ভবনের ফলক উম্মোচন করেন। উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনা জেলা সদর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে পাইকগাছা উপজেলার মামুদকাটী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে অনির্বাণ লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়। লাইব্রেরিটি ২৫ বছর পূর্ণ করেছে। গত ৯ অক্টোবর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে লাইব্রেরির রজত জয়ন্তী উদযাপন করা হয়।

Saturday, December 17, 2016

নিজ হাতে পতাকা ধরলেন আবুল বাজনদার

‘নিজের হাত নিজেই চিনতে পারতাম না, হাতের আঙুল দেখা যেতো না। সেই হাতে আজ আমি বাংলাদেশের পতাকা ধরেছি। লাল সবুজের এই পতাকা ধরতে পারাটা যে কতটা সৌভাগ্যের সেটা আমি এখন বুঝতে পারছি। মনের ভেতরে এ এক অদ্ভুত অনুভূতি, যা বোঝানো যাবে না।’ কথাগুলো একদমে বলে ফোনের অপর প্রান্তে থাকা আবুল বাজনদার খানিকক্ষণ চুপ থাকলেন। শুক্রবার বিজয় দিবসে আলাপকালে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা জানালেন ‘বৃক্ষমানব’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আবুল বাজনদার। হাসপাতালের বিছানায় বসেই পতাকা হাতে মেয়েকে শেখাচ্ছেন ‘জয় বাংলা’ বলা।

মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়ে আবুল উচ্ছ্বলিত কণ্ঠে আরও বলেন, ‘খুব ছোটবেলায় যখন আমি স্বাভাবিক ছিলাম তখন এসব দিনগুলোয় পতাকা উড়াতাম। কিন্তু অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তো আর ধরতে পারিনি। পতাকা হাতে নিয়ে বুকে জড়ায়ে ধরছি। আমার দেশের পতাকা জড়ায়ে ধরার আনন্দের অনুভূতি বোঝানো সম্ভব না। বিশেষ করে আমার মতো মানুষের।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি খুলনা থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন বাজনদার। গত ১০ বছর ধরে তিনি বিরল রোগ এপিডার্মোডিসপ্লাসিয়া ভ্যারুসিফরমিস-এ আক্রান্ত ছিলেন। হাতে গাছের শেকড়সদৃশ মাংসপিণ্ড তৈরি হয়েছিল তার। এ কারণেই তিনি ‘বৃক্ষমানব’ হিসেবে পরিচিত। তিনি বিশ্বের তৃতীয় রোগী যিনি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বার্ন ইউনিটে ভর্তি হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বাজনদারের দুই হাতে মোট ১১ বার এবং দুই পায়ে তিনবার অপারেশন হয়েছে।

বার্ন ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আবুল বাজনদারের দুই হাতের ব্যান্ডেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তার পায়ে আরও দু/তিনটি অপারেশন লাগতে পারে। তিনি কঠিন অধ্যায়গুলো পার হয়ে এসেছেন, হাত এবং পায়ের আঙুলগুলো এখন দৃশ্যমান। পায়ে কয়েকটি অপারেশন লাগলেও সেগুলো খুবই মাইনর অপারেশন।’

প্রতিদিনের মতো বিজয় দিবসের আগের দিনও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আবুল বাজনদারকে দেখতে যান তার ঘনিষ্ঠজন কাজী বাহার।

তিনি বলেন, ‘গতকাল (১৫ ডিসেম্বর) বিকাল থেকেই বাজনদারদের সঙ্গে ছিলাম। সন্ধ্যার পর মনে হলো, দেশকে ভালোবাসা এই মানুষটি এতদিন হাতে পতাকা তুলে নিতে পারেনি। যেহেতু তার দুটি হাতই এখন খুলে দিয়েছেন চিকিৎসকরা, তাই তার জন্য একটি পতাকা কিনে এনে হাতে তুলে দেই। এরপর শহীদ মিনার থেকে পতাকাটি কিনে আবার ওদের কেবিনে যাই।’

বাহার বলেন, ‘আবুল বাজনদারের হাতে যখন পতাকাটি তুলে দেই সেই মুহূর্তের কথা, আবুলের হাসি-কান্না মেশানো মুখভঙ্গি আমি কোনোদিনও ভুলবো না। জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা হলো আমার।’

তিনি আরও বলেন, ‘পতাকা হাতে নিয়ে বাজনদারের চোখ ভরা জল ছিল আর মুখে ছিল প্রশস্ত হাসি। শুধু বাবা বাজনদারের জন্যই নয়, তার পৌনে চার বছরের একমাত্র মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস তাহিরার জন্যও ছোট এক পতাকা নিয়ে গিয়েছেন বাহার। আর সেই পতাকা মেয়ের হাতে দিয়ে বাবা মেয়েকে শেখাচ্ছেন, মা জয় বাংলা বলো।’

বাজনদারের চিকিৎসা করানোর পেছনে যার অন্যতম ভূমিকা রয়েছে সেই প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী আবুল বাজানদারের পতাকা বুজে জড়িয়ে রাখার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ছবির নিচে লিখেছেন, ‘অন্য আরেক বিজয়ের কাছাকাছি! বিজয়ী বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিজয়ের নতুন এক নাম আমাদের আবুল। জয় বাংলা।’

Friday, December 16, 2016

পাইকগাছায় ৪৫তম মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

পাইকগাছায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ৪৫তম মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পৌরসভা, থানা, পাইকগাছা কলেজ, ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজ, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয়পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, জাকের পার্টি, বনানী সংঘ, প্রেসক্লাব, মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, উপকূল সাহিত্য পরিষদ, ষোলআনা ব্যবসায়ী সমিতি, পূজা পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস্ অফ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, চিংড়ি বিপণন সমিতি, কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমিতি, সড়ক পরিবহন শ্রমিকলীগ, রাসেল স্মৃতি সংঘ ও স্বাধীনতা স্পোর্টিং ক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পরে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী শেষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।

সকাল ৮টায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে শরীর চর্চা ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করেন স্কাউটস, গার্লস গাইড ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ১১টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ/ মৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

সাড়ে ১১টায় শিশুদের চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতা ও উপস্থিত বক্তৃতা, বিকাল ৩টায় সরকারি বালিকা বিদ্যালয় মাঠে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান, বিকাল ৪টায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা পরিষদ একাদশ বনাম পৌরসভা একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামান্য চিত্রপ্রদর্শন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাকের সভাপতিত্বে পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নুরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলী, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ নাজমুল হক, ওসি (তদন্ত) এস,এম, জাবীদ হাসান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী, অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, মিহির বরণ মন্ডল, আ’লীগনেতা গাজী মোহাম্মদ আলী, মোঃ রশীদুজ্জামান, শেখ মনিরুল ইসলাম, সাফওয়ান এ্যাকোয়া কালচার ও সবুজ মৎস্য খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাশফিয়ার রহমান সবুজ, ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস্ অফ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জি,এম, কেরামত আলী।

উপস্থিত ছিলেন, রমেন্দ্রনাথ সরকার, আব্দুল গফফার, অজিত সরকার, সুরাইয়া বানু, সরদার মোহাম্মদ আলী, আজহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, এ্যাডঃ শফিকুল ইসলাম কচি, ময়নুল ইসলাম, শোভা রায়, রেবা আক্তার কুসুম ও বজলুর রহমান।

সালাম বাংলাদেশ

'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ৫ম বছরে পদার্পণ

আজ ১৬ই ডিসেম্বর 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। হাটি হাটি পা পা করে ৪টি বছর পার হয়ে গেলো। আজকে সময় পিছু ফিরে দেখার !!! ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসের এক রৌদ্র মাখা সকাল ছিল 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র জন্মলগ্ন। জন্মলগ্ন থেকেই ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনে এগিয়ে চলার চেষ্টা করেছি আমরা। 

১৪৬০ দিনের এই দীর্ঘ পথ চলা সহজ ছিল না। অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের নতুন উদ্দমে পথ চলার অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে।

একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম আমরা। আমাদের লক্ষ্য ছিল পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি করা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করা এবং পাঠকের সংবাদ তৃষ্ণাকে ত্বরান্বিত করা। এই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে গেছি।

প্রিয় পাঠক, ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই আলোকিত ভোরে আপনি আমাদের ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা আর অভিনন্দন গ্রহণ করুন। অসংখ্য ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। বিগত ৪ বছরের মত, সামনের দিন গুলিতেও আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার আশা রাখি।

এই দিনে 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ঘোষণা :: আমাদের প্রতিদিনের চেষ্টা থাকবে ইতিবাচক খবরকে আরও গুরুত্ব দেওয়া। ভালোই ডেকে আনবে আরও ভালোকে।

Wednesday, December 14, 2016

বিজয়ের মাসে পাইকগাছায় পতাকার ফেরিওয়ালা রিপন

বিজয়ের মাস উপলক্ষে পাইকগাছার পৌর বাজারের অলিগলিতে লাল সবুজের পতাকা বিক্রি করছেন ফেরিওয়ালা মোঃ রিপন হোসেন। ছোট বড় বিভিন্ন সাইজ ও মাপের লাল সবুজের জাতীয় পতাকা, হেড ও হ্যান্ড ব্যান্ডসহ বিভিন্ন বিজয় দিবসে ব্যবহার উপযোগী সামগ্রী বিক্রয় করছেন তিনি। আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে পতাকা বিক্রির পাশাপাশি ছোট ছেলে মেয়েরা হেড ব্যান্ড, হ্যান্ড ব্যান্ডসহ ছোট ছোট পতাকা ক্রয় করছে। 


রিপন জানান, তার বাড়ী মাদারীপুরে। গত সপ্তাহে তারা ১০/১২ জন খুলনা শহরে এসে বিভিন্ন ভাগে শহর ও উপজেলা শহরগুলিতে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করছেন। বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত পতাকা বিক্রি হয় বেশি। এর মধ্যে ডিসেম্বরে মহান বিজয় দিবস, ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মার্চে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পতাকার চাহিদা থাকে। তারা প্রতিবছর এই কয়েক মাস দেশের বিভিন্ন জেলায় ফেরি করে পতাকা বিক্রি করেন।

-প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা।

Monday, December 12, 2016

পাইকগাছা সরঃ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী ২০১৬

প্রিয় আঙিনায় আরেকবার.... মেতে উঠবো উৎসবে, ফিরে যাবো শৈশবে....


প্রথম বারের মতো পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছেন ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আগামী ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে। পাইকগাছা পৌরসভাস্থ বিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই আয়োজনে ১৯৭৮ থেকে ২০১৬ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবেন।

অনুষ্ঠান বিষয়ক তথ্য ও রেজিস্ট্রেশন জন্য ০১৭৭৮-৪৫৪২৬০ নাম্বারে ফোন করে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। (রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ ১৮ ডিসেম্বর)

প্রিয় আঙিনায় আরেকবার.... মেতে উঠবো উৎসবে, ফিরে যাবো শৈশবে....
১৯৭৮ থেকে ২০০০ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি ১ হাজার টাকা, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের শিক্ষার্থীদের ৮০০ টাকা এবং ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের শিক্ষার্থীদের ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আযোজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ৩ শতাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সমাগম ঘটবে। দিনব্যাপী থাকবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন।

Thursday, December 8, 2016

পাইকগাছায় শিক্ষিকা সেরিনা আকতারের বিদায়ী সংবর্ধনা

পাইকগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা সেরিনা আকতার বেবী দীর্ঘ ২৯ বছরের শিক্ষকতা জীবন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। তিনি ১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর সহকারী শিক্ষক হিসেবে সরকারি চাকুরীতে যোগদান করেন। চাকুরী জীবনের দীর্ঘ ২৯ বছরের মধ্যে প্রায় ২৬ বছর কর্মরত ছিলেন পাইকগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সফল মাতা।


বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষক সেরিনা আকতার বেবীকে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর হেমেশ চন্দ্র মন্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার গাজী সাইফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান শিক্ষক আশুতোষ কুমার মন্ডল ও সহকারী শিক্ষা অফিসারবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

নিরবে পেরিয়ে গেল ৮টি বছর.... গুরুদাসী’র ৮ম প্রয়াণ দিবস আজ

দেশের জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়া মানুষটির কথা কেউ মনে রাখেনি। নিরবে পেরিয়ে গেছে ৮টি বছর। ৮ ডিসেম্বর ২০০৮, দিবাগত রাতে সকলের অগচরে না ফেরার দেশে চলে যান বীরাঙ্গনা গুরুদাসী মন্ডল। 
 
অথচ তাকে স্মরণ করার জন্য এগিয়ে আসেনি কোনো সামাজিক, রাজনৈতিক বক্তি বা সরকার। আজ অবধি ধরে রাখার চেষ্টা করা হয়নি তার শেষ স্মৃতি চিহ্ন ইহকালের আবাসস্থল।

বীরাঙ্গনা গুরুদাসী মন্ডল, তুমি পাইকগাছার গর্ব, ভুলবো না তোমায়। কিন্তু মাসি, তুমি হঠাৎ আর এসে বলবে না, ''কেমন আছিস বাবা ? ভালো আছিস তো ? দে কয়ডা টাহা দে, তোরা না দিলি পাব কনে ক।''

Voice of Paikgacha বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে তোমাকে !
 

Thursday, December 1, 2016

এমপি নূরুল হকের পুত্র রফিক আর নেই

খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হকের পুত্র শেখ মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক (৪৫) আর নেই। তিনি ব্রেন ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১লা ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)

মরহুমের প্রথম জানাজা খুলনা ফারাজী পাড়াস্থ বাইতুল আমান জামে মসজিদে শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকাল ৩টায় পাইকগাছার নিজ গ্রাম পুরাইকাটী ঈদগাহ মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরহুমের দাফন সম্পন্ন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 


উল্লেখ্য, মরহুম শেখ মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক গত ১ বছরেরও অধিক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

Wednesday, November 30, 2016

পাইকগাছায় এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা; পিতা-পুত্রসহ আটক ৩

পাইকগাছায় পুর্ব শত্রুতার জের ধরে পুষ্পেন্দু বিকাশ মন্ডল নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিতা-পুত্রসহ ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাতড়াবুনিয়া এলাকায় হত্যার এ ঘটনা ঘটে। লাশ ময়না তদন্ত শেষে বুধবার বিকালে গ্রামের বাড়িতে মৃতদেহের সৎকার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। 

মৃত পুষ্পেন্দু বিকাশ মন্ডল
থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলার পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালি ইউপির বগুড়ার চক গ্রামের মৃত মৃনাল কান্তি মন্ডলের ছেলে পুষ্পেন্দু বিকাশ মন্ডল (৪০) সুড়িখালী বাজার থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার সময় পথিমধ্যে পাতড়াবুনিয়া এলাকায় জনৈক রজব আলীর বাড়ির সন্নিকটে পৌছালে পুর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা দুর্বৃত্তরা পুষ্পেনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন পুষ্পেন্দুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

এদিকে ওই রাতেই ওসি মোঃ মারুফ আহম্মদ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক কয়রার চান্নিরচক গ্রামের শাহাজান গাজীর ছেলে শামীম গাজী (৩২) আটক করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বগুলারচক গ্রামের মৃত বল্বব চন্দ্র মন্ডলের ছেলে বিধান চন্দ্র মন্ডল (৬০) ও তার ছেলে বিশ্বজিত মন্ডল (২৮) কে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী অনুভা রানী মন্ডল বাদী হয়ে আটক শামীম সহ ২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আসামী করে থানায় হত্যা মামলা করেছে। যার নং- ২১, তাং- ৩০/১১/১৬ইং।

এ ব্যাপারে ওসি মারুফ আহম্মেদ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে জায়গা-জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে কিংবা পরকীয়া প্রেমের কারনে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে সঠিক তদন্ত না করে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

Tuesday, November 29, 2016

পাইকগাছা কলেজের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন

ঐতিহ্যবাহি পাইকগাছা কলেজের পরিচালনা পর্ষদের শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী না থাকায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিনয় কুমার মন্ডল, ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু ও প্রভাষক লিলিমা খাতুন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মনোনিত হবেন। যার মধ্যে ২ জন পুরুষ শিক্ষক এবং একজন মহিলা শিক্ষক।

Monday, November 28, 2016

পাইকগাছার কৃতি সন্তান উপসচিব ড. শেখ মনিরুজ্জামান

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কৃতি সন্তান সিনিয়র সহকারী সচিব ড. শেখ মনিরুজ্জামান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতি লাভ করেছেন। তিনি বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত আছেন।
 
ইতিপূর্বে তিনি বিশ্বখ্যাত ‘লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স’ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। এরপর ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া নিউইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত জাতিসংঘের সদর দপ্তরে মহাসচিবের ক্লাইমেট চেন্জ সাপোর্ট টিমের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
 
উল্লেখ্য, ড. শেখ মনিরুজ্জামান পাইকগাছা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মরহুম শেখ ছানারউদ্দীন স্যারের জেষ্ঠ্য পুত্র।
 
'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র পক্ষ থেকে এই কৃতি সন্তানকে অভিনন্দন !

Saturday, November 26, 2016

আদৌ কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে?

প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা


প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছরেও বাস্তবায়ন হলো না সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপত আব্দুস ছাত্তারের ঘোষণার সুন্দরবন জেলা। একে একে পার হতে যাচ্ছে প্রতিশ্রুতির ৩৪ বছর। আজও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা। অবহেলিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুন্দরবন জেলা দাবী নিষ্ফল ক্রোন্দনে পরিণত হতে চলেছে। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা এ ব্যাপারে জনগণকে বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিলেও পরে বেমালুম ভুলে যান। এবারও তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে না। সর্বমহলের একটাই প্রশ্ন আদৌও কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে? না কি সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোট ব্যাংক মজবুত করা কৌশল মাত্র।

খুলনা জেলা শহর থেকে ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সুন্দরবন কোল ঘেসে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা অবস্থিত। ১৯৮২ সালে কয়রা থানার জায়গীর মহলে এক বিশাল জনসভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি আব্দুস ছাত্তার জনগণের দাবিরমুখে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি থানা ও পার্শ্ববর্তী থানার কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা দেন। যা আজও প্রস্তাবিত হয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ থানা এবং আশাশুনি ও তালা থানার কয়েকটি ইউনিয়ন। ততকালিন সময় দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ব সাধারণ জেলা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদী হয়েছিল। দীর্ঘ ৩৪ বছর যাবত সকলই আশাহত হয়ে আছে। তবে প্রতিটা জাতীয় নির্বাচনের সময় বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বা জোটের প্রার্থীদের সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন করা হবে এমন প্রতিশ্রুতির অন্ত থাকে না।

অপার সম্ভবনাময় সুন্দরবন কোল ঘেষা এ অঞ্চল। উপজেলাবাসীর সুন্দরবন জেলার দাবী কেনো সঠিক এ ব্যপারে যৌতিকতা দেখিয়ে সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটির ও অন্যান্য সামাজিক কমিটি আন্দোলন করে যাচ্ছে। যার মধ্য পাইকগাছা কয়রায় পৃথক আদালত রয়েছে, ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের বিশাল অংশ এ এলাকায় অবস্থিত, হিমায়িত চিংড়িজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব উপার্জন করছে সরকার, পাইকগাছা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোনা পানি কেন্দ্র বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, লোনা সহিষ্ণু বীজ উৎপাদন খামার এবং “ক” শ্রেণীর
পাইকগাছা পৌরসভা ও দাকোপ পৌরসভা।

এখানে আরও রয়েছে দেশের ১৮টি বৃহত্তম পাইকারী বাজারের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি। কয়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের সুযোগ। নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ১৫/২০ লক্ষ মানুষের বসবাস। যোগাযোগ ব্যবস্তার মধ্যে নৌপথ, সড়ক পথ অন্যতম।

জেলার দাবীতে ৮০’র দশক থেকে সর্ব দক্ষিণে গঠিত হয় সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটি ও সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন ছাত্র সংগ্রাম কমিটি। সুন্দরবনজেলা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। উন্নয়নের পথ প্রদশক ও আধুনিক দেশ গঠনে অগ্রদ্রুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মেয়াদে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা করবেন এমনটি প্রত্যাশা সুধিজনের।

Tuesday, November 22, 2016

পাইকগাছা কে.জি স্কুল এলাকায় বখাটেদের দৌরাত্ম্য; মেয়রের কাছে লিখিত অভিযোগ

পাইকগাছা পৌরসভা পরিচালিত আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ের (কিন্ডার গার্টেন) আশপাশ এলাকায় বখাটেদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিএম হুমায়ুন কবির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, পাইকগাছা পৌর সদরের প্রাণ কেন্দ্রেই রয়েছে আদর্শ শিশু বিদ্যালয়। আর বিদ্যালয়ের মাঠেই রয়েছে শিশু পার্ক। পার্কের পাশেই রয়েছে পাবলিক লাইব্রেরী। লাইব্রেরীর সামনে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। যার কারণে স্থানটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি বখাটে ছেলেরা উক্ত এলাকায় অবস্থান করে মাদকদ্রব্য সেবনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড করছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবক মহল।

Saturday, November 19, 2016

তেলের ঘানি টেনেই সন্তানকে মেডিকেলে পড়াচ্ছেন পাইকগাছার নুরুল-পারুল দম্পতি

গরুর অভাবে তেলের ঘানি টানা সংসার আর ছেলের মেডিকেলের পড়াশুনার খরচ যোগাতে হিমশিম খাচ্ছে পাইকগাছার নুরুল-পারুল দম্পতি। তবে অদম্য উৎসাহী এ দম্পতি অভাবের কাছে মাথা নোয়াতে নারাজ। নিজেদের ইচ্ছা শক্তিই যথেষ্ট সেটা প্রমাণ করেছেন পাইকগাছা উপজেলার সরল গ্রামের নূরুল-পারুল দম্পতি



গর্বিত এ দম্পতি এক ছেলে ও এক মেয়ের পিতা-মাতা। চরম দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেও নুরুল দম্পতি ঘানি (তেল) টেনে ছেলেকে পড়াচ্ছেন বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে। আর মেয়েটি পড়ছে স্থানীয় উচ্চ মাধ্যমিকে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ করে। এরপর ছেলেটি ২০০৯ সালে গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১১ সালে পাইকগাছা কলেজ থেকে জিপিএ ৫ নিয়ে এইচএসসি পাস করে প্রথমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিসারিজ বিভাগে ভর্তি হয়। এরপর খুলনার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুযোগ হওয়ায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যহতি নিয়ে গরীব ও মেধাবী কোটায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। বর্তমানে সে মেডিকেলের শেষ বর্ষের ছাত্র।

পাইকগাছা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সরল গ্রামের মৃত জাহান আলী গাজীর ছেলে গর্বিত পিতা নূরুল হক গাজী জানান, সহায়সম্বল বলতে মাত্র দুই শতক জমির উপর বসতবাড়ি ছাড়া আর কোন কিছু নেই। দিন মজুর ও ঘানি টেনে চালাতে হয় সংসার। এরপর রয়েছে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া। ঘানি টানা হচ্ছে পিতা-মাতার পেশা। তবে পিতা-মাতা যখন বেঁচে ছিল তারা গরু দিয়েই ঘানি টানতো। কিন্তু অভাব অনটনের কারণে আমার একটি গরু কেনারও সামর্থ নাই। তাই বাধ্য হয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনই গত ১৫ বছর যাবৎ ঘানি টানার কাজ করে আসছি। বাজার থেকে সরিষা কিনে এনে প্রতি ২/৩ দিন পরপর সরিষা মাড়াই করে তেল তৈরী করি। এ ছাড়া সময় পেলেই করা হয় দিন মজুরের কাজ। এভাবেই অভাব অনটনের মধ্যদিয়েই সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হয়। সংসার কোন রকমে চললেও ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময় ধার দেনা করে খরচ যোগাতে হয়।

এমন অভাব অনটনের মধ্যদিয়ে ছেলে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করা প্রসঙ্গে নুরুল-পারুল দম্পতি জানান, ইচ্ছে ছিল ছেলে মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করবো। শত অভাব অনটনের মাঝেও আল্লাহ সেই ইচ্ছা পুরণ করছে। প্রথম দিকে সংশয় প্রকাশ করলেও এখন মনে হয় সন্তানের লেখাপড়ার জন্য দারিদ্রতা কোন বাঁধা নয়। ইচ্ছা শক্তিটাই যথেষ্ট। জীবন সংগ্রাম অনেক কষ্টের হলেও ছেলে মেয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে জেনে নিজেদেরকে গর্বিত পিতা-মাতা মনে হয়। সন্তানরা যখন লেখাপড়া শেষ করে দেশ জাতির ও সমাজের জন্য উপকারে আসবে তখন আমাদের সারা জীবনের ত্যাগ ও কষ্ট সার্থক হবে। আমরা চাই, দারিদ্রতার কারণে যেনো কোন পরিবারের মেধাবী সন্তানরা ঝরে না পড়ে। এ জন্য প্রত্যেক পিতা-মাতাকে সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এদিকে হতদরিদ্র নুরুল পরিবারের পাশে এসে সমাজের স্বহৃদয়বান ব্যক্তিরা সহযোগিতার হাত বাড়াবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা ::
পারুল, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, পাইকগাছা শাখা
সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৯৪৬০

Sunday, November 13, 2016

প্রতি ৭ সেকেন্ডে একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে ডায়াবেটিসে

আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস


দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন জানেন না যে তিনি এ রোগে আক্রান্ত অথচ বিশ্বে প্রতি ৭ সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যুবরণ করছে এবং প্রতি ১২ জনে একজন ডায়বেটিসে আক্রান্ত। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন-আইডিএফ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৫’র ডিসেম্বরে বাংলাদেশে মোট ৭১ লাখ শনাক্তকৃত ডায়াবেটিসের রোগী ছিল। এছাড়া আরো প্রায় ৭১ লাখ (মোট প্রায় ১ কোটি ৪২ লাখ) মানুষ ডায়াবেটিস নিয়ে বসবাস করছে। যাদেরকে এখনও শনাক্ত কার হয়নি। ওই সময় পৃথিবীতে মোট ৪১ কোটি ৫০ লখ শনাক্তকৃত ডায়াবেটিসের রোগী ছিল। তারা আরও আশঙ্কা করছে যে, ২০৪০ সালে পৃথিবীতে মোট ৬৪ কোটি ২০ লক্ষ ডায়াবেটিসের রোগী থাকবে। 
 
২০১৫ সনে ডায়াবেটিসের রোগীর মোট সংখ্যা অনুসারে সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ দশম অবস্থানে ছিল। কিন্তু ২০৪০ সনে গিয়ে মোট রোগীর সংখ্যা অনুসারে বাংলাদেশের অবস্থান হবে নবম। ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা জানান, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ঠ উদ্যোগী এবং বিভিন্নমাত্রায় সফল। কিন্তু বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন। অর্থাৎ বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীরা তুলানমূলক খারাপ অবস্থায় জীবন যাপন করছে।

এ যাবৎ কালে প্রকাশিত দু’টি গবেষণালব্ধ প্রবন্ধে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের বিশ শতাংশের কম রোগী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সফল। এটিই বর্তমান বিশ্বের যে কোন দেশের ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মাত্রার তূলনায় খারাপ অবস্থা। ডায়াবেটিসের দীর্ঘকালীন জটিলতাগুলোতেও বাংলাদেশী রোগীরা বেশি ভুগছে। বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতি হলো, এখানে অতি অল্প বয়সে মানুষ (ছেলে-মেয়েরা) টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরী ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে। বাংলাদেশের আরও একটি বড় ঝুঁকি হলো- বিপুল সংখ্যক গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রোগী, পৃথিবীতে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার বাংলাদেশে তুলনামূলক বেশি।

ডায়াবেটিসের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রতি বছর নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়ে থাকে। এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) দিবসটি উদযাপন করে থাকে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে-‘ডায়াবেটিসের উপর নজর রাখুন’।

এতে যে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা হলো- ডায়াবেটিসের লক্ষণ নেই এমন প্রাপ্ত বয়স্ক লোককেও ডায়াবেটিস আছে কিনা তা পরীক্ষা করে জেনে নেওয়া। যাতে ডায়াবেটিসের জটিলতা দেখা দেবার আগে তাকে সঠিক চিকিৎসার আওতায় আনা যায়। একই সঙ্গে ডায়াবেটিসের লক্ষণ বিহীণ সকল মানুষকে সচেতন করা। এছাড়া যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদেরকে সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা, তাদের ইতোমধ্যেই ডায়াবেটিস সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে কিনা তা দেখা, চিকিৎসা সংক্রান্ত পদক্ষেপ সঠিকভাবে নেওয়া হয়েছে কিনা, তা নজরে রাখা।

Tuesday, November 8, 2016

স্বপ্নের আরও কাছে আবুল বাজনদার

দুই হাতে গাছের শাখা-প্রশাখার মতো আঁচিলের ভার থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে আর মাস খানেকের অপেক্ষা। ছোট কয়েকটি অস্ত্রোপচারের পরই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার স্বপ্ন ছুঁতে পারবেন ‘বৃক্ষমানব’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া পাইকগাছার আবুল বাজনদার। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানান, বাজনদারের দুই হাতে পাঁচ বার করে দশটি আর দুই পায়ে দুইবার করে চারটি অস্ত্রোপচার হয়েছে।
 
দুই হাতে গাছের শাখা-প্রশাখার মতো আঁচিল নিয়ে জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছিলেন আবুল বাজনদার । অস্ত্রোপচারের পর অগাস্টে আঁচিলমুক্ত।
চিকিৎসক সামন্ত লাল বলেন, “আবুল এখন ৯৫ শতাংশ সুস্থ আর দুই হাতে চারটি ও দুই পায়ে দুটি ছোট অপারেশন করলেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। এক মাসের মধ্যে আবুল ‍পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তারপর তাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেনেওয়ার চেষ্টা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় আবুলের খোঁজ রেখেছেন।”

বিরল ‘এপিডারমোডাইসপ্লাসিয়া ভেরাসিফরমিস’ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০ কেজি ওজনের আঁচিল নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন খুলনার ২৫ বছর বয়সী এই যুবক। এরপর থেকে সরকারি খরচে চলে তার চিকিৎসা। ১৪ বার অস্ত্রোপচারের পর এখন তার হাত-পায়ে আর কোনো আঁচিল নেই।

রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেলে কথা হয় আবুল বাজনদারের সঙ্গে। স্ত্রী হালিমা বেগম আর তিন বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস পাশেই ছিলেন এসময়। হাসিমুখে আবুল জানালেন, অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন বাড়ি ফেরার। শৈশবের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফেরার। হালিমা বলেন, “ওর জীবন এভাবে ফিরে পাব কোনোদিন ভাবতে পারিনি। সত্যি এতো ভালোলাগার কথা প্রকাশ করতে পারব না।”

ছোট বেলায় খালাতো ভাই সাদেক ও এরশাদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতিটাই বেশি টানে আবুলকে। “সুস্থ্ হয়ে বাড়ি ফিরে তাদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে ঘুরতে-ফিরতে পারব- এটা ভাবতেই কেমন জানি ভালো লাগছে।” নিজের দুই হাত দেখিয়ে বলেন, “আমি যখন এখানে এসেছিলাম তখন কেমন ছিলাম আর এখন দেখেন কত পরিবর্তন হয়েছে। মনে হয়ে দুই হাত, পায়ে কিছুই নাই।”
 
আবুল বাজনদারের সঙ্গে স্ত্রী হালিমা বেগম আর তিন বছর বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস
প্রায় দশ মাস ধরে হাসপাতালে থাকায় চিকিৎসক, নার্স, দর্শনার্থী, সাংবাদিক- সবার পরিচিত এই দম্পতি। আর কিছুদিন পর হাসপাতাল ছেড়ে যেতে হবে, ভাবতেই কিছুটা যেন মন খারাপ হয় আবুলের। “প্রায় দশ মাস এই ঘরে আছি। এখানকার ডাক্তার, আপনারা সবাই আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন। অনেক দেখেছেন।ছেড়ে যেতে আমার কষ্ট হবে। কিন্তু সুস্থ্ হয়ে বাড়ি যাব; রাস্তায় স্বাভাবিক মানুষের মতো হাঁটতে পারব-সেই অপেক্ষা অনেক বড়।”

বলতে বলতে বাষ্পরুদ্ধ হয়ে আসে আবুলের কণ্ঠ- “এখানে শুধু আমি চিকিৎসাই পাইনি, পড়াশোনাও পেয়েছি।” একটি স্কুল ব্যাগ দেখিয়ে বললেন, “আমার মেয়ে জান্নাত অ, আ, ক, খ আর ছড়া, কবিতা বলতে পারে। এখানে বসে আমার স্ত্রী জান্নাতকে এগুলো শিখিয়েছে। বাড়িতে থাকলে কী এসব হতো?”

সরকারি খরচে চিকিৎসার সঙ্গে বাড়ি ও চাষাবাদের জমি কিনতে এক চিকিৎসকের কাছ থেকে টাকা পেয়েছেন আবুল।

কৈশোরে বাবার সঙ্গে ভ্যান চালিয়ে সংসারের ঘানি টানার মধ্যেই রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের শুরু। এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে ব্যবসা করার পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছিলেন আবুল বাজনদার। রোববার আবারও মনে করিয়ে দিলেন সেই স্বপ্নের কথা।
 
--কামাল হোসেন তালুকদার

Friday, November 4, 2016

পাইকগাছায় দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখছে ৩৭৩ সমবায় সমিতি

নারীর ক্ষমতায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, স্বনির্ভরতা অর্জন ও আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে দেশের সমবায় সংগঠনগুলো। সমবায়ের তীর্থস্থান হিসাবে খ্যাত খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় রয়েছে একটি সমবায় ব্যাংকসহ ৩৭৩ টি সমবায় সমিতি। যার সমবায়ীর সংখ্যা ২০ হাজার ৬৮৫ জন। ইতোপূর্বে এ উপজেলা থেকে ২ ব্যক্তি ও ২টি প্রতিষ্ঠান জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছে। সংগঠনের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে এ অঞ্চলের অর্ধেক জনগোষ্ঠি। সমবায়ের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যাতে এ অঞ্চলে সমবায়ের কাছে দারিদ্রতা পরাজিত হবে বলে ধারনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই মনে করেন সমবায় হতে পারে দারিদ্র বিমোচনের মূল চাবিকাঠি। 

৫ নভেম্বর সারাদেশে পালিত হচ্ছে ৪৫তম জাতীয় সমবায় দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে পাইকগাছা উপজেলা সমবায় বিভাগ ও সমবায়ীবৃন্দ র‌্যালী, আলোচনা সভাসহ আয়োজন করেছেন নানা অনুষ্ঠানের।



১৯০৪ সালে কো-অপারেটিভ ব্যাংকের মাধ্যমে সুন্দরবন সংলগ্ন এ অঞ্চলে সর্বপ্রথম শুরু হয় সমবায় কার্যক্রম। এরপর ১৯০৯ সালে জগৎ বিখ্যাত বিজ্ঞানি আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়) তার জন্মস্থান উপজেলার রাড়ুলীতে প্রতিষ্ঠা করেন রাড়ুলী কো-অপারেটিভ ব্যাংক। এরপর ধীরে ধীরে এলাকার মানুষ ঝুঁকে পড়ে সমবায় আন্দোলনে।

বর্তমানে সমবায় কার্যক্রম এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে, এমন কোন পাড়া মহল্লা নেই যেখানে সমবায় সংগঠন নেই। বর্তমানে উপজেলায় সমবায় সমিতির সংখ্যা ৩৭৩টি। এসব সমবায়ের শেয়ার ও সঞ্চয় আমানতের পরিমাণ ১০ কোটিরও বেশি। এলাকার মোট জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠি সমবায়ের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। যার মধ্যে ৪০ ভাগই হচ্ছে নারী।

সমবায়ের মাধ্যমে সঞ্চয় গচ্ছিত করে আর্তনির্ভরশীল হয়েছে হাজারো মানুষ। সমবায় থেকে ঋণ নিয়ে অনেকেই কিনছে ভ্যান, নসিমন, করিমন, মোটরসাইকেল, মাহেন্দ্রসহ বিভিন্ন যানবাহন। এতে করে অনেক বেকার যুবকের সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান। কৃষি, মৎস্য ও ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ।

সমবায়ের নানামুখী এসব পদক্ষেপের কারনে প্রতিনিয়ত কমছে বেকারত্বের সংখ্যা। হ্রাস পেয়েছে সামাজিক অপরাধের প্রবনতা। নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকায় সমবায়ে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে ধনী, গরীব, মধ্যবিত্তসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।

আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুবাদে ইতোপূর্বে এ উপজেলা থেকে দু’ব্যক্তি ও দু’টি প্রতিষ্ঠান জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। সমবায়ী হিসাবে ২০০০ সালে ষোলআনা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি প্রয়াত মেয়র আলহাজ্ব মাহাবুবুর রহমান এবং ২০০৩ সালে ফসিয়ার রহমান কৃষি ও জনকল্যাণ সমবায় সমিতির প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমান এবং প্রতিষ্ঠান হিসাবে ১৯৯৫ সালে ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি ও ২০১১ সালে ফসিয়ার রহমান কৃষি ও জনকল্যান সমবায় সমিতি এ পুরস্কার অর্জন করেন।

এ দু’টি সংগঠনের পাশাপাশি খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমাবায় সমিতি, জিরবুনিয়া সমবায় সমিতি, জোনাকি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি ও সলুয়া পল্লী দুগ্ধ সমবায় সমিতিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন সুনাম অর্জন করেছে। ২০১৪ সালে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় সমবায় মেলায় স্থান করে নেয় কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি।

সলুয়া পল্লী দুগ্ধ সমবায় সমিতির কথা না বললেই নয়, দু’বছর পূর্বে সমবায় বিভাগের প্রাক্তন সচিব মিহির কান্তি মজুমদারের প্রচেষ্ঠায় প্রতিষ্ঠা হয় এ সংগঠনটি। সংগঠনের ১২৫ দলিত সম্প্রদায়কে বিনাসুদে প্রদান করা হয় ১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ঋন। ঋনের টাকায় সংগঠনের সদস্যরা শুরু করেন গাভী পালন। বর্তমানে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে ১ হাজার লিটার দুধ। উৎপাদিত দুধ সরবরাহ করা হয় মিল্কভিটাসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে। এভাবেই এলাকার প্রতিটি পাড়া মহল্লায় গড়ে ওঠা সমবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সামাজিক নিরাপত্তায়।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মুকুন্দ বিশ্বাস জানান, এলাকার সমবায় সমিতিগুলো এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ যে, এখানে তেমন কোন ক্রেডিট নির্ভর এনজিও’র কার্যক্রম নাই। সমবায়ের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যাতে সমবায়ের কাছে দারিদ্রতা পরাজিত হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ-উল-মোস্তাক মন্তব্য করেন।

--মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা।