Thursday, September 4, 2014

ইঞ্জিনচালিত ট্রলি চলাচলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাইকগাছার গ্রামীণ সড়ক

ইঞ্জিনচালিত ট্রলিসহ অবৈধ যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত এবং যত্রতত্র চলাচলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাইকগাছার গ্রামীণ সড়ক। এ কারণে বারবার সংস্কার করেও সড়কগুলো টেকানো যাচ্ছে না। ফলে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। আর জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়ছে।

ইঞ্জিনচালিত ট্রলিচালক পাইকগাছার সরোজ জানান, তিনি প্রায়ই ট্রলিতে করে ৫০ কেজি ওজনের ৬৫ থেকে ৭০ বস্তা চাল সাতক্ষীরা থেকে পাইকগাছায় আনেন। ট্রাকচালক দেলোয়ার জানান, সাত টন মালামাল বহনের বৈধতা থাকায় বড় ট্রাকগুলো পুলিশের বাধার কারণে সব সড়কে প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু ইঞ্জিনচালিত ট্রলিতে গ্রামীণ রাস্তায় ৭০ মণ মালামাল বহন চলছে বিনা বাধায়।

জানা গেছে, ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের যত্রতত্র ও অধিক মালামাল নিয়ে চলাচলের কারণে ১৮ মাইল এলাকা থেকে পাইকগাছা সদর পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।

এ অবস্থায় তালা, পাইকগাছা ও কয়রাবাসীর যাতায়াতের সংক্ষিপ্ত পথ বাইপাস সড়ক। জাতপুর বাজার, মোহনদিয়া হয়ে কাশিমনগর দিয়ে বের হওয়া ১০ কিলোমিটার সড়কটি এখন ভয়াবহ অবস্থায় রয়েছে। মূল সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলি, নসিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনই এ সড়ক দিয়ে অনায়াসে চলছে।

এসব যানবাহন চলাচলের কারণে এ সড়কটি ২০-২২ স্থানে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রলির আঘাতে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয় যেন ট্রাক্টর দিয়ে রাস্তা খোঁড়ার কাজ করা হচ্ছে।

২০১৩ সালে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাইল থেকে কমিলমুনির-গোলাবাড়ি পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেরামত করা হলেও তা বেশি দিন টেকেনি। ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তা উঁচুকরণ ও কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। বর্ষার কারণে এ কাজ গতি পাচ্ছে না। অবশিষ্ট ২৭ কিলোমিটারও ভাঙা। ফলে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

কপিলমুনির ট্রলিচালক হাফিজুর রহমান জানান, পাইকগাছায় ২০টি ট্রলি রয়েছে। আর নসিমনসহ ইঞ্জিনচালিত গাড়ির সংখ্যা ২০০র বেশি। পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার আক্কাস আলী বলেন, মহাসড়ক ছাড়া অন্য সড়কে ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল করতে পারছে। তবে, ট্রলিসহ ইঞ্জিনচালিত কিছু যানবাহনের কারণে গ্রামীণ সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পাইকগাছায় কড়ূলিয়া খেয়াঘাটের বেহাল দশা, যাত্রীদের দুর্ভোগ

পাইকগাছা পৌরসভার গা ঘেঁষা শিবসা নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় নদীতে ভাটার সময় কড়ূলিয়া-ওয়াপদা খেয়াঘাট দিয়ে পারাপার হতে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে। খেয়াঘাট এলাকায় বিস্তীর্ণ চর জেগে ওঠায় ও উত্তর পাড়ে কোন ঘাট না থাকায় পারাপাররত যাত্রীদের হাটুকাঁদা মাড়িয়ে পাড়ে উঠতে হচ্ছে। 

এদিকে পৌরসভাধীন কড়ূলিয়া খেয়াঘাটটি প্রতি বছর কর্তৃপক্ষ নামমাত্র টাকায় ইজারা প্রদান করায় ঘাট মেরামতের ব্যাপারে তেমন কোন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা বলে জানা গেছে।


কড়ূলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও পৌর বাজারের কাঁকড়া ব্যবসায়ী অজয় মন্ডল, গণেশ মন্ডল, পরিমল মন্ডল, মনোজ মন্ডল, দিলীপ মন্ডল ও খোকন মন্ডল বলেন, প্রতিদিন কড়ূলিয়া গ্রাম থেকে দু’শতাধিক মানুষ ওই খেয়াঘাট পার হয়ে উপজেলা সদরে আসে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কাজে।

তাছাড়া কোমলমতি ছোট-বড় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন যাতায়াত করছে উক্ত খেয়াঘাট দিয়ে। নদীর উত্তর পাড়ে সুষ্ঠু যাতায়াতের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই ছাত্র-ছাত্রীদের জামাকাপড়, বাই-খাতাপত্র ভিজে নষ্ট হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, যেহেতু নামমাত্র টাকায় ঘাটটি ইজারা প্রদান করা হয়, সেহেতু ইজারা না দিয়ে খেয়াঘাটটি উম্মুক্ত রাখলে আমরা (এলাকাবাসি) নিজেরাই ঘাট সংস্কারের মাধ্যমে সুষ্ঠু যাতায়াতের ব্যবস্থা করে নেব। অবশ্য এই মর্মে অতিসম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, বিষয়টি পরিষদের মাসিক সভায় উত্থাপন করা হবে। সেখানে কারো আপত্তি না থাকলে ইজারা বাতিলপূর্বক খেয়াঘাটটি উম্মুক্ত ঘোষণা করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

সেই যে গেলে আর তুমি ফিরে এলে না....

অব্যাহত লোডশেডিংয়ে নাকাল পাইকগাছাবাসী, ব্যহত হচ্ছে উন্নয়ন কর্মকান্ড


পাইকগাছায় পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন ট্রিপ ও দীর্ঘস্থায়ী লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত ও সার্বিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধীনস্থ জোনাল অফিসের আওতাধীন (পাইকগাছা-কয়রা) প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে এ অঞ্চলের গ্রাহকরা চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
 
স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ, দিনে ১০ থেকে ১৫ বার বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করে। আকাশে মেঘ জমতে দেখলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে ফিরে আসার কোন লক্ষণ দেখা যায় না। বিদ্যুতের এই খাম খেয়ালীপনায় গ্রাহকদের জীবন যাত্রা মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নাকাল হয়ে পড়েছে পাইকগাছাবাসী। 

ঘন ঘন ট্রিপ ও দীর্ঘস্থায়ী লোডশেডিংয়ের ফলে ব্যবসা বানিজ্যে ধস নেমেছে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া থমকে গেছে। বিদ্যুৎ ঠিক মত না থাকায় বরফ মিলগুলিতে বরফ উৎপাদন হচ্ছে না। এর ফলে পাইকগাছা অঞ্চলের রপ্তানিযোগ্য চিংড়িসহ অন্যান্য মাছ ঠিকমত সংরক্ষণ না করতে পারায় ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

পৌর বাজারের কম্পিউটার ও স্টুডিও ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৪/৫ বার বিদ্যুতের লোডশেডিং চলে। সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ চলে যায়, রাত ৯টায় আসে।

বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে যে সব ঔষধ ফ্রিজে রাখা হয় তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্যাথলজি ব্যবসায়ীরা বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় রোগিদের পরীক্ষা নীরিক্ষার কার্যক্রম সময়মত করা যাচ্ছে না। এর ফলে চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় অভিভাবক মহল তাদের ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। পল্লী বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিংয়ের হাত থেকে রেহাই পেতে পাইকগাছা জোনাল অফিস, খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকার গ্রাহকরা।

কপিলমুনিতে অভিমানী যুবকের আত্মহত্যা

''অর্পা’র মা, আমার মেয়েটিকে কষ্ট দিওনা, আমি আর তোমার কাছে কিছইু চাইবো না।'' স্ত্রীর উপর অভিমান করে এক সন্তানের জনক রিপ্রেজেন্টেটিভ লিটন আত্মহত্যা করার পূর্বে একটি চিরকুটে স্ত্রীর উদ্দেশ্যে উপরোক্ত কথাটি লিখে যান।

শুধু তাই নয়, অন্য একটি চিরকুটে মাকে উদ্দেশ্য করে লিখে যান ''মা আমাকে ক্ষমা করো……।'' অভিমান করে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে খুলনার কপিলমুনিতে। লিটন দাশ কপিলমুনির ফকিরবাসা মোড় এলাকার সুকুমার দাশের ছেলে।

জানা যায়, ৩৩ বছর বয়সী কপিলমুনির লিটন দাশ একমি ওষুধ কোম্পানীতে রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দাম্পত্য জীবনে লিটন ৩ বছর বয়সী কন্যা অর্পার জনক। চাকুরী জীবনে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চললেও স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যের সূত্র ধরে অভিমান করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কপিলমুনির রেজাকপুর গ্রামের একটি মৎস্য ঘেরের পাশে তুতে পান করেন।

এ সময় অসহ্য যন্ত্রনায় চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে কপিলমুনি হাসপাতালে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লিটনের শরীরের পরিহিত পোশাকের পকেটে তার মা ও স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লেখা চিরকুট পাওয়া যায়। এদিকে বুধবার মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অবশেষে চার্জশীট থেকে বাদ পড়ছে পাইকগাছার রিমুর নাম

অবশেষে জেলা কারাগারে আট মাসের হাজতবাসী মাসুদুর রহমান রিমুর নাম চার্জশীট থেকে বাদ পড়ছে। আট মাসের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যায় গাছ কাটার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নেই। ডিসেম্বরে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাস্তার পাশে রাস্তা ও গাছ কাটার সময় সে কারাগারে আটক ছিল।

পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার আক্কাস আলীর জানান, গেল বছরের ১৩ ডিসেম্বর রাস্তা ও গাছ টাকা মামলা রিমুর সম্পৃক্ততা নেই। এ ব্যাপারে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দিন জানান, সাক্ষীদের তথ্যের ভিত্তিতে বাতিখালী গ্রামের মাসুদুর রহমান রিমুর নাম অন্তর্ভূক্ত হয়। আট মাসের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া যায় ঘটনার দিনে সে জেলা কারাগারে আটক ছিল। চার্জশীট থেকে তার নাম বাদ পড়বে।

উল্লেখ্য, পাইকগাছা উপজেলার বাতিখালী গ্রামের মাসুদুর রহমান রিমু একটি মামলায় গেল বছরের ১৪ নভেম্বর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। ২৭ জানুয়ারি তার জামিন হয়। জেল হাজতে থাকাকালীন সময় উপজেলার মানিকতলা মোড়ে গাছ কাটা মামলায় তাকে আসামি হয়।