২০৫০ সালের মধ্যে ১০ উপজেলার বিস্তৃীর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য পরিণতি খুলনা উপকূলের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী তাবৎ উপকূলে প্রতি বছর ১ সেন্টিমিটার করে সমুদ্রের উচ্চতা বাড়ছে। সে হিসেবে ২০২০ সালের মধ্যে উচ্চতা বাড়বে ১০ সেন্টিমিটার এবং সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাবে মোট ভূমির ২% বা ২৫০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।
একইভাবে ২০৫০ সালে উচ্চতা বাড়বে ২৫ সেন্টিমিটার এবং লোনা পানিতে তলিয়ে
যাবে ৪% ভূমি বা ৬৩০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা। ২১০০ সাল পর্যন্ত উচ্চতা বাড়বে
১ মিটার এবং সমুদ্রগর্ভে বিলীন হতে পারে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভূমি বা ২৫
হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা।
এর ফলে খুলনার কয়রা, দাকোপ, বাগেরহাটের মংলা,
মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, বরিশাল ও পটুয়াখালীর উপকূলীয়
উপজেলাসমূহ সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, এ
কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা এবং সংখ্যা বাড়বে। এ
সময় ১৯৯১ সালে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও ১০ শতাংশ বেশী তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ের
আশংকা করা হচ্ছে যার বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ঘন্টায় ২২৫ থেকে ২৪৮
কিলোমিটার পর্যন্ত। জলোচ্ছ্বাস হতে পারে ৭ দশমিক ১ মিটার হতে ৮ দশমিক ৬
মিটার পর্যন্ত যা ২১০০ সাল নাগাদ ১০ মিটার বা ৩০ ফুটের কাছাকাছি পৌঁছে
যেতে পারে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের সম্ভাব্য এই উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশে বন্যার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিবে। ২০২০ সাল নাগাদ ২০ শতাংশ এলাকায় বন্যা বিস্তৃত হবে। ২০৫০ সাল নাগাদ মেঘনা এবং পদ্মা অববাহিকায় মৌসুমী বন্যা বৃদ্ধি পাবে, ব্যাপক ফসলহানি হবে আর ২০৫০ সালের মধ্যে তা’ ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম এবং জীববৈচিত্র্য তীব্রতর ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ২০২০ সালের ১৫% সুন্দরবনের এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। একইভাবে ২০৫০ সালে ৪০ শতাংশ সুন্দরবনের এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা হচ্ছে। ২১০০ সাল নাগাদ সুন্দরবনের যে আশংকা করা হচ্ছে তা’ খুবই বিপদজনক। এ সময় সুন্দরবন পানির নিচে হারিয়ে যেতে পারে।
উপকূলীয় অন্যান্য দ্বীপ, মৎস্য অভয়ারণ্য এবং প্রজনন ক্ষেত্রগুলিও বিপদজনকভাবে উৎপাদন হ্রাস করতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়, এ সময় লবণাক্ততাও বাড়তে থাকবে। কৃষি প্রধান দেশের কৃষি উৎপাদনে ধস নামতে পারে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের সম্ভাব্য এই উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশে বন্যার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিবে। ২০২০ সাল নাগাদ ২০ শতাংশ এলাকায় বন্যা বিস্তৃত হবে। ২০৫০ সাল নাগাদ মেঘনা এবং পদ্মা অববাহিকায় মৌসুমী বন্যা বৃদ্ধি পাবে, ব্যাপক ফসলহানি হবে আর ২০৫০ সালের মধ্যে তা’ ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম এবং জীববৈচিত্র্য তীব্রতর ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ২০২০ সালের ১৫% সুন্দরবনের এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। একইভাবে ২০৫০ সালে ৪০ শতাংশ সুন্দরবনের এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা হচ্ছে। ২১০০ সাল নাগাদ সুন্দরবনের যে আশংকা করা হচ্ছে তা’ খুবই বিপদজনক। এ সময় সুন্দরবন পানির নিচে হারিয়ে যেতে পারে।
উপকূলীয় অন্যান্য দ্বীপ, মৎস্য অভয়ারণ্য এবং প্রজনন ক্ষেত্রগুলিও বিপদজনকভাবে উৎপাদন হ্রাস করতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়, এ সময় লবণাক্ততাও বাড়তে থাকবে। কৃষি প্রধান দেশের কৃষি উৎপাদনে ধস নামতে পারে।
বঙ্গেপসাগরের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের উপকূলের
বিপদাপন্নতা সংক্রান্ত জাতিসংঘ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের অপর এক রিপোর্টে
বলা হচ্ছে, ২১০০ সাল নয়, ২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উপকূলে ১ দশমিক ৫
মিটার বা দেড় মিটার সমুদ্রের উচ্চতা বাড়বে।
এতে ২২ হাজার বর্গ কিলোমিটার বা ১৬% ভূমি তলিয়ে যাবে এবং ১৭ মিলিয়ন বা মোট জনসংখ্যার ১৫% মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তবে বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্টে অবশ্য ২১০০ সালের মধ্যে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্টের অপর এক রির্পোটে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা বাড়বে শূন্য দশমিক ৩ মিটার হতে ১ দশমিক ৫ মিটার বা সাড়ে ৪ ফিট পর্যন্ত। নাপার অপর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে ১৪ সেঃমিঃ, ২০৫০ সালে ৩২ সেঃমিঃ এবং ২১০০ সালে ৮৮ সেঃমিঃ পর্যন্ত সাগরের উচ্চতা বাড়বে।
এছাড়াও সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয়টিতে খুলনা উপকূলের বিপদের কথা উল্লেখ রয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট এবং ভালনারেবেলিটি’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার উপকূল সংলগ্ন কমপক্ষে ১০ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ২ থেকে ৩ ফুট লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ারও আশংকা রয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে উপকূলজুড়ে যে বাঁধ রয়েছে তা’ এখনই প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে। এই ঝুঁকি অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪২৭১ কিলোমিটার উপকূলীয় বাঁধ ধ্বংস হয়ে যাবে। ২০৫০ সালের মধ্যে এই ঝুঁকি আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে ১৩,৯৯৫ কিলোমিটারে পৌঁছাবে।
এতে ২২ হাজার বর্গ কিলোমিটার বা ১৬% ভূমি তলিয়ে যাবে এবং ১৭ মিলিয়ন বা মোট জনসংখ্যার ১৫% মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তবে বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক রিপোর্টে অবশ্য ২১০০ সালের মধ্যে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভূমি তলিয়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিপার্টমেন্ট অব এনভায়রনমেন্টের অপর এক রির্পোটে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা বাড়বে শূন্য দশমিক ৩ মিটার হতে ১ দশমিক ৫ মিটার বা সাড়ে ৪ ফিট পর্যন্ত। নাপার অপর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে ১৪ সেঃমিঃ, ২০৫০ সালে ৩২ সেঃমিঃ এবং ২১০০ সালে ৮৮ সেঃমিঃ পর্যন্ত সাগরের উচ্চতা বাড়বে।
এছাড়াও সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির বিষয়টিতে খুলনা উপকূলের বিপদের কথা উল্লেখ রয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট এবং ভালনারেবেলিটি’ শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার উপকূল সংলগ্ন কমপক্ষে ১০ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা ২ থেকে ৩ ফুট লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ারও আশংকা রয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে উপকূলজুড়ে যে বাঁধ রয়েছে তা’ এখনই প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে। এই ঝুঁকি অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৪২৭১ কিলোমিটার উপকূলীয় বাঁধ ধ্বংস হয়ে যাবে। ২০৫০ সালের মধ্যে এই ঝুঁকি আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে ১৩,৯৯৫ কিলোমিটারে পৌঁছাবে।
আরও বলা
হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সৃষ্ট ভবিষ্যত দুর্যোগে এই
বাঁধ তাসের ঘরের মতই গুঁড়িয়ে যেতে পারে। ঘূর্ণিঝড় আইলায় তার কিছুটা ইঙ্গিত
পাওয়া যায়। আর এই আশংকা যদি সত্যে পরিণত হয় তাহলে সমুদ্রঘনিষ্ঠ ৭২০
কিলোমিটারব্যাপী ‘কোস্ট লাইন’ বরাবর জালের মত বিস্তৃত উপকূলীয় বাঁধসহ দেশের
বন্যাপ্রবণ এলাকার বৃহৎ নদী অববাহিকার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধসমূহের সিংহভাগই
তছনছ হয়ে যাবে বলে আশংকা প্রকাশ করা হচ্ছে।
সার্বিক অবস্থায় বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য পরিণতিতে দারুণ বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে উপকূলের চিরচেনা হাজার বছরের কৃষি, পরিবেশ-প্রতিবেশ,পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকাসহ ৩ কোটি মানুষের টিকে থাকার অবলম্বন।
জলবাযু পরিবর্তনের এই আঘাত আপাতদৃষ্টিতে নিরব মনে হলেও তা’ ক্রমেই বিধ্বংসীরূপে অবির্ভূত হতে শুরু করেছে। সুতরাং ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ অভিযোজন কৌশলের মাধ্যমে টিকে থাকার প্রচেষ্টাই প্রধান দাওয়াই বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
সার্বিক অবস্থায় বলা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য পরিণতিতে দারুণ বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে উপকূলের চিরচেনা হাজার বছরের কৃষি, পরিবেশ-প্রতিবেশ,পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকাসহ ৩ কোটি মানুষের টিকে থাকার অবলম্বন।
জলবাযু পরিবর্তনের এই আঘাত আপাতদৃষ্টিতে নিরব মনে হলেও তা’ ক্রমেই বিধ্বংসীরূপে অবির্ভূত হতে শুরু করেছে। সুতরাং ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ অভিযোজন কৌশলের মাধ্যমে টিকে থাকার প্রচেষ্টাই প্রধান দাওয়াই বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।