Saturday, August 30, 2014

কয়রা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার হাসমত আলীর বিরুদ্ধে....

নারী কর্মচারীকে মারপিট করার অভিযোগ


কয়রা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (ইউএফপিও) চৌধুরী হাসমত আলীর বিরুদ্ধে একই অফিসের নারী কর্মচারীকে মারপিট, অশ্লীল গালিগালাজ ও অসদাচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মনিরা খাতুন, সংশ্লিস্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় পরিচালক ও উপ-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মনিরা খাতুন সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগদানের পর অফিসের হিসাব শাখাসহ গুরুত্বপূর্ণ দু’টি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা পরিবার পরিককল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরি হাসমত আলী কাজের অজুহাত দেখিয়ে অনেক রাত পর্যন্ত তাকে অফিসে থাকতে বাধ্য করেন।

তিনি বেশিরভাগ সময় অফিস না করে খুলনায় অবস্থান নেয়ার ফলে অফিসিয়াল কাজকর্ম জট লেগে যায়। পরবর্তীতে ফাইল সই স্বাক্ষর করাতে গেলে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ তার সাথে রাত্রে বাসায় থাকতে বলেন। এ প্রস্তাবে মনিরা রাজি না হওয়ায় চাকুরীচুত্য করার ভয়ও দেখান। সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে সরিয়ে দিতে তিনি ইউনিয়ন পরিদর্শক এসএম হেনরী কিসিঞ্জারের যোগসাজসে মনিরার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে দেন।

তিনি গত ২৭ আগষ্ট তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন কাগজসহ কয়েকটি সাদা কাগজের নিচে মনিরাকে দিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করে নেন। এ সময় মনিরা স্বাক্ষর করতে রাজী না হলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ এমনকি মারপিটও করেন।

এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী মনিরা খাতুন জানান, স্যার অধিকাংশ সময় খুলনায় অবস্থান করেন। যখন অফিসে আসেন তখন আমাকে রাত ১০টা পর্যন্ত অফিসে থাকতে বাধ্য করেন। আমি একজন নারী হিসাবে যাতায়াতের দুরত্ব ও অসুস্থ মায়ের কথা বললে তিনি প্যান্ট-শার্ট পরে অফিসে যাওয়ার কথা বলে এবং প্রয়োজনে খুলনার বাসায় যাওয়ার কথা বলেন। এছাড়াও তার পরিধেয় কাপড়-চোপড় পরিস্কার করে নেন। সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট মারপিট করার ফলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হাসমত আলী জানান, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে সরানোর জন্য এ ধরণের অভিযোগ করা হয়েছে।

পাইকগাছায় পৌর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন সম্পন্ন

আলম সভাপতি, সম্পাদক রেজাউল


পাইকগাছায় পৌর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সংগঠণের কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। মোট ১২০ ভোটারের মধ্যে ১১৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। 

নির্বাচন শেষে প্রাপ্ত ফলাফলে সভাপতি পদে মোঃ আলম গাজী (মই) ৭০ ভোট, সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান সানা (ছাতা) ৫২ ভোট, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম (গোলাম ফুল) ৫৯ ভোট, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহমান গাজী (গরুর গাড়ী) ৫৬ ভোট, কোষাধ্যক্ষ খোকন সরদার (দোয়াত কলম) ৬০ ভোট, সাংগঠনিক সম্পাদক মন্টু কাজী (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), দপ্তর সম্পাদক লিটন শিকদার (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) ও প্রচার সম্পাদক ফেরদাউস সরদার (আম) ভোট ৫১ পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন মোঃ রেজাউল করিম মিন্টু, সহকারী মোহাম্মদ আলী, মোঃ ইব্রাহিম মোল্লা, মোঃ শাহবান আলী গাজী ও মোঃ আসাদুল সরদার। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন এস,আই বাবুল আকতার।

কয়রায় আদিবাসী 'মুন্ডা' সম্প্রদায়ের বিচিত্র জীবন-জীবিকা

দু’শ বছর আগে মুন্ডারা এসেছে ভারতের উড়িষ্যা থেকে। খুলনা জেলার কয়রা থানার দক্ষিণ বেদকাশী, উত্তর বেদকাশী ও কয়রা সদর ইউনিয়নের ৩টি অঞ্চলের কয়েকটি ছোট ছোট গ্রামে এদের বসবাস। একুশ শতাব্দীর দ্বারপ্রান্তে এসেও তারা সভ্যতার আলো থেকে অনেক দুরে। সংখ্যা লঘু এ সম্প্রদায়ের লোক সংখ্যা তিন হাজারে বেশী। এর ভেতর ভোট্রা সংখ্যা ৭০০ এর মত। 

চোলাই মদের নেশার উপর থাকতে দেখা যায় তাদের। পূর্ব পুরুষ থেকে এ নেশা জাতীয় পানি পান করাটাকে তারা ছাড়তে পারেনি। এটাকে তারা বংশগত মর্য্যাদা বলে মনে করে। চোলাই মদের ব্যপারে বৃদ্ধ বিজু মুন্ডা বলেন, পূর্ব পুরুষ থেকে রান্না করা গরম ভাতে বড়ি (জংগলের গাছের শিকড় দিয়ে তৈরী করা) দিয়ে ভাতের হাড়ীর মুখ বেধে মাটিতে পুতে রাখা হয়। কিছুদিন পর ওই হাড়ী মাটির উপরে তোলাহয় তখন হাড়ীর ভাত গলে গিয়ে তরল হয়ে যায়। এটাকেই চোলাই মদ বলা হয়। এই চোলাই মদ মুন্ডা সম্প্রদায়ের লোকেরা ইচ্ছা মত পান করে। আবার কোন কোন বিশেষ দিনে আবাল বৃদ্ধ বনিতা মদের নেশায় মাতোয়ারা হয়ে উঠে। এমনকি মদের নেশায় মুন্ডা পরিবারের সদ্যস্যরা স্বামী, সন্তান, ভাই-বোন ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাই নাচতে থাকে। নাচতে নাচতে অনেকের শরীরে আবারন খুলে গেলেও সেদিকে কারো খেয়াল থাকেনা।

চোলাই মদের সাথে পান করা হয় টাটকা ইদুরে রক্ত এবং পোড়া মাংস (কিছুটা কাবাবের মত)। মুন্ডারা চোলাই মদ তৈরীর পদ্ধতি যানে। এই মদ তারা বিক্রি করে না। বাইরের কেউ পান করতে চাইলে খুশি মনে মুন্ডারা তাকে পান করিয়ে তৃপ্তি পায়।

মুন্ডারা সবাই গরীব। বনের গাছ-গাছালী সংগ্রহ করে দু’শ বছর আগে এ এলাকায় বসত ঘর তৈরী করে সামাজিক ভাবে বাস করছে। এক সময় তাদের অনেক জমাজমি ছিল, সচেনতার অভাবে এলাকার প্রভাবশালী মহল তাদেরকে ফাঁকি দিয়ে ভু-স্বামী বনে গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

জন্ম থেকে মুন্ডারা খুবই পরিশ্রমী, এরা বেকার ঘরে বসে থাকেনা। শ্রম বেচে তারা সংসার চালায়। তাও সঠিক পারিশ্রমিক তারা পায়না, তাই অভাব তাদেও নিত্য সংঙ্গী। আবার অনেকে টাকার নোটের মান বোঝেনা। মহাজন খুশীমত যাহা দেয় তাই নিয়ে নেয়। পারিশ্রমের মূল্য নিয়ে তাদের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়না। মুন্ডারা মনে করে, জন্ম হয়েছে খেটে খাওয়ার জন্য মৃত্যু পয্যন্ত খেটে খেয়ে যেতে হবে।

মুন্ডাদের বাড়ীতে টেলিভিশন নেই। খবরের কাগজ পড়ার আগ্রহ তাদের দেখা যায়না। খবরের কাগজের কথা জানতে চাইলে মুন্ডারা চেনে না। অনেকে রেডিও শোনে। রাজনীতি তারা বোঝেনা। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বররেরা তাদের সরকার। তারা মনে করে এরাই দেশ চালায়। তাদের এলাকায় তেমন কোন বিদ্যালয় নেই। বে-সরকারি সংস্থা প্রদ্বীপন শিশুদের লেখা-পড়া সুযোগের লখ্যে একটা শিশুবিদ্যালয় দিয়েছে।

খাবার পানি হিসেবে পুকুরের পানি ব্যাবহার করে তারা। খেলা যায় গায় মল মুত্র ত্যাগ করতে দেখা যায় তাদের। বাল্যবিবাহ মুন্ডাসম্প্রদায়ের মধ্যে বেশী প্রচলন। অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে বিয়ে দিতে না পারলে মেয়ের বাবা নিজেকে অপরাধী মনে করে। বিয়ের রাতে মেয়েকে বরের সাথে বাসর ঘরে দিয়ে মুন্ডারা আনন্দে মেতে উঠে।

মুন্ডাদের প্রধান আকর্ষন মুরগী পূজা। একটা পোষা মুরগী এক কোপে কেটে মুরগীর রক্ত চারি দিকে ছিটিযে দেবতাকে সন্তুষ্ট করে। মুন্ডারা ভাল ভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেনা। কথা বলার বেলায় তাদের মধ্যে মিশ্র ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়। তাদের নিজেদের মধ্যে যখন কথা হয় সে ভাষা বাইরের কেউ বুঝতে পারেনা।

চোলাই মদ না পান করার জন্য বলা হলে অশোক মুন্ডা বলেন, রক্তমাংসে মিশে যাওয়া এ নেশাটি খুব সহযে ছাড়া সম্ভব নয়। এটা আমাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া। নেশা করাটা আমাদের বংশের ঐতিয্য বলে মনে করা হয়।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আঃ মান্নানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সমাজের শিক্ষিত মানুষ যদি ভালো ভাবে তাদেরকে বোঝাবার চেষ্টা করে এবং তাদেও মাঝে সচেতনতা বোধ আনা যায় তবেই তা সম্ভব হবে।

কয়রায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ

কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বেল্টুর বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভিজিডি কার্ডধারি অতিদরিদ্র ৪০৯ জন মহিলাকে ৩০ কেজি চালের স্থলে ২৫ কেজি চাল বিতরনের মাধ্যমে প্রতিমাসে দুই মেট্রিক টনেরও বেশি চাল আত্মসাত করেছেন তিনি।

এছাড়া ভিজিডি কার্ডধারি মহিলাদের নামে একটি বেসরকারি সংস্থার জমানো ৩৮ হাজার টাকা চেয়ারম্যান আত্মসাত করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের তিন জন মহিলা সদস্য অভিযোগ করেন।

অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই ও আগষ্ট মাসের ভিজিডির চাল বিতরনের সময় সংরক্ষিত তিনটি ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বরগন উপস্থিত থেকে ৪০৯ জন কার্ডধারি মহিলাদের মাঝে চাল বিতরনের সময় এ অনিয়ম ধরা পড়ে। গত ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত চেয়ারম্যান নিজের লোক দিয়ে ভিজিডি কার্ডধারিদের মাঝে চাল বিতরন করে আসছেন।

এতে অনেক ভিজিডি কার্ডধারি মহিলারা তাদের চাল ওজনে কম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি চাল বিতরনের সময় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যরা উপস্থিত থেকে প্রত্যেককে সাড়ে ২৯ কেজি চাল বিতরন কালে ২ হাজার কেজি চাল কম পড়ে। চাল কম পড়ার ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে জানানো হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে মহিলা মেম্বরদেরকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন।

মহারাজপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত একটি ওয়ার্ডের সদস্য নাদিরা রব্বানী বলেন, চেয়ারম্যান গত ১৮ মাস ধরে দুঃস্থদের ঠকিয়ে বিপুল পরিমান চাল আত্মসাত করেছেন। তিনি প্রতি দুই মাস পর গুদাম থেকে চাল উত্তলোনের সময় চার মেট্রিক টন চাল আগেই বিক্রি করে আসেন। ঘটনাটি ধরা পড়ায় এখন তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছেন।

ইউপি সদস্য দিদারুল আলম অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান কেবল ভিজিডির চাল আত্মসাত করছেন তা নয়। গত রমজান মাসে দুঃস্থদের মাঝে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরনের সময় ওজনে কম দিয়ে ১৫ বস্তা চাল প্রকাশ্যে নিজের বাড়ি নিয়ে গেছেন তিনি।

জানতে চাইলে মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বেল্টু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, এর আগে ভিজিডির চাল বিতরনের সময় সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বরগন উপস্থিত ছিলেন। তবে চলতি মাসের চাল বিতরনের সময় কম পড়ার কারন সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন জবাব তিনি দিতে পারেননি।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম হাসান ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন জানিয়ে বলেন, ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

একটি বিশেষ ঘোষণা ::

পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ফুটবল ময়দানে "শহীদ শেখ আবু নাসের স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট" এর জমজমাট ফাইনাল ম্যাচটি আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রোজ শুক্রবার বিকাল ৩ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হবে। 



কেশবপুর ফুটবল একাদশ বনাম আশাশুনির কাপসান্ডা গদাইপুর ফুটবল একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নুরুল হক।

টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল পুরস্কার হিসেবে পাবে ৫০ হাজার টাকা ও রানার্সআপ দল পাবে ২৫ হাজার টাকা। উত্তেজনাকর এই ফাইনাল ম্যাচটি দেখার জন্য আপনারা সবান্ধবে আমন্ত্রিত।