Sunday, March 2, 2014

পাইকগাছায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আ’লীগ মনোনিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ মুজিবুর রহমান সানাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রোববার বিকালে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে এ জরিমানা করেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, প্রার্থীদের নির্বাচন আচারণবিধি পর্যবেক্ষণকালে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মুজিবর রহমান সানার (তালা) প্রতীকের পোষ্টার গদাইপুর বাজারের বিভিন্ন দোকান ও দেয়ালে লাগানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পাইকগাছায় মৃত মুরগীর মাংস বিক্রির অভিযোগে দু’ভাই জেলহাজতে

পাইকগাছায় মৃত মুরগীর মাংস বিক্রি করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সহোদর দু’ভাইকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অহিদুল গাজী ও মনিরুল গাজী নামের দু’ভাই রোববার পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরন করেন।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের আরাজি ভবানীপুর গ্রামের হোসেন আলী গাজীর দু’পুত্র অহিদুল গাজী ও মনিরুল গাজী বাঁকা বাজারে ১৬/১৭টি মৃত মুরগী জবাই করে মাংস বিক্রয়কালে উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর তাদেরকে হাতেনাতে আটক করেন।

এ ঘটনায় উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর উদয় মন্ডল বাদী হয়ে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। যার নং- সিআর ৪২/১৪।

পাইকগাছায় ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষায় ৫০৬ পরীক্ষার্থীর অংশগ্রহন

পাইকগাছা কেন্দ্রে ৫০৬ জন পরীক্ষার্থী ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যাললয়ের অধীন ২০১২ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স পরীক্ষায় শনিবার ইংরেজী ১ম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 


কয়রার কপোতাক্ষ কলেজ, জোবেদা খানম মহিলা কলেজ, খানসাহেব কোমরউদ্দিন কলেজ এবং পাইকগাছার গড়ুইখালী আয়ুব ও মুসা মেমোরিয়াল কলেজ, ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজ এবং কপিলমুনি কলেজের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন বলে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পাইকগাছা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ্ মিহির বরণ মন্ডল জানান।

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ প্রার্থীর লড়াই

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনেকটাই কোনঠাসা হয়ে পড়েছে ১৯ দলীয় জোট মনোনিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের আমির মাওঃ কামাল হোসেন। বিএনপি সমর্থিত একাধিক প্রার্থীর কারনে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকেই মনে করছেন। 

অপরদিকে জামায়াত বিএনপি’র একাধিক প্রার্থীর সুবাদে সুবিধাজনক অবস্থানে আ’লীগের একক প্রার্থী আলহাজ্ব মাওঃ মুজিবর রহমান সানা বলে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন। সবমিলিয়েই ৭ প্রার্থীর প্রচার প্রচারণায় জমে উঠেছে ভাইস চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন।

আগামী ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা নির্বাচনে ১০ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলে আ’লীগের একক প্রার্থী নির্ধারণে পর ইতোমধ্যে ৩ প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রতাহার করে নেয়ায় বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ এ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ প্রার্থী। ৭ প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র ডাঃ টিকেন্দ্র নাথ মন্ডল বাদে আর সকলেই নবাগত হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

(টিউবওয়েল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ দলীয় জোট মনোনিত প্রার্থী ও উপজেলা জামায়াতের আমির মাওঃ শেখ কামাল হোসেন। (তালা) প্রতীকে লড়াই করছেন আ’লীগ মনোনিত স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আলহাজ্ব মাওঃ মুজিবুর রহমান সানা। (টিয়াপাখি) প্রতীক নিয়ে রয়েছেন বিএনপি নেতা মোঃ আব্দুল গফুর। বই প্রতীকে এ্যাড. এসএম মুজিবর রহমান। (উড়োজাহাজ) প্রতীকে যুবদল নেতা শেখ সামছুল আলম পিন্টু। ইউনাইটেড কমিউনিষ্ট নেতা শাহাজান সিরাজ সাজু’র প্রতীক (চশমা) ও মাইক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাঃ টিকেন্দ্র নাথ মন্ডল।

এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে বিএনপি’র একাধিক প্রার্থীর কারনে ১৯ দলীয় জোট মনোনিত প্রার্থী কোনঠাসা হয়ে পড়ছে বলে সাধারণ ভোটাররা ধারনা করছেন। অনেকেই মনে করছেন চেয়ারম্যান পদে জামায়াত বিএনপিকে ছাড় দিলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে ১৯ দলীয় জোট মনোনিত ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীর ক্ষেত্রে। এ ব্যাপারে নির্বাচনে কোন বিরুপ প্রভাব পড়বে না বলে জামায়াত নেতা এ্যাড. আব্দুল মজিদ জানান।

থানা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ্যাড. আবু সাঈদ জানান, সময় স্বল্পতার কারণে অনেক প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রতাহার করতে পারেননি। তবে ইতোমধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন শামছুল আলম পিন্টু এবং মাষ্টার গফুর এর ব্যাপারে সোমবার জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০১৪

আ’লীগ-বিএনপির মাথা ব্যথার কারণ জাতীয় পার্টি


পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রধান ৪টি রাজনৈতিক দল শক্তির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ নির্বাচনে রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপ‘র প্রার্থীর মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী। 

ভোটাররাও প্রার্থীর যোগ্যতার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ অবস্থায় পাইকগাছা উপজেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদের এই নির্বাচনে রং লেগেছে জাতীয় নির্বাচনের।

আগামী ১৫ মার্চ তৃতীয় দফায় পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনেও নিশ্চিত বিজয়ের লক্ষ্যে শুরু থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশ আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে। রাজনৈতিক শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে একক প্রার্থী মনোনীত ও বিদ্রোহীদের নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে ফেলেছে।

প্রার্থীরাও রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারা ভোটারদের সন্তুষ্ট করতে স্থানীয় ইস্যুর পাশাপাশি জাতীয় ইস্যুও তুলে ধরার পাশাপাশি দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি। সবমিলে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পল্লীর এ জনপদে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী। যার মধ্যে সরাসরি রাজনৈতিক দল সমর্থিত প্রার্থী ৪ জন। তারা হলেন, উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ রশিদুজ্জামান মোড়ল, জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর আলী, জাতীয় পার্টি’র উপজেলা সভাপতি ও নাগরিক নেতা মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গির এবং কমিউনিষ্ট পার্টি’র (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষ্ণপদ মন্ডল। এছাড়া কবি আবদার রশিদ ও শেখ সোহরাওয়ার্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩ প্রার্থীর নাম বেশ জোরেসোরে আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা হলেন বিএনপি সমর্থিত এ্যাড. স ম বাবর আলী, আওয়ামী লীগ সমর্থিত রশিদুজ্জামান মোড়ল ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গির।

দল নিরপেক্ষ সাধারণ মানুষের ভোট যে প্রার্থী বেশি আনতে পারবেন, সেই প্রার্থী থাকবেন সুবিধাজনক অবস্থানে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী ও স্থানীয় নাগরিক কমিটি’র সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গির, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। জাতীয় পার্টি বর্তমান ঐক্যমতের সরকারের অংশিদার থাকলেও পাইকগাছা উপজেলা নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থী। ফলে জাতীয় পার্টি’র এই প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য অনেকটাই বুমেরাং।

অন্যদিকে, জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী স্থানীয়ভাবে নাগরিক কমিটির সভাপতি হিসেবে এলাকাবাসীর বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর ভোটের বাক্সে কিছুটা হলেও হানা দেবে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী। তবে জোটবদ্ধ নির্বাচন হওয়ায় বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে জামায়াতের সমর্থন থাকায় এ ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা জনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপি’র প্রার্থী।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, হরিঢালী, কপিলমুনি, লতা, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর, গদাইপুর, রাড়ুলী, চাঁদখালী ও গড়ুইখালীসহ ১০টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬০৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৯৩ হাজার ৪৬৬ জন ও মহিলা ৯২ হাজার ১৩৭ জন। ভোট কেন্দ্র ৬৯টি।

এ নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আ’লীগ সমর্থিত উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান মোড়ল। দোয়াত কলম নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা, সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স.ম বাবর আলী, ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা জাতীয় পার্টি ও পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সদস্য ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, চিংড়ি মাছ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন কবি আবদার রশিদ এবং মাটর সাইকেল প্রতীকে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রর্থী শেখ সোহরাওয়ার্দ্দী।