আ’লীগ-বিএনপির মাথা ব্যথার কারণ জাতীয় পার্টি
পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রধান ৪টি রাজনৈতিক দল শক্তির পরীক্ষায়
অবতীর্ণ হয়েছে। এ নির্বাচনে রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপ‘র প্রার্থীর মাথা
ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী।

ভোটাররাও
প্রার্থীর যোগ্যতার পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ অবস্থায়
পাইকগাছা উপজেলায় স্থানীয় সরকার পরিষদের এই নির্বাচনে রং লেগেছে জাতীয়
নির্বাচনের।
আগামী ১৫ মার্চ তৃতীয় দফায় পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ
নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনেও নিশ্চিত বিজয়ের লক্ষ্যে শুরু
থেকেই রাজনৈতিক দলগুলো বেশ আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে। রাজনৈতিক শীর্ষ
নেতৃত্বের নির্দেশে একক প্রার্থী মনোনীত ও বিদ্রোহীদের নির্বাচনী মাঠ থেকে
সরিয়ে ফেলেছে।
প্রার্থীরাও রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান দলীয়
নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। তারা
ভোটারদের সন্তুষ্ট করতে স্থানীয় ইস্যুর পাশাপাশি জাতীয় ইস্যুও তুলে ধরার
পাশাপাশি দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি। সবমিলে পাইকগাছা উপজেলা
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পল্লীর এ জনপদে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ চেয়ারম্যান
প্রার্থী। যার মধ্যে সরাসরি রাজনৈতিক দল সমর্থিত প্রার্থী ৪ জন। তারা হলেন,
উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ রশিদুজ্জামান মোড়ল, জেলা বিএনপি’র
উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর
আলী, জাতীয় পার্টি’র উপজেলা সভাপতি ও নাগরিক নেতা মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গির
এবং কমিউনিষ্ট পার্টি’র (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষ্ণপদ মন্ডল। এছাড়া কবি
আবদার রশিদ ও শেখ সোহরাওয়ার্দী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে,
চেয়ারম্যান পদে ৬ প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩ প্রার্থীর নাম
বেশ জোরেসোরে আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা হলেন বিএনপি সমর্থিত এ্যাড. স ম বাবর
আলী, আওয়ামী লীগ সমর্থিত রশিদুজ্জামান মোড়ল ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত
মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গির।
দল নিরপেক্ষ সাধারণ মানুষের ভোট যে
প্রার্থী বেশি আনতে পারবেন, সেই প্রার্থী থাকবেন সুবিধাজনক অবস্থানে। এ
ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী ও স্থানীয় নাগরিক কমিটি’র সভাপতি মোস্তফা
কামাল জাহাঙ্গির, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
জাতীয় পার্টি বর্তমান ঐক্যমতের সরকারের অংশিদার থাকলেও পাইকগাছা উপজেলা
নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থী। ফলে জাতীয় পার্টি’র এই প্রার্থী আওয়ামী লীগ
প্রার্থীর জন্য অনেকটাই বুমেরাং।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টি’র
প্রার্থী স্থানীয়ভাবে নাগরিক কমিটির সভাপতি হিসেবে এলাকাবাসীর বিভিন্ন
দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর ভোটের বাক্সে কিছুটা হলেও হানা দেবে জাতীয়
পার্টি’র প্রার্থী। তবে জোটবদ্ধ নির্বাচন হওয়ায় বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে
জামায়াতের সমর্থন থাকায় এ ক্ষেত্রে অনেকটা সুবিধা জনক অবস্থানে রয়েছেন
বিএনপি’র প্রার্থী।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, হরিঢালী,
কপিলমুনি, লতা, দেলুটি, সোলাদানা, লস্কর, গদাইপুর, রাড়ুলী, চাঁদখালী ও
গড়ুইখালীসহ ১০টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে পাইকগাছা উপজেলা
পরিষদ। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬০৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ
৯৩ হাজার ৪৬৬ জন ও মহিলা ৯২ হাজার ১৩৭ জন। ভোট কেন্দ্র ৬৯টি।
এ
নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন আ’লীগ সমর্থিত উপজেলা আ’লীগের
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান মোড়ল। দোয়াত কলম
নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা,
সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স.ম বাবর আলী, ঘোড়া প্রতীক নিয়ে
লড়ছেন উপজেলা জাতীয় পার্টি ও পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল
জাহাঙ্গীর, কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিবি’র
কেন্দ্রীয় সদস্য ও বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, চিংড়ি
মাছ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন কবি আবদার রশিদ এবং মাটর সাইকেল প্রতীকে রয়েছেন
স্বতন্ত্র প্রর্থী শেখ সোহরাওয়ার্দ্দী।