Sunday, August 27, 2017

প্রকাশ্য দিবালোকে ছিনতাইকালে পাইকগাছায় ৩ ছিনতাইকারী আটক

পাইকগাছায় রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর পাইকগাছা এরিয়া ম্যানেজারের প্রায় আড়াই লাখ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার পথে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ ৩ ছিনতাইকারীকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পাইকগাছা উপজেলার কাটাখালী রোডের স্মরণখালাী নামক স্থানে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। 


জানা যায়, উপজেলার কাটাখালী রোডের স্মরণখোলা নামক স্থানে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর পাইকগাছা এরিয়া ম্যানেজার আমিনুর রহমান কোম্পানীর আদায়কৃত ২ লাখ ৩৩ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে ইসলামী ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য পাইকগাছা পৌর সদরে আসছিলেন। পথিমধ্যে পিছু নেয়া ৩ ছিনতাইকারী তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। 

ছিনতাইকারীরা হলো, ঢাকার মুন্সিগঞ্জের মৃত মেছের আলীর ছেলে শাহআলম (৩৫), দাকোপ উপজেলার লক্ষ্মীখোলা গ্রামের ললিত মল্লিকের ছেলে জীবন মল্লিক (৩৫) ও মাদারীপুরের গোয়ালদি গ্রামের শাহজাহানের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৩)। ছিনতাইকারীরা খুলনার গল্লামারী ও নিরালায় বসবাস করে বলে জানা যায়। 

এ ব্যাপারে ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইকারীরা ছিনতাই ছাড়া বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছে বলে ধারণা করছি। তাদের ঠিকানায় খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে।

Thursday, August 24, 2017

পাইকগাছায় মেলার জন্য মাঠ দখল

পাইকগাছা উপজেলা সদরের সরকারি হাইস্কুল মাঠে গত জুন থেকে মেলা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যে মাঠটি টিন দিয়ে ঘেরা হয়েছে। তবে অনুমতি না পাওয়ায় সেখানে এখনো মেলা শুরু হয়নি।
পাইকগাছা উপজেলায় খেলাধুলার জন্য সবচেয়ে বড় মাঠ হচ্ছে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। স্থানীয়ভাবে এটি হাইস্কুল মাঠ নামে পরিচিত। মেলার আয়োজন করায় সেখানে খেলাধুলা বন্ধ। প্রতিবছর এ সময় একটি বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মাঠ বন্ধ থাকায় ওই আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ওই মাঠে ‘বস্ত্র ও হস্ত কুটির শিল্প মেলা’র আয়োজন করছে দিনাজপুরের মনতা ডেকোরেটর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলা আয়োজনের কাজ জুনের মাঝামাঝি শুরু হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে ১১ জুলাই। জুলাইয়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় মেলার অনুমোদন না দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া মনতা ডেকোরেটরের আবেদনপত্রে সুপারিশ করেছেন সাংসদ শেখ মো. নূরুল হক।
১৬ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সীমানার বাইরে মাঠটির অবস্থান। মাঠের পুরোটাই টিন দিয়ে ঘেরা। সামনের অংশে রয়েছে বড় সুসজ্জিত প্রবেশপথ। পাশেই টিকিট কাউন্টারের দেয়ালে মেলার প্রবেশমূল্য লেখা। মূল গেটের সামনে রয়েছে ভেতরে ঢোকার ছোট একটি পথ। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি দোকান পুরোপুরি সাজানো।
মনতা ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাংসদের অনুমতি নিয়ে মাঠে মেলার কাজ শুরু করা হয়েছিল। সবকিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না।
মনতা ডেকোরেটরের মালিক মনতাজুল ইসলাম বলেন, ওই মাঠ যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সাংসদের ভাইপো শেখ মাসুদুর রহমান মেলার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন।
মাসুদুর রহমান পাইকগাছা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি মেলার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই মাঠে মেলা করার জন্য তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি সাংসদের কাছে যেতে বলেছিলাম। তাঁরা সাংসদের কাছে আবেদন করেন। তিনি অনুমতি দিয়ে (সুপারিশ করে) সেটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠান। শুনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেলার অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছেন। শোকের মাসের কারণে এত দিন মেলার অনুমতি পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার খুলনা-৬ আসনের সাংসদ শেখ মো. নূরুল হকের মুঠোফোনে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি দেশের বাইরে গেছেন।
পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনও মো. ফকরুল হাসান বলেন, মেলার কাজ শুরু করার আগে অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো চিঠিতে অন্তত আগস্ট মাসে মেলার অনুমোদন না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মেলার অনুমোদন দেওয়া যায় কি না, তা জানতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু ওই চিঠির জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা বলেন, ‘আমরা এখন কাউকে মেলার অনুমতি দিচ্ছি না।’

--শেখ আল-এহসান

সূত্র :: প্রথম আলো

পাইকগাছার স্কুলছাত্রী তিশাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন

তিশা, পাইকগাছা উপজেলার লস্কর গ্রামের মো: রেজাউল করিম ও সাহিনা আক্তারের আদরের কন্যা, পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পাওয়া নওশীন আক্তার তিশা আজ দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সার (লিওকোমিয়া) রোগে আক্রান্ত।
চিকিৎসকের ভাষ্য, প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় সুচিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। আর কেমোথেরাপিসহ এই সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত অর্থের। তার পিতা-মাতার পক্ষে সম্ভব নয় চিকিৎসার এই ব্যয়ভার গ্রহণ করা। 
নিরূপায় হয়ে তাই দ্বারস্থ হয়েছেন আপনার-আমার কাছে। তিশার জন্য আপনার সাহায্যের হাতটি প্রশারিত করুন।




যোগাযোগ :: ০১৭৪২-০৪৮৯২৮
বিকাশ :: ০১৭৯৯-৫৭০৯৮১ (ব্যক্তিগত)
ব্যাংক হিসাব ::
কানিজ ফাতিমা রুম্পা, 
হিসাব নং- ২৯৩৭৮
ইসলামী ব্যাংক, পাইকগাছা শাখা, খুলনা।




Tuesday, August 22, 2017

নির্মাণের এক যুগ পর পাইকগাছায় পোনা মার্কেটের উদ্বোধন

পাইকগাছায় নির্মাণের এক যুগ পর পোনা মার্কেটের উদ্বোধন করলেন খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ। মঙ্গলবার দুপুরে পাইকগাছা পোনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ সাজ্জাত আলী সরদারের সভাপতিত্বে ও জেলা যুবলীগ নেতা সাবেক কমিশনার শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত’র পরিচালনায় উদ্বোধনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তবে শেখ হারুনুর রশিদ এলাকার চিংড়ি সংশ্লিষ্ট মানুষসহ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে সরকারী নীতিমালা অনুসরণ করে পোনা আহরন করে বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য পরামর্শ দিয়ে নিজেদেরকে ও দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার আহ্বান জানান।








অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা আ’লীগ সহ-সভাপতি এএফএম মাকসুদুর রহমান, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. শেখ মোহাঃ শহীদ-উল্লাহ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক অধ্যাপক নিমাই রায়, মহিলা আ’লীগ সম্পাদক হালিমা ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য আঃ মান্নান গাজী ও জয়ন্তী রানী সরকার, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরন কুমার সাধু, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ রায়, ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির লিঃ এর সভাপতি মোর্তজা জামান আলমগীর রুলু, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মাহাবুবুর রহমান রঞ্জু, মাসুমা খাতুন।

উপস্থিত ছিলেন পোনা সমিতির সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাম ফারুক বুলু, গাজী মোহাম্মদ আলী, শিবপদ মন্ডল, শেখ ফজলুর রহমান, বাবুরাম মন্ডল, বিনয় মন্ডল, ইলিয়াস হোসেন, কনেক সরকার, অলকেশ ঢালীসহ অনেকে।

পাইকগাছায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান; জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় অংশগ্রহন

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানি দোসররা স্বাধীনতার পরও তাদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখে। যার অংশ হিসাবে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পাকিস্তানের মদদপুষ্ট ষড়যন্ত্রকারী ওই চক্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরও ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে থাকেনি। পৃথিবীর সবচেয়ে ন্যাক্কার জনক এ হত্যা কান্ডের বিচারের পথও বন্ধ করে দিয়েছিল। এমন কি আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে খালেদা, তারেক ও নিজামী চক্ররা ২০০৫ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করে। আল্লাহর রহমত ও দেশের কোটি কোটি মানুষের দোয়ায় সেদিন শেখ হাসিনা বেঁচে গিয়ে ছিলেন। আজও ষড়যন্ত্রকারীরা তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সোচ্চার থেকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি মঙ্গলবার বিকালে পৌর চত্ত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে পাইকগাছা পৌরসভা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডঃ সোহরাব আলী সানা, সহ-সভাপতি গাজী মোহাম্মদ আলী ও এএফএম মাকসুদুর রহমান, সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ শেখ মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এ্যাডঃ নিমাই চন্দ্র রায়, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হালিমা ইসলাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ নব কুমার চক্রবর্তী, জেলা সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য জয়ন্তী রানী সরকার, আব্দুল মান্নান গাজী, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সরদার জাকির হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জামিল খান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শেখ আনিছুর রহমান মুক্ত, ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার, রিপন কুমার মন্ডল, দিবাকর বিশ্বাস, কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, আমির আলী গাইন, আ’লীগনেতা গাজী রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান, আকতারুজ্জামান সুজা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মুনছুর আলী গাজী। প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু ও যুবলীগ নেতা প্রণব কান্তি মন্ডলের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি মাসুমা বেগম, পৌর সভাপতি জুলি শেখ, ছাত্রলীগ নেতা এসএম মশিয়ার রহমান, মেহেদী হাসান, তানজিম মোস্তাফিজ বাচ্চু, মাসুদ পারভেজ রাজু ও রায়হান পারভেজ রনি।

এর আগে প্রধান অতিথি শেখ হারুনুর রশীদ উপজেলার সীমান্ত পৌঁছালে হাজার হাজার নেতাকর্মী তাকে স্বাগত জানান। এরপর তিনি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় পরিদর্শন শেষে পৌর সদরের পোনা ব্যবসায়ী সমিতির নবনির্মিত মার্কেটের উদ্বোধন করেন। ব্যবসায়ী সাজ্জাত আলী সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সমিতির উপদেষ্টা মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, মোর্তজা জামান আলমগীর রুলু, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, কাউন্সিলর শেখ মাহাবুবর রহমান রনজু ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম শামছুর রহমান সহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

Monday, August 21, 2017

নদীর পানি বৃদ্ধি : ঝুঁকিতে খুলনার নিম্নাঞ্চলের বেড়িবাঁধ

নদীতে বিপদ সীমার ওপরে পানির বৃদ্ধির চাপে ঝুঁকিতে খুলনার নিম্নাঞ্চলের ভেড়িবাঁধ। আজ থেকে শুরু অমাবশ্যা, ফলে আগামী তিন দিন অতিরিক্ত পানির চাপে আশঙ্কায় দিনাতিপাত করছে উপকূলবাসী। আজ থেকে খুলনা অঞ্চলের দশ নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাবে।

এমনি পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। উপকূলীয় এলাকা  কয়রা ,বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। জান-মালের রক্ষার্থে রবিবার জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বাঁধ সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


পাউবো’র হাইড্রোলজি উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল আলিম খান বলেন, গতকাল রবিবার রূপসা নদীতে পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ৩ দশমিক ৪১ মিটার, শনিবার ছিল ৩ দশমিক ২৩ মিটার। চলতি বছর পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ৩ দশমিক ৪৩ মিটার। চলতি আমাবশ্যায় এ রেকর্ড ভাঙবে। সাধারণত ২ দশমিক ৫৯ মিটারকে বিপদসীমা ধরা হয়। 

তিনি জানান, আজ সোমবার থেকে পানির উচ্চতা দেড় থেকে দুই মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। উপকূলীয় বাঁধগুলোর গড় উচ্চতা সাড়ে তিন মিটার হওয়ায় ওই সময় জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এছাড়া উপকূলের নদীগুলোতে পানি বাড়বে বলে জানান তিনি। রূপসা নদীতে পানির স্বাভাবিক উচ্চতা ২ দশমিক ৫০ মিটার। নদীর ঢেউয়ের গড় উচ্চতাকে শূন্য ধরে নদীর পানি পরিমাপ করা হয় পাউবো। বিপদসীমার ওই মাপ পাকিস্তান আমলের, বর্তমানে ভেড়িবাঁধ তখনকার চেয়ে অনেক উঁচু। সে জন্য দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে তিনি জানান।

পাউবো’র তথ্য অনুযায়ী, রূপসা, ভৈরব, পশুর ও সিবসা নদীতে পানির চাপ বেড়েছে  তবে মংলার মিটারগেজ দু’টি দীর্ঘদিন বিকল থাকায় সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের নদীর পানি বৃদ্ধির পরিমাণ পরিমাপ করা সম্ভব হচ্ছে না। এবার অমাবশ্যার জোয়ারে পানির চাপ বাড়বে এমনি আশঙ্কা উপকুলবাসীর।

সূত্র জানায়, পাউবো’র খুলনা-১-এর অধীনে ৩৬৫ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের ১০৯ কিলোমিটার সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ। পাউবো খুলনা-২ এর অধীনে ৫১০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। বাগেরহাটের ৩১৮ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ৬০ কিলোমিটার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া প্রায় ৪০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ নিচু হয়ে গেছে। ভরা জোয়ারের সময় বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। সাতক্ষীরা পাউবো’র ৭৯৯ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধের মধ্যে ২১০ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময়ে ভেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে বিশাল এলাকা। দেখা দিতে পারে মারাত্মক বিপর্যয়।

বন্যা পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেনের দেওয়া তথ্য মতে, গতকাল রবিবার সকাল ৯টায় জোয়ারের সময় পশুর নদীর পানি এক দশমিক ২৫ মিলিমিটার উচ্চতা ছিল। মঙ্গলবারের অমাবশ্যার প্রভাব আজ সোমবার পড়তে শুরু করবে। ফলে ভৈরব, রূপসা, শিবসা, পশুর, কপোতাক্ষ, ইছামতি, কালিন্দি, শাকবাড়িয়া, নবগঙ্গা নদীর পানি জোয়ারের সময় বৃদ্ধি পাবে। 

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পানি পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল কাইয়ূমের কাছে জানতে চাইলে বলেন, সোমবার দুপুর থেকে অমাবশ্যার প্রভাব পড়বে, জোয়ারের উচ্চতা বড় হবে। এসব নদ-নদীতে এক দশমিক পাঁচ মিটারের পরিবর্তে সোম, মঙ্গল ও বুধবার এক দশমিক ৩৫ মিলিমিটার বাড়তে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে বলে তিনি পূর্বাভাস দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো’র আওতাধীন খুলনা জেলার কয়রার গোলখালী গ্রামের মোঃ তসলিম মোল্লা বলেন, “বসবাস করি খুলনা জেলার মধ্যে, কিন্তু আমাদের ভেড়িবাঁধ সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। তারা আমাদের ভেড়িবাঁধ সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। দীর্ঘদিন জরাজীর্ণ ৫ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে একটু সংস্কার করেছি। যে কোন মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে আমাদের বিশাল এলাকা। মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে!”

পাউবো খুলনা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির পর পর কয়েকটি সভায় কয়রার ওই অংশটা সাতক্ষীরা পাউবো থেকে খুলনার মধ্যে নিয়ে আসার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক উদ্যোগ নিয়েছেন। পাউবো খুলনা-২ এর মধ্যে ৩১নং পোল্ডারটা ঝুঁকিপূর্ণ; এছাড়া ৩২নং পোল্ডারে কাজ চলছে। অর্থ অভাবে ভেড়িবাঁধ সংস্কারের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ভেড়িবাঁধ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতা থেকে কয়রা উপজেলার অংশটা খুলনার (পাউবো’র) মধ্যে আনার প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে গতকাল রবিবার খুলনায় অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আ খ ম তমিজ উদ্দিন ও পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান স ম বাবর আলী ভাঙন কবলিত এলাকায় ভেড়িবাঁধের সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায়। 

চালনা পৌরসভা রক্ষায় শহর রক্ষা বাঁধ, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য বটিয়াঘাটার সুরখালি ইউনিয়নে অবৈধভাবে বহুতল বভন নির্মাণের বিষয়ে সতর্কীকরণ, পাইকগাছার দেলুটি, বরেঙ্গা, বাইনতলা, হাটবাটি, কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশির চরামুখা, মাটিয়াভাঙ্গা, উত্তর বেদকাশির গাববুনিয়া, গাজীপাড়া, কয়রা সদরের ৬নং কয়রা লঞ্চঘাট, হরিণখোলা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশালিয়া, পূর্ব মটবাড়ি, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি এলাকা ভাঙন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলা নামক দুর্যোগে খুলনার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা বিধ্বস্ত হয়। এতে ৬৫ জন নারী-পুরুষের মৃত্যু হয়।

--মাওলা বকস

Saturday, August 19, 2017

পৌর সড়কের গাইডওয়াল নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার; স্থানীয়দের তোপের মুখে কাজ বন্ধ

পাইকগাছা পৌরসভায় ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন আরসিসি ঢালাই সড়কের গাইডওয়াল নির্মানে অত্যন্ত নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঘটনায় পৌর কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকার মানুষ একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পৌর প্রকৌশলী তথ্য গোপনের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে



সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ জনবহুল এলাকা বাগদা চিংড়ি বিপণন মার্কেট সংলগ্ন স্থানে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দু’দফায় আরসিসি ঢালাই রাস্তার ইটের গাইডওয়ালের কাজ করছেন স্থানীয় বাসিন্দা এ্যাডঃ আমিনুল ইসলাম, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম শেখ রাজু আহমেদসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন গাইডওয়ালের রাস্তায় অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, বালি, সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ঘটনায় তারা শুক্রবার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন 

স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ মাহবুবুর রহমান রঞ্জু, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আসমা আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা স্বীকার করেন এরপরও শনিবার অজানা কারণে আবারো নির্মাণ কাজ শুরু হলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দেয় এক পর্যায়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছালে স্থানীয়দের তোপের মুখে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন 

বিষয়ে পৌর প্রকৌশলী নুর আহম্মেদের মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি কর্মস্থলে নতুন যোগদানের কথা জানিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা সহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি গোপন করার চেষ্টা করেন 

পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় কাউন্সিলররা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে

ক্যান্সারে আক্রান্ত পাইকগাছার নাজেমের বাঁচার আকুতি

পাইকগাছার ক্যান্সারে আক্রান্ত হতদরিদ্র নাজেম গাজী (৩৫) বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিকিৎসার জন্য সমাজের স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তিদের নিকট সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার মহাখালীস্থ ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নাজেম পাইকগাছা পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাতিখালী গ্রামের মান্দু গাজীর ছেলে। 
হতদরিদ্র নাজেমের কোন জায়গা-জমি না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে পৌর এলাকার ওয়াপদার ধারে বস্তিতে বসবাস করে আসছেন। গত দেড় মাস আগে নাজেমের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকার মহাখালীস্থ ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
উন্নত এ চিকিৎসার জন্য প্রায় ৪ লক্ষ টাকার প্রয়োজন, যা হতদরিদ্র নাজেমের পক্ষ থেকে যোগাড় করা সম্ভব নয়। এ জন্য সমাজের স্ব-হৃদয়বান ব্যক্তিদের নিকট ০১৯২১-৭৭৩৮০১ (পার্সোনাল) বিকাশ নম্বরে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন নাজেম ও তার পরিবার।

পাইকগাছায় ১৫০ পিস ইয়াবাসহ ২ বিক্রেতা আটক

পাইকগাছা থানা পুলিশ ১৫০ পিস ইয়াবাসহ দুই বিক্রেতাকে আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওসি (অপারেশন) প্রবীণ চক্রবর্তী সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে পৌরসভার সরল তেলপাম্প এলাকা থেকে উপজেলার ভিলেজ পাইকগাছা গ্রামের করিম সানার ছেলে বাবু সানা (২৬) ও সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কাঁটাখালী গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে বুলবুল (৩৫) কে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করেন বলে ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব জানিয়েছেন।

Friday, August 18, 2017

বড়দলের মেধাবী ছাত্র রাজীব অজানা রোগে আক্রান্ত- ১৯ বছরেও শনাক্ত হয়নি

মেধাবী ছাত্র রাজীব গাইন। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখার জন্য তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। কেননা তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। জন্মের পর থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত। তার বাম হাতটি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সেই সঙ্গে ফেঁপে উঠেছে তার পিঠ। দীর্ঘ ১৯ বছর কেটে গেলেও এখনও তার শরীরে জন্ম নেয়া রোগের নাম রাজীবের পরিবারের অজানা। তবুও এই বিরল রোগ নিয়ে থেমে থাকেনি রাজীব গাইন। বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুল ও কলেজ থেকে সফলতার সঙ্গে এসএসসি ও চলতি বছর এইচএসসি পাস করেছেন তিনি। 
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মাদিয়া গ্রামে বাবা কার্ত্তিক চন্দ্র গাইন, মা মমতা রানী সরকার ও এক ভাইকে নিয়ে বসবাস রাজীবের। ফোনালাপে রাজীব গাইন দুঃখের সঙ্গে বলেন, ‘আমিও আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো বাঁচতে চাই। স্কুল কলেজে গেলে অন্যরা আমাকে দেখে অনেক সময় দূর থেকে হাসি ঠাট্টা করে। কেউবা আবার সমবেদনা জানায়। আমার চলাফেরা করতে, রাতে ঘুমাতেও অনেক কষ্ট হয়। স্বাভাবিকভাবে কোন কিছুই করতে পারি না। হাতে ও পিঠে খুব ব্যথা করে। তবুও আমি কষ্ট করে আমার পড়ালেখা চালিয়ে গিয়েছি। খুব ইচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। আর এজন্য আমি সুস্থ হতে চাই। সাধারণ মানুষের মতো বাঁচতে চাই। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সঙ্গে দেশের মানুষের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চাচ্ছি।’
এ বিরল রোগের চিকিৎসা প্রসঙ্গে রাজীব জানান, জন্মের তিন বছর পর নিয়ে যাওয়া হয় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। তবে সেখানে সুচিকিৎসা হয়নি। ডাক্তাররা তার রোগের সঠিক কোন চিকিৎসা দিতে পারেননি। তবে জানিয়েছিলেন বয়স যখন ১৫ হবে তখন আপনারা নিয়ে আসবেন। এরপর অস্ত্রোপচার করলে সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে অভাবের সংসারে টাকা জোগাড় হয়নি। যার কারণে পরবর্তীতে ভারতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য আর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ঢাকাসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে এ বিরল রোগের চিকিৎসা করতে গিয়েও চিকিৎসকদের অবহেলায় ফিরতে হয়েছে বাড়িতে। কারণ কোন চিকিৎসকই তার এ রোগ নির্ণয় করতে পারেননি। সবশেষ ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে গিয়েছিলাম সেখান থেকে ডাক্তাররা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে যাওয়ার পর তারা আমাকে পিজি হাসপাতালে পাঠান। সেখানে গিয়েও রোগ সম্পর্কে জানতে পারিনি।
রাজীবের মা মমতা রানী সরকার বলেন, জন্মের পর থেকেই ওর বাম হাতের কব্জি ফুলে উঠে। আস্তে আস্তে তা বাড়তে থাকে। সাতক্ষীরা, খুলনায় ডাক্তার দেখিয়েও কোন সুফল মেলেনি। কোন ডাক্তার রোগের সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেননি। কি রোগ হয়েছে ছেলের সেটিও আমরা জানি না। রাজীবের বাবা মাদুরের ব্যবসা করেন। সেটাতে খুব বেশি রোজগার হয় না। কোন মতে সংসারটা চলে যায়। ছোট বেলায় যখন ভারতে চিকিৎসা করাতে নিয়ে গিয়েছিলাম তখন তারা বলেছিল ১৫ বছর পর আসতে। শুধু অর্থের অভাবে সেখানে আর যাওয়া হয়নি। এখন তো বাংলাদেশেও চিকিৎসা করার অর্থ নেই আমাদের কাছে। শুনেছি সরকারের সহযোগিতায় অনেক বড় রোগে আক্রান্ত রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। আমার ছেলে অনেক মেধাবী ছাত্র। সে চায় সুস্থ হয়ে আরও পড়ালেখা করবে, চাকরি করবে।
রাজীব জানান, ‘আমাদের পরিবার অসহায় জেনে বড়দল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমাকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী ভাতার অর্থ দিয়েই আমি আমার পড়ালেখার খরচ চালাই।’
এদিকে, সম্প্রতি সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন মোঃ তাওহিদুর রহমান রাজীবের এ বিরল রোগের কথা জেনে তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, রাজীবের চিকিৎসা সেবার বিষয়ে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি আবুল কালাম আজাদ স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে ফোনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশও দিয়েছেন। রাজীবের বিষয়ে সবকিছু জেনে আবুল কালাম আজাদ বলেছেন তাকে আগামী ১৮ তারিখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। ইতোমধ্যে রাজীব গাইনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা চিকিৎসার জন্য ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন বলে জানান সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন মোঃ তাওহিদুর রহমান।
রাজীব গাইন বলেন, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন স্যার আমাকে ফোন করে মঙ্গলবার বিকেলে দেখা করতে বলেছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি বললেন শুক্রবার ঢামেক হাসপাতালে যেতে হবে। শনিবার সেখানকার ডাক্তার আমাকে দেখবেন। এবার হয়তো আমার চিকিৎসার একটা উপায় হবে। রাজিব সবার দোয়া কাছে চেয়েছেন।
--জান্নাতুল মাওয়া সুইটি

Sunday, August 6, 2017

বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানিকে লালকার্ড দেখালো পাইকগাছার শত শত শিক্ষার্থী

পাইকগাছায় বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানিকে লালকার্ড দেখিয়েছেন শত শত শিক্ষার্থী।  রোববার সকালে সোলাদানা মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত্বরে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আয়োজিত প্রচারাভিযান অনুষ্ঠানে ইউনিয়নের ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহ ও যৌন হয়রানিকে না জানিয়ে লালকার্ড প্রদর্শন করে। 

উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে এবং উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্প, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)র সহযোগিতায় আয়োজিত বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে প্রচারাভিযান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সোলাদানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক।  

অনুষ্ঠান শেষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 
অনুষ্ঠানে সোলাদানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চারবান্ধা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও এসএম মাজেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, জাইকা প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী আসমাউল হুসনা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবদীন, একাডেমিক সুপার ভাইজার মীর নূরে আলম সিদ্দিকী, পাইকগাছা প্রেসকাবের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ, প্রধান শিক বিরেন্দ্র কিশোর মন্ডল, মোতাহার হোসেন, ইউপি সদস্য আবুল কাশেম, নাছিমা খাতুন, সহকারী শিক সমরেশ চন্দ্র ঢালী।  বক্তব্য রাখেন, শিক আব্দুল গফুর, সাংবাদিক ইমদাদুল হক, শিক্ষার্থী তুষার মন্ডল, তৌফিক আহম্মেদ, শান্তি সানা ও নন্দিতা রানী মন্ডল।