Friday, March 29, 2013

আবার হরতাল !

সব নেতা-কর্মীদের মুক্তিসহ ৪ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে আগামী ২, ৮ ও ৯ এপ্রিল দেশব্যাপী সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন কর্মসূচি ঘোষণার সিন্ধান্ত হয় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বৈঠকে। আগামী ৩১ মার্চ ১৮ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকের পরই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

গণি টাইগার !!!

সুন্দরবনে বাঘ-আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধার করেন ওসমান গণি। তাই সুন্দরবনের আশপাশের গ্রামবাসী তাঁকে চেনে গণি টাইগার নামে। কেবল বাঘের মুখ থেকে মানুষকে উদ্ধারই নয়, বাঘ ও সুন্দরবন রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া এই তরুণকে নিয়ে এবারের মূল রচনা।

নদীর বুকে মাত্র সূর্যটা ডুব দিয়েছে। সুন্দরবন দাঁড়িয়ে আছে শিহরণ জাগানিয়া নির্জনতা নিয়ে। সেই নির্জনতা খানখান করে ভেঙে গেল পুবপাড়া থেকে ভেসে আসা বিলাপ ধ্বনিতে। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ছিল জামতলা রানী নামের একটি ট্রলার। সেখানে বসে গল্প করছিলেন তিনজন মানুষ। বিলাপ ধ্বনি শুনে তিনজনের দলটা দাঁড়িয়ে গেল ঝট করে। কান পেতে বুঝতে চেষ্টা করল বিলাপের অর্থ। অর্থ বুঝতে না বুঝতেই একজনের মুঠোফোনে বেজে উঠল যান্ত্রিক আওয়াজ। ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে শোনা গেল সাহায্যের আকুতি, ‘গণি ভাই, মজিদরে মামা ধরে নিয়ে গেছে! তাড়াতাড়ি আসেন।’ সুন্দরবনে বেঙ্গল টাইগারকে ‘মামা’ নামে সম্বোধন করাই নিয়ম।


ট্রলার থেকে লাঠিটি হাতে তুলে নিলেন ওসমান গণি। সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কালিঞ্চি গ্রামের সবাই তাঁকে চেনে ‘গণি টাইগার’ নামে। বাকি দুই সহচরও ছায়ার মতো অনুসরণ করলেন তাঁকে। বাঘ-আক্রান্ত মজিদের বাড়ি বুড়িগোয়ালিনীতে। প্রথমে সেদিকেই রওনা হলো দলটা। বাড়ির লোকজনকে সান্ত্বনা বাদে আর কিছু দেওয়ার নেই আপাতত। সুন্দরবনের ভেতরে ততক্ষণে আঁধার বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে। বনবিবির নাম নিয়ে সামনে এগোলেন গণিসহ বাকি দুজন। পেছন পেছন কানেস্তারা আর মশাল হাতে ছুটে এলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী। গণিরা এগোতে লাগলেন হাতের লাঠিটি দিয়ে আশপাশের গাছগুলো আঘাত করতে করতে। গাছের শরীরে আঘাতের ফলে যে শব্দ হয়, তাতে করে নিশ্চিত হওয়া যায় এলাকাটা কতটা নিরাপদ। কেবল লাঠির আঘাতেই নয়, গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগলেন তাঁরা। উচ্চ স্বরে ডাকতে লাগলেন অভাগা মজিদকে। মজিদের কোনো সাড়া নেই। লাঠির আঘাত আর চিৎকার হারিয়ে যেতে লাগল সুন্দরবনের নিঃসীম নির্জনতার বুকে। বনের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন গ্রামবাসী আর মজিদের স্বজনেরা।

সামনে এগোতে এগোতে চারপাশে নজর রাখলেন তিনজনই। কিছুদূর এগোনোর পর হঠাৎ একটা হেতাল ঝোপে চোখ আটকে গেল ওসমান গণির। টর্চের আলোয় বোঝা গেল টাটকা রক্ত ঝরছে পাতা থেকে! আরও সতর্ক হয়ে গেল দলটি। লাঠি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করতে লাগল আশপাশের গাছপালা, ঝোপঝাড়ে। হেতাল ঝোপটা বাঁয়ে রেখে সামনে আরও ১০ পা এগোতে না-এগোতেই ভেসে এল মৃদু গোঙানি! মজিদ বেঁচে আছে! টাইগার গণি জানেন, আড়াল থেকে সবকিছু লক্ষ করছে বাঘ মামা। তাই শিরদাঁড়া টানটান করে নজর বোলালেন চারপাশে। দলের বাকি দুজনও সমান সতর্ক। আবারও চিৎকার আর লাঠি দিয়ে শব্দ করতে করতে মজিদের সামনে গেলেন তাঁরা। বাকি দুজনকে চারপাশে নজর রাখতে বলে মজিদকে কাঁধে তুলে নিলেন গণি। রক্তে ভেসে যাচ্ছে মানুষটা। মুহূর্তেই রক্তে মাখামাখি হয়ে গেলেন গণি নিজেও। দ্রুত বেরিয়ে এলেন সুন্দরবনের পেট থেকে। ২০০৯ সালের এ ঘটনায় মৃত্যুকে একদম কাছ থেকে দেখেছিলেন মৌয়াল মজিদ।

বাঘের মুখ থেকে:

এমন ঘটনা অনেক আছে ওসমান গণির জীবনে। আগেই বলা হয়েছে, সবাই তাঁকে চেনে গণি টাইগার নামে। গণির সঙ্গে আমাদের কথা হলো ঢাকায় বসে। প্রথম প্রশ্ন ছিল, আপনাকে কেন সবাই গণি টাইগার নামে ডাকে। প্রায় ৩৫ বছর বয়সী মানুষটির ঠোঁটে মৃদু হাসি, ‘এটা তো আমি ঠিক বলতে পারি না। তবে সবাই আমাকে ভালোবেসে এই নাম দিয়েছে। বাঘে আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধার করি আমি। অনেকেই হয়তো বেঁচেও যায় এর ফলে। আর সুন্দরবনে বাঘ আক্রমণ করলে আক্রান্ত মানুষটা উদ্ধার করার সাহস থাকে না কারোরই। আমি এবং আমার দল সেটা করি। ফলে সবাই আমাদের ভালোবাসে।’

ওসমান গণি কাজ করেন ওয়াইল্ড টিম নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে। সংস্থাটির ফরেস্ট টাইগার রেসপন্স টিমের দলপতি হিসেবে যোগ দিয়েছেন ২০০৭ সালে। এর পর থেকে প্রায় ১০০ জন মানুষকে উদ্ধার করেছেন গণি। যাঁদের অধিকাংশই প্রাণ হারিয়েছেন শেষমেশ। তবে বেঁচে ওঠার সংখ্যাটাও কম নয়।

এলাকাবাসী কী বলে ওসমান গণি সম্পর্কে? কেন তারা তাঁকে গণি টাইগার নামে ডাকে? প্রশ্নের জবাব মিলল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের আবুল হোসেনের কাছে, ‘বাঘে ধরলে নিজের ভাই পর্যন্ত ভয় পায় ভাইকে উদ্ধার করার জন্য। আমার নিজের ভাগনি ও দুলাভাইকে বাঘে ধরেছিল। আমরা সামনে যেতে পারি নাই। কিন্তু গণি টাইগার গিয়েছে। বলতে গেলে প্রায় বাঘের মুখ থেকে লাশ ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে!’

বাঘের মুখ থেকে লাশ ছিনিয়ে আনা—আসলে কি তেমনটাই ঘটে? গণি বললেন, ‘ঠিক বাঘের মুখ থেকে লাশ ছিনিয়ে আনা বলা ভুল। এটা অসম্ভব। তবে বাঘ তার শিকারের আশপাশেই থাকে। আমরা হয়তো দেখি না, কিন্তু বুঝতে পারি। ওই অবস্থায় আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধার করা খুব কঠিন। জানের মায়া তো ত্যাগ করতেই হয়।’ কিন্তু কেন এত ঝুঁকি নেন? গণি শোনালেন আরেক গল্প, ‘২০০৭ সালের শুরুর দিকের ঘটনা। আমি ছিলাম মৌয়াল। নয়জনের একটা দল ছিল আমাদের। একদিন কী মনে করে দলের সঙ্গে না গিয়ে যাত্রা দেখতে গেলাম। বিকেলের দিকে হঠাৎ শুনি, আমাদের দলটাকে বাঘ আক্রমণ করেছে। গিয়ে দেখি একজন জায়গায় মারা গেছেন, আরেকজন গুরুতর আহত। তখন ওয়াইল্ড টিমের কয়েকজন গেলেন আমাদের সাহায্য করতে। তাঁরা বোঝালেন কী করে সাবধান থাকা যায়। কী করে উদ্ধার করা যায় আক্রান্ত মানুষকে। সিদ্ধান্ত নিলাম আমিও মানুষের সেবা করব। কাজটা অনেক কঠিন, কিন্তু মানুষকে সাহায্য করার যে আনন্দ, তার কোনো তুলনা নাই।’

সুন্দরবনের ছেলে:

শাহীন ও মুক্তা নামের দুই ছেলে-মেয়ের বাবা ওসমান গণি। ছেলে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে। মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে। বাবা যে এত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেন, তাতে তাদের বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। আপত্তি নেই তাদের মায়েরও। শাহীন তো এরই মধ্যে বন্ধুদের শেখাতে শুরু করেছে, ‘সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতো।’ ওসমান গণিও এটা বিশ্বাস করেন মনে-প্রাণে। গ্রামবাসীকে বোঝান এই কথাটা। তারাও আস্তে আস্তে এখন উপলব্ধি করে, সুন্দরবন ভালো থাকলে ভালো থাকবে তারাও। আর ওসমান গণি ও তাঁর দল কেবল বাঘ-আক্রান্ত মানুষকে উদ্ধারই করেন না; গ্রামে বাঘ ঢুকলে সেটিকে আঘাত না করে বনের ভেতরে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজটিও করেন নিপুণ দক্ষতা ও সাহসিকতায়।

সুন্দরবনে ফাঁদ পেতে বাঘের ছবি ধারণে সরকারী নিষেধাজ্ঞা

সুন্দরবনে টোপ দিয়ে বাঘের ছবি ধারণে হলিউডের ‘হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস’কে লিখিত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরুদ্দিন। এদিকে বুড়িগোয়ালিনী খোলপেটুয়া নদীর চৌমুহিনীতে অবস্থান করছে ‘হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস’র একটি ভাড়া করা জাহাজ। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বুড়িগোয়ালিনীতে এসে মধু সংগ্রহের দৃশ্য ধারণ করতে ‘হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস’ আট জন জেলেকে তাদের জাহাজে নেয়। এর পরিচালক হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক জর্জ বাটলার। সেই সাথে তারা শক্তিশালী একটি ইলেকট্রনিক্স হেলিকপ্টার উড়িয়ে সুন্দরবনের দৃশ্য ও জেলেদের মাছ ধরা দৃশ্য ধারণ করছে।

বুধবার সকাল এগারোটার দিকে রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে জোরশিং আংটিহারায় ভারত সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করে দলটি। আজ ২৯ মার্চ বিকেল নাগাদ দলটি বুড়িগোয়ালিনী ষ্টেশন ছেড়ে সুন্দরবনের আরো গভীরে প্রবেশ করবে।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জহিরউদ্দিন।

তিনি বলেন, “হোয়াইট মাউন্টেন টিম ভারত হয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। তারা এখন সুন্দরবনের কাছাকাছি বুড়িগোয়ালিনী এলাকায় অবস্থান করছে।”

অস্কার মনোনয়ন পাওয়া পরিচালক জর্জ বাটলার বাংলাদেশের সুন্দরবনে ‘টাইগার টাইগার’ নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করবেন।

মার্কিন এই চলচ্চিত্র প্রতিষ্ঠানটি এর আগে গরু-ছাগল অথবা অন্য কোনো গৃহপালিত পশুর নাড়ি-ভুড়ির লোভ দেখিয়ে বাঘ ডেকে এনে ক্যামেরায় ধারণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিলো।

প্রথমে দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড নামের একটি বাংলাদেশি পর্যটন প্রতিষ্ঠান ‘হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস’র আয়োজক উল্লেখ করে গত বছর নভেম্বরে টোপ দিয়ে বাঘের ছবি ধারণের জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করে।

মন্ত্রণালয় ১৩ ফেব্রুয়ারি বন অধিদপ্তরে বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি জরুরি চিঠি পাঠায়। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র্রের ‘হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস’র জর্জ বাটলার কর্তৃক সুন্দরবনে ‘টাইগার টাইগার’ নামের প্রামাণ্যচিত্র তৈরির অনুমতি পেয়েছে।

বন কর্মকর্তা জহিরউদ্দিন জানান, গরু-ছাগল বা এর মৃতদেহ বা নাড়ি-ভুড়ি টোপ হিসেবে ব্যবহার করা বা ‘বেটিং’ করার অনুমতি না পেয়ে তারা তাদের কর্মসূচি ১০০ দিন থেকে কমিয়ে সংক্ষিপ্ত করেছে। তারা বাংলাদেশের সুন্দরবনে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত অবস্থান করবে।

তবে আর যাই হোক সুন্দরবনের গভীরে প্রবেশ করে তারা যাতে কোনো টোপ বা ফাঁদ দিয়ে বাঘের ছবি তুলতে না পারে সেদিকে বনবিভাগ বিশেষ নজরদারী করবে, জানান তিনি।

তবে অনুমতির ধরণ, বেটিং বা টোপ ব্যবহার এবং অনুমতি পাওয়ার সত্যতা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন।

বেটিং বা টোপ ব্যবহার না করার জন্য লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছেন বলে উল্লেখ করে বন কর্মকর্তা জহিরউদ্দিন বলেন, “তারা যেন বনের ভেতর কোনো অনুমতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড না চালাতে পারে এজন্য তাদের সাথে সার্বক্ষণিক ৪ জন বনরক্ষী থাকবে। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে সংশ্লিষ্ট অফিসাররা নিয়মিত পরিদর্শনে থাকবেন।”

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরজাহান সরকার বলেন, “সুন্দরবনে কাজ করার অনুমতি দুই ধরনের। একটা হলো টোপ ব্যবহার করে বাঘের ছবি তোলা। অন্যটি হলো সুন্দরবনে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি। মন্ত্রণালয় থেকে হোয়াইট মাউন্টেইন টিমের এই দুই ধরনের অনুমতির কোনোটিই নেই। তবে, তাদের প্রতি নিশ্চয়ই অথোরিটির প্রচ্ছন্ন সমর্থন আছে।”

এই বক্তব্যের ব্যাপারে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘হোয়াইট মাউন্টেইন ফিল্মস’কে বাংলাদেশের সুন্দরবনে ‘টাইগার টাইগার’ নামের প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করার অনুমতি আগেই দিয়ে দিয়েছে। প্রামাণ্যচিত্রে বাঘের ছবি ধারণ করতে টোপ হিসেবে খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে গত ৮ মার্চ আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটির সভা হয়। বেটিং বা টোপ দিয়ে ছবি ধারণের ব্যাপারটির বিরোধীতা করে সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেই আমরা। সভায় থাকা সাত জনের মধ্যে পাঁচ জন বেটিং না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।”

তিনি জানান, সুন্দরবনে বেটিং করে হোয়াইট মাউন্টেনকে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের বিষয়ে ৮ মার্চের বিশেষজ্ঞ সভায় তিনটি প্রস্তাব রাখা হয়। প্রস্তাব তিনটি হলো বাংলাদেশের বনবিভাগ খতিয়ে দেখবে ভারত তাদের দেশে হোয়াইট মাউন্টেনকে বেটিং করে শুটিং করতে দেয় কিনা, বেটিং করে চিত্রধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট ভারতের পরামর্শ যাচাই-বাছাই করে দেখা এবং বিড়াল গোত্রীয় প্রাণীকে (বাঘ) আকর্ষণ করতে ‘সুগন্ধি’ ব্যবহার না করা।

ভারত হোয়াইট মাউন্টেইনকে চিত্র ধারণ করতে দিয়েছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমার এটা জানার কোনো সুযোগ নেই।”

ভারত বেটিং করে চিত্র ধারণ করতে দেয়নি এ তথ্য জানানোর পর অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “ভারতের ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই।”

প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নুরজাহান সরকার বলেন, “তারা (হোয়াইট মাউন্টেন) সুন্দরবন ধ্বংস করার জন্য এসেছে। আর এটাতে প্রশ্রয় দিচ্ছে অথোরিটির গুটি কয়েক লোক।”

তিনি আরো বলেন, “৪০ বছর ধরে আমি বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করছি। এ ধরনের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার কথা শুনিনি। ওরা ভারতের সুন্দরবনে শুটিং করার প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখাত হয়েছে। আমি বুঝি না বাংলাদেশ অথোরিটি কি করছে।”

অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম ও বন সংরক্ষক তপন কুমার দে’কে সরাসরি অভিযুক্ত করে ড. নুরজাহান সরকার বলেন, “এই ধরনের আত্মঘাতী সহযোগিতার নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই।”

ড. নুরজাহান সরকার হোয়াইট মাউন্টেনের প্রামাণ্যচিত্র ধারণের তৎপরতাকে ‘আশঙ্কাজনক’ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই লক্ষণগুলো খুবই আশঙ্কার। বাঘ শেষ হলে সুন্দরবন শেষ। সুন্দরবন শেষ হলে দেশ শেষ। আইলা বা সিডরের মতো দুর্যোগে সুন্দরবন না থাকলে আমরা শেষ হয়ে যাবো।"

বাঘ বিশেষজ্ঞ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, “হোয়াইট মাউন্টেন টিম সুন্দরবন জুড়ে কাজ করবে। তবে আমি তাদেরকে নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ দেখি না। আমাদের বনবিভাগের লোকজন সার্বক্ষণিকভাবে তাদের সাথে থাকবে। আর 'দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড' বা 'হোয়াইট মাউন্টেন ফিল্মস' যদি এমন কোনো কাজ করে, যা সুন্দরবন বা বাঘের জন্য নেতিবাচক- তবে সেটা তাদের সুনাম নষ্ট করবে।”

কপিলমুনিতে বাস-নছিমন মুখোমুখি সংঘর্ষ; আহত ৪

কপিলমুনিতে বাস-নসিমন মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪জন মারাত্মক আহত হয়েছে। আহতদেরকে পার্শ্ববর্তী কপিলমুনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ১০টায় পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজারস্থ ফকিরবাসা মোড়ে। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, খুলনাগামী মিনিবাস ঢাকা মেট্রো-জ ৮৩৬৪ কপিলমুনি বাজারের ফকিরবাসা মোড়ে পৌছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী নসিমনকে ধাক্কাদেয়। এতে নসিমনটি উল্টে গেলে ৩ যাত্রীসহ চালক মারাত্মকআহত হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন আহতদেরকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী কপিলমুনি হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। আহতরা হলেন, নছিমন চালক হারুনার রশিদ (৩০), যাত্রী শাহিদা বেগম (৪০), চায়না (২৯) ও মরিয়াম (৩২)।

পাইকগাছার শততম কেন্দ্রীয় মহানামযজ্ঞের প্রস্তুতি সভা

পাইকগাছার কেন্দ্রীয় শততম ২৪ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এক প্রস্তুতিমুলক সভা শুক্রবার সকালে উপজেলার মঠবাটি শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দির প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও নামযজ্ঞ উদযাপন পরিষদের সভাপতি সমীরন সাধুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চু, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী ও দিবাকর বিশ্বাস, আব্দুল মতিন সরদার, রতন কুমার ভদ্র, দীপক মন্ডল,নুর আলী মোড়ল, গাজী নজরুল ইসলাম,ইউপি সদস্য মোঃ শের আলী, মোস্তফা মোল্লাযা।

কল্লোল মল্লিক ও প্রশান্ত সরকারের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মনোহর মন্ডল, মুরারি মোহন সরকার, অমরেন্দ্র মন্ডল, অজিত মন্ডল, নির্মল অধিকারী, সাংবাদিক স্নেহেন্দু বিকাশ, শেখ আবুল কালাম আজাদ, উদয় শংকর রায়, চিত্ত রঞ্জন মন্ডল, প্রজিত রায়, সন্তোষ সরকার, দুলাল বিশ্বাস, মনোজ বিশ্বাস, পিযুষ সাধু, দীনেষ রায়, বিবেকানন্দ ধর, সুভাষ দেবনাথ, জগন্নাথ দেবনাথ, পারিজাত মল্লিক। উল্লেখ্য আগামী ৮ এপ্রিল সোমবার থেকে তিনদিন ব্যাপী মহানামযজ্ঞানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট; পাইকগাছা পৌরসভা, খুলনা।

বি.দ্র: বাংলাদেশে শুধুমাত্র ২টি উপজেলায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট রয়েছে। উপজেলা ২টি হল পাইকগাছা ও কয়রা।
 
কয়রা উপজেলায় জ্বালিয়ে দেয়া ঘরবাড়ি আর মন্দিরের সামনে দাড়িয়ে এই গৃহবধূর জিজ্ঞাসা, সামনের দিন গুলো কি করে কাটবে? বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে, মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই। গোলার ধান নিয়ে গেছে সন্তানকে খাওয়াবে কি? কেউ নিরাপত্তার আশ্বাস দেইনি, সম্মান বাঁচাবে কে?


একটি মানবিক আবেদন; দয়াকরে পোস্টটি শেয়ার করুন

জীবন মৃত্যুর সন্ধিঃক্ষণে মিনারুল

অসহায় এক ভ্যান চালককে সহায়তা করতে যেয়ে নিজেই এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন দুই সন্তানের জনক মিনারুল ইসলাম। ঘটনাটি পাইকগাছা থানার প্রতাপকাটি গ্রামের। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ শংকরদানা ওয়াপদার উপর মাল বোঝাই ইঞ্জিনভ্যান নিয়ে বিপাকে পড়ে এক অসহায় চালক।

একটু সহযোগিতার মানষিকতায় এগিয়ে আসে প্রতাপকাটি গ্রামের মৃত: ছোরমান আলী গাজীর পুত্র মিনারুল গাজী (৪৫)। ভ্যানটি ধরে ওয়াপদায় তুলে দিতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যায় মিনারুল। মূহুর্তেই ঘটে যায় তার জীবনে ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনা। মাল বোঝাই ইঞ্জিনভ্যানটির চাপে মাথা ভাঁজ হয়ে স্পর্শ করে পায়ের পাতা।

মিনারুলের চিৎকারে ছুটে আসে পথচারি হারুন। পরবর্তীতে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পারিবারিক সূত্র জানায়, মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। বর্তমানে মিনারুল ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের প্যারাওয়ার্ড এর বেড নং জি-১৭ তে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার বর্তমান অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ব্যায়বহুল এ চিকিৎসার ভার বহন করা তার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। মিনারুল সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় অসহায় স্ত্রী দু’সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। একদিকে জীবন মৃত্যুর সন্ধিঃক্ষণে মিনারুল অপরদিকে চিকিৎসা ব্যয় বহনে নিঃস্ব হতে চলেছে পরিবারটি। এ মূহুর্তে তাকে বাঁচাতে সমাজের স্বহৃদয় বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে সাহায্য চেয়েছে তার পরিবার।
 
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: সুজাত গাজী, সঞ্চয়ী হিসাব নং-৩২৯৬, অগ্রণী ব্যাংক, কপিলমুনি শাখা। 
প্রয়োজনে: ০১৭২২-৬৪২৭৭৮।


স্বাগতম পাঠক ! আজ থেকে যাত্রা শুরু করছে Voice of Paikgacha ব্লগ। আমাদের চলার পথে সাথে থাকবেন আশাকরি।