Sunday, September 21, 2014

কয়রায় উপ-নির্বাচনে পলাশ ইউপি সদস্য নির্বাচিত

কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উপ নির্বাচনে রাকিবুল ইসলাম পলাশ ৫৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারী ভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী ফয়জুল করিম খোকন পেয়েছেন ৪৩৫ ভোট।
 
জানা গেছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোট গ্রহন চলে। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা জানান, মাদারবাড়ীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ভোট কেন্দ্রে প্রতিকুলতা বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্বেও ২০৭৭ জন ভোটারের মধ্যে ১৪০৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিরাপত্তা বলয় ছিল চোখে পড়ার মত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম হাসান কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, অবাধ নিরপেক্ষ ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, উক্ত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এস এম গোলাম রসুল সরকারি চাকুরীতে যোগদান করায় তার পদত্যাগের ভিত্তিতে এই পদটি শুণ্য হয়। যার প্রেক্ষিতে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পাইকগাছায় সুন্দরী প্রকল্পের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পাইকগাছায় ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে সুশীলন সুন্দরী প্রকল্পের উৎপাদক ও সংগ্রাহক দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।


রোববার সকালে সমিতি ভবনে ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি এ্যাড. মোর্তজা জামান আলমগীর রুলুর সভাপতিত্বে ও সুন্দরী প্রকল্পের উপজেলা ব্যবস্থাপক হায়দার আলী ভুঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, মিরাজুল ইসলাম, প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বুলি, বাবুরাম মন্ডল, ইলিয়াস হোসেন, আসাদুল ইসলাম, ফজলুর রহমান, শুকুর আলী, সঞ্জিত কুমার সরকার, নাসির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মাওঃ আব্দুল হান্নান ওমর, গড়ইখালী পিসিজি দলের সভাপতি রেহানা আক্তার, চাঁদখালী সভাপতি অহেদুজ্জামান সহ ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ।

দেলুটী ইউনিয়ন পরিদর্শনে খুলনা জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ

পাইকগাছায় ইউনিয়ন পরিষদ, তথ্য সেবা কেন্দ্র ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন খুলনা জেলা প্রশাসক আনিস মাহমুদ। তিনি শনিবার সকালে দেলুটী ইউনিয়ন পরিষদ, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র, দুপুরে কালিনগর কলেজ, কালিনগর উদয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও হাটবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়’সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কামরুল ইসলাম। পরিদর্শনকালে তিনি সহায়ক পরামর্শ প্রদান করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইউপি চেয়ারম্যান সমরেশ হালদার।

পাইকগাছায় জামায়াত নেতা আটক

পাইকগাছা থানা পুলিশ শনিবার বিকালে অভিযান চালিয়ে উপজেলার রাড়ুলী গ্রামের মৃত মিরাজ আলী সরদার’এর পুত্র জামায়াত নেতা মোঃ নুরুল ইসলাম (৪৪) কে আটক করে। আটক জামায়াত নেতাকে বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা ৩৪ (১০) ১৩ নং মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে পাইকগাছা থানার ওসি সিকদার আককাস আলী জানান।

কয়রায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের কমিটি গঠন

কয়রা উপজেলার মহারাজ ইউনিয়ন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদ আয়োজিত খড়িয়া সরকারী বিদ্যালয়ে মাঠে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। দীপংকর রায়ের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কয়রায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের আহবায়ক শাশ্বত দত্ত।

বক্তব্য রাখেন কয়রায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্ঠান ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক অসীম রায়, অমিও সরদার, শুভ্রজিত সানা, মনোজ কান্তি রায়, সঞ্জয় গাইন, বিপুল মন্ডল, ঋশিকেশ রায়, অনিরুদ্র সানা, সুকুমার মন্ডল, সুভাস হালদার, তাপস সানা, অতনু সানা, গৌতম রায়, তিতাস রায়, সনজিত রায়, পলাশ রায়, কৃত্তি তাপস, টান মন্ডল, রনজিত রায়, বাবুল রায়, জগৎ রায়, শাওন রায়, দিনবন্ধু রায়, ঠাকুর রায় প্রমূখ।

সভায় সবার সম্মতিক্রমে দীপংকার রায় আহবায়ক ও অমিও সরদার কে সদস্য সচিব এবং শুভ্রজিত সানা, মনোজ কান্তি রায়, সঞ্জয় গাইন, বিপুল মন্ডল, ঋশিকেশ রায়, অনিরুদ্র সানা, সুকুমার মন্ডলদ্বয় কে যুগ্ম আহবায়ক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ঠ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ বন্ধ হলে বেকার হবেন লাখ লাখ বনজীবী

সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ বন্ধ হলে বেকার হয়ে পড়বেন ১৫ লাখ বনজীবী। চলতি বছরের ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের এক সভায় বনজসম্পদ আহরণ বন্ধ করতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর পর থেকেই স্থানীয়দের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে নদ-নদীতে মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি ও বন থেকে মধু, গোলপাতা, জ্বালানিসহ সব ধরনের বনজসম্পদ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। তাদের দাবি, বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বেকার হয়ে পড়বেন তারা।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ৩২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, ৩০০ প্রজাতির পাখি, ৩৩৪ প্রজাতির গাছ, ২১০ প্রজাতির মাছ, ২৬ প্রজাতির চিংড়ি ও ১৩ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়। এত বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণী পৃথিবীর আর কোনো ম্যানগ্রোভ বনে নেই।

বিভাগীয় বন সংরক্ষক (পশ্চিম) জহির উদ্দীন খন্দকার বলেন, ‘জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করায় এর সংরক্ষণের দায়িত্ব বেশ বড় একটি চ্যালেঞ্জ। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের সভায় বনের সম্পদ আহরণ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব গৃহীত হয়।’

খুলনা রেঞ্জের কয়রার বনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বংশ পরম্পরায় আমরা বনের ভেতর থেকে বিভিন্ন সম্পদ সংগ্রহ করে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করি। আলাদা কাজের ব্যবস্থা না রেখে সরকার যদি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে, তাহলে ভীষণ বিপদে পড়ব। পরিবারের লোকজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে থাকতে হবে।’

গোলপাতা আহরণে উপজেলার চাটখালী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ১০টি নৌকা রয়েছে। নৌকাপ্রতি ৮ জন করে ১০টি নৌকায় ৮০ জন কাজ করেন। তাদের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন গোলপাতা সংগ্রহ।

বাচ্চু মিয়া জানান, নৌকার মালিকরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা বানিয়েছেন। বনজসম্পদ আহরণে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা অসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। এ ছাড়া গোলপাতা আহরণ বন্ধ হলে বনজীবীদের পথে বসতে হবে।

হায়েতখালী বাজারের কাঁকড়া ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘জেলেদের ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছি। তারা বন থেকে কাঁকড়া এনে আমার আড়তে দেন। কাঁকড়া বিক্রির মাধ্যমে অগ্রিম টাকা উসুল করছি। আহরণ বন্ধ হলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

কয়রা উপজেলার বাঘালি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন সানা সুন্দরবনের কাঠ বহনের কাজে ৫০টি নৌকা নিয়োজিত করেছিলেন ২০ বছর আগে। ১৯৯৫ সালে সুন্দরবন থেকে সুন্দরি কাঠ আহরণ নিষিদ্ধ করে সরকার। ২০০৪ সালে নিষিদ্ধ করা হয় গরান কাঠ সংগ্রহ। ফলে নিরুপায় হয়ে পানির দামে নৌকাগুলো বিক্রি করে দেন সাবেক এই চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ‘আমার নৌকায় যে সব শ্রমিক ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন বেকার। এদের বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে ওঠেনি। বনজসম্পদ আহরণ বন্ধে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে লাখ লাখ বনজীবী বেকার হয়ে পড়বেন। অভাব-অনটন দেখা দেবে, কর্মসংস্থান না পেয়ে অনেকেই দস্যুবৃত্তিসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়তে পারেন। তাই বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে শিল্পকারখানা স্থাপন করতে হবে।’

কয়রা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার জি এম মতিউর রহমান বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের মায়ের মতো। বনের সবুজ বেষ্টনী সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। সরকারের সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। তবে বনজীবীদের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বিভাগীয় বন সংরক্ষক (পূর্ব) আমির হোসেন বলেন, ‘বনজসম্পদ আহরণের নামে বিভিন্ন সময়ে বনের পশুপাখি হত্যার ঘটনাও ঘটে। এভাবে নিধন চলতে থাকলে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ-মায়া হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতি বিপন্ন হয়ে যাবে। বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল কমে যাবে। তাই সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবন রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে বনজীবীরা যাতে ক্ষতির শিকার না হন, সে জন্যও করণীয় নির্ধারণ করা হবে। ১৫ লাখ বনজীবীর বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। আশা করি, তারা বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন।’

অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। প্রায় ২০০ বছর আগে থেকেই উপকূলের লোকজন বনজসম্পদ আহরণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বনজসম্পদের ওপর ‍ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। সুন্দরবনের অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৫টি জেলায় (খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও বরগুনা)। স্থল ও জল মিলিয়ে ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বনটি বাংলাদেশের মোট আয়তনের ৪.২ শতাশং এবং সমগ্র বনাঞ্চলের ৪০ শতাংশ। ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব হুমকির মুখে

সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৩০০-৫০০টি


সুন্দরবনের বাঘশুমারিতে ছাগল–টোপ !

বন বিভাগ ছাগলকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে সুন্দরবনের বাঘশুমারি করেছে। তবে বন বিভাগ দাবি করছে, টোপ হিসেবে ছাগল নয়, ফেরোমেন ট্র্যাপ নামে একধরনের ফাঁদে বিশেষ রাসায়নিক ব্যবহার করে বাঘকে আকৃষ্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, বাঘকে খাবার হিসেবে গৃহপালিত কোনো প্রাণী দেওয়া নিষিদ্ধ। একই সঙ্গে উৎপাদিত কোনো খাবার বা রাসায়নিকের ব্যবহারও অনুমোদন করা হয়নি ওই আইনে।

বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাগল ও ফেরোমেন ট্র্যাপ উভয়ই বাঘকে আকর্ষণ করতে ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে বাঘের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে বাঘের শারীরিক ঝুঁকি এবং আচরণগত পরিবর্তন আসতে পারে, যা দেশের জাতীয় এই প্রাণীটির অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গাজী আসমত বলেন, ছাগল এবং ফেরোমেন ট্র্যাপ বা ঘ্রাণ—এই দুই-ই সুন্দরবনের বাঘের জন্য ক্ষতিকর। কেননা, ছাগলের মাধ্যমে রোগজীবাণু বাঘের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। আর ফেরোমেন একটি কৃত্রিম ঘ্রাণ, যা বাঘকে আকৃষ্ট করে। এই ঘ্রাণ শুঁকে বাঘ তার সঙ্গিনী বা অন্য কোনো প্রাণীর দেখা পেয়ে থাকে। কিন্তু কৃত্রিম ঘ্রাণ ব্যবহারে বাঘ প্রতারিত হবে। এতে বাঘের স্বাভাবিক চিন্তা এবং আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে।

বন বিভাগ এবং বাঘশুমারি পরিচালনাকারীদের একাধিক সূত্র বাঘের জন্য ছাগল ও ভেড়া ব্যবহার করে টোপ দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। সুন্দরবনের সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট রেঞ্জে ইতিমধ্যে ২০০ ছাগল ও ভেড়া টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
 

বাঘশুমারি প্রকল্পের নথিতেও বাঘকে আকর্ষণ করার উপাদান কিনতে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দের তথ্য আছে। ছাগল পরিবহন করে সুন্দরবনে নিয়ে যাওয়া এবং ছাগল বনে বেঁধে আসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যবসায়ী বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনে ছাগল নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

সুন্দরবনে ছাগল নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে বাঘশুমারি প্রকল্পে নৌযান সরবরাহকারী মনিরুজ্জামান লিটন বলেন, ‘ভাই, আমার কাছে এ বিষয়ে কিছু জানতে চাইয়েন না।’

তবে প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী বাঘশুমারিতে কোনো জীবন্ত প্রাণীকে টোপ হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন পুরোপুরি অনুসরণ করেই শুমারিটি করছি।’

তবে শুমারির প্রধান পরামর্শক ভারতের বন্য প্রাণী ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অধ্যাপক জাতভেন্দ্রদেব ঝালা টোপ হিসেবে ছাগল ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে গত সোমবার বলেন, ‘সুন্দরবন জোয়ার-ভাটার এলাকা। এখানে শুধু ক্যামেরা ফাঁদপদ্ধতিতে বাঘ গণনা করা অনেক কঠিন। এতে অনেক বছর লেগে যেতে পারে। তাই শুমারিটি দ্রুত করার জন্য আমরা ছাগলকে টিকা দিয়ে রোগমুক্ত করে টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছি। অনেক ক্ষেত্রে ছাগলের মাংস কেটে টোপ দেওয়া হয়েছে।’

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘টাইগার পপুলেশন ইস্টিমেশন ইউজিং ক্যামেরা ট্র্যাপিং মেথড ইন সুন্দরবনস, বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় বাঘগণনা হচ্ছে। প্রকল্পটির প্রধান পরামর্শক ভারতের বাঘশুমারির সমন্বয়কারী এবং ক্যামেরা ফাঁদপদ্ধতির উদ্ভাবক অধ্যাপক ঝালা।

জানতে চাইলে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব কনজারভেশন ফর নেচারের (আইইউসিএন) এ দেশীয় পরিচালক এবং সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবনের প্রতিবেশ ব্যবস্থায় বেড়ে ওঠা প্রাণী খেতেই বাঘ অভ্যস্ত। সুন্দরবনের বাইরে থেকে কোনো প্রাণী ধরে এনে খাওয়ালে তাতে বাঘ রোগাক্রান্ত হতে পারে। পরবর্তী সময়ে তা অন্য বাঘ বা প্রাণীতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

পাইকগাছা-আঠারমাইল সড়কের সংস্কার কাজ অসম্পন্ন রেখেই,

পাইকগাছা-খুলনা রুটে সরাসরি যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু


অবশেষে পাইকগাছা-আঠারমাইল সড়কের সংস্কার কাজ অসম্পন্ন রেখেই পাইকগাছা-খুলনা রুটে সরাসরি যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার থেকে অত্র সড়কে সরাসরি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। তবে ঢাকাগামী পরিবহন গুলোর ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পাইকগাছা-আঠারমাইল সড়কের তালা ব্রীজ মোড় থেকে (প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে যে অংশটুকু পানিতে তলিয়ে থাকে) কপিলমুনির কাশিমনগর পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তা উঁচুকরণসহ কার্পেটিংয়ের কাজের জন্য জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হলেও মন্থর গতিতে কাজ করায় শুধু উঁচুকরণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখনও কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

এদিকে, তালা থেকে কপিলমুনি পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার কাজ চললেও আঠারমাইল থেকে তালা ও কপিলমুনি থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত রাস্তায় সংস্কারের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি।

এদিকে আসন্ন শারদীয়া দুর্গ পূজা ও ঈদুল আযহার আগেই ঢাকাগামী পরিবহন গুলো যাতে ঢাকা-তালা এর পরিবর্তে সরাসরি ঢাকা-পাইকগাছা চলাচল করে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।