Tuesday, June 30, 2015

শুভ জন্মদিন চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবার আলী !

আজ পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবার আলী‘র ৬৬ তম জন্মদিনে 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র পক্ষ থেকে ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ আর অভিনন্দন ! (জন্ম :: ১৯৪৯ সালের ৩০ জুন)

শুভ হোক আপনার এবং আপনার হাত ধরে পাইকগাছার ! --এই কামনায় 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'

পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবার আলী

Tuesday, June 23, 2015

পাইকগাছার কপিলমুনিতে জমজমাট প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য

ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠছে কোচিং সেন্টার !


শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে পাইকগাছার কপিলমুনিতে প্রাইভেট কোচিং বাণিজ্য জমজমাট হয়ে উঠেছে। রংবেরংয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত হচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো। ফলে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তসহ বিভিন্নভাবে প্রতারিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, কপিলমুনি সদরে বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বর্তমানে কোচিং ব্যবসা জমজমাট করে তুলেছে এক শ্রেণির স্বল্প শিক্ষিতরা। কোন কোন কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ সাইনবোর্ড না লাগিয়ে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চলেছে। অধিকাংশ কোচিং-এর শিক্ষকরা পাঠদানে অদক্ষ আর উচ্চ শিক্ষিত নয়। দু’একটি সার্টিফিকেট নিয়ে তারা কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হয়ে বসে আছেন। বিভিন্ন ধরনের আকর্ষনীয় বুলি দিয়ে শিক্ষার্থীদের কোচিংগামী করে থাকেন। 

এ সকল শিক্ষকদের মধ্যে ভাল টিচিং পদ্ধতি নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যা অর্জনের একটা নিয়মিত মুল্যবান সময় কোচিং-এ কাটিয়ে দিলেও কখনও কখনও ফল হচ্ছে শূণ্য। মনে আশার ডালী নিয়ে সুশিক্ষা লাভের আশায় অর্থের বিনিময়ে প্রাইভেট কোচিং করলেও শিক্ষার্থীরা স্কুলের পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারছে না। ভুল শিক্ষা আবার কখনও ভুল সাজেশন শিক্ষার্থীদের ফেলে দিচ্ছে বিপাকে। যা একজন শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। 

অভিযোগ রয়েছে, কপিলমুনি ও হরিঢালী ইউনিয়নের অধিকাংশ স্কুল কলেজের কতিপয় শিক্ষকরাও প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসের নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে ও পরে ছাত্র-ছাত্রী ম্যানেজ করে, কখনও বাড়ি, আবার কখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসেই প্রাইভেট পড়াচ্ছেন তারা। 

সুত্রের দাবী, কোন কোন শিক্ষক ক্লাসে ভাল করে পাঠদান করেন না। বাধ্য হয়ে তাই ওই সকল শিক্ষকদের কাছ থেকে ভাল করে পড়তে হলে মাসিক চুক্তিতে মোটাংকের অর্থ গুনতে হয়।

এভাবেই চলছে এলাকার প্রাইভেট কোচিং বানিজ্য, কিন্তু দেখার যেন কেই নেই। অনতিবিলম্বে প্রাইভেট কোচিং সমস্যার সমাধান দাবি করেছেন সচেতন মহল।

Sunday, June 21, 2015

শুভ বাবা দিবস !

'মা' এর মতো 'বাবা'ও ছোট্ট একটি শব্দ, অথচ এর ব্যাপকতা বিশাল। 'বাবা' ডাকটার মাঝেই লুকিয়ে থাকে গভীর ভালবাসা, নিরাপত্তা, নির্ভরতা। আজ বিশ্ব বাবা দিবসে 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র পক্ষ থেকে পৃথিবীর সকল বাবার প্রতি রইল অপরিসীম শ্রদ্ধা আর ভালবাসা !

চলুন, তাহলে দিনটি পালন করে ফেলুন ! বাবাকে বলুন, ভালবাসি বাবা, খুব ভালবাসি !


পাইকগাছায় অভিভাবকহীন ৩ কি.মি. সড়কের বেহাল অবস্থা; যাতায়াতের চরম ভোগান্তি

পাইকগাছায় পৌর সদরের ৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বর্তমানে কোন অভিভাবক না থাকায় বর্ষা মৌসমের শুরুতেই বিভিন্ন বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সচেতন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে পৌর বাজার হয়ে শিববাটী পর্যন্ত সড়ক ও জনপদ বিভাগের ৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। সড়কটি ইতোপূর্বে পাইকগাছা-কয়রা সড়ক হিসেবে ব্যবহার করাকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনের তাগিদে মাঝে মধ্যে সংস্কার বা মেরামত করত। 

গত ৩/৪ বছর পূর্বে শিববাটী ব্রীজ জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর হতে পাইকগাছা-কয়রা সড়ক হিসেবে ব্রীজ সংশ্লিষ্ট সড়কটি ব্যবহৃত হওয়ার ফলে জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে শিববাটী পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সড়কটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। 

সড়ক ও জনপদ বিভাগ অনেকটাই অলিখিতভাবে সড়কটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ফলে দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খাদের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই বড় বড় গর্তে পানি জমে বড় বড় যানবাহন থেকে শুরু করে নছিমন, করিমন এমনকি ভ্যান চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 

এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পৌর মেয়রসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

পাইকগাছায় সদ্য বিবাহিত প্রেমিকাকে অপহরণকালে পূর্ব প্রেমিক আটক

পাইকগাছা থেকে সদ্য বিবাহিত প্রেমিকাকে অপহরণকালে পুলিশ কংকর সরদার নামে এক যুবককে আটক করেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লস্কর গ্রামের প্রভাত সানা ওরফে কিনা’র কলেজ পডুয়া মেয়ে অনুশ্রী সানা তার খালার বাড়ী পার্শ্ববর্তী দাকোপের বটবুনিয়া এলাকায় যাতায়াতের সুবাদে ঐ এলাকার দীপক সরদারের ছেলে কংকর সরদার (২৫) এর সাথে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। 

বিষয়টি জানতে পেরে প্রভাত সানা তার মেয়ে অনুশ্রীকে প্রতিবেশী শিবপদ সানার কলেজ পডুয়া ছেলে ধনেশ সানার সাথে গত দেড় মাস পূর্বে বিয়ে দেয়। এদিকে পূর্ব প্রেমিক কংকর সরদার প্রেমিকার আপত্তিকর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তার সাথে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। 

সে অনুযায়ী ঘটনার দিন রোববার সকাল ৯টার দিকে কংকর সরদার বটবুনিয়া এলাকার চন্দন রায়ের মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে পাইকগাছার শিববাটী ব্রিজের পশ্চিম পাশে উপস্থিত হয় এবং ঘটনাস্থলে পূর্ব থেকে অবস্থান নেয়া বিবাহিতা প্রেমিকা অনুশ্রীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা ও রাড়ুলী ক্যাম্প পুলিশ পূর্ব প্রেমিক কংকরকে আটক করে এবং ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করে। 

এ ঘটনায় অনুশ্রীর পিতা প্রভাত সানা বাদী হয়ে অপহরণের অভিযোগ এনে কংকরসহ অপর একজনকে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা করেছেন।

Thursday, June 18, 2015

খোশ আমদেদ রমজানুল মোবারক

রহমত, মাগফিরাত এবং মুক্তির পয়গাম নিয়ে আমাদের মুসলিম উম্মাহর সামনে হাজির হয় পবিত্র মাস মাহে রমজান। রমজানুল মোবারক মানুষের পশুত্বকে খতম করে জাগ্রত করে মনুষ্যত্বকে।

Wednesday, June 10, 2015

এক কিলোমিটার রাস্তা পাইকগাছা পৌরবাসীর ভোগান্তির কারণ

পাইকগাছা পৌর ও উপজেলা সদরের মাত্র সোয়া এক কিলোমিটার রাস্তা মানুষের দুর্ভোগ- ভোগান্তির যত কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাসষ্ট্যান্ড-জিরোপয়েন্ট থেকে পৌর বাজার হয়ে থানা মোড় পার্যন্ত এই সোয়া এক কিলোমিটার সীমানাজুড়েই পৌর ও উপজেলার সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল সবকিছুই অবস্থিত। 

শহরের (বুকচিরে) প্রধান সড়কটি ভেঙ্গেচুরে বড় বড় গর্ত আর ইটপাথর উঠে রাস্তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় যানবাহন চলাচল তো দুরহ ব্যাপার, এমনকি পথচারীদের পায়ে হেটে চলাচলও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এদিকে অপ্রশস্ত রাস্তাটির ফুটপাতের‬ কোন‬ বালাই‬ নেই। রাস্তার দু’পাশের দোকানীরা বিভিন্ন মালামাল রেখেছে রাস্তার ফুটপাত দখল করে।

পাইকগাছা পৌর সচিব তুষার কান্তি দাশ বলেন, সওজ’র নিয়ন্ত্রণাধীন রাস্তাটি অদ্যবধি হস্তান্তর না করায় পৌর কর্তৃপক্ষও রাস্তার মেরামত কাজ করতে পারছেনা। তবুও জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে পৌরসভার থোক বরাদ্দ থেকে রাস্তার যেখানে যেখানে বেশি ভাঙ্গাচোরা ঠিক সেটুকু রাস্তাই মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে ‪‎সংস্কার‬ কাজ কবে‬ শুরু‬ হবে তা তিনি নির্দিষ্ট‬ ‪‎করে‬ বলতে‬ ‪‎পারেননি। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাসষ্ট্যান্ড থেকে বাজার পর্যন্ত পুরো রাস্তারই বেহাল দশা। জিরোপয়েন্ট থেকে পৌর বাজারের দিকে ১০ হাত এগুলেই শুরু হয় রাস্তা ভাঙ্গার দুর্ভোগ। টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঠিক সামনের ভাঙ্গা-বড় গর্ত বহু বছর ধরে একই অবস্থা পড়ে থাকায় এলাকাবাসি ওটাকেই স্বাভাবিক ধরে নিয়ে মনেকে সান্তনা দিচ্ছেন। 

এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ যেমন হাসপাতাল ক্রস রোড এলাকা, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সামনের কালভার্ট এলাকা, উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পাশের প্রধান ফটকের ঠিক সামনের এলাকা, সেটেলমেন্ট অফিস-সিনেমা হলের সামনের এলাকা, মরহুম গাজী মিজানুর রহমান মন্টুর বাড়ির গেটের সামনের এলাকা, বাজার বটতলা এবং ‪‎পৌর‬ কার্যালয়ের‬ ‪‎প্রধান‬ ফটকের‬ ঠিক‬ সামনের‬ রাস্তা‬ ভাঙ্গায় এলাকাবাসীকে খুব ভোগান্তি দিচ্ছে। 

অপ্রস্বস্ত ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তার ওপর (বাসষ্ট্যান্ড এলাকায়) যাত্রীবাহী বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করা হয়ে থাকে। প্রধান রাস্তা সংলগ্ন দু’পাশের বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, কাঠের ফার্নিচার ও মটরসাইকেল, ভ্যান-রিক্সা গ্যারেজের দোকানের সামনের অংশজুড়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন মালামাল। ফলে পথচারীদের চলাচলের জন্য ন্যুনতম ফুটপাত বলতে কিছু নেই। 

পাইকগাছা পৌর তথা উপজেলা সদর বিধায় কর্মজীবী মানুষ ও যানবাহনের চাপ তুলনামূলক বেশি। সে কারণে গোটা রাস্তায় ঘিঞ্জি অবস্থার সৃষ্টি হয় সারাক্ষণ। সব মিলিয়ে পৌর শহরের জিরোপয়েন্ট থেকে বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি‬ ‪‎গোদের‬ উপর‬ ‪‎বিশফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে।

--এম,আর মন্টু, পাইকগাছা।

কয়রায় বেড়িবাঁধে ড্যাম্পিং ও ব্লক বসানোয় কমেছে নদী ভাঙন

নদী ভাঙনে প্রতিনিয়ত ছোট হচ্ছিলো কয়রার মানচিত্র


কয়রায় এক সময়কার অব্যাহত নদী ভাঙনে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ বর্তমানে ড্যাম্পিংসহ প্লেসিং ব্লক বসানোর কারণে ভাঙনের তীব্রতা অনেকটা কমে গেছে। সর্বাধুনিক এ প্রযুক্তি ব্যবহারে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদী সংলগ্ন প্রায় ১০ কিলোমিটার পাউবোর বেড়িবাঁধ ভয়াবহ ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কাটকাটা, খাসিটানা, জোড়শিং, পদ্মপুকুর, গাববুনি, গোলখালি, মদিনাবাদ, দশালিয়া, ৫ নং কয়রা, শেখেরকোনা, কালিবাড়ি, হড্ডা বেড়িবাঁধে ড্যাম্পিং করে ব্লক ফেলানো হয়েছে। এ সকল জায়গায় ব্লক বসানোয় নদী ভাঙন সিংহভাগ রোধ হয়েছে। সবচেয়ে ভাঙন কবলিত পাউবোর ১৩-১৪/২ পোল্ডারের কাটকাটা বেড়িবাঁধে ৮০০ মিটার জায়গায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্যাম্পিংসহ ব্লক ফেলানোর কাজ ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার কারণে ড্যাম্পিংয়ের জন্য বস্তায় বালু ভর্তি করার কাজে বিঘ্ন ঘটছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী শামীম আহসান। এ জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট কিছুটা সময় বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পাউবোর সাতক্ষীরা জোনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধে ড্যাম্পিং করায় নদী ভাঙন বহুলাংশে কমে গেছে। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে সকল ভাঙন কবলিত বাঁধে ড্যাম্পিং করা হবে।

পাইকগাছায় প্রতারক চক্রের খপ্পরে শিক্ষক; অর্ধলাখ টাকা খোয়া

পাইকগাছায় প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে অর্ধলাখ টাকা খোয়া গেছে এক শিক্ষকের। মোটরসাইকেলের প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশ’র মাধ্যমে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের এ টাকা। মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের আগড়ঘাটা (বিরাশি) গ্রামের আফছার আলী সরদারের ছেলে টিউটর শিক্ষক ও গ্রাম্য ডাঃ মিনাত আালী সরদার‘কে ঘটনার দিন একটি প্রতারক চক্র লটারীতে মোটরসাইকেল বেঁধেছে এবং মোটরসাইকেলটি রেজিষ্ট্রেশন করতে ০১৭৭০০৬৩৫৪৬ ও ০১৭৪৫৬৬২৬০৪ নং দুটি পার্সোনাল বিকাশ নম্বরে ৪৪ হাজার ৭৫০ টাকা হাতিয়ে নেন। 

পরবর্তীতে আরো টাকা দাবী করলে ভূক্তভোগী শিক্ষকের সন্দেহ হয় এবং এক পর্যায়ে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। উল্লেখ্য, এর আগেও এলাকায় এ ধরণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

পাইকগাছায় ২ হাজার পিচ ইয়াবা‘সহ আটক ১

পাইকগাছায় র‌্যাব-৬ এর অভিযানে ২ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট’সহ এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।


থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৬ এর লেঃ কমান্ডার মোঃ মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ডিএডি নুরুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন সহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকা থেকে ২ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট‘সহ উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের টেংরামারী গ্রামের মৃত দুলাল চন্দ্র মন্ডলের ছেলে সঞ্জীব মন্ডল (৩৭) কে হাতে-নাতে আটক করেন। 

এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে বলে ওসি (তদন্ত) শ্যামলাথ জানান।

Tuesday, June 9, 2015

পাইকগাছার কপিলমুনিতে খরগোশের বিয়ে !

মানুষের দাম্পত্য জীবনের শুভ সুচনা ঘটে বিয়ের মাধ্যমে, আর বিয়ের পরই দুই প্রান্তের দুটি ছেলে মেয়ে নতুন জীবনে পদার্পণ করে। ঠিক যেন তেমনটি ঘটেছে, তবে এ বিয়ে মানুষের নয়, খরগোশ’এর। এবার খরগোশের দাম্পত্য জীবন শুরু হলো আনুষ্ঠানিক ভাবে শুভ বিবাহের মধ্যদিয়ে। মজার এ ঘটনাটি ঘটেছে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে। 

জানা যায়, সোমবার দুপুর ২টার দিকে কপিলমুনির পার্শ্ববর্তী হরিঢালী গ্রামে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়। কপিলমুনির সুপ্রভাত দত্তের পুরুষ খরগোশ যথা সময়ে মাইক্রোবাসে করে ৮ জন ও মোটর সাইকেলে ৬ জন বর যাত্রীসহ রওনা দেয় হরিঢালী গ্রামের লিংকন দাশের মেয়ে খরগোশের বাড়িতে। 

একে বারেই অনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে শেষে মাছ মাংশ খাইয়ে বরযাত্রীসহ উপস্থিত সকলকে আপ্যায়ন করে মধ্যাহ্ন ভোজের পর্ব সারা হয়। এরপর বর ও বৌকে কপিলমুনির পোদ্দার পাড়ার সুপ্রভাত দত্তের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। 

এ ঘটনার পর উৎসুক জনতা খরগোশ দম্পতিকে দেখতে ওই বাড়িতে ভীড় জমায়।

--পলাশ কর্মকার, কপিলমুনি।

পাইকগাছার রাড়ুলী ইউনিয়নে ৫ম শ্রেণীর মডেল টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর মডেল টেস্ট পরীক্ষা ৩৪ নং বাঁকা ভবানীপুর পূর্ব প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কেন্দ্রে ৬টি প্রাথমিক স্কুল থেকে ২১৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে জানান কেন্দ্র সচিব প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর খান। 

সোমবার বিজ্ঞান পরীক্ষার পাইকগাছা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন। সাথে ছিলেন রাড়ুলী ইউপি চেয়ারম্যান আলাহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ। উভয় কেন্দ্র পরিদর্শনে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

অপরদিকে রাড়ুলী আর.কে.বি.কে কলেজিয়েট পরীক্ষা কেন্দ্রে ৯টি স্কুল থেকে ২৩১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে বলে জানান কেন্দ্র সচিব মুক্তার আলী গাজী।

পাইকগাছার রাড়ুলী ইউনিয়নে পানীয় জলের জন্য হাহাকার

পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এ ইউনিয়নে প্রায় ৪২ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের সংখ্যা ৬টি। টিউবয়েলের সংখ্যা প্রায় ২০০০ (দুই হাজার)। ৫/৬টি টিউবয়েল ছাড়া সব কয়টি আর্সেনিকযুক্ত এবং খাওয়ার উপযোগী নয়। যে কয়টি সরকারি পুকুর আছে এবং ব্যক্তিগত সব পুকুরে পানি শুকিয়ে গেছে। 

৫ নং ওয়ার্ডে বাঁকা গ্রামের তৎকালীন জমিদার স্বর্গীয় অমিনাস চন্দ্র বসু তার মাতা বিরাজ দেবীর নামে ৮ বিঘা জমিতে দীঘি খনন করেন এবং তার পানি খাওয়ার জন্য উৎসর্গ করে যান। এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে রাড়ুলী ইউনিয়ন ছাড়াও পাশ্ববর্তী দরগাহপুর, শ্রীধরপুর, হোসেনপুর, রামনগর, খরিয়াটি গ্রামের শতশত মানুষ পানি নেওয়ার কারণে দীঘিটি পানিশূন্য হয়ে শুকিয়ে গেছে। বর্তমানে পানীয় জলের অভাবে ইউনিয়নে হাহাকার দেখা দিয়েছে। 

বাঁকা গণেশ নাথের দোকানের সামনে জনৈক পানি ব্যবসায়ী পানি জলের প্লান্টের ব্যবস্থা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এভাবে চলতে থাকলে ইউনিয়নের মানুষ আর্সেনিকযুক্ত টিউবয়েলের পানি খেয়ে রোগাগ্রস্ত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। 

এনজিও ব্র্যাক ওয়াশ এশিয়ান আর্সেনিক নেটওয়ার্কসহ সরকারিভাবে বাকা ভবানীপুর রাড়ুলী ভাটপাড়া বক্স গাজীর বাড়ি পানির প্লান্ট নির্মাণ করলেও পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়াতে পানির প্লান্ট বন্ধসহ নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে পানীয় জলের অভাবে গোটা ইউনিয়নের মানুষ মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে। 

কাটিপাড়াতে তৎকালিন জমিদাররা পানীয়জলের জন্য কাটিপাড়া মালোপাড়া, বিটপাড়া, পূর্বকাটিপাড়া, রাড়ুলী গালর্স স্কুলে ৩০ ফুট ব্যাসার্ধের পাকা কুয়া (ইন্দিরা) নির্মাণ করে গেছেন। শুধুমাত্র সংষ্কারের অভাবে ঐ ৫/৭টি পাকা কুয়া (ইন্দিরা) ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে ওই সকল কুয়া (ইন্দিরা) সংষ্কার করলে ওই এলাকার পানীয় জলের অভাব কিছুটা হলেও মিটবে। 

ওই কুয়া (ইন্দিরা) সংষ্কারের বিষয় পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবির উদ্দীন ও রাড়ুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এর নিকট দাবি জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এ পর্যন্ত।

ঐতিহ্যবাহী রাড়ুলী ইউনিয়নে ভবিষ্যতে পানীয় জলের অভাব মিটাতে বিদেশী দাতা সংস্থাসহ সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন গোটা রাড়ুলী ইউনিয়নবাসী।

Monday, June 8, 2015

পাইকগাছায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৩টি হাত বোমা উদ্ধার

পাইকগাছায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় ৩টি হাত বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। নাশকতার উদ্দেশ্যে উদ্ধারকৃত বোমা মজুদ করা হতে পারে বলে থানা পুলিশ ধারণা করছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানা পুলিশের এসআই জহুরুল ইসলাম, এসআই বিশ্বজিত অধিকারী, এসআই আবু সাঈদ, এএসআই মোমিনুর রহমান ও এএসআই আশিক সোমবার রাত ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে পাইকগাছা-কয়রা সড়কের আলমতলা চর মসজিদ সংলগ্ন কালভার্টের উত্তর পাশের বাবলা গাছের নিচ থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা তিনটি হাত বোমা উদ্ধার করেন। 



এ ব্যাপারে থানার সেকেন্ড অফিসার জহুরুল ইসলাম জানান, নাশকতার উদ্দেশ্যে কোন গোষ্ঠি বোমাগুলো মজুদ করে রাখতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। কারা এর সাথে জড়িত সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে বলে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান।

পাইকগাছায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক স্পীকার শেখ রাজ্জাক আলী

হাজারো মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসা নিয়ে জন্মস্থান পাইকগাছায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন পাইকগাছার কৃতি সন্তান, সাবেক স্পীকার, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী মরহুম অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী। সোমবার আসরবাদ পাইকগাছার হিতামপুর গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পিতা-মাতার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। 
 
বোয়ালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত মরহুমের জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আ‘লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা সিটি মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান, খুলনার সাবেক পৌর চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. স ম বাবর আলী। 

আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা এ্যাড. এস আর ফারুক, ফকরুল আলম, অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম, বিজিপি নেতা সিরাজউদ্দীন সেন্টু, বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান মুরাদ, এ্যাড. তফসীর আহম্মেদ, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা একরামুল কবির নাছিম, শেখ সাদী, শামছুজ্জামান চঞ্চল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদৎ হোসেন বাচ্চু, উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী, সদস্য সচিব মোঃ রশীদুজ্জামান, থানা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. জি এ সবুর, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবু সাঈদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতারুজ্জামান বাবু, জেলা বিএনপি নেতা অধ্যাপক সেখ রুহুল কুদ্দুস, ডাঃ আব্দুল মজিদ, এ্যাড. জি এম আব্দুস সাত্তার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ ঘোষ, উপজেলা জাপা সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, সাধারন সম্পাদক শামছুল হুদা খোকন, বিএনপি নেতা আসলাম পারভেজ, শেখ ইমাদুল ইসলাম, শেখ শামছুল আলম পিন্টু, লক্ষ্মী রাণী গোলদার, কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির এন্ড কলেজিয়েটের অধ্যক্ষ হরে কৃষ্ণ দাশ, সমীরণ সাধু, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী এস এম মোস্তাফিজুর রহমান, তৃপ্তি রঞ্জন সেনসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। 

এর আগে বেলা ১১ টায় খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

সাবেক স্পীকার শেখ রাজ্জাক আলী‘র বর্ণাঢ্য জীবন

'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ‪‎বিশেষ‬ প্রতিবেদন :: পাইকগাছার কৃতি সন্তান, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী ১৯৯১ সালে গঠিত পঞ্চম সংসদে প্রথমে ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর তার সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির বিল পাস হয়েছিল।

জাসদ হয়ে বিএনপিতে যোগদানকারী রাজ্জাক আলী ধানের শীষ প্রতীকে একাধিকবার খুলনা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে বিএনপি ছেড়ে অলি আহমদের সঙ্গে এলডিপি নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। তবে কিছু দিন পরই রাজনীতি থেকে অবসরে যান এই আইনজীবী। 

শেখ রাজ্জাক আলীর জন্ম ১৯২৮ সালের ২৮ অগাস্ট খুলনার পাইকগাছা উপজেলার হিতামপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ও বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর এলএলবি ডিগ্রি নেন। আইন পেশায় যোগ দিয়ে ১৯৫৮ সালে তিনি খুলনা জেলা জজ কোর্টে ওকালতি শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।

পরের বছর তিনি খুলনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি খুলনা ল কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন সহ-অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন। এরপর তিনি ২৫ বছর ওই কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি খুলনায় সিটি ল কলেজ, সুন্দরবন আদর্শ মহাবিদ্যালয়, সবুরন্নেসা মহিলা কলেজ খুলনা, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, টুটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাইকগাছা ডিগ্রি কলেজ, শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রেডক্রসে যোগ দিয়ে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিয়েছিলেন।

ন্যাপের মাধ্যমে রাজনীতির শুরু হলেও স্বাধীনতার পর জাসদে যোগ দেন রাজ্জাক আলী। ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে জাসদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন তিনি। ১৯৭৮ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে গঠিত জাগদলে যুক্ত হন রাজ্জাক আলী। পরের বছর বিএনপি গঠন হলে তাতে বিলুপ্ত হয় জাগদল, তিনিও যোগ দেন বিএনপিতে। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে খুলনা-৬ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রাজ্জাক আলী। ওই আসনে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারে আইন প্রতিমন্ত্রী হন। ওই বছরই তিনি ডেপুটি স্পিকার ও পরে স্পিকার নির্বাচিত হন। সার্ক স্পিকারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও ছিলেন তিনি। ২০০২ সালে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। 

শেখ রাজ্জাক আলী ১৯৫৩ সালে বিয়ে করেন সমাজসেবী-লেখিক অধ্যাপক বেগম মাজেদা আলীকে। তাদের পাঁচ মেয়ের মধ্যে বড় রানা রাজ্জাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। দ্বিতীয় মেয়ে সাহানা রাজ্জাক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে খুলনায় কর্মরত। তৃতীয় মেয়ে জার্মানিতে কর্মরত এ্যানা রাজ্জাক আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ। চতুর্থ মেয়ে লীনা রাজ্জাক চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট এবং ছোট মেয়ে ড. জনা রাজ্জাক যুক্তরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক।

পাইকগাছার এই কৃতি সন্তান, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্পিকার, বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী আর নেই। ৭ জুন ২০১৫ রবিবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে খুলনার ফারাজি পাড়াস্থ নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন। 

তার প্রথম নামাজে জানাজা আগামীকাল ৮ জুন সোমবার সকাল ১১টায় খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে অনুষ্টিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্টিত হবে মরহুমের গ্রামের বাড়ী পাইকগাছার গদাইপুরের হিতামপুর গ্রামে আসর বাদ বিকাল ৫টায়। জানাজা শেষে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী পারিবারিক কবরস্থানে তার পিতা-মাতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে শালতা নদী

এক সময় নদীতে ছিল স্রোতের তীব্রতা। এ নদী দিয়ে চলাচল করতো নৌকা ও লঞ্চসহ বিভিন্ন জলযান। আসতো পাখির ঝাঁক। তবে বর্তমানে নদীটি ভরাট হয়ে সরু খালে পরিনত হয়েছে। নদীটির নাম ‘শালতা’। সাতক্ষীরার তালা এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া শালতা নদী আজ তার স্রোতধারা ধরে রাখতে পারেনি। অস্তিত্ব সংকটে পড়ে কোন রকম বেঁচে আছে নদীটি ।

এদিকে পার্শবর্ত্তী কপোতাক্ষ নদ পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষামৌসুমে কপোতাক্ষ সংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হলে পানি নিস্কাশন হয় শালতা নদী দিয়ে। শালতা নদীর দু’কুলে কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। এ নদীটি ভরাট হয়ে গেলে এলাকার মানুষের দুঃখের শেষ থাকবে না।

সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জানান, শালতা নদী খনন নিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনে তিনি এ নদী খননের দাবী করেছেন। শালতা নদী না বাঁচলে কয়েক লাখ মানুষ স্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়েবে। এজন্য শালতা নদী খনন খুব জরুরী।

এ শালতা নদী অতীতে ছিল, বর্তমানেও আছে। এ নদী দক্ষিণাঞ্চলের একটি প্রাণ। শালতা দিয়ে চলাচল করতো বিভিন্ন ধরনের জলযান। যে কারণে এলাকার ব্যবসায়ীরা শালতাকে অনেক সময় ব্যবসায়ীক পথ হিসাবে ব্যবহার করতেন। জলপথে পণ্য আনা নেওযার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকাংশে সাশ্রয় হতো ব্যবসায়ীদের।

কিন্তু কালের বিবর্তনে শালতা নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এ নাব্যতা হারানোর ফলে এলাকার জনগণের জীবনে নেমে এসেছে এক দূর্বিসহ জীবন। শালতা নদী ও পার্শ্ববর্ত্তী কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা হারানো ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই জেলে সম্প্রদায়ের কাছে গেলে বোঝা যাবে কত কষ্টের মধ্যে দিয়ে তাদের জীবন চলছে। কিন্তু তাদের কষ্টের খবর কেউ রাখে না।

বিগত আ’লীগ সরকারের (১৯৯৬) সময়ে বে-সরকারী সংস্থা উত্তরণ-এর অর্থায়নে ঝুড়ি কোঁদালে খনন করা হয় এ নদীটি। যে কারণে এখনও পর্যন্ত ৫ (চওড়া) ফুঁট মতো বেঁচে আছে শালতা নদী। তবে কয়েকবার সরকারের পক্ষ থেকে শালতা নদী খননের বিষয়টি বলা হলেও তা কোন কাজে আসেনি। নদীটি পরিদর্শন করতে এসেছে মন্ত্রি পরিষদের লোকজনও। তারা আসা যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নদী তীরের খলিলনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা প্রনব ঘোষ বাবলু জানান, বর্ষা মৌসুম এলে যারা একটু নিশ্চিন্তে ঘরে ঘুমাতে পারে না, তাদের অবস্থা কি? শালতা নদীতে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন আর জোয়ার ভাটাও হয়না। ফলে প্রাকৃতিক দূর্যোাগ বন্যার কারণে প্রতি বছর প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। এতে চাষীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন, তেমনি কৃষি পণ্য উৎপাদন না হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

জেয়ালানলতা গ্রামের জেলে সম্প্রদয়ের বাসিন্দা আনসার নিকারী জানান, তাদের হাতে কোন কাজ নেই। বেকার হয়ে আছেন। একসময় এ নদীতে মাছ ধরেই তার মতো অনেকের সংসার চলতো। সবমিলিয়ে নদীটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় তাদের এখন অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাঁটাতে হচ্ছে।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, শালতা নদীর বিষয়টি নিয়ে তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষেরর সঙ্গে আলাপ করবেন। কারন নদীটি আমার সীমানা এলাকায়। সবার সঙ্গে আলাপ করে খননের ব্যবস্থা করতে হবে বলে তিনি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাইকগাছা উপজেলা কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ মজুমদার জানান, নদী টি পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। উর্দ্ধতন মহলের কাছে1 কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে শালতা নদী বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন বরাদ্ধ আসেনি।

তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার জানান, নদীটি খননের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে কোন মূল্যে শালতা খনন করতে হবে।

কপোতাক্ষের পর অস্তিত্ব সংকটে শিবসা

পাইকগাছায় কপোতাক্ষের পর নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী। শিববাঢী ব্রিজ থেকে হাড়িয়া চৌমুহনী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার নদী ভাটার সময় সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। ফলে জোয়ারের সময় কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও ভাটার সময় পারাপার থেকে শুরু করে বন্ধ হয়ে যায় নৌযান চলাচল।

পলি জমে জমে গত কয়েক বছরের মধ্যে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নদীটি খননের উদ্যোগ না নিলে, আগামী দু’এক বছরের মধ্যে গোটা পৌরসভাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রূপ নিবে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসী।

পাইকগাছা উপজেলার নদ-নদীগুলোর মধ্যে শিবসা ও কপোতাক্ষ অন্যতম। এ দুটি নদ-নদী উপজেলার প্রাণ। ইতোমধ্যে গত কয়েক বছর আগে ভরাট হয়ে গেছে কপোতাক্ষ। কপোতাক্ষের পর এবার অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী শিবসা। 

এক সময় এ নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, চলাচল করত। মালামাল পরিবহন থেকে শুরু করে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এ নদীটি। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত শতশত পরিবার। ঐতিহ্যবাহী নদীটি আজ মৃত প্রায়। কপোতাক্ষের পথ অনুসরণ করে গত কয়েক বছরে পলি জমে কপোতাক্ষের শেষ প্রান্ত অর্থাৎ শিববাঢী ব্রিজ থেকে হাড়িয়া চৌমুহনী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নদী নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে।

পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, নদীটি খনন করা না হলে আগামী দু’এক বছরের মধ্যে পৌরসভাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা রূপ নেবে স্থায়ী জলাবদ্ধতায়। ফলে ব্যাপক ফসলহানিসহ দুর্ভোগে পড়বে হাজার হাজার মানুষ।

উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স ম বাবর আলী বলেন, উপজেলার সকল নদ-নদীর প্রাণ হচ্ছে শিবসা নদী। এলাকার পানি নিষ্কাশন থেকে শুরু করে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এ নদীটি। এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং মানুষের জীবন যাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে নদীটি খনন জরুরি হয়ে পড়েছে।

নদীটি খননের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে বলে স্থানীয় এমপি এ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক জানান।

Sunday, June 7, 2015

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীন‘এর শুভ পরিণয়

পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীন ও ড. সালেহা আক্তার চন্দন‘এর শুভ পরিণয় গত ২৯ মে ২০১৫ তা‌রি‌খে সম্পন্ন হয়েছে।

তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের কামনায় 'ভয়েস অফ পাইকগাছা' !

ছবি :: এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ

সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী আর নেই

পাইকগাছার কৃতি সন্তান, খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্পিকার, বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী অ্যাডভোকেট শেখ রাজ্জাক আলী আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)

রোববার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে খুলনার ফারাজি পাড়াস্থ নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি অনেকদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ৫ কন্যাসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। সোমবার বিকালে জানাজা শেষে মরহুমের গ্রামের বাড়ী হিতামপুরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করার হবে বলে পরিবার সূত্র জানিয়েছে।


এদিকে সাবেক স্পীকার ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য শেখ রাজ্জাক আলীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

বর্ষীয়ান এই নেতার রাজনৈতিক‬ জীবন‬ ::

রাজনীতিতে শেখ রাজ্জাক আলীর হাতেখড়ি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে। কিন্তু বিভাজনের কারণে ১৯৬৪ সালে তিনি ন্যাপ ছাড়েন। ’৭৩-এ জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে জাসদের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন। 

১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ১৯৭৯, ’৯১ এবং ’৯৬ সালে (ষষ্ঠ ও সপ্তম সংসদ নির্বাচন) খুলনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালন করেন আইন প্রতিমন্ত্রী, ডেপুটি স্পিকার‪‎স্পিকারের‬। 

২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি কর্নেল (অব.) অলি আহমদের এলডিপিতে যোগ দেন। নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করলেও তিনি বিভিন্ন কারণে এলডিপি থেকে সরে আসেন। সেই থেকেই রাজনীতি থেকে দূরে রাজ্জাক আলী।

পর্যটনে সম্ভাবনাময় পাইকগাছার রাড়ুলীস্থ স্যার পি.সি রায়ের বসতবাড়ি

নির্মাণ আর স্থাপত্য নির্দশনের এক অপূর্ব সৃষ্টি জগদ্বীখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বসতভিটাকে ঘিরে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলীতে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পি.সি রায়ের বসতভিটা অপর সম্ভাবনাময় স্থান হওয়া সত্ত্বেও সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সঠিক উদ্যোক্তার অভাবে এতদিনেও গড়ে ওঠেনি পর্যটন কেন্দ্র। 

তবে কপোতাক্ষ নদের উপর বোয়ালিয়া-রাড়ুলী খোয়াঘাট এলাকায় নির্মাণাধীন ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হলে পি.সি রায়ের বসতভিটাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা শুধু সময়ের ব্যাপার বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট জেলার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী গ্রামের কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী সম্ভ্রান্ত এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্যার পি.সি রায়ের পিতা জমিদার হরিশ্চন্দ্র রায় এবং মাতা ভূবন মোহিনী দেবী। 

আচর্য পি.সি রায়ের শিক্ষাজীবন শুরু হয় পাঁচ বছর বয়স থেকে। ১৮৬৬ থেকে ১৮৭০ সাল এ চার বছর কাটে নিজ গ্রামের প্রাইমারী স্কুলে। ১৮৭১ সালে ভর্তি হন কলকাতার হেয়ার স্কুলে। তারপর ১৮৭৪ সালে অ্যালবার্ট স্কুলে। সেখান থেকেই ১৮৭৮ সালে এন্ট্রান্স, ১৮৮১ সালে এফএ পাস করেন তিনি। 

১৮৮২ সালে প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হয়ে অনার্সসহ স্নাতক শ্রেণীতে গণিতে অসাধারণ মেধার বলে তিনি গিলক্রাইষ্ট বৃত্তি নিয়ে চলে যান এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই বিএসসি ডিগ্রী নেন। রসায়নশাস্ত্রে গবেষণারত প্রফুল্ল চন্দ্র রায় মারকিউরাস নাইট্রাইট’র মত রসায়নশাস্ত্রে মৌলিক পদার্থ উদ্ভাবন করে সারা বিশ্বকে চমকে দেন। এরপর বিভিন্ন সময় সম্মানসূচক ডিগ্রী ১৮৮৬ সালে পিএইচডি, ১৮৮৭ সালে ডিএসসি, ১৯১১ সালে সিআইই, ১৯১২ সালে আবার ডিএসসি এবং ১৯১৮ সালে ফাদার অব নাইট উপাধিতে ভূষিত হন।

বহুগুণে গুণান্নিত পি.সি রায় ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী, দার্শনিক, শিক্ষক, শিল্পী ও সমবায়ের রূপকার। সমাজ সংস্কারে মানবতাবোধে উজ্জীবিত ছিলেন তিনি। তদানীন্তন সময়ে পল্লী গ্রামের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমবায় ব্যাংক পদ্ধতি চালু করেন। সমবায়ের পুরোধা স্যার পিসি রায় ১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে কো-অপারেটিভ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০৩ সালে বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায় পিতার নামে আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। 

উল্লেখ্য, ১৮৫০ সালে রাড়ুলীতে স্যার পি.সি রায়ের পিতা উপ-মহাদেশে নারী শিক্ষার উন্নয়নকল্পে স্ত্রী ভূবন মোহিনীর নামে বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান করেন। ১৯৩১ সালে খুলনার নিউ মার্কেটের পশ্চিম পার্শ্বে ২০৫.৯৯ একর জমিতে এপিসি কটন মিল স্থাপন করেন। মিলটির নাম বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে খুলনা টেক্সটাইল পল্লী নামকরণ করা হয়েছে। বাগেরহাটে পিসি কলেজ স্থাপন করেন। 

দেশ-বিদেশে তার প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান আজও অবিরাম মানব সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীর পদচারণা ও নিজ হাতের ছোঁয়ায় গড়ে ওঠা অসংখ্য প্রতিষ্ঠান আজও অবহেলিত রয়েছে। পি.সি রায়ের স্মৃতিবিজড়িত বসতভিটার ভবনগুলো যথাযথ রণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। এখনই সংরক্ষণে পদক্ষেপ না নিলে এক সময় তা কালের বিবর্তে হারিয়ে যাবে।

ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত। ১৯৪৪ সালে ১৬ জুন জীবনাবসান ঘটে বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের। ফাদার অব নাইট্রাইট খ্যাত বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞনী স্যার আচার্য পিসি রায়ের ভিটেবাড়ির ভবনগুলোও আজও অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত স্যার আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বসতভিটা প্রত্নতত্ব বিভাগের সংরক্ষণে রয়েছে। বাড়িটির স্থান বিশেষ সিমেন্ট মাটির ঘঁষামাজা ও কোথাও কোথাও চুনকামের আঁচড় ছাড়া সংরক্ষণের তেমন কোন ছোয়া লাগেনি। শ্রীহীন ভবনগুলোর কোথাও কোথাও ভেতরের ইট উঁকি দিচ্ছে খসে পড়বে বলে। স্বধীনতার পরবর্তী সময় বিভিন্ন ভাবে অপচেষ্টা চলে বিজ্ঞানী পি.সি রায়ের বসতভিটা অবৈধ দখলের। 

সর্বশেষ ২০০৯ সালে অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে স্যার পি.সি রায়ের স্মৃতিবিজড়িত বসতভিটা দখল করে নেয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। এতে ফুঁসে উঠে পিসি প্রেমী এলাকার সচেতন মানুষসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা। কঠোর আন্দোলনের মুখে যে সময় রাতের অন্ধকারে মূল্যবান অনেক সম্পদ নিয়ে পালিয়ে যায় দখলদাররা।
গত কয়েক বছর যাবৎ সরকারী উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে পি.সি রায়ের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী। ওই দিন দেশ-বিদেশ থেকে অনেক অথিতি আসেন রাড়ুলীতে। যদিও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক পর্যটক আসেন না। 

জেলা শহর থেকে স্যার পি.সি রায়ের জন্ম ভূমির পর্যন্ত সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আজও গড়ে ওঠেনি। তবে কপোতাক্ষ নদের উপর বোয়ালিয়ায় নির্মাণধীন ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন ঘটবে। স্যার পি.সি রায়ের জন্মভূমিতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং জাতীয়ভাবে তার জন্মবার্ষিকী পালন করা হোক এটাই এলাকাবাসী প্রত্যাশা করেন।

--প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা।