Thursday, April 25, 2013

টানাহেচড়াতেই ভবন ধস, অটল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (মখা) !

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তথাকথিত হরতাল সমর্থক লোকজন কারখানা বন্ধ করার জন্য ফাটল ধরা স্তম্ভ নিয়ে টানাহেচড়া করেন।" এর ফলে ধস হয়েছে কিনা বা ধস তরান্বিত হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখতে হবে বলে তিনি জানান।

বুধবার বিবিসিকে দেয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক সাক্ষাতকারে এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার জের ধরে সাংবাদিকরা প্রেস ব্রিফিংয়ে এ প্রশ্ন তোলেন।

বিবিসিকে দেয়া ওই সাক্ষাতকারে ভবন ধসের জন্য স্থানীয় বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দায়ী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, কিছু হরতাল সমর্থক ভবনটির ফাটল ধরা দেয়ালের বিভিন্ন স্তম্ভ এবং গেট ধরে নাড়াচাড়া করেছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। ভবনটি ধসে পড়ার পেছনে এটি একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।

"এখানকার মৌলবাদী... বিএনপি... এদের হরতালের জন্য আহ্বান জানাচ্ছিল। আমাকে বলা হয়েছে, হরতাল-সমর্থক কতিপয় ভাড়াটে লোক সেখানে গিয়ে ওই যে ভাঙা দালান ছিল বা ফাটল ধরা দালান ছিল, সেই দালানের বিভিন্ন স্তম্ভ নিয়ে নাড়াচাড়া করে এবং যে গেট বা দরজা ছিল, সেটা নিয়েও নাড়াচাড়া করে। এটাও এ ধরনের একটি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।"

ভবন ধরে নাড়াচাড়া করার কারণেই ভবনটি ধসে পড়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিবিসিকে বলেছিলেন, "ভবন সম্পর্কে মনে রাখা দরকার, যখন একটি ভবন ধসে পড়া শুরু হয়, তখন তার একটি অংশ বা খানিকটা অংশ ধসে পড়লে বাকি অংশের ওপরও এর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সে ধরনের প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হতে পারে।"

ব্রেকিং NEWS..........

উদ্ধারকর্মীদের প্রাণপন চেষ্টার ফসল হিসাবে ধ্বসে পড়া "রানা প্লাজা" ভবনের ভিতরে আটকা পড়া একটি কক্ষ থেকে একটু আগে একসাথে ৪০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

খুলনার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নয় বছরেও ভাঙা হয়নি !

নয় বছরেও খুলনার দুই শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে না ফেলায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা জোরালো হচ্ছে। এর মধ্যে মহানগরীর বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র বড় বাজারে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৪ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নগরীর এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করলেও তার একটিও নয় বছরে ভাঙা সম্ভব হয়নি। ভবনগুলো ভেঙে ফেলার জন্য প্রত্যেক বছর তোড়জোড় করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বসবাসের অযোগ্য শত বছরের পুরানো ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে বাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ। এসব ভবন যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। ঘটতে পারে সাভারের রানা প্লাজার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।


প্রতি বছরই এসব বাড়ি নিজ খরচে ভেঙে ফেলার নোটিশ দেয় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু সে নোটিশে আজ পর্যন্ত কারও টনক নড়েনি। এরই মধ্যে এসব ঝুকিঁপূর্ণ ভবন ধসে কয়েকবার হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে বাসিন্দাদের এরপরও সরানো যায়নি। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে কয়েক শতাধিক পরিবার বসবাস করছেন। রয়েছে কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও।

বিশেষ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সবশেষ ১/১১-পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্দেশ মোতাবেক ২০০৮ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মাধ্যমে ৪৪টি ভবনকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আরও ১০৭টি বাড়িকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকাভুক্ত করে। এই ১০৭টি ভবনের মধ্যে খুলনা সিটি করপোরেশনের চিহ্নিত ৪৪টি ভবনের সঙ্গে আরও ৫০টি ভবন যোগ হয়ে কেসিসি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৪-এ। পক্ষান্তরে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত এলাকা নওয়াপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় নওয়াপাড়া পৌরসভা ও দামোদর ইউনিয়ন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা ৫৭টি। সব মিলিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ২০১টিতে।

সূত্র মতে, ২০০৮ সালে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে খুলনা জেলা প্রশাসন, খুলনা সিটি করপোরেশন, দামোদর ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ এবং নওয়াপাড়া পৌরসভা বরাবর চিঠি পাঠানো হয়। সে মোতাবেক এসব ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ ও বসবাসের যোগ্য নয় লিখিত সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর এসব ভবন ভেঙে ফেলার জন্য দেওয়া হয় কয়েক দফা নোটিশও। তবে এতে সাড়া দেননি সংশ্লিষ্ট ভবনের মালিক বা ব্যবহারকারীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বড়বাজার এলাকায় জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি ভবনের অধিকাংশ দোতলা বা তিনতলা। এসব ভবনের ওপরের অংশে লোকজন বসবাস করছেন এবং নিচতলায় দোকানপাট ও কাঁচামালের আড়ত। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবনে বসবাসকারী মানুষ ও বাজারে আসা লোকজনের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। এ বাজারে ২০০৮ সালে একটি ভবন ধসে একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হন। নগরীর জেলা কারাগারের পুরোনো ভবন, টুটপাড়া আনসার ক্যাম্পের ভেতরে ভূতের বাড়ি, খুলনা জেনারেল হাসপাতালের সামনে একটি তিনতলা ভবন ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে স্যার ইকবাল রোডে, বসুপাড়া, হাজি মহসিন রোড, গগনবাবু রোড, মুন্সিপাড়া, রায়পাড়া, দোলখোলা, বানিয়াখামার, টুটপাড়া, মুজগুন্নী, খালিশপুর, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। জরাজীর্ণ এসব ভবনের দেয়ালে পাকুড় ও বটগাছসহ বিভিন্ন ধরনের আগাছা জন্মেছে। অনেক আগেই এসব ভবনের পলেন্তারা খসে পড়ে দেয়ালগুলোয় ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির সময় ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের এস্টেট অফিসার মো. নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, বার বার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মালিকদের নোটিশ দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, সম্ভাব্য দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়াতে সিটি করপোরেশন আন্তরিক। এ কারণেই এ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের মালিকানা নিয়েই মামলা রয়েছে। এজন্য উদ্যোগ নিয়েও ঝুকিঁপূর্ণ ভবন ভাঙা সম্ভব হয়নি। একদিকে ভবন ধসে পড়ার আশংকা, অন্যদিকে মাথা গোজার শেষ ঠাঁই।

স্থানীয়রা বলছেন, এই ঝুঁকি নিয়ে যারা এসব ভবনে বাস করছেন জীবন বাঁচাতে তাদের শিগগির বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে ঢাকার সাভারের রানা প্লাজার মতো ভবন ধসে ঘটতে পারে বড় ধরণের প্রাণহানির ঘটনা।

খুলনা জর্জ কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, “পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙতে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। মৃত্যুফাঁদ এসব ভবনে আর কোন সাভার ট্রাজেডি যেন না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

হরতালকারীরাও ভবন ধসে দায়ী হতে পারে !

হরতালকারীরাও ভবন ধসে দায়ী হতে পারে- বিবিসিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

▣ খুব ইচ্ছা করছে, আমার ১০ নম্বর বাটার জুতাটির সৎব্যবহার করতে !!!