Monday, March 30, 2015

খুলনা-কয়রা সড়কের বেহাল দশা; ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অর্থনীতি

খুলনার সর্ব দক্ষিণের উপজেলা কয়রা। সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ির একটি বড় অংশের জোগান হয় এ উপজেলা থেকে। এ অঞ্চলের অর্থনীতি জেলার সামগ্রিক অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করছে বহুবছর ধরেই। তবে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র প্রধান সড়কটি গত এক বছর ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

ছবি :: উত্তীয় দেবনাথ

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জেলা সদরের সাথে কয়রা উপজেলা সদরের দূরত্ব মাত্র ১০০ কিলোমিটার। এ পথটুকু পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির অধিকাংশ স্থান খানাখন্দে ভরা। মাত্র দুই বছর আগে মেরামত করা হয় সড়কটি। দু’বছর পরে আবারও পুরনো চেহারায় ফিরে গেছে সড়কটি। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে জেলা সদরে পণ্য আনা-নেয়ায় বাড়ছে খরচ। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে এ অঞ্চলের মানুষের।

সব থেকে বেশী খারাপ অবস্থা কয়রার চাঁদালী থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত। ২০১১-১২ অর্থ বছরে এ সড়কটি মেরামত করা হয়। ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সড়কের ফুলতলা, দেয়াড়া, বামিয়া, বাগালী ও চাঁদালী ব্রীজের দক্ষিণ অভিমুখী অধিকাংশ স্থান ছোট বড় খানাখন্দে ভরে উঠেছে। রাস্তার বেশীর ভাগ জায়গায় ইটের খোয়া বের হয়ে রয়েছে। ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়িত। গাড়ীর চাকা ঘুরলে লালচে ধুসর ধুলোয় মানুষের চোখ মুখ ভরে যাচ্ছে। সড়কের দু’পাশের বাড়িঘর ভরে যায় ধুলোয়। বাস, মিনিবাস ট্রাক, মোটর সাইকেল, নসিমন, করিমনে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের আব্দুল হাই জানিয়েছেন, জীবিকার সন্ধানে প্রতিনিয়ত রীতিমতো ঝাঁকুনি খেয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। অনেকে আবার বিকল্প পথ ধরে আরো ৭/৮ কিলোমিটার পথ ঘুরে উপজেলা সদরে এসে থাকে।

বাস চালক মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘যাত্রী নিয়ে আল্লাহর ওপর ভরসা করে চলতে হয়। না জানি কখন বড় দুর্ঘটনায় পড়ি। এতগুলো মানুষকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো কিনা শঙ্কা নিয়েই গাড়ীর ষ্টিয়ারিং ধরি। ক্ষতির কথা ভেবে অনেক গাড়ী চালক এ পথে আসতে চান না’।

কয়রা উপজেলা মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বিশ্বাস বলেন, বছরে কোটি কোটি টাকার রপ্তানীযোগ্য মাছ এ উপজেলা থেকে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সাদা সোনা খ্যাত মৎস্য সম্পদ বড় ভূমিকা রাখলেও এলাকার সার্বিক উন্নয়নের ব্যাপারে সরকারের ব্যর্থতায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়িরা ক্ষুব্ধ। অবিলম্বে সড়কটির সংস্কারসহ ব্যবসায়িদের সকল দাবি পুরনের জোর দাবি জানান তিনি।

সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: অলিউল হোসেন বলেন, খুলনা-পাইকগাছা সড়কটি মেরামতের কাজ চলছে। পাইকগাছা থেকে খুলনা সড়কটি সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে এসেছে। কয়রার অংশে যেটুকু সংস্কারযোগ্য সেটুকু মেরামতের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

----আহমদ মুসা রঞ্জু