Saturday, April 20, 2013

২০ হাজার টাকায় আপোষরফাসহ এফিডেফিট !

অবশেষে সালিশদারদের চাপের মুখে ২০ হাজার টাকায় আপোষরফা শেষে এফিডেফিট করা হয়েছে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির শহরতলীর সলুয়া গ্রামের চাঞ্চল্যকর গৃহবধু (২৫) ধর্ষন চেষ্টা মামলা। গত দু’সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এর সাথে জড়িত ঘটনার নায়ক লম্পট নওয়াব আলীকে আটক করতে না পারায় আসামীদের চাপের মুখে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে বাদীপক্ষ আপোষ করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে এ ঘটনাটি মিথ্যা বলেও দাবী করেছে নওয়াব আলীর শাশুড়ি তারাবানু। আপোষ রফাসহ এফিডেফিট করার কারন কি? এমন এক পশ্নে সে জানায় পুলিশি হয়রানী এড়াতে তারা আপোষ করতে বাধ্য হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কপিলমুনি ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই আব্বাস জানান, আপোষ মিমাংশার বিষয় একটি এফিডেফিট কপি উভয়পক্ষ জমা দিয়েছে। তবে এ মামলায় চার্জশীট প্রদানের কথা জানান তিনি। তবে দীর্ঘদিন আসামী গ্রেফতার না হওয়ার বিষয় তিনি বলেন আসামী ধরার চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার উত্তর সলুয়া গ্রামের অসহায় গৃহবধু রেশমা বেগম গত ১ এপ্রিল রাত ১১:৪৫ মিঃ নিজঘরে অবস্থানকালে তার স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে পার্শ্ববর্তী একই এলাকার মানিক সরদারের লম্পট পুত্র নওয়াব আলী ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায় গৃহবধু’র ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে তার পূর্বেই লম্পট নওয়াব আলী পলিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনার পর থানায় মামলা হলেও সৃষ্ট ঘটনায় আসামীদের অব্যাহত চাপের মুখে পড়েছে অসহায় পরিবারটি। সর্বশেষ নেক্কার জনক এ ঘটনায় আপোষরফা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

খুলনার ডুমুরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, আহত ১২

ডুমুরিয়ায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩জন নিহত ও মহিলাসহ ১২জন আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে উপজেলার জিলেরডাঙ্গা নামকস্থানে। আহতদেরকে খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর স্থানীয় উত্তেজিত জনতা সড়ক অবরোধ করে রাখে এবং মহাসড়কে স্পিডব্রেকার তৈরি করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়োন্ত্রনে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের জিলেরডাঙ্গা নামকস্থানে গতকাল শনিবার ভোর ৬টার দিকে ডুমুরিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবোঝাই একটি ইঞ্জিন ভ্যান এবং একটি মটর সাইকেলকে বিপরীত দিক থেকে ছেড়ে আসা একটি মুরগী বহনকারী পিকআপ ভ্যান (যার নং- খুলনা মেট্রো ন ১১-০৩৪০) নিয়োন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডান পাশে চলে যেয়ে প্রথমে মটর সাইকেল এবং পরে ওই ইঞ্জিনভ্যানকে চাপা দেয়।


এতে ঘটনাস্থলে ইঞ্জিন ভ্যানের যাত্রী আরাজি ডুমুরিয়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম রঞ্জু (৬০) ও গুটুদিয়া গ্রামের ঘন্টারাম মন্ডল (৫০) নিহত হন। এছাড়া ইঞ্জিনভ্যানের যাত্রী কমোলপুর গ্রামের শাহাদাৎ মোড়ল (৫০), রোস্তম মোড়ল (৫০), গুটুদিয়া গ্রামের গোপাল মন্ডল (৪০), তুলসী রানী মন্ডল (৪৫) এবং মটর সাইকেল আরহী পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি এলাকার হাবিবুর শেখ (৪০), আজিজুল বিশ্বাস (৬০) ও আঃ সালাম (২৫) সহ আরো কয়েকজন আহত হয়।

খবর পেয়ে ডুমুরিয়া ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় বেলা ১২টার দিকে আজিজুল বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর এলাকার উত্তেজিত জনতা প্রায় ২ঘন্টা সড়ক অবরোধের পর গুটুদিয়া থেকে জিলেরডাঙ্গা পর্যন্ত ৫টি স্পিড ব্রেকার (রাস্তায় গতিরোধক) নির্মাণ শুরু করেন।

খবর পেয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল হাসান, জেলা সহকারী পুলিশ সুপার আঃ কাদের বেগ, থানার ওসি এম মশিউর রহমান ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

পাইকগাছায় কালবৈশাখী ঝড়ে ৫ দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

''যে দেশে মেঘ হলেই বিদ্যুৎ চলে যায়, সে দেশে ঝড় হলে এক সপ্তাহ বিদ্যুৎ থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক কোন কিছুই নয় ! বিদ্যুৎ বিভাগ একটি জনগুরুত্বপূর্ণূ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হলেও জনগণের কাছে এদের কোন জবাবদিহিতা নেই। ফলে, প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ নিয়ে জনভোগান্তি বেড়েই চলেছেই।'' কাল বৈশাখী ঝড়ের কারণে পাইকগাছার গত ৫ দিনে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে গ্রাহক হারুন-অর-রশিদ এ ধরণের অভিমত ব্যক্ত করেন।

অপরদিকে পুরাতন ও লংওয়ে বিদ্যুৎ লাইন, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও জনবল সংকটের কারণে এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে বলে সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন। উল্লেখ্য, টানা ৩ দিনের কাল বৈশাখী ঝড়ে গত মঙ্গলবার হতে শনিবার পর্যন্ত ৫ দিন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পাইকগাছার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।

প্রসঙ্গতঃ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাল বৈশাখী ঝড় আঘাত হানলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পরের দিন বুধবার বিকালে সংযোগ চালু হলেও দু’এক ঘণ্টা যেতে না যেতেই সন্ধ্যায় আবারও আঘাত হানে কাল বৈশাখী। ঝড়ে উপজেলার কয়েকটি স্থানের বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও উপড়ে যাওয়া বিপাকে পড়েন বিদ্যুৎ বিভাগ।

বৃহস্পতিবার বিকালে মেইন লাইন চালু করলেও বিচ্ছিন্ন থেকে যায় বিস্তীর্ণ এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পল্লী বিদ্যুতের কয়েকটি টিম রাত দিন চেষ্টা করে যখন সম্পূর্ণ সংযোগ চালু করেছেন ঠিক তখনই শুক্রবার সন্ধ্যায় পুনরায় আঘাত হানে কাল বৈশাখী।

শনিবার কিছুক্ষণের জন্য পুনঃরায় সংযোগ চালু করলেও বিনা মেঘে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। এভাবেই বার বার আঘাত হানার ফলে কাল বৈশাখীর কাছে পরাস্ত হচ্ছে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ।

গত ৫ দিনে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে ভেঙ্গে পড়েছে তথ্য সংযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে সকল মিল, কল-কারখানা ও আইস ফ্যাক্টরী। রিচার্জের অভাবে অধিকাংশ মোবাইল বন্ধ হয়ে গেলেও বিকল্প ব্যবস্থায় কিছু কিছু মোবাইল চার্জ করা গেলেও নেটওয়ার্ক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাংলালিংক মোবাইল অপারেটর গ্রাহকদের।

এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক কমিটির সাবেক পরিচালক ডাঃ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পুরাতন ও বিদ্যুৎ লাইন লংওয়ে হওয়ার কারণে যে কোন কারণে ত্র“টি দেখা দিলে তা চিহিত করতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ জন্য তিনি পুরাতন লাইন পরিবর্তন করে নতুন লাইন স্থাপনের দাবী জানান। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ জানান, শনিবার সংযোগ চালু করা গেলেও নতুন করে ত্রুটি দেখা দেয়ায় বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কখন চালু করা হবে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি।

সংখ্যালঘুদের উপর হামলায় চেয়ারম্যানের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন

অবশেষে এক সপ্তাহ পর পাইকগাছার দেলুটী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান। তিনি শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান এবং এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। সভায় বক্তারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত দু’নেতার গ্রেপ্তারের দাবী জানান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ী ঘর পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল জায়গা জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা উপজেলার দেলুটী সরদার পাড়ার ১৫টি সংখ্যালঘু বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করে।