Thursday, August 21, 2014

পাইকগাছায় কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণের শিকার, ধর্ষিতা উদ্ধার; আটক ২

পাইকগাছায় কলেজ ছাত্রী (১৬) গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। পুলিশ ধর্ষিতাকে উদ্ধারপূর্বক এক ধর্ষক ও তার সহযোগীকে আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার মালথ গ্রামের জনৈক ব্যক্তির কন্যা ১ম বর্ষের ছাত্রী সোমবার ১২টার দিকে উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামে তার খালার বাড়ী যাচ্ছিল। পথিমধ্যে মাহমুদকাটি ও কপিলমুনি গ্রামের ৩ যুবক সুব্রত, খোরশেদ, মুনমুন জোর করে ধরে নিয়ে জনৈক হারুনের বাড়ীতে হারুনের সহযোগিতায় পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষিতা মান-সম্মানের ভয়ে মুখ খুলেনি।

এ ঘটনা পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ সিকদার আককাস আলি জানতে পেরে বুধবার বিকালে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে এবং ধর্ষিতার বয়ান মতে, মুনমুন ও বাড়ীর মালিক হারুনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে ধর্ষিতা ও ধর্ষকদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

পাইকগাছার হরিঢালী ফাঁড়ির এএসআই ফজর আলীর ধৃষ্টতা

জামিনের রিকল এর তোয়াক্কা না করে গ্রেফতারের ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন হরিঢালী পুলিশ ফাড়ির এএসআই ফজর আলী। শুধু অসৌজন্যমূলক আচরণে গ্রেফতার নয় সেই সাথে ৫ হাজার টাকা উৎকোচও দাবি করেন এএসআই ফজর আলী। হরিঢালী ইউনিয়নের হরিদাসকাঠী গ্রামের আকবর বিশ্বাসের ছেলে দোকান কর্মচারী রবিউল ইসলাম এ অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, গত ২৬ জুন ২০১১ তারিখে রবিউলের পিতা আকবর বিশ্বাস বাদি হয়ে পাইকগাছা থানায় ছেলে রবিউলের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলা নং জিআর ২৬১/১১। পরে নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান করে পিতা আকবর বিশ্বাস মামলা প্রত্যাহারের জন্য আদালতে হলফনামা প্রদান করেন। সেই কারণে পাইকগাছার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১৫/০৫/২০১৪ তারিখে রবিউণকে জামিন দেন।

জামিন নেওয়ার কিছুদিন পর গত ১৯ আগষ্ট রাত ২টায় হরিঢালী পুলিশ ফাড়ীর এএসআই ফজর আলী রবিউলের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার করে ফাঁড়ীতে নিয়ে যান। এ সময় তাকে জামিনের রিকল দেখানো হলেও রবিউলের পরিবারের সদস্যদের সাথে এএসআই ফজর আলী খারাপ আচরণ করেন। তবে ৫ হাজার টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে দারোগা ফজর আলী সাফ জানিয়ে দেন।

শুধু তাই নয়, হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে পেটানো হবে মর্মে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। রবিউলের পরিবার টাকা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে রবিউলকে থানায় চালান দেন। এরপর সকালে রবিউলের ২ শিশু সন্তানসহ স্ত্রী রিকল নিয়ে থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দেখালে তিনি রবিউলকে ছেড়ে দেন।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন কর্মকর্তার এহেন বেআইনি কর্মকান্ডে সুধীমহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হলে তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

পাইকগাছায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে চুইঝাল আবাদে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আব্দুর সবুর মোড়ল

পাইকগাছায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে চুইঝাল চাষ করে সফলতা লাভ করেছেন এলাকার চাষী আব্দুর সবুর মোড়ল। লবণাক্ত উপকূল এলাকা পাইকগাছার গোপালপুরে এই প্রথম বানিজ্যিক ভিত্তিতে চুইঝাল চাষ করে সফল হয়েছেন। 

এই চুইঝাল তরকারিতে মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়। মাংস রান্নায় এই চুইঝালের ব্যাপক চাহিদা। চুইঝাল মাংসে না দিলে রান্না যেন সম্পন্ন হয় না। চুইতে হালকা ঝাল এবং খুব সুস্বাদু। ডাল ছাড়া যে কোন তরকারিতে ব্যবহার করা যায়। তরকারি হিসেবে চুই এর ডাটা রান্না করে খাওয়া যায়। কাচা ঝাল ও গোল মরিচের বিকল্প হিসেবে চুইঝাল রান্নায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

খুলনা, যশোর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় চুইঝাল ব্যাপক জনপ্রিয়। চুই লতা জাতীয় গাছ। এ এলাকার প্রতিটি গ্রামে কোননা কোন বাড়িতে চুইঝাল গাছ রয়েছে। এ চুইঝাল গাছ আম গাছ, সুপারী গাছসহ বিভিন্ন গাছের গোড়ায় রোপন করে দেওয়ার পর লতার মত গাছে উঠে যায়। গাছ রোপন করার পর ৪/৫ বছর পরে এক একটি চুই গাছ ২/৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

এলাকার সফল চাষী আব্দুস সবুর মোড়ল পরীক্ষামূলক ১৩ সালের নভেম্বরে ৬৪টি চারা নিয়ে বানিজ্যিক ভিত্তিতে চুই চাষ শুরু করেন। তিনি চারা কাটিং করে ৬৪টি চারা করে বেড করে আবাদ শুরু করেন। ৩/৪ কাঠা জমিতে ১ মিটার দুরে দুরে চারা রোপন করেন। প্রতিটি বেডের উপরে তিনি পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করেছেন যাতে অতিরিক্ত রৌদ্র তাপে চারা মরে না যায়। ৬ মাস পরে এ লাগানো চারা থেকে ডাল কেটে তিনি চারা তৈরি শুরু করেন।

এভাবে তিনি প্রায় ৫ হাজার চারা ক্ষেতে রোপন করেছেন। তিনি কাটিং পদ্ধতিতে টপে লাগানো এক একটি চারা ১৫০/২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তাছাড়া কাটিং করা চারা ৪০/৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি এ পর্যন্ত চুই গাছের চারা ও ডাটা বিক্রি করে প্রায় ১০/১২ হাজার টাকা আয় করেছেন। বাজারে চুই এর মোথা ৮০০ থেকে ১ হাজার ও ডাটা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

চুই গাছের প্রতিটি গিট থেকে চারা উৎপাদন করা যায়। উঁচু জমিতে চাষ করলে চুই এর আবাদ ভাল হয়। গোবর সার এর জন্য উপযুক্ত। অতিবৃষ্টি হলে চুই গাছের গোড়ায় পানি জমে গেলে গাছের গোড়া পচে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। সে জন্য গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সে জন্য সব সময় খেয়াল রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চুইঝাল পাইকগাছায় ব্যাপক জনপ্রিয় ও এলাকায় চাহিদা খুব বেশি। এলাকায় কিছু কিছু বাড়িতে গাছে চুইঝাল চাষ করা হয়। এবার কৃষি অধিদপ্তর থেকে চুই ঝালের চাষ সম্প্রসারণ করার জন্য উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাতে ১১’শ চুইঝালের চারা বিতরণ করা হবে। চুইঝাল রান্নায় মসলা হিসাবে ব্যবহারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে চুইঝাল দেশে বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানী করাও সম্ভব।

সে জন্য উপজেলার বিভিন্ন ব্লকে কৃষকদের নিয়ে চুইঝাল চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাইকগাছায় চুইঝাল আবাদে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকায় চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

পাইকগাছায় জুয়েলার্সের দোকানে চুরি

পাইকগাছার কাটিপাড়া বাজারে দে জুয়েলার্সে চুরি সংগঠিত হয়েছে। চোরেরা প্রায় ২ লক্ষ টাকামার মালামাল নিয়ে গেছে।

গত মঙ্গলবার রাতে সংঘবদ্ধ চোরেরা দোকানের পিছনের গ্রীল কেটে ভিতরের শোকেচ, আলমারী ভেঙে ৩ ভরি সোনা, ৭/৮ ভরি রুপা ও নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। সকালে দোকানের কর্মচারী এসে দেখে দোকান ভাঙা দেখে মালিককে খবর দেয়। দোকান মালিক উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের কাটিপাড়া গ্রামের শংকর দের পুত্র বিকাশ দে।

বিকাশ জানান, প্রতিদিনের ন্যায় গত রাতে তিনি তালা বন্ধ করে বাড়ি যান। প্রায় নগদ টাকা সহ প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।