Sunday, August 31, 2014

পাইকগাছায় এমপি নুরুল হকের গাছের চারা ও মাছের পোনা বিতরণ

খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা)’র এমপি এ্যাডঃ শেখ মোঃ নুরুল হক বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, ছাত্র-ছাত্রী ও প্রাতিষ্ঠানিক জলাশয়ে গাছের চারা ও মাছের পোনা বিতরণ করেছেন। তিনি রোববার সকালে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও সামাজিক বনবিভাগ আয়োজিত পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গাছের চারা ও মাছের পোনা বিতরণ করেন। 

উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পৃথক বিতরণ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, খুলনার নার্সারী উন্নয়ন কেন্দ্রের ফরেস্ট রেঞ্জার শেখ শহিদুল ইসলাম।

বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহানারা খাতুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ কামরুল ইসলাম, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এস,এম,এ রাসেল, উপজেলা কৃষি অফিসার বিভাস চন্দ্র সাহা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবাশীষ সরদার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম, উপজেলা বণ কর্মকর্তা প্রেমানন্দ রায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার, প্রধান শিক্ষক অপু মন্ডল, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা এস,এম, শহীদুল্লাহ, শিক্ষক অজিত কুমার ও শেখ মনিরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক জলাশয়ে ৪৫০ কেজি রুই জাতীয় মাছের পোনা ও সামাজিক বনবিভাগের উদ্যোগে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ১৫ হাজার ফলজ, বনজ, ভেজস ও ৪০০ নারিকেলের চারা বিতরণ করা হয়।

এই চড়ুই পাখি দেখেও কি আপনার বিবেক জাগ্রত হয়না?

চড়ুই পাখি গাছের শুকনো লতা পাতা দিয়ে বাসা তৈরি করে। কিন্তু চড়ুই পাখি গাছ পাবে কোথায়? আমরা তো গাছ কাটার মহাউৎসবে যোগ দিয়েছি। যে যখন পারছি গাছ কাটছি। গাছ লাগানোর কোন চিন্তাই নেই। বাসা তৈরি করার জন্য শুকনো লতা পাতা না পেয়ে শেষে নষ্ট তার দিয়ে তৈরি করেছে বাসা।

চড়ুইকে বাঁচাতে, এই পৃথিবীকে বাঁচাতে এখনই গাছ লাগান। 


A Voice of Paikgacha Campaign.

পাইকগাছায় বসতবাড়ির রান্নাঘরে অগ্নি সংযোগ; লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি

পাইকগাছায় দুর্বৃত্তরা অসহায় এক পরিবারের বসতবাড়ির রান্নাঘরে অগ্নি সংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। খবর পেয়ে রবিবার সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স. ম. বাবার আলী ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

জানা গেছে, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের চেঁচুয়া গ্রামের হাজের আলীর পরিবারের সাথে একই এলাকার নজরুল ইসলাম গংদের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলা মামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ২৮ তারিখে উভয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।

এতে হাজের আলী পরিবারের জেসমিন নাহার, জাহানারা বেগম ও সোবহান গাজী মারাত্মক আহত হন এবং তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় উভয় পরিবারের সদস্যরা একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন।

সর্বশেষ হাজের আলীর পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসাজনিত ও মামলার কারণে বাড়িতে অনুপস্থিত থাকার সময় শনিবার রাত ১০টার দিকে বসতবাড়ি সংলগ্ন রান্না ঘরে আগুন দেখে স্থানীয় লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে স্থানীয়রা আগুন লাগার সঠিক কারণ জানাতে পারেননি। তবে তারা ধারনা করছেন পূর্বশত্রুতার জের ধরে কেউ এ কাজ করতে পারে।

এ ব্যাপারে ওসি শিকদার আককাস আলী জানিয়েছেন, হাজের আলী ও নজরুল পরিবারের মধ্যে দীর্ঘ দিন জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। সে কারণে শত্রুতামূলকভাবে প্রতিপক্ষ হাজের আলীর ঘরে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে কিংবা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হাজের আলী এ কাজ করতে পারে আবার তৃতীয় কোন পক্ষও এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই তদন্ত না করে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।

কয়রায় জীবন যুদ্ধে আদিবাসী শিশুরা !

দক্ষিনাঞ্চলের সুন্দরবনের পাদদেশে অবস্থিত কয়রা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে মাহাতো জনগোষ্টী আদিবাসী মুন্ডারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে। আধুনিক সভ্যতার যুগেও আদিম জীবন অভ্যস্ত এরা। কিছু কিছু আদিবাসী পরিবারের সদস্যরা আধুনিকতার সামান্য ছোয়া পেলেও অধিকাংশই আধুনিকতা থেকে বঞ্চিত। অক্ষর জ্ঞানহীন এবং অত্যান্ত সরল বিশ্বাসী হওয়ায় প্রতারকের খপ্পরে পড়ে কয়রায় বসবাসকারী আদিবাসী পরিবারের সদস্যরা অনেকেই এখন নিঃস্ব। 

পাউবোর বেড়ী বাধের ছোলপ মহাজনের পরিত্যাক্ত জমি অথবা জনবসতি এলাকার যেকোন এক কোনায় এদের মাথা গোজার ঠাই। জীবনের তাগিদে এরা বেছে নিয়েছে বিভিন্ন পেশা। কেই অন্যের জমিতে ক্ষেতে দিন মজুরের কাজ করে কেউ বনে জঙ্গলে মাছ ধরে কেউ গৃহপালিত পশুর খোজ করনের কাজ করে। কয়রা উপজেলার কয়রা সদর, উত্তরবেদকাশী, দক্ষিন বেদকাশী এই ৩টি ইউনিয়নে আদিবাসীদের নিবাস। জীবন যুদ্ধ আদিবাসীদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

নিজের বলতে যা ছিলো কালের বিবর্তনে তা বেহাত হয়ে গেছে। নিজ আদিভুমিতে তারা এখন অন্যের প্রজা। আদিবাসী পরিবারের নারী পুরুষ সবাই পরিবারের জীবিকার তাগিদে ঘরে বাইরে কাজ করে। তার পরেও দুঃখ দৈন্য তাদের ছেড়ে যেতে চায়না। আদিবাসীদের অভাবের সংসারে তাদের শিশুরা জন্মের পরেও দুঃখ কষ্টের সঙ্গে নিবিড় ভাবে পরিচিত হয়। হাতে গোনা কিছু শিশু ছাড়া অধিকাংশ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। পিতা মাতার কষ্টের সংসারে তারাও সে কষ্টের ভাগ নেয় হাসিমুখে।

এমনই ৩ আদিবাসী শিশুর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। কয়রা ইউনিয়নের ৬নং গ্রামের অমল মুন্ডার ছেলে চিনময়, রাখাল মুন্ডার ছেলে অচিন্ত মুন্ডা, দিনাবন্ধু মুন্ডার ছেলে ভগিরাত মুন্ডা। এদের সকলের বয়স ৯/১০ বছর। তারা গত রবিবার সকালে ৬নং কয়রা গ্রামের আতিয়ার ঢালীর বাড়িতে ঢিল ভাঙ্গার কাজ করছিল।

নাম জিজ্ঞাসা করতেই অনেকটা ভীত হলো তারা, মনে করছে কি জিজ্ঞাসা করবে। এমনই অন্তহীন সমস্যায় এরা ৬নং কয়রা গ্রামের গ্রামীন প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ে। তারা জানায় অভাব অনটনের সংসারে পিতা মাতার সহযোগিতায় এত পরিশ্রমের কাজ করছে। ঢিল ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে একজনের হাতে ফোসকা উঠলে হাতটি ঢেকে রাখতে চাইলেও ঢেকে রাখতে পারিনি।

শিশুদের চোখে মুখে যে কষ্টের ছাপ পড়ে আছে তার পরও করার কিছুই নেই। রোজগার করেই তাদের দুমুঠো ভাত মুখে দিতে হবে। দক্ষিন বেদকাশী ইউনিয়নের ছোট আংটিহারা গ্রামের আদিবাসী মুন্ডা এলাকায় ঘুরে দেখা যায় অনেক শিশুরা অনাদরে অবহেলায় পড়ে আছে। সবিতা (৭) দিপালী (১৩) নিলিমা (১০) এরা সবাই নদীতে রেনু পোনা ধরার কাজ করছে। ওরা বিদ্যালয়ে যায়না পরিবারের সহযোগিতা করা একমাত্র কাজ হিসাবে বেছে নিয়েছে।

তাদের দাবী সরকারের একটু পৃষ্টপোষকতা পেলে মাথা গোজার ঠাই পেয়ে তারা অন্যদের মত জীবন যাপন করতে পারতো। এর অনেকে অনেক পরিশ্রমের কাজ করে থাকে। প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের বাড়িতে কাজ কতে যেয়ে অনেক সময় মালিক পক্ষ বকাঝকা করে, এমনকি অনেক নির্যাতনের শিকার হয়। এতকিছুতেই তাদের তেমন কোন দুঃখ নেই। জন্ম থেকেই পিতামাতার জীবন সংগ্রাম দেখে তারাও জীবন সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

পাইকগাছার সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে রমরমা জুয়ার আসর

সব চেয়ে বড় জুয়ার আসর বসে দক্ষিণ কাইনমুখী


পাইকগাছার সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে রমরমা জুয়ার আসর। অংশ নিচ্ছে নামকরা জুয়াড়ী সহ স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা। মাসোহারা আদায় করছে দালাল চক্র। জিম্মি হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল। 

সূত্রে প্রকাশ, পাইকগাছা উপজেলার সর্বত্রই জুয়ার আসরের রমরমা খেলা চলছে। কোন বাঁধা তাদের আটকাতে পারছে না। আবার এলাকার কোন সুধিমহল জুয়ার বিরুদ্ধে দাড়াতে সাহস পাচ্ছে না। পাইকগাছা’সহ এর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নামকরা জুয়াড়ীরা অংশ নিচ্ছে এসব আসরে।

স্ব-স্ব এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররা পড়ার টেবিলের পরিবর্তে ছুটছে এসব আসরে। আর জুয়া টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। ফলে এলাকার চুরি ডাকাতি বেড়েই চলেছে। উপজেলার উত্তর গড়েরআবাদ গ্রামের জনাব সানার পুত্র মোস্তফা সানার বাড়ী রাতদিন চব্বিশ ঘণ্টা জুয়ার আসর বসে। এখানে জুয়া খেলার নেতৃত্বে রয়েছে একই গ্রামের গফুর সরদার, মঞ্জু সরদার ও মোস্তফা মোল্যা।

পাইকগাছার সব চেয়ে বড় জুয়ার আসর বসে দক্ষিণ কাইনমুখী গ্রামে। এখানে উক্ত গ্রামের মহাদেব মন্ডলের পুত্র সঞ্চয় মন্ডল ও মনোহর মন্ডলের পুত্র তারাপদ মন্ডলের বাড়ীতে বসে লাখ লাখ টাকার জুয়ার আসর। আর তারাপদ দোকানে বসে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেন। এলাকার নাম করা জুয়াড়ী দিজবরের পুত্র চিত্ত সানা ও স্বরূপ জোয়াদ্দারের পুত্র ঠাকুর জোয়াদ্দারের নেতৃত্বে চলে জুয়ার বোর্ড।

এছাড়াও গোপালপুর গ্রামের আম বাগান, বাসস্ট্যান্ডে বাসের ভিতর’সহ সর্বত্রই চলছে জুয়া খেলা। এ সকল খেলায় জুয়াড়ীদের পাশাপাশি স্কুল কলেজের ছাত্ররা অংশ নেওয়ায় অভিভাবকরা রয়েছেন চরম বিপাকে। বিশেষ করে ছাত্ররা বা উঠতি বয়সের যুবকেরা জুয়ার টাকা জোগাড় করতে যেয়ে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মত অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ায় ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।

পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ শিকদার আককাস আলী পাইকগাছায় যোগদান করে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেমন জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন তেমনি জুয়ার বিরুদ্ধে হিজাদ ঘোষণা করবেন। শিকদার আককাস আলী বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জুয়ার ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে ও চলছে। সংবাদ পেলেই সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে।