Tuesday, November 21, 2017

খুলনা-৬ আসনে তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ আসনে (পাইকগাছা-কয়রা) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য একাধিক তরুণ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেকেই ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণা ও নানা মাধ্যমে প্রার্থী হওয়া কিংবা মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়টি তুলে ধরছেন। অনেকেই করছেন গণসংযোগ ও মতবিনিময়, অনেকের আবার প্রচার-প্রচারণা সীমাবদ্ধ রয়েছে প্যানা ও ফেস্টুনের মধ্যে। সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থীদের মধ্যে অন্যান্য দলের একক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।


উল্লেখ্য, পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে খুলনা-৬ আসন গঠিত। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাদে প্রায় প্রত্যেকটি নির্বাচনে বিভিন্ন দলের প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিরায় মনোনয়ন পেয়ে আসছেন। একমাত্র ১৯৭৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুলনা-৬ আসন থেকে তরুণ উদীয়মান প্রার্থী হিসাবে এ্যাডঃ স ম বাবর আলী মুক্তিযোদ্ধাকে দলীয় মনোনয়ন দেন। তৎকালীন বঙ্গবন্ধু সরকারের সর্বকণিষ্ঠ সংসদ সদস্য ছিলেন স ম বাবর আলী। এরপর থেকে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে এ আসন থেকে বিভিন্ন দলের প্রবীণ ব্যক্তিরায় দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আসছেন।

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী হিসাবে বিভিন্ন দলের একঝাক তরুণ উদীয়মান প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করে নির্বাচনী ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ৩-৪ জন প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন। যার মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ্যাডঃ শেখ মোঃ নূরুল হকের বড় ছেলে আলহাজ্ব শেখ মনিরুল ইসলাম, দলীয় ভাবে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির একজন প্রভাবশালী সদস্য। এরআগে তিনি ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে আ’লীগের দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন সংগ্রহ করেন। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি। দীর্ঘদিন তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশা করেছেন।

আ’লীগের সম্ভাব্য অপর প্রার্থী হলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল, এর আগে তিনি মনোনয়ন না চাইলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি দু’উপজেলার সর্বত্রই নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আরেক তরুণ প্রার্থী হলেন, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু, তিনিও দীর্ঘদিন প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দলের কেন্দ্রীয় সদস্য, জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা জাপা’র আহবায়ক মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর। জাপা নেতা মোস্তফা ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলেও দলের সিদ্ধান্তের কারণে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এবারের নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

অনুরূপভাবে সম্ভাব্য একাধিক তরুণ প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র। বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক ও খুলনা জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে এ দু’প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে আ’লীগ ও জাপা প্রার্থীদের তুলনায় বিএনপি’র এই দুই প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা খুবই কম।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী হিসাবে উপজেলা সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সানা মহিম এর নাম শোনা যাচ্ছে।

খুলনা-৬ আসন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ, জামায়াত, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির উভয়ের জন্য এ আসনটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাংগঠনিক ও ভোটের দিক থেকে আ’লীগ ও জামায়াতের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। এ জন্য জোটগত নির্বাচন হলে তরুণ প্রার্থীদের দলীয় ভাবে কতটা মূল্যায়ন করা হতে পারে সেটা এখন সময়ের ব্যাপার বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

--মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা।