Sunday, March 23, 2014

পাইকগাছায় মায়ের কোল থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু

পাইকগাছায় হাতিকে অতিক্রম করার সময় ইজিবাইকে বসে থাকা মায়ের কোল থেকে পড়ে গিয়ে ৭ মাসের মারিয়া নামে এক শিশুকন্যার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ২ জন আহত হয়েছে। সে উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের আব্দুল মজিদের কন্যা।

ঘটনারদিন রোববার সকাল ১০টার দিকে শিশুকন্যার মা আঞ্জুয়ারা বেগম ও ফুফু রওশনারা ইজিবাইকযোগে কপিলমুনি যাচ্ছিল। আগড়ঘাটা মোড়ে পৌছালে হঠাৎ করে বারুনী মেলায় আসা বিশাল আকারের একটি হাতি লম্বা শুর ইজিবাইকের দিকে উঁচু করলে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে চালক ইজিবাইকটিকে আচমকা ঘুরালে ইজিবাইকে বসে থাকা আঞ্জুয়ারা বেগম’সহ অন্যান্য যাত্রীরা পড়ে যায়। ফলে মায়ের কোল থেকে পড়ে গিয়ে শিশুটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

পরে স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় মৃত শিশুটির পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পাইকগাছায় মৌসুমের প্রথম বজ্রবৃষ্টি

পাইকগাছায় গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে মৌসুমের প্রথম বজ্র মেঘ ও বৃষ্টির দেখা মেলে। এর মাধ্যমে কালবৈশাখীর আগমন ধ্বনি ঘোষিত হলো। যদিও এবার বসন্তের প্রথম দক্ষিণা গতকাল সকালে বয়ে যায় পাইকগাছায়।

আজ আন্তর্জাতিক আবহাওয়া দিবস

নিজেদের অবহেলার কারণেই প্রতিদিন আমরা চারপাশে তৈরি করছি বিষাক্ত পরিবেশ। আর নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছি এক নিঃশব্দ বিষক্রিয়ার মধ্যে। যা আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

আবহাওয়াজনিত সমস্যা সমাধানে বিশ্বের প্রতিটি দেশে এর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৫০ সালে ইউএনের ১৮৯ সদস্য “ওয়ার্ল্ড ম্যাটরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন” নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে, যা ১৯৫১ সালে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।

ওই প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে আবহাওয়াজনিত সমস্যা সমাধানে প্রতি বছর ২৩ মার্চ আন্তর্জাতিক আবহাওয়া দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।

ঐতিহাসিক কপিলমুনি মহাবারুণী উৎসবের ইতিহাস

বারুণী উৎসবকে জাতীয় স্বীকৃতির দাবি


পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি এক অতি প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থান। আনুমানিক ৫০০ বছর পূর্বে এ অঞ্চলে বন জঙ্গলে আবৃত ছিল। তার মধ্যে এক মুনির আশ্রম আবিস্কার করেন বাগনাথ মোহন্ত নামক এক সাধু পুরুষ। তার জীবন্ত সমাধী ছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আর এক সাধক কপিলমুনির আশ্রম ছিল স্বচ্ছ সলীল সমাধী কপোতাক্ষ নদের তীরে এক বটমূলে। 

জানা যায়, মুনি বিভিন্ন তীর্থ স্থানে ঘুরে বেড়াতেন। তিনি সব সময় তপ জপে মগ্ন থাকতেন। তপস্যার জন্য যে স্থানে দেহ ত্যাগ করেন সেই স্থানের নামানুসারে কপিল থেকে কপিলমুনি নাম করণ করা হয়। নদী ঘেরা, স্বচ্ছ সলিলা চির স্মৃতি বিজড়িত মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের মাতৃসম কপোতাক্ষ বিধৌত ঋষিবর মহা সাধন কপিলের সাধনাস্থল, জাগ্রত পীর হযরত জাফর আউলিয়ার পদচারণায় ধন্য রায় সাহেবের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল “বিনোদগঞ্জ”। যা বর্তমানে কপিলমুনি বাজার নামে পরিচিত। কপিলমুনির আধুনিক রুপকার স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু মহোদয় একান্ত চেষ্টা ও অকৃত্রিম ভালবাসা দিয়ে অতি সুনিপুন ভাবে বাংলা ১৩৩৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এই বাজারটি। তাই তারই নামানুসারে নাম করণ হয় বিনোদগঞ্জ।

যতদূর জানা যায়, কপিল থেকে কপিলমুনি এবং কপিলমুনি থেকে বিনোদগঞ্জ। এখানে কোন এক চৈত্র মাসের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা এই স্থানে কপোতাক্ষ নদে গঙ্গাস্নান বা ঐতিহাসিক মহাবারুণী স্নান উৎসব পালন করেন। সেই স্মরণাতীত কাল থেকে এই তিথীতে গঙ্গার জল এই স্থানে প্রবাহিত হয় এই বিশ্বাস মনে রেখে স্নান করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তরা।

বরুণ জলের দেবতা, বরুণের স্ত্রী বারুণী। বারুণী আর এক অর্থে গঙ্গা। তাই বারুণী স্নান অর্থাৎ গঙ্গার স্নান। এ কারণেই সেই থেকে কপিলমুনিতে মহাবারুণী মেলা এবং স্নান উৎসব হয়ে আসছে।

যদিও এই মেলাটির জাতীয় কোন স্বীকৃতি নেই। শুধুমাত্র জেলার কর্তা ব্যক্তিদের আন্তরিক সহযোগিতায় মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। যশোর জেলার কেশবপুরের মধু মেলা, নড়াইলের সুলতান মেলা, উড়াকান্দির বারুনী মেলার জাতীয় স্বীকৃতি থাকায় প্রতি বছর যথা সময়ে মহা ধুমধামে অনুষ্ঠিত হয় এবং সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা থাকে।

কিন্তু পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির এই মহাবারুণী মেলার জাতীয় স্বীকৃতি নেই। আর এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কেউ কোনদিন চেষ্টাও করেননি। এলাকাবাসীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মহানুভবতার দৃষ্টিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

কপিলমুনিতে সাংবাদিকদের সাথে মিলিত হলেন এস পি জয়দেব

কপিলমুনি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক আনন্দঘন পরিবেশে মিলিত হলেন যশোরের পুলিশ সুপার ও কপিলমুনির পাশ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নের কৃতি সন্তান জয়দেব ভদ্র।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় কপিলমুনি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সভাপতি শেখ সালামের সভাপতিত্বে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে মত বিনিময় করেন যশোরের পুলিশ সুপার ও কপিলমুনির পাশ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নের মামুদকাটী গ্রামের কৃতি সন্তান জয়দেব কুমার ভদ্র।

এসময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন যশোরের এ ডি এম সাবিনা ইয়াসমিন মালা, সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের উপাধ্যক্ষ নিমাই চন্দ্র মন্ডল, দৈনিক সংবাদের যশোর জেলা প্রতিনিধি রোকনুদৌল্লা, দৈনিক নয়া দিগন্তের যশোর জেলা প্রতিনিধি সাহাদাৎ হোসেন কাবিল।

মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ আনিসুর রহমান মুক্ত, কপিলমুনি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোঃ আফসার আলী, প্রেসক্লাব সহ-সভাপতি এস এম আঃ রহমান, সাঃ সম্পাদক মুন্সী রেজাউল করিম মহব্বত, সহ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বজলু, কোষাধ্যক্ষ পলাশ কর্মকার, ক্রিড়া সম্পাদক জি এম মোস্তাক আহম্মেদ, কার্যনির্বাহী সদস্য বিশিষ্ট কলামিষ্ট মহাদেব সাধু, লোকমান হেকিম, সাবেক সভাপতি শেখ আঃ গফুর, জি এম হেদায়েত আলী টুকু, জি এম আসলাম হোসেন, এস এম আজিজুর রহমান, এম আজাদ হোসেন, প্রবীর জয়, এম. আজিজুর রহমান প্রমুখ।

পাইকগাছায় ষোলআনা সমিতির সদস্যদের পাল্টাপাল্টি বনভোজন

পাইকগাছায় বনভোজনকে কেন্দ্র করে জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত ঐতিহ্যবাহী ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। সদস্যদের দুটি পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বনভোজন করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটি সুনাম ও ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে সাধারণ সদস্যরা অনেকেই মনে করছেন।

জানা গেছে, সংগঠনের পক্ষ থেকে বনভোজন করার লক্ষ্যে পরিচালক ইউসুফকে আহবায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১ মার্চ বনভোজনের দিন নির্ধারণ করলে উপজেলা নির্বাচনের কারণে ১ মার্চের তারিখ পরিবর্তন করে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পুনরায় তারিখ নির্ধারণের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিলে ব্যবস্থাপনা পরিষদকে মৌখিক অবহিত করে পূর্ব ঘোষিত তারিখ পরিবর্তন না করে সংগঠণের সদস্যদের একটি অংশ বাগেরহাট বনভোজন করতে যায়।

এদিকে সাধারণ সদস্যদেরক অবহিত না করে উক্ত বনভোজন করা হয় এমন অভিযোগে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের নেতৃত্বে সদস্যদের একাংশ ব্যবস্থাপনা পরিষদের ক্ষমতার অপব্যহার, সদস্যদের অধিকার খর্ব ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বনভোজন করার প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে দলিল লেখক সমিতি ভবনে পাল্টা বনভোজনের আয়োজন করে।

বনভোজনে আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, সাবেক সভাপতি আনোয়ার ইকবাল মন্টু, এ্যাডঃ হুমায়ুন কাদির, এস,এম, মোজাম্মেল হক, শেখ শহিদুল ইসলাম বাবলু, আফসার উদ্দীন, খলিলুর রহমান, রামপ্রসাদ, অধ্যাপক আজিজুর রহমান, অমরেশ মন্ডল, গাজী সহিদুল ইসলাম খোকন, দাউদ শরীফ, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম ও প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু’সহ সংগঠণের একাংশের সদস্যরা। অনুষ্ঠান শেষে ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এ ব্যাপারে ষোলআনা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি এ্যাডঃ মোর্তজা জামান আলমগীর রুলু জানান, ইতোপূর্বে যে বনভোজনটি করা হয়েছে সেখানে ব্যবস্থাপনা পরিষদের ১২ সদস্যের মধ্যে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সম্পাদকসহ ৭ সদস্য যোগদান করেননি এবং বনভোজনের সকল ব্যয়ভার ঐসকল সদস্যরা বহন করেছেন। এ ক্ষেত্রে উক্ত বনভোজনকে কেন্দ্র করে যারা অধিকার খর্ব করার অভিযোগ আনছেন এটা সঠিক নয়।