Saturday, March 11, 2017

কপিলমুনি কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে চরম অব্যবস্থাপনা

চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সুবর্ণ জয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকলের মুখে ছিল পাইনি-পাইনি, নেই, নেই, নেই। প্রায় সহস্রাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করলেও কয়েক’শ নিবন্ধনকারীর ভাগ্যে জোটেনি কোন উপকরণ কিংবা সামগ্রী। প্রকাশিত স্মরণিকার মাননিয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। মূল্যায়ন করা হয়নি আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে। এমন অব্যবস্থাপনার কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন সকলেই।

উল্লেখ্য, পাইকগাছা উপজেলার পুরাতন ঐতিহ্যবাহী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কপিলমুনি কলেজ অন্যতম। প্রতিষ্ঠানের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার আয়োজন করা হয় সুবর্ণ জয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানকে ঘীরে গত কয়েক মাস যাবৎ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে থাকলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। একদিকে বৃষ্টি অপরদিকে অব্যবস্থাপনার কারণে বিতর্কিত হয় মূল অনুষ্ঠান। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও শুরু হয় দুপুর ১২টার দিকে। কপিলমুনি বাজার থেকে কলেজ পর্যন্ত সড়কটি বৃষ্টিতে কাঁদা ও পানির কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পেতে হয় সকলকে। অনুষ্ঠান চত্ত্বরও ছিল স্যাতসেতে অবস্থা। প্রধান অতিথি পৌছানোর আগেই শুরু করা হয় বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা। আবার অনুষ্ঠানে যাননি আমন্ত্রীত বেশ কয়েকজন বিশেষ অতিথি। প্রায় সহস্রাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করলেও কয়েক’শ নিবন্ধনকারীর ভাগ্যে জোটেনি অনুষ্ঠানের উপকরণ ও সামগ্রী। ৮৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ আমান জানান, অনেক আশা নিয়ে অনুষ্ঠানে এসে ছিলাম কিন্তু অনুষ্ঠানের অব্যবস্থাপনার কারণে হতাশ হয়েছি। নিবন্ধন করার পরও সম্পূর্ণ সামগ্রী ভাগ্যে জোটেনি। একাধিক নিবন্ধনকারী জানান, তারা নিবন্ধন করার পরও নূন্যতম কোন সামগ্রী পাননি। সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মাননিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। উদযাপন উপ-কমিটির এক আহবায়ক জানান, এতো বড় একটা অনুষ্ঠান অথচ স্বল্প পরিসরের স্মরণিকা করা হয়েছে। স্মরণিকায় বাণী আর নিবন্ধনকারীদের তথ্য ছাড়া তেমন কিছুই স্থান পায়নি। কোন উপ-কমিটির তথ্য উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি প্রাক্তন কোন শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থীর স্মৃতিচারণ মূলক কোন লেখা প্রকাশ করা হয়নি। এদিক থেকে গত কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত হওয়া পাইকগাছা কলেজের অনুষ্ঠান, ব্যবস্থাপনা এবং স্মরণিকার মান অনেক ভাল ছিল যা কপিলমুনি কলেজ কর্তৃপক্ষ অনুসরণ করতে পারতো বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। তবে অনুষ্ঠানে এসে ভাল লেগেছে, অনেকের সাথে দেখা হয়েছে, পুরাতন সহপাঠিদের সাথে সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করতে পেরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ আল এহসান। তবে তিনি ব্যবস্থাপনার জন্য কমিটির দূর্বলতার কথা বলেন। তিনি বলেন, কমিটি সঠিক ভাবে কাজ করলে অনুষ্ঠানের মান অনেক ভাল হতো। এদিকে অব্যবস্থাপনার এ দায় কলেজের অধ্যক্ষ এড়াতে পারেন না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অধিকাংশ ক্ষোভ প্রকাশকারী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক। উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও শিক্ষক মন্ডলী।