Wednesday, September 17, 2014

দক্ষিণাঞ্চলে উন্নত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ, চাষিদের মধ্যে আশার আলো

খুলনার দক্ষিণে উন্নত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে চাষিদের মধ্যে। এ পদ্ধতিতে চাষ করে চাষিদের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। প্রথাগত চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন ঘটিয়ে আধুনিক পরিবেশ বান্ধব চিংড়ি চাষ ও ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ বাস্তবায়ন ও চাষীদের জীবন যাত্রার উন্নত করার দিক বিবেচনা করে ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে ওয়ার্ল্ড ফিস বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত অ্যাকুয়াকালচার ফর ইনকাম এন্ড নিউট্রিশন (এ.আই.এন) প্রকল্প এ বছর প্রথম থেকেই ঘেরে চিংড়ি চাষসহ পাড়ে সবজি চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ দানের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

যা ইতোমধ্যে খুলনা জেলার দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি, কয়রা এবং সাতক্ষীরা জেলার তালাসহ আশাশুনি ও শ্যামনগরের বিভিন্ন গ্রাম গুলোতে সম্পন্ন হতে চলেছে। তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম গুলোতে এই প্রশিক্ষণ আওতায় এসেছে চাষীরা এবং সফলতা পেয়েছে।

তালা উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের বালিদহা গ্রামের ৭নং গ্রুপের একাধিক সদস্য জানান, আমাদের এখানে চিংড়ি ও ঘেরের পাড়ে সবজি চাষের অনুকুল পরিবেশ থাকা সত্বেও আমরা সঠিক চাষ ব্যবস্থাপনার অভাবে বছরের পর বছর আশানুরূপ উৎপাদন করতে পারেনি। কিন্তু (এ্.আই.এন) প্রকল্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আমরা চিংড়ি ও সবজি চাষের অনেক অজানা বিষয় জানতে ও শিখতে পেরেছি।

বিশেষ করে (এম.টি.টি) পদ্ধতিতে ঘের পরিচালনাসহ পাড়ের সবজি ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে যে স্বল্প জায়গায় অধিক উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব এটা আমাদের জানা ছিল না। কিন্তু পরিবেশ বান্ধব চিংড়ি ও সবজি চাষ ব্যবস্থাপনা ও পিসিআর পরীক্ষিত ভাইরাস মুক্ত পোনা ব্যবহার ও ঘেরের পাড়ে সবজি চাষিদের ভবিষ্যৎ জীবনের আলোর পথ দেখিয়েছে।

বালিয়াদহা গ্রামের গফুর শেখ, আলাউদ্দীন মোল্যা, রবিউল গোলদার ও অনেক চাষিদের অভিমত প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মীদের সহায়তায় ঘেরে ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন ঘটিয়ে প্রস্তুকালীন সময়ে চুন সার ব্যবহার পোনা মজুদ পরবর্তী সার ব্যবস্থাপনা ও পানির গুণাগুণ রক্ষায় করণীয়সহ খাদ্য ও রোগ ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালনা করেন। ঘেরের পাড়ে সবজি লাগিয়ে কীটনাশক ব্যবহার করার পরিবর্তে জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রয় করে অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

চাষিরা এখন প্রথাগত চাষ পদ্ধতি নয় বরং পরিবেশ বান্ধব উন্নত চাষ পদ্ধতি বিশ্বাস করেন। বর্তমানে উন্নত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে তারা আগের চেয়ে উৎপাদন অনেক বেশি পাচ্ছেন। যা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের আলোর পথে কান্ডারী। এই ধরণের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের জন্য চাষিরা প্রকল্পের সাথে সংশ্লি¬ষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতি ও রোববার সারাদেশে জামায়াতের হরতাল

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীর বিরুদ্ধে দেওয়া ‘আমৃত্যু কারাদণ্ড’ রায়ের প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দিয়েছে জামায়াত। প্রথম দফায় বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা ও দ্বিতীয় দফায় রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল হবে।

বুধবার রায় ঘোষণার পর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, হরতাল ছাড়াও শুক্রবার সরকারের জুলুম থেকে পরিত্রাণের জন্য দেশে-বিদেশে সাঈদীর জন্য দোয়া অনুষ্ঠান ও ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ হবে।

বুধবার সকালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে করা সাঈদীর আপিল মামলার চূড়ান্ত রায়ে সাজা কমিয়ে তাকে এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

বুধবার সকালে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ৫ সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এ রায় দেন। এ রায়ের পর জামায়াত হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে।

অধিকাংশ বসতি না থাকায় পাইকগাছার আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মিত ঘর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে

পাইকগাছায় ১৯টি আবাসন প্রকল্পের ১১৩টি ব্যারাকে অধিকাংশ বসতি না থাকায় তা ধ্বংস হতে বসেছে। দেখ ভাল ও সংরক্ষণের অভাবে প্রকল্পের সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে কিংবা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব লোকদের মধ্যে বরাদ্দ দেয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে সরেজমিনে তথ্য পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় আবাসন প্রকল্প ১৯টি। ব্যারক সংখ্যা ১১৩টি। প্রতি ব্যারাকে বসতি পরিবার ১০টি। সর্বমোট বসতি পরিবারের সংখ্যা ১১৮০। প্রকৃত ভূমিহীনদের পুর্নবাসিত করার জন্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রাম থেকে যাদের আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ দেয়া হয় তাদের অধিকাংশরই নিজস্ব ঠিকানায় যথেষ্ট সম্পদ-সম্পতি রয়েছে।

প্রকল্প কমিটিতে ক্ষেত্র বিশেষ দুর্নীতিবাজ ও স্বজন প্রীতির লোক থাকায় প্রকৃতি ভূমিহীনদের বদলে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে স্বচ্ছল ব্যক্তিদের। যেখানে অর্থেরও কায় কারবার হয়েছে। হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার ব্যারাকগুলোতে দেখা গেলেও অধিকাংশই ব্যারাক ছেড়েছে। ব্যারাকে শতকরা ১০ থেকে ৩০ ভাগ লোকর অবস্থান দেখো যায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ব্যারাকের বিশাল একটা অংশ ঝড় বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

প্রকল্পের বাসিন্দাদের জন্য বরাদ্দকৃত পুকুর গুলো মাছ চাষের জন্য লীজ দিয়ে প্রাপ্ত অর্থ হচ্ছে হরিলুট। বেশির ভাগ বসতি না থাকায় গুটি কয়েক পরিবারের মানবিক জীবন যাত্রা দেখা গেছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য নেই কোন স্কুল বিনোদন বা খেলাধুলার ব্যবস্থা, চলাচলের জন্য নেই উপযুক্ত রাস্তা, নেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এমন কি হাট বাজার না থাকায় ৫-৭ কিলোমিটার দূরে যেয়ে বাজার-সওদা করতে হয়। ঝড় বর্ষার দিনে আবাসনের বাইরে যাওয়া ঘটেনা কারও। রোজগারের জন্য খাল-নদীতে মাছ শিকার তাদের একমাত্র অবলম্বন।

এ ব্যাপারে বাইশেরাবাদের আবাসন প্রকল্পের বসতি সুজাত গাজী ও তার স্ত্রী নূরজাহান তাদের অবর্ণনীয় দূর্ভোগের বর্ণনা দিতে যেয়ে বলেন, অধিকাংশ বসতি না থাকায় ভয় ভীতির মধ্য দিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে পারছি না।

উপজেলা আশ্রায়ন প্রকল্প কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা সহকারি (ভূমি) মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ঘরগুলো সংস্কারের জন্য টিনসহ অন্যান্য উপকরণ চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।

একই সাথে তিনি বলেন, কতগুলো ঘর খালি, তারা কে কোথায় এবং কেন বসতি থাকে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্রকল্প সদস্য এবং সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়নের সহকারি ভূমি কর্মকতা (নায়েব) দের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

পাইকগাছায় অবৈধ মোটরসাইকেল চলাচল কমেছে

সাম্প্রতিক সময়ে জেলা ট্রাফিক পুলিশের পৃথক দুই দিনের বিশেষ অভিযানে কাগজপত্র বিহীন শতাধিক মোটরসাইকেল জব্দ করার পর থেকে পাইকগাছার মোটরসাইকেল চালকদের মাঝে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে। রাস্তায় কাগজপত্র বিহীন মোটরসাইকেল চলাচল তুলনামূলকভাবে অনেক কমে গিয়েছে।

জানা গেছে, পৌর ও উপজেলা সদরসহ দশটি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে (ভাড়ায় চালিতসহ) কমপক্ষে দুই থেকে তিন সহস্রাধিক মোটরসাইকেল চলাচল করছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ মোটরসাইকেলের সঠিক কাগজপত্র নেই বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে জব্দকৃত প্রতিটি মোটরসাইকেলের কাগজপত্র তৈরী করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রায় ২০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হয়েছে। সে হিসাবে ২ হাজার মোটরসাইকেলের বৈধ কাগজপত্র তৈরী করলে সরকারি রাজস্ব আদায় হবে ৪ কোটি টাকা। আর ৩ হাজার মোটরসাইকেলের কাগজপত্র তৈরী করা হলে সরকারি রাজস্ব আদায় হবে ৬ কোটি টাকা।

পাইকগাছার সচেতন মহল শুধু মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে নয়, অবৈধ সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান অব্যাহত রাখতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। প্রতিদিন না হোক প্রতি সপ্তাহে এক দু’বার এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হলে সড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল কমে যাবার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনাও অনেকাংশে রোধ হবে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

এদিকে পৌর শহর এলাকায় যানবাহনের গতিবেগ সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটার রাখার নির্দেশনা থাকলেও বিষয়টি কেউই মানছেন না।

হরিঢালী ইউপিতে ওরিয়েন্টেশন

হরিঢালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ওয়ার্ড পর্যায়ে নাগরিক প্লাটফর্ম তৈরির জন্য কমিউনিটি সেচ্ছাসেবকদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল গফুর।

হরিঢালী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ২ জন করে প্রতিনিধি ও ১ জন পুরুষ সেচ্ছাসেবক’সহ মোট ১৮ জনকে ওরিয়েন্টেশ দেওয়া হয়। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্লাটফর্ম তৈরী করবে বলে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

এ সময় লিজা মন্ডল ও আজমীরা পারভী ‘সহ হরিঢালী ইউপির সকল মেম্বর উপস্থিত ছিলেন।

পাইকগাছায় রাড়ুলীর বাঁকা ব্রীজের উপর যানজট নিরসন হবে কি?

পাইকগাছায় রাড়ুলীর বাঁকা ব্রীজের উপর যানজট লেগেই থাকে। দুর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা, পথচারীরা, স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা উক্ত ব্রীজ পার হতে প্রতিনিয়ত পড়ে থাকেন যানজটে। কারণ হিসাবে জানা যায়, প্রতিদিন শত শত ভ্যান, নছিমন প্যাসেঞ্জারদের অপেক্ষায় ঐ ব্রীজের উপরে দাড়িয়ে থাকা এ যানজটের মূল কারণ।

ভুক্তভোগীরা জানান, রাড়ুলী ইউনিয়ন পরিষদ ও দরগাহপুর ইউনিয়ন পরিষদ রাড়ুলী পুলিশ ক্যাম্পের সাহায্যে ঐ অপেক্ষমান ভ্যান-নছিমন সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিলে ভোগান্তি কমবে, নিরসন হবে যানজট। কিন্তু দুই ইউপির স্থানীয় প্রশাসন এক না হওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না যানজট, কমছে না ভোগান্তি।

এলাকার সচেতন মহল স্থানীয় ইউপি পরিষদ’সহ সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।