Sunday, June 2, 2013

গৃহবধূকে পাচার ও ধর্ষণ প্রচেষ্টার পৃথক ঘটনায় মামলা দায়ের

উপজেলার পল্লীতে এক গৃহবধূকে ভারতে পাচারের অভিযোগে প্রবাসী স্বামীর পিতামাতা ও ভাই-বোনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কানুয়ারডাঙ্গা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। অপরদিকে উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের পশ্চিম কাইনমুখী গ্রামের এক গৃহবধূকে ধর্ষণ প্রচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। তবে মামলা দু’টির বিষয় নিয়ে স্ব-স্ব এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানায়, উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কানুয়ারডাঙ্গা গ্রামের জনৈক আলাউদ্দীন ঢালীর পুত্র কুয়েত প্রবাসী লিটন ঢালীর (২৮) সাথে আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামের জনৈক আ. খালেক সরদারের কন্যা পারুল আক্তারের (২০) প্রায় বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। স্বামী লিটন ঢালী বাড়িতে না থাকার সুযোগে গৃহবধূ পারুল আক্তারের শ্বশুর-শাশুড়ীসহ বাড়ির অন্যান্যরা তার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো। এক পর্যায়ে গত ২৬মে দিনগত রাত ১০টার দিক থেকে পারুল আক্তারকে পাওয়া যাচ্ছে না মর্মে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মোবাইলে পারুলের পিত্রালয়ে খবর জানায়। খবর পেয়ে নিখোঁজ পারুল আক্তারের পিতা ওই দিন’ই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। পরে সমূহ সকল স্থানে খোঁজাখুজি করেও পারুল আক্তারকে না পেয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করা হয়েছে এমন অভিযোগে ভিকটিমের পিতা আ. খালেক সরদার বাদী হয়ে মেয়ের শ্বশুর আলাউদ্দীন ঢালী, শাশুড়ী জবেদা খাতুন, দু’দেবর যথাক্রমে রহমত ঢালী ও শরিফুল ঢালী, ননদ খাতুন বিবি ও একই গ্রামের জনৈক হাফিজুর সরদারকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৪৯, তারিখ-৩০/০৫/১৩।

এদিকে সোলাদানা ইউনিয়নের পশ্চিম কাইনমূখী গ্রামের জনৈক ব্যক্তির স্ত্রী (২৬) কে একই গ্রামের যুবক রবীন্দ্রনাথ বাছাড় (২৯) বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এক পর্যায়ে গত ২৯মে রাত ৮টার দিকে এ গৃহবধূকে তার বসতঘরে একা পেয়ে একই এলাকার আরো দু’ব্যক্তির সহযোগিতায় জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে রবীন্দ্রনাথ বাছাড়। এসময় গৃহবধূর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। এঘটনায় রবীন্দ্রনাথ বাছাড়, পরিতোষ বাছাড় (৩৯) ও প্রকাশ চন্দ্র বাছাড় (২৬)কে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৫০, তারিখ-৩০/০৫/১৩।

কয়রায় চরম দূর্যোগ ঝুকিতে ২ লাখ মানুষ

উপকূলীয় জনপদ কয়রার ২ লাখ মানুষ প্রাকৃতিক ঝুকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। প্রতিবছর নদীভাঙ্গন,ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের সাথে প্রতিনিয়ত য্দ্ধু করে বেচে আছে এ অঞ্চলের অসহায় মানুষ। তার পরও শত বাধা উপেক্ষা করে জীবন সংগ্রামে বেচে থাকতে কত না যন্ত্রনা তাদের পোহাতে হয়। এর মধ্যে সামান্য একটু সাহায্য আর সহানুভুতি পেলেই কত খুশি তা বোঝার উপায় নেই। এই জনপদের মানুষের দুর্যোগ মোকাবেলায় করনীয় দিক সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি বে-সরকারী সংস্থার সহযোগিতায় দূর্যোগ প্রবন এলাকার মানুষের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

সূত্র মতে, ২০০৯ সালের প্রলংকারী ঘূর্ণিঝড় আইলার তান্ডবলীলায় এ জনপদের ৬টি ইউনিয়নের জন জীবন ও উন্নয়ন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। সেই সাথে ভেঙ্গে পড়ে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও সেনিটেশন ব্যবস্থা যে কারনে হাজার হাজার মানুষ চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় ছিন্নমূল মানুষের সেবা দানের লক্ষ্যে ওয়াটার এইড এর সহয়তায় রুপান্তরের এ্যাডাপটিং ওয়াশ ফর ক্লাইমেট চেঞ্চ প্রকল্প কাজ করে যাচ্ছে। ওই প্রকল্পের উদ্যোগে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ,সেনিটেশন উন্নয়নে ল্যাট্রিন সংস্কার সহ দূর্যোগ চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে করনীয় বিষয় নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার সুযোগ করে দেয়া হয়। তার সুফল পাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,কোমল মতি ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ মানুষ।

কথা হয় মহারাজপুর ইউনিয়নের কালনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্র দিন মোহাম্মদের সাথে সে জানায় রূপান্তরের সহযোগিতায় জলবায়ু পরিবর্তন ও ওয়াশ বিষয়ক ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য হাত ধোয়া,দাঁত ব্রাশ করা ও নখ কাটার বিষয়টি ভাল ভাবে শিখতে পেরেছি। ওই বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী মরিয়ম খাতুন জানায় বিদ্যালয়ের ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে একটি দল গঠন করে দূর্যোগ চলা কালীন সময়ে ও পরবর্তীকালীন কার্যক্রম তাদেরকে করণীয় বিষয়টি জানতে পেরেছি। তারা তাদের অন্যান্য শিক্ষার্থীসহ পরিবারের সদস্যদের শিখাতে পেরে বেজায় খুশি মনে করে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন প্রকল্পের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ে ১টি ২৫ হাজার লিটার বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ট্যাংক স্থাপন করায় শিক্ষক ও সকল শিক্ষার্থীদের খাবার পানির সংকট দুর হয়েছে। তিনি আরো জানান এ ট্যাংক স্থাপনের পূর্বে বিদ্যালয় হতে ২ কিঃ মিঃ দূর থেকে পুকুরের পানি এনে পান করতে হতো। তার মতে এ ধরনের কার্যক্রম হাতে নেয়ায় বিগত বছরের তুলনায় আনন্দ ঘন পরিবেশে চলতি বছর ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি বেড়েছে জানিয়ে আারও বলেন ওয়াশ কার্যক্রম বিদ্যালয়ের বাৎসরিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যা পূর্বে ছিলনা। তার মতে সকল বিদ্যালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ওয়াশ কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করা অত্যাবশ্যক। মহারাজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কে এম নাজমা পারভীন বলেন রূপান্তরের প্রকল্পের মাধ্যমে তার বিদ্যালয়ে ভাঙ্গাচোরা ল্যাট্রিন সংস্কার করা হয়েছে। যার সুফল পাচ্ছে শিক্ষক সহ শিক্ষার্থীরা।

রূপান্তরের কয়রার প্রকল্প ব্যাবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মোস্তাফিজুর রহমান এ প্রসংগে বলেন ২০১২ সালের জুন থেকে উপজেলার ওয়াটার এইড প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্প ৭টি ইউনিয়নের ২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো প্রতিষ্ঠানে কাজ করা হবে। তার মতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের সেবা দানের লক্ষ্যে এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। দূর্যোগ মোকাবেলায় ৬৩টি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের মাধ্যমে কাজ করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্পের কর্মীদের উপস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওয়ারিয়েন্টেশন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দূর্যোগের উপর শিক্ষা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানির ট্যাংকি,ল্যাট্রিন সংস্কার সহ টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানির লাইন টেনে দিয়ে খাবার পানির সংকট দূর করার কাজ অব্যহত রয়েছে। সেগুলো রক্ষনাবেক্ষনের জন্য ২টি অপশনের জন্য ২ জন কেয়ারটেকার নিযুক্ত করা হয়েছে।

মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্জ মনিরুজ্জামান বলেন রূপান্তরের স্কুল ভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো প্রশংসনীয়। তিনি এ ধরনের আরও প্রকল্প হাতে নেয়ার দাবী জানান। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আকবর হোসেন জানান প্রকল্পের চলমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরূপ সেবা প্রদান করলে দূর্যোগ প্রবন কয়রার শিক্ষার্থীরা উন্নত পরিবেশে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।

কয়রায় ধান বোঝাই ট্রাক উল্টে আহত ১৩

নেত্রকোনা থেকে কয়রার উদ্যেশ্যে ছেড়ে আসা ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৪৬০৩ নম্বর একটি ধান বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে উল্টে গেলে ট্রাকে থাকা ১৩ জন শ্রমিক মারাত্বক আহত হয়েছে। আহত শ্রমিকদের তাৎক্ষনিক কয়রা উপজেলার জায়গীরমহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

তার মধ্যে জায়গীরমহল গ্রামের আঃ রাজ্জাকের পুত্র জবেদ (২২) কে আশংকা জনক অবস্থায় খুমেক হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। প্রত্যাক্ষ দর্শীরা জানান, শনিবার সন্ধায় নেত্রোকোনা থেকে কয়রা এলাকার শ্রমিকদের ১০ টন ধান নিয়ে কয়রার জায়গীরমহলের উদ্দেশ্যে আসার পথে গতকাল সকাল ১০ টায় ধান বোঝাই ট্রাকটি উপজেলার মসজিদকুড় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পৌছাইলে একটি প্রাইভেটকারকে সাইড দিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পার্শ্বে উল্টে যায়।

এ সময় ট্রাকে থাকা ১৩ জন শ্রমিক গুরুত্বর আহত হয়। খবর পেয়ে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফজলুর রহমান ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন। আহত শ্রমিকদের বাড়ী কয়রা উপজেলার আমাদী ও বাগালী ইউনিয়নে।

কয়রায় ছেলের ঘুষিতে পিতার মৃত্যু

কয়রায় ছেলের ঘুষিতে এক পিতা নিহত হয়েছে। নিহতের নাম তাজেল সানা (৭০)। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা ১০ টায় উপজেলার ৪নং কয়রা গ্রামে। স্থানীয় গ্রামবাসী সূত্রে জানাগেছে, পারিবারিক কলোহের জের ধরে নিহতের ছোট পুত্র আনারুল (৩০) পিতার সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পিতা আনারুলকে কয়েকটি চর থাপ্পর মারে।

রাগে পুত্র আনারুল ও তার পিতার বুকে স্বজোরে ঘুষি মারে। সাথে সাথে পিতা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এসময় গ্রামবাসী এসে প্রথমে স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার খলিলের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে এলভিন লঞ্চযোগে খুলনায় নেওয়ার পথে রাত্র ২ টায় আহত পিতা মারা যায়।

এব্যাপারে জানতে চাইলে গ্রাম্য ডাক্তার খলিল জানান, খবর পেয়ে সেখানে গেলে অসুস্থ্য তাজেল সানা আমাকে বলে আমার লাঞ্চে ঘুষি মেরেছে। বুকে ব্যাথায় খিল ধরছে। আমি তাৎক্ষনিক ব্যাথার ও গ্যাসের ঔষধ দেই। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোব বিরাজ করছে।

পাইকগাছায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের নামে সকল ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে পাইকগাছা থানা, পৌর ও অঙ্গ সংগঠণের উদ্যোগে পৃথক পৃথকভাবে বিকাল ৫টায় এটিএম মনিরুজ্জামান মনির সভাপতিত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল পৌর সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ের নিচে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ্যাডঃ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল পৌর সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।