পাইকগাছা উপজেলা সদরের সরকারি হাইস্কুল মাঠে গত জুন থেকে মেলা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যে মাঠটি টিন দিয়ে ঘেরা হয়েছে। তবে অনুমতি না পাওয়ায় সেখানে এখনো মেলা শুরু হয়নি।
পাইকগাছা উপজেলায় খেলাধুলার জন্য সবচেয়ে বড় মাঠ হচ্ছে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ। স্থানীয়ভাবে এটি হাইস্কুল মাঠ নামে পরিচিত। মেলার আয়োজন করায় সেখানে খেলাধুলা বন্ধ। প্রতিবছর এ সময় একটি বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মাঠ বন্ধ থাকায় ওই আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ওই মাঠে ‘বস্ত্র ও হস্ত কুটির শিল্প মেলা’র আয়োজন করছে দিনাজপুরের মনতা ডেকোরেটর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলা আয়োজনের কাজ জুনের মাঝামাঝি শুরু হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে ১১ জুলাই। জুলাইয়ে উপজেলার মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় মেলার অনুমোদন না দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া মনতা ডেকোরেটরের আবেদনপত্রে সুপারিশ করেছেন সাংসদ শেখ মো. নূরুল হক।
১৬ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সীমানার বাইরে মাঠটির অবস্থান। মাঠের পুরোটাই টিন দিয়ে ঘেরা। সামনের অংশে রয়েছে বড় সুসজ্জিত প্রবেশপথ। পাশেই টিকিট কাউন্টারের দেয়ালে মেলার প্রবেশমূল্য লেখা। মূল গেটের সামনে রয়েছে ভেতরে ঢোকার ছোট একটি পথ। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি দোকান পুরোপুরি সাজানো।
মনতা ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাংসদের অনুমতি নিয়ে মাঠে মেলার কাজ শুরু করা হয়েছিল। সবকিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না।
মনতা ডেকোরেটরের মালিক মনতাজুল ইসলাম বলেন, ওই মাঠ যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সাংসদের ভাইপো শেখ মাসুদুর রহমান মেলার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন।
মাসুদুর রহমান পাইকগাছা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি মেলার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওই মাঠে মেলা করার জন্য তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি সাংসদের কাছে যেতে বলেছিলাম। তাঁরা সাংসদের কাছে আবেদন করেন। তিনি অনুমতি দিয়ে (সুপারিশ করে) সেটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠান। শুনেছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেলার অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছেন। শোকের মাসের কারণে এত দিন মেলার অনুমতি পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার খুলনা-৬ আসনের সাংসদ শেখ মো. নূরুল হকের মুঠোফোনে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি দেশের বাইরে গেছেন।
পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনও মো. ফকরুল হাসান বলেন, মেলার কাজ শুরু করার আগে অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো চিঠিতে অন্তত আগস্ট মাসে মেলার অনুমোদন না দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মেলার অনুমোদন দেওয়া যায় কি না, তা জানতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু ওই চিঠির জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা বলেন, ‘আমরা এখন কাউকে মেলার অনুমতি দিচ্ছি না।’
--শেখ আল-এহসান
সূত্র :: প্রথম আলো