Tuesday, October 21, 2014

পাইকগাছায় অবহেলিত যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা

১০টি ইউনিয়নে ৩৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, বিদ্যুৎবিহীন ২৪ গ্রাম


স্বাধীনতার গত ৪৪ বছরে এখনো পর্যন্ত কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি খুলনার পাইকগাছা উপজেলায়। ৩৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। দুইটি ইউনিয়নে এখনো গড়ে উঠেনি কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩৬টি ক্লিনিকের মধ্যে জরাজীর্ণ রয়েছে ১৯টি। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। এখনো পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছাইনি অনেক ইউনিয়নে। ফলে আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে দুরে রয়েছে ২৪ গ্রামের মানুষ।

জানা গেছে, জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে পাইকগাছা উপজেলা। উপজেলা থেকে কৃষি, মৎস্য ও বনজ সম্পদ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার রাজস্ব পেয়ে থাকলেও স্বাধীনতার গত ৪৪ বছরেও কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত কাঁচা রয়েছে ৩৬৪.৫৯ কিলোমিটার রাস্তা। নাজুক এ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে দুর্গম এলাকার মানুষ। স্বাস্থ্য খাতে বেশ কিছু উন্নয়ন পরিলক্ষিত হলেও উপজেলার সোলাদানা ও গড়ইখালী ইউনিয়নে এখনো গড়ে উঠেনি কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্তমানে ১০ ইউনিয়নে ৩৬টি ক্লিনিক চালু থাকলেও ১৯টি ক্লিনিকের অবস্থা জরাজীর্ণ। ফলে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

আধুনিক জীবনযাপনে বিদ্যুৎ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও লতা ইউনিয়নের গঙ্গারকোনা, কাঠামারী, বাহিরবুনিয়া, পানা, শামুকপোতা, পুটিমারী, গদারডাঙ্গা, হানিরাবাদ, আসাননগর, গোয়াছোবা, রেখামারী, হালদারচক, তেতুলতলা ও দেলুটি ইউনিয়নের বিগরদানা, হাটবাড়ী, গোপীপাগলা, ফুলবাড়ী, সৈয়দখালী, দুর্গাপুর, তেলিখালী, কালিনগর, সেনেরবেড়, হরিণখোলা, দারুনমল্লিক, নোয়াইসহ দুই ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামে এখনো পৌঁছাইনি বিদ্যুতের আলো। ফলে আধুনিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত রয়েছে দুই ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ।

অবহেলিত এ উপজেলার যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ খাত সহ সার্বিক উন্নয়নে সরকারের মনোযোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

কপিলমুনির কাশিমনগর লোকনাথ মন্দির হয়ে উঠেছে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের সাধনাস্থল

কপিলমুনি শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্রচারী শান্তি নিকেতন এতদাঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যেন সাধনার পিঠস্থল। পূজাপার্বনে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ সনাতনীদের অংশ গ্রহণে মন্দিরটি সাধনার অন্যতম স্থানে পরিণত হয়েছে।



জানা যায়, ২০০০ সালে খলিলনগর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিধান চন্দ্র রায়ের সাথে ঘোষনগর গ্রামের প্রয়াত অঘোর চন্দ্র পালের পুত্র নকুল চন্দ্র পালের পরিচয় হয়। তারা আলোচনার মধ্যদিয়ে কশিমনগর-ঘোষনগর এলাকায় শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্রচারীর একটি দর্শনীয় মন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে কপিলমুনি ও খলিলনগরের সর্ব সাধারণের সহযোগিতায় ওই বছরই মন্দিরটি স্থপন হয়।

বর্তমানে মন্দিরটি পরিচালনার জন্য ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকারী পরিষদ রয়েছে। কমিটির কর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে একটু একটু করে মন্দিরটির অবকাঠামোগত প্রসার ঘটিয়ে চলেছেন। ২০০৭ সালে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ তলা মন্দিরের ভবন তৈরী করা হয়। ভবনটি শুভ উদ্বোধন করেন আশাশুনি সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমত স্বামী সোমা নন্দজী মহারাজ। ৩ তলা ভবনের ১ম তলায় লোকনাথ মূর্তি, ২য় তলায় শিব-কালি মূর্তি ও ৩য় তলায় রাধাকৃষ্ণ মূর্তি স্থাপন করা হয়।

শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, মন্দির প্রাঙ্গনে ২০১০ সালে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয় যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। গত দেড় বছর পূর্বে সমাজ সেবক সুভাষ চন্দ্র পালের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা পায় দাতব্য চিকিৎসালয়, প্রতি শুক্রবার এখানে দু’ জন হোমিও প্যাথিক ডাক্তারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রতিবছর ৫ দিন ব্যাপী নামযজ্ঞ সহ ধর্মীয় উৎসব পালন করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গনে রয়েছে একটি পুকুর, ফুল বাগান, ১ জন সেবাইত, সীমানা প্রাচীর, দুটি গেট, সুভাষ চন্দ্র পালের অর্থায়নে প্রায় ১৫লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান গেট নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণাধীন গেটটি খুবই করুকার্যপূর্ণ, সু-উচ্চ ও দর্শনীয় হবে বলে জানান মন্দিরের কর্মকর্তা এ্যাডঃ জয়ান্ত কুমার পাল। মন্দিরটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন সরকারি অনুদান ছাড়াই নির্মাণে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে জানা যায়।

শিবসা ব্রীজ (নয়নাভিরাম পাইকগাছা)