Monday, December 9, 2013

মঙ্গলবারও সারাদেশে জামায়াতের হরতাল

আগামীকাল মঙ্গলবারও সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় ও মৃত্যু পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দফায় এ হরতাল আহ্বান করলো তারা।

সোমবার সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে এ হরতাল ঘোষণা করেন। একই কারণে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে দলটি।

শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত (৭২ ঘন্টা) অবরোধ বাড়লো

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়ায় অবরোধের সময় আগামী ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাউদ্দিন আহমদ সোমবার দুপুরে গোপন স্থান থেকে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা জানান। তিনি বলেন, শনিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার দাবি না মানায়, নির্বাচনের তফসিল বাতিল না করায় অবরোধের সময় শুক্রবার ভোর পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

পাইকগাছায় আর্ন্তজাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবসের র‌্যালী ও মানববন্ধন

পাইকগাছায় আর্ন্তজাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে র‌্যালী ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে সোমবার সকালে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে কমিটির সভাপতি এ্যাড. শেখ লোকমান হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান। 


বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, বক্তব্য রাখেন উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিএম আজহারুল ইসলাম, ফসিয়ার রহমান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের উপাধ্যক্ষ সরদার মোহাম্মদ আলী, এ্যাড. রেখা রাণী বিশ্বাস, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, প্রভাষক লুৎফা ইসলাম, সাংবাদিক স্নেহেন্দু বিকাশ, তৃপ্তিরঞ্জন সেন, আব্দুল আজিজ ও পারুল রাণী মন্ডল।

আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত

পাইকগাছায় আর্ন্তজাতিক নারি নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০১৩ উপলক্ষ্যে আলোচনাসভা ও “জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ” শীর্ষক সফল নারীদের সম্মাননা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

উপজেলা পরিষদ ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, পাইকগাছা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, উপজেলা দূর্ণীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এ্যাড. শেখ লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিএম আজহারুল ইসলাম।

প্রভাষক রেবা আক্তার কুসুম ও সাংবাদিক আব্দুল আজিজের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক স্নেহেন্দু বিকাশ, তৃপ্তিরঞ্জন সেন, প্রকাশ ঘোষ বিধান, এ্যাড. রেখা রাণী বিশ্বাস, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, প্রভাষক লুৎফা ইসলাম, ইউপি সদস্য ফজিলাতুন্নেছা, নিজেরা করির নবনিকা ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সিরাজুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ৫টি ক্যাটাগরিতে চাকুরীক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী সাবিনা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিকক্ষেত্রে টুলু রাণী বিশ্বাস, শিক্ষা ও সফল জননী জামিলা বেগম, নির্যাতনের বিভিষিকায় অঞ্জলী রাণী সরকার ও সমাজ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় কুমকুম রাণী দাশ সহ ৫ সেরা জয়িতাকে ক্রেষ্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

আজ ৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস

আজ ৯ ডিসেম্বর। পাইকগাছার কপিলমুনি রাজাকার মুক্ত হয়েছিল ১৯৭১ সালের এ দিনে। দ্বিতীয় দফায় দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার সম্মুখ সমর যুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর রাজাকারদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে পতন ঘটেছিল দক্ষিণ খুলনার সবচেয়ে সমালোচিত ও বড় রাজাকার ঘাঁটিটির। 

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর এই বাড়ীতে গড়ে তোলা হয়েছিল পাক দোসর রাজাকারদের দক্ষিণ খুলনার সবচেয়ে বড় দুর্গ

এ সময় উপস্থিত হাজার হাজার জনতার রায়ে ১৫৬ জন রাজাকার কে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। যুদ্ধকালীন এত সংখ্যক রাজাকারদের জনতার রায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা সম্ভবত সেটাই প্রথম।

তৎকালীন পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দোসররা সারা দেশব্যাপী সাধারণ নিরিহ মানুষের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার নির্যাতন চালাতে থাকে। আর এ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকার মত পাইকগাছার সর্বত্র প্রতিরোধ দুর্গ গড়ে উঠে। এ সময় পাক দোসররা ব্যাপক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘাঁটি করে কপিলমুনিতে। অত্যাচারের শিকার বহু পরিবার সে সময় দেশের মায়া ত্যাগ করে উদ্বাস্তু হয়ে পাড়ি জমায় ভারতে।

কপিলমুনির প্রতিষ্ঠাতা রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুর সুরম্য বাড়িটি পাকিস্তানি দোসররা দখলে নিয়ে ঘাঁটি করে সেখানে। তখন এলাকায় তাদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে ভোর ৬ টা নাগাদ কারফিউ জারী করা হত। এলাকার নিরীহ মানুষদের ধরে এনে কপোতাক্ষ নদীর তীরে ফুলতলা নামক স্থানে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে কেটে লবন দেয়া হত। বহুজনকে এভাবে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে তারা।

এ সব অত্যাচারের বিরুদ্ধে পাইকগাছার রাড়ুলী, বাঁকা, বোয়ালিয়া ও গড়ইখালী এলাকার প্রতিরোধ দুর্গসমূহকে মুক্তিফৌজের ক্যাম্প হিসেবে গড়ে তোলা হয়। তাগিদ পড়ে কপিলমুনি শত্রু ঘাটি পতনের। কারণ খুলনাঞ্চলের মধ্যে কপিমুনির শত্রু ঘাঁটি ছিল সবচেয়ে বড় এবং তাদের নির্যাতনের মাত্রাও ছিল বেশী। সাড়ে ৩শর বেশী পাক সেনা ও তাদের দোসররা এখানে অবস্থান নিয়েছিল। ছাদের উপর তাক করা হয় ভারী কামান ও মেশিন গান।

১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর খুলনাঞ্চলের সকল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ একত্রে মিলিত হন মাগুরার শান্তি বাবুর দোতলায়। সিদ্ধান্ত হয়, যে কোন মূল্যে কপিলমুনিকে শত্রু মুক্ত করতেই হবে। এর আগে আরো একবার শত্রু ঘাটি আক্রমন হলেও জনতার অসহযোগিতায় সেবার ব্যর্থ হয়।

পাইকগাছার রাড়ুলী ও হাতিয়ারডাঙ্গা ক্যাম্প কমান্ডারগণ যুদ্ধের একটি পরকল্পনা প্রণয়ন করেন। নৌ কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী রহমত উল্লা দাদু, স.ম বাবর আলী, শেখ কামরুজ্জামান টুকু, গাজী রফিক, ইউনুস আলী ইনু, ইঞ্জিনিয়ার মুজিবর, শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, শেখ আব্দুস সালাম, আবুল কালাম আজাদ কপিলমুনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন।

অবশেষে তাদের যৌথ নেতৃত্বে ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে চারিদিক থেকে কপিলমুনি শত্রু ঘাটি আক্রমন করা হয়। হঠাৎ রাইফেলের গুলির ঠাশ-ঠাশ আওয়াজ, ভারী অস্ত্র, কামান, মেশিনগানের বিকট শব্দে মুহুর্তে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ রাজাকার ঘাটি থেকেও মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির পাল্টা জবাব আসতে থাকে।

এ সময় অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী দু’মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ার হোসেন ও আনসার আলী গুলি করতে করতে ঘাটির একেবারেই সন্নিকটে চলে যায়। আকস্মিক বিরুদ্ধ শিবিরের দিক থেকে আসা একাধিক বুলেট তাদের বুক বিদির্ন করে। ব্যাপক গুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে যায় এলাকাবাসীর। যার যার মত বাড়ীর বারান্দা বা পাশের আগে থেকে খুড়ে রাখা বাঙ্কারের মধ্যে আত্মরক্ষায় লুকিয়ে পড়ে।

দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার যুদ্ধ শেষে পরাজয় নিশ্চিত জেনে ৯ ডিসেম্বর বেলা ১১ টার দিকে অস্ত্র ফেলে সাদা পতাকা উচিয়ে ১৫৬ জন পাকিস্তানি দোসর আত্মসমার্পণ করে। সাথে সাথে পতন ঘটে খুলনাঞ্চলের বৃহত্তর শত্রু ঘাটির।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায় আত্মসমর্পনের পর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার ঘাটিতে ঢুকে তালার মাছিয়াড়া এলাকার জনৈক ব্যক্তিকে দেওয়ালের গায়ে পেরেকবিদ্ধ ঝুলন্ত মৃত অবস্থায় দেখতে পায়, উদ্ধার হয় বহু মাদকদ্রব্য। শত্রুদের বন্দী করে নিয়ে আসা হয় কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দিরের ঐতিহাসিক ময়দানে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে, এলাকার হাজার হাজার জনতার ঢল নামে সেখানে। এ সময় জনতার ব্যাপক দাবির প্রেক্ষিতে তাদেরকে প্রকাশ্য জনতার আদালতে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এ যুদ্ধে শহীদ হন দু’জন মুক্তিযোদ্ধা শেখ আনোয়ার হোসেন ও আনসার আলী, আহত হন মোহাম্মদ আলী, তোরাব আলী সানা সহ অনেকে।

অথচ যুদ্ধকালীন সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী কপিলমুনি মুক্ত দিবসের সঠিক দিন ক্ষণ নিয়েও দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তিযোদ্ধাদের দু’পক্ষের মধ্যে ছিল মতবিরোধ। এক পক্ষের দাবী ছিল ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় কপিলমুনি আর এক পক্ষের দাবী ৯ ডিসেম্বর। একবার ৭ ডিসেম্বর বেশ ঘটা করেও পালিত হয়েছিল দিবসটি। তবে সর্বশেষ মতবিরোধ উপেক্ষা ও উপযুক্ত প্রমানাদি দাখিলের পর ৯ ডিসেম্বর প্রায় সকলেই স্বীকার করে নেন ‘কপিলমুনি মুক্ত দিবস’ হিসেবে।

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

আজ ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া দিবস। নারী জাগরণের অগ্রদূত মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার ১৩৩তম জন্ম ও ৮১তম মৃত্যুবার্ষিকী। নারীকে শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের পথে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
 
 
রংপুরের পায়রাবন্দের খোর্দমুরাদপুর গ্রামে বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি কোলাকাতায় মারা গেলে তাকে কলকাতা শোদপুরে সমাহিত করা হয়।