Sunday, February 9, 2014

পাইকগাছায় পরীক্ষার উত্তরপত্র লিখে দেয়ার সময় শিক্ষকসহ আটক ৯

পাইকগাছায় এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা চলাকালিন সময় প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখে দেয়ার সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযান চালিয়ে হাবিবনগর সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবসহ ৯ শিক্ষক, কর্মচারীকে হাতে নাতে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছে। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিবকে বহিস্কার ও সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র বাতিল করে উপজেলা সদরে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার হাবিবনগর সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে কেন্দ্রের বাথরুম সংলগ্ন একটি কক্ষে বসে কয়েকজন শিক্ষক, কর্মচারী মিলে কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ (বহু নির্বাচনী) বিষয়ের নৈবেত্তিক 'ক' সেট প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখে দিচ্ছিলেন।

এমন সময় উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা সুপার, কেন্দ্র সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক মাওঃ সাইফুল্লাহ, রাড়ুলী মাদ্রাসা ও হল সুপার মাওঃ আমিন উদ্দিন, আরবি প্রভাষক জিহাদ আলী, চাঁদখালী মাদ্রাসার সহঃ সুপার রেজাউল করিম, ইংরেজী শিক্ষক আব্দুল করিম, হাবিবনগর মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক অহিদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, পিয়ন আব্দুর রাজ্জাক ও নৈশ প্রহরী আকবার আলীকে হাতে নাতে আটক করে।

পরে আটককৃতদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় বলে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দিন জানান। ঘটনার পর সংশ্লিস্ট কেন্দ্রটি বাতিল করে উপজেলা সদরে স্থানান্তর ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

পাইকগাছা-১৮ মাইল সড়কের অবস্থা ভয়াবহ

উন্নয়নের ছোয়া থেকে বঞ্চিত পাইকগাছা, কপিলমুনি-তালা টু ১৮ মাইল সড়কটি। প্রায় ৮ মাস যাবৎ পরিবহন সহ ভারী যানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নেই মেরামত বা সংস্কারের কোন উদ্যোগ। অবশেষে ৬ ফেব্রুয়ারি সড়কটির ভয়াবহ চিত্র জাতীয় সংসদে তুলে ধরে সংস্কারের দাবি জানান, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডঃ শেখ মোঃ নূরুল হক। 

ছবিটি পাইকগাছা ও তালা উপজেলার সীমান্তবর্তী সড়ক থেকে তোলা।
অথচ পরিতাপের বিষয় ২০০৮ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ্যাডঃ সোহরাব আলী সানা ও তালা-কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনার শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এই জনগুরুত্বপূর্ন সড়কের কোন উন্নয়ন হয়নি। সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হয়েছে এই জনপদের লাখ লাখ ভুক্তভোগী মানুষ।

সড়কের অবস্থা এতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যানবহনতো দুরের কথা সাধারন মানুষ পায়ে হেটে চলতে পারেনা। বন্ধ হয়ে গেছে পরিবহন সহ ভারী যান চলাচল। চরম ভোগান্তির শিকার কয়রা, পাইকগাছা, তালা সহ বিভিন্ন উপজেলার মানুষ। বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে ব্যবসা বানিজ্য।

তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, ১৮ মাইল থেকে তালা-কপিলমুনি টু পাইকগাছার ৩০ কিলোমিটার সড়কের সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খাদ। প্রতিদিন দূর্ঘটনা লেগেই আছে। শুধুমাত্র হুস হচ্ছে না সরকার বা দায়িত্বশীলদের। বর্ষা মৌসুমে সড়কের তালা বাজারে কপোতাক্ষের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবার কারনে ঐসব এলাকায় যান বহন চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা সহ নানান সংগঠন গুলি চিৎকার করলেও সরকারে ৫ বছরেও সড়কটি মেরামত বা পুনঃসংস্কার হয়নি। ফলে ক্ষুদ্ধ এই অঞ্চলের প্রায় ৫ লক্ষাধীক মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক শ্রেনীর মানুষেরা। বাঁচার তাগিদে ভ্যান গাড়ী বা ইজ্ঞিন চালিত বাইক নিয়ে সড়কে চলাচল করতে গিয়ে যে টাকা আয় করছে তার চেয়ে দ্বিগুন টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে যানবহন মেরামতের জন্য।

এই সড়কের উপর দিয়ে প্রতিদিন কয়রা, পাইকগাছা, তালা এই তিনটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ চলাচল করছে আর গালিগালাজ করছে। অথচ এ বিষয়ে মহাজোট সরকারের প্রভাবশালী সাবেক দুই সংসদ সদস্য নেননি কোন ভূমিকা।

তাছাড়া ১৮ মাইল থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এই সড়কে রয়েছে প্রায় ৫৬ টি বিপদজনক মোড়। এই সড়কের জাতপুর বাজার, তালা বাজার, কপিলমুনি বাজার, মামুদকাটি মোড়, আগড়ঘাটা বাজার, গদাইপুর, নুতন হাট খোলা, পাইকগাছা পৌরসভা প্রভৃত এলাকায় সড়কের উপর যত্রতত্রভাবে ভ্যান ও নসিমন করিমন রেখে যানজোট সৃষ্টি সহ যাত্রীবাহী মিনিবাস ষ্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে ঐসব বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় যানজোট লেগেই আছে। বিষয়টি নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ঠদের।

অথচ এই অঞ্চলের উৎপাদিত হিমায়িত চিংড়ি, কাঁকড়া, কুচে বিদেশে রফতানি করে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে আসছে। শুধুমাত্র আন্তরিকতার অভাবে নাগরিক সুবিধাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। ফলে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তিমেতেই থেকে যাচ্ছে।

অমর একুশে !


সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পে অভাবনীয় ধ্বস

সুন্দরবনের পর্যটন শিল্পে যে অভাবনীয় ধ্বস নেমেছে তা পূরণ হবার নয়। চলতি পর্যটন মৌসুমে সুন্দরবন ভ্রমণে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সংখ্যা এতই কম যা বিগত কোন বছরগুলোতে এমন অবস্থা হয়নি। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি চরমভাবে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। 
 
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হরতাল-অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশের প্রভাবের কারণেই পর্যটকদের মধ্যে এখনও ভীতি রয়েছে, রয়েছে অজানা আতংক তাই তারা সুন্দরবন ভ্রমণে আসছে না।

বনবিভাগ ও পর্যটন ব্যবায়ীরা জানান, মুলত আগস্ট থেকে মে মাস পর্যন্ত হলো সুন্দরবনের পর্যটন মৌসুম। বিগত বছরের তুলনায় চলতি ১৩-১৪ইং অর্থ বছরে সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন খুবই কম, যা অভাবনীয়। মৌসুমের প্রতিদিন শুধু সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে প্রায় ৫/৭ হাজার দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে থাকে। কিন্তু চলতি মৌসুমের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও এ পর্যটন কেন্দ্রে স্বল্প কয়েকজন পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। আর এ মৌসুমের শুক্রবার করমজলে সবচেয়ে বেশি পর্যটন এসেছে।

করমজল পর্যটন কেন্দ্রের ইনচার্জ আঃ রব বলেন, চলতি মৌসুমে শুক্রবার এ কেন্দ্রে দুই থেকে আড়াই হাজার দর্শনার্থী এসেছে। তাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৪/৪৫ হাজার টাকা।

যেখানে প্রতিদিনি ৫/৭ হাজার পর্যটক আসে সেখানে সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন একেবারে নেই বললেই চলে। শুক্রবার কিছু লোকজন হলে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোন লোকই যায়নি সেখানে। সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন কমে যাওয়ার বিষয়ে এ বন কর্মকর্তা আরো বলেন, মানুষের মধ্য থেকে হরতাল-অবরোধের ভয়ভীতি কাটেনি এবং দেশের পরিস্থিতি পুরোপুরি ভালো না থাকলে কেউ ভ্রমণে আসতে চায় না।

এ বিষয়ে পর্যটন ব্যবসায়ী দি সাউদার্ন ট্যুরস’র মালিক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রভাব সাধারণ মানুষ এবং বিদেশীদের মধ্যে অনেক দিন ধরে থাকে, যার ফলে সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা কম। আর পর্যটক না আসায় চলতি মৌসুমের ৬ মাসে আমার ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লোকসান হয়েছে। এছাড়া পর্যটক আসলে বনবিভাগও রাজস্ব পায় তারাও তা পাচ্ছে না।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের হোটেল পশুর’র ইনফরন্ট ম্যানেজার আঃ মালেক বলেন, পর্যটন মৌসুমের কোনদিনই হোটেলের সিট ফাকা থাকে না। কিন্তু পর্যটক না আসায় হোটেল এখন প্রায় পুরোটাই ফাকা। অনেকে রুম বুকিং দিয়ে আবার তা বাতিল করে দিচ্ছে।

পাইকগাছা পৌরসভার ১৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাপ্তি

ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হলো পাইকগাছা পৌরসভার ১৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও পানি মেলা। শনিবার সমাপনী দিনে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী ক্রীড়া অনুষ্ঠান শেষে বিকালে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। 

মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক জামাত আলী, প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু, সাংবাদিক তৃপ্তি রঞ্জন সেন, কাউন্সিলর মাহাবুবুর রহমান রনজু, এসএম তৈয়েবুর রহমান, কামাল আহম্মেদ সেলিম নেওয়াজ, আসমা আহম্মেদ।

ক্রীড়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পাইকগাছা কলেজের অবসরপ্রাপ্ অধ্যাপক জিএম আজহারুল ইসলাম ও পাইকগাছা কলেজের রোভার দল।