Thursday, December 5, 2013

পাইকগাছায় জামায়াতের জেলা নায়েবে আমির আটক

পাইকগাছায় জামায়াতের দক্ষিণ জেলা নায়েবে আমির মুফতি মাওঃ আব্দুল কাদিরকে আটক করা হয়েছে। নাশকতার আশংকায় বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে থানার সামনে থেকে তাকে আটক করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ নিয়ে তপশীল ঘোষনার পর বিএনপি-জামায়াত জোটের ১৩ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন জামায়াত নেতা মাওঃ আব্দুল কাদির থানার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। আটক জামায়াত নেতাকে পুলিশের উপর হামলা ও ভাংচুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে ওসি এম মসিউর রহমান জানান।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আগামী ৭ থেকে ৯ ডিসেম্বরের সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দফতরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফয়জুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফয়জুল করিম বলেন, ‘স্থগিত হওয়া পরীক্ষার পরবর্তী সময়সূচি www.nubd.infowww.nu.edu.bd ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হবে।’

শুক্রবার সব ব্যাংক খোলা থাকবে

আগামীকাল শুক্রবার দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের সব শাখা খোলা থাকবে। দুপুরে নাজামের বিরতি ও মধ্যাহ্ন ভোজের জন্য কিছু সময় লেনদেন বন্ধ থাকবে। বাকি সময়টুকুতে গ্রাহকেরা অন্যান্য দিনের মতো লেনদেন করতে পারবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক আজ বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে।

শনিবার থেকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ

আগামী শনিবার সকাল ৬টা থেকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধ আহ্বান করেছে ১৮ দলীয় জোট। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে শনিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে এ অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।

বৃহস্পতিবার সকালে অজ্ঞাতস্থান থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ অবরোধের ডাক দেন। অবরোধ আহ্বান করে তিনি বলেন, ‘তবে যদি বিকেল পাঁচটার মধ্যে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেয়া হয়, তবে অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে।’

এছাড়া, সহিংসতায় নিহতদের জন্য আগামী শুক্রবার সারা দেশে গায়েবানা জানাজা আদায় করবে ১৮ দলীয় জোট।

স্মৃতিপটে বীরাঙ্গনা গুরুদাসী মন্ডল (২য় পর্ব)

Voice of Paikgacha’র মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ধারাবাহিক প্রতিবেদনের (২য় পর্ব)

নিকষ কালো রাতের আঁধার তার নিষ্ঠুর কালো ছায়ায় পৃথিবীটাকে সবে গ্রাস করতে শুরু করেছে, এমনই এত ভরা সন্ধ্যায় নিভে গেল তাঁর জীবনের সবগুলো প্রদ্বীপ। সেই ভয়ঙ্কর রাতের পর আর কোনদিন আসেনি ওর জীবনে আলোঝলমলে সোনালী দিন, ভোরের সূর্যের আলোর ঝলকানীতে জ্বলজ্বল করে ওঠেনি তাঁর কপালে লাল সিঁদুরের টিপ, ছোট্ট শিশুর ঘুম জড়ানো কান্নার আওয়াজ ব্যস্ত করেনি তাঁকে আর কোনদিন। সেই সর্বহারা বঙ্গজননীর নাম- “গুরুদাসী”। 

১৯৭১ সাল। নভেম্বর মাস। যখন পাকবাহিনী আর রাজাকারদের প্রতিহত করতে এক সাগর রক্তের জোয়ারে ভাসছে বাঙালী। ঠিক তেমনই এক কাল্ সন্ধ্যায় বটিয়ারঘাটা থানার সুন্দরমহল গ্রামের গুরুপদ মন্ডলের ছোট্ট সংসার রাজাকার আর পাকবাহিনীর রোষানলে ছারখার হয়ে গেল, মুহূর্তের মধ্যে শ্মশানপুরী হয়ে গেল গুরুপদ মন্ডলের স্ত্রী গুরুদাসীর তুলসীতলা।

গুরুপদ মন্ডল পেশায় দর্জী ছিলেন। সৎ ও পরোপকারী স্বভাবের জন্য সকলে তাকে সমীহ করতো। এ কারনেই হয়তো রাজাকাররা অনুমান করেছিল তার কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর পাওয়া যাবে। সেই সন্ধ্যায় বটিয়ারঘাটা রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হাতেম তার চ্যেলা ও পাকসেনাদের সহযোগীতায় গুরুপদ মন্ডল, তার স্ত্রী গুরুদাসী ও তার সন্তানদের টেনে হিচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। গুরুপদ মন্ডল ও তার দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নির্মমভাবে প্রহার করতে থাকে। গুরুদাসী বাঁধা দিলে তাঁরই সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় তাঁর স্বামী-সন্তানদের।

এমনকি তাঁদের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়ে ব্যর্থ্ হওয়ায় গুরুদাসীর কোল থেকে রাজাকাররা ছিনিয়ে নেয় তাঁর ছয় মাসের ছোট্ট কন্যা সন্তানটিকেও। তারপর দুধের শিশুটিকে গুরুদাসীর সামনে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অর্ধ্ মৃত করে তাকে জীবিত পুঁতে ফেলে বাড়ির পাশের এঁদো পুকুরে, আর গুরুদাসীকে নিয়ে যায় বটিয়ারঘাটা রাজাকার ক্যাম্পে।

দিনের পর দিন রাজাকারদের মনোরঞ্জনের সামগ্রী হয়ে ইস্কাপনের বিবির মতো হাত বদল হতে থাকে গুরুদাসীর। স্বামী-সন্তানদের বিভীষিকাময় মৃত্যু আর নিজের উপর হওয়া প্রচন্ড পাশবিক নির্যাতনে পুরোপুরি ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে গুরুদাসী।

অবশেষে এলো ডিসেম্বর। বটিয়াঘাটা থানার মুজিব বাহিনীর কমান্ডার বিনয় সরকারের নেতৃত্বে বটিয়ারঘাটা রাজাকার ক্যাম্প দখল করে মুজিব বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধারা গুরুদাসীকে অর্ধ্-মৃত ও বেআব্রু অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছুদিন পর তাঁকে সাময়িকভাবে সুস্থ করা গেলেও গুরুদাসী ছিল প্রানহীন পাথরের মুর্তি।

দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন পর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে নিয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধকালীন খুলনা জেলা কমান্ডার কামরুজ্জামান টুকুর আশ্রয়ে। সেখানে গুরুদাসী কিছুদিন অবস্থান করে। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারনে গুরুদাসী ছুটে ছুটে বেরিয়ে পড়তো খুলনা শহরের অলিতে গলিতে। হয়তো তাঁর সবহারানো পাথরদৃষ্টি হাজার মানুয়ের ভিড়ে খুঁজে ফিরতো তাঁর হারিয়ে যাওয়া চেনা মুখগুলো…।

কিছুদিন পর গুরুদাসী ঘুরতে ঘুরতে চলে আসে পাইকগাছা থানায়। পাইকগাছা-কপিলমুনীর পথে পথে ঘুরতে থাকে উদ্দেশ্যহীনভাবে। যেন অনন্তের পথে তাঁর পথ চলা। ঠিকানা নেই, আশ্রয় নেই, ঘরে ফেরার তাড়নাও নেই। কেনই বা থাকবে ? সকালবেলা স্নান সেরে পূজো করে ওকে আর যেতে হবে না রসুইঘরে। কেউ বলবেনা, মা, ভাত দাও।

অতঃপর, জেলা কমান্ডার কামরুজজামান টুকুর সার্বিক সহোযোগীতায়, খুলনা মহাকুমা কমান্ডার এ্যাডঃ স.ম. বাবর আলী, পাইকগাছা থানা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, শেখ বেলাল উদ্দিন বিলু এবং অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তদকালীন থানা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে গুরুদাসীর স্থায়ী আবাসনের জন্য কপিলমুনী বাজারে একটা কুঁড়ে ঘর নির্মান করে দেওয়া হয় এবং গুরুদাসীর নামে ১০ হাজার টাকা ডিপোজিট করা হয়; যাতে ঐ টাকার লভ্যাংশ দিয়ে সে তাঁর দিনাতিপাত করতে পারে।

গুরুদাসীর মা তখন জীবিত ছিলেন। গুরুদাসীর দেখভালের জন্য তাকে নিয়ে এসে রাখা হয় গুরুদাসীর সাখে। সম্ভবতঃ তাঁর মা মারা যান ২০০৩ বা ২০০৪ সালে। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি গুরুদাসীর সাথেই বসবাস করতেন।

কিন্তু গুরুদাসীর উদাস দৃষ্টি পথে পথে খুঁজে ফিরেছে তাঁর হারানো দিন, ছোট্ট দুটি হাত, আর সেই স্বাধীনতা; যে স্বাধীনতার বলিকাঠে ছিন্ন হয়েছে গুরুদাসীর পরিবার, গুরুদাসীর সম্ভ্রম….কিন্তু গুরুদাসী কি খুঁজে পেয়েছিল সেই স্বাধীনতা ? কেন গুরুদাসীর চোখে ঘৃণা আর প্রতিহিংসার রোষানল জ্বলে উঠত বার বার ? কেন স্বাধীন দেশেও গুরুদাসীর চোখে ছিল স্বাধীনতার আকুতি ? নিয়তি হয়তো এখানেই চরম উপহাস করেছে গুরুদাসীকে, যখন স্বাধীন দেশে হাতেম রাজাকারের মতো রাজাকারদের স্বদর্প পদাস্ফলনে লুন্ঠিত হয়েছে গুরুদাসীর সকল আত্মত্যাগ।

স্বাধীনতার পর মুখোশ পাল্টিয়ে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হাতেম রাজাকার যোগ দিল আনসার বাহিনীতে। যেন হত্যাযজ্ঞের পর গঙ্গাস্নান করে পবিত্র হওয়ার মতো ধুয়ে মুছে গেল তার সব পাপ। স্বাধীন দেশের মাটিতে এহেন পাপাচারের প্রতিবাদ করেছিলেন বেশ কিছু মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু লাভ হয়নি। অবশেষে এতদ্ বিষয়ে তদকালীন প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমানকে চ্যালেঞ্জ জানান পাইকগাছা থানার যুদ্ধকালীন মুজিববাহিনীর কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু- ”হাতেম” এর রাজাকার হওয়ার সত্যতা প্রমান করে। অতঃপর প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান হাতেম কে আনসার বাহিনী থেকে বরখাস্ত করেন। কিন্তু আফসোস, গুরুদাসী ও তাঁর পরিবারের উপর করা বর্বরতার জন্য কোন সাজা-ই হয়নি হাতেমের।

পা্ইকগাছা কপিলমুনীর পথে পথে গুরুদাসীকে দেখা যেত একটা লাঠি হাতে। এ লাঠি কিসের জন্য হাতে তুলে নিয়েছিল গুরুদাসী ? তবে কি সমাজের জঞ্জাল সরাতে ? নাকি সমাজের চোখে লাঠি দিয়ে দেখাতে চেয়েছিল তার পরিনামহীন বৃথা আত্মদান্ আর সেই সব নরপশুগুলোর এই সমাজে গে্ৗরবান্বিত আস্ফলন ? কে দেবে এর উত্তর ?

সময়ের পরিক্রমায় গুরুদাসীর আচরণ অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছিল। পাইকগাছা-কপিলমুনীর সকল মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে ’মা’ বলে সম্বোধন করতেন। কারো মাসী, কারো বা পিসী হয়ে গুরদাসী পাইকগাছা-কপিলমুনীর সাধারণ মানুষের আপনার লোক হয়ে উঠেছিল।

অনেকে গুরুদাসীকে পাগলী বলে সম্বোধন করতো। এটা তাদের অজ্ঞতা না মূর্খতা আমার জানা নেই। তবে আমার খুব ছোটবেলায় একদিন গুরুদাসী আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবাকে ডাকছিল। আমি হয়তো না বুঝেই আব্বুকে বলেছিলাম ঐ লাঠি হাতে পাগলি’টা তোমাকে খুঁজছে। আব্বু ধমকে বলেছিলেন, ’আর কখনো ওনাকে পাগলী বলবে না, উনি একজন বীরাঙ্গনা।

এই বীরাঙ্গনা শব্দের অর্থ্ টা বুঝতে আমার সময় লেগেছিল অনেক বছর। আর যখন বুঝেছি, তখন নিজের কাছে প্রশ্ন করে কোন উত্তর পাইনি। সত্যিই কি আমরা মান রাখতে পেরেছি বীরাঙ্গনা গুরুদাসকে ? আমাদের বাড়িতে গুরুদাসীর ছিল স্বচ্ছন্দ পদচারনা। একদিন অনুসন্ধিৎসু মনে ওকে প্রশ্ন করেছিলাম, ”আমার আব্বু তোমার কি হয় ?” গুরুদাসী বলেছিল, ”আমার ছু’আল”।

হয়তো এভাবেই মানুষের মধ্যে খুঁজে পেতো গুরুদাসী তাঁর সন্তানদের। গুরুদাসীকে আমি পিসী বলে ডাকতাম। আমার বড়ো হওয়ার সাথে সাথে পিসীর সাথে আমার সম্পর্ক গভীর হতে থাকে।

কখনো শুনিনি কোন স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে গুরুদাসীকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে প্রশাসন থেকে। তবু বিনা নিমন্ত্রণেই সেখানে চলে যেতো গুরুদাসী। সত্যিই তো, আজ স্বাধীন দেশের বিজয় দিবস বা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার প্রারাম্ভিক অধিকার কেবলমাত্র গুরুদাসীরই। তবে কেন সে বঞ্চিত হয় এসব অনুষ্ঠান থেকে ?

যতোবারই ১৬ই ডিসেম্বর বা ২৬ মার্চ’এ পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের অনুষ্ঠানে গুরুদাসীকে দেখেছি এক কোনে দাঁড়িয়ে থাকতে, ততোবারই এই প্রশ্ন করেছি নিজেকে। কদাচিত যদি কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে গুরুদাসীর দেখা হয়ে গিয়েছে কখনো, তবে হয়তো জুটেছে গুরুদাসীর কপালে একটি চেয়ার্, নচেত নয়।

আনুমানিক ২০০২ সাল, নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা বিষয়ক এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বিভিন্ন স্কুল থেকে অনেকে গিয়েছিল। পাইকগাছা সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছাত্রী হিসাবে আমিও গিয়েছিলাম অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নারী জাগরণ সম্পর্কে কিছু বক্তব্য রাখার জন্য।

মঞ্চের বাঁ পাশে দরজার বাইরে ছিলাম আমি। দেখলাম গুরুদাসী পিসী বিষণ্ন মনে বের হয়ে আসছে। চোথ দুটি জলে ছলছল করছে। আমি এগিয়ে গেলাম, “পিসী তোমার কি হয়েছে ?“ তোর বাপরে কবি ওরা আমার ঘেটি ধইরে নামায় দিছে।” অঝরে কেঁদে ফেললো গুরুদাসী।

আমি পিসীকে সান্তনা দিয়ে বের করে নিয়ে এলাম; কিন্তু নিজের কাছে সান্তনা পাইনি। অবাক হলাম, হাঁসিও পেলো। এ্ই স্বাধীন দেশের নারী জাগরণ মঞ্চে গুরুদাসীর কোন স্থান নেই ??? কি বিচিত্র এই দেশ !!! সেদিন ছোট ছিলাম, তাই প্রতিবাদ করতে পারিনি। তবে নারী জাগরণের বড় বড় বুলি আওড়িয়ে ভাষণ দিতে সেদিন আর ঐ মঞ্চে আমি উঠতে পারিনি। নীরব প্রতিবাদে শরীর খারাপের মিথ্যে অজুহাতে পিসীকে নিয়ে বাড়ি চলে এসেছিলাম। আজ বড় হয়েছি। আমার নীরব প্রতিবাদও আজ ভাষা পেয়েছে। কিন্তু গুরুদাসী ???

সমাজের কাছে অনেক প্রশ্ন রেখে ২০০৮ সালের বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নীরব অভিমানে মুক্তি নিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল না ফেরার দেশে। মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রশাসন যৌথভাবে ‘গার্ড্ অফ অনার’ দিয়ে কাশিমনগর মহাশ্মশানে তাঁর অন্তিম সৎকার করল। চিতায় ভষ্মীভূত গুরুদাসীর শরীর আজো বিচার চায় হাতেমের মতো রাজাকারদের, ফিরে পেতে চায় তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদা, ফিরে পেতে চায় সত্যিকারের স্বাধীনতা।
 

কৃতজ্ঞতা: ফারহানা সুলতানা আইভী
 

পাইকগাছায় অবরোধের হালচাল

সকাল থেকে প্রায় যানবাহন শূণ্য পৌরসভার প্রধান সড়ক। বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি কোন বাস।


ছবিটি পাইকগাছা পৌরসভা বাসস্ট্যান্ড থেকে তোলা। (সকাল ৮টা)