জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সিজনাল মাইগ্রেশন করছে
আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা :: জলবায়ু পরিবর্তের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের
নিম্ন আয়ের মানুষেরা সিজনাল মাইগ্রেশন (স্বল্প মেয়াদি স্থানান্তর) করছে বলে
উল্লেখ করেছেন ইউনেস্কো প্রতিনিধি উয়েনডি জেকবস্। যে সকল পরিবারের লোক
মাইগ্রেশন করছে সে সকল পরিবারে পারিবারি সম্প্রীতির উপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে
বলে মন্তব্য করেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে চলমান এক গবেষনায় এ ধরণের তথ্য
উপাত্ত উঠেছে এসেছে বলে ইউনেস্কো এ প্রতিনিধি জানান।
উয়েনডি জেকবস্ মূলত আয়ারল্যান্ডের নাগরিক ও নেদারল্যান্ড আমর্সটার্ডাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএস শিক্ষার্থী। ইউনেস্কো (আই.এইস.ই) ও বাংলাদেশের
ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা
বাংলাদেশের সিজনাল মাইগ্রেশন (স্বল্প মেয়াদি স্থানান্তর) পরিবারগুলোর উপর
কি ধরণের প্রভাব ফেলেছে এ সংক্রান্ত এক গবেষণার কাজে উয়েনডি জেকবস্
বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর ২ মাস গবেষণার কাজ পরিচালিত
করবেন যার মধ্যে ১ মাস উপকূলীয় এলাকা এবং আরেক মাস দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। এ
কাজে বর্তমানে তিনি গত কয়েকদিন ধরে উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছায় অবস্থান
করছেন।
সংবাদকর্মী হিসেবে গতকাল সকালে কথা হয় মিস জেকবস্ এর সাথে।
একান্ত সাক্ষাতকারে ইউনেস্কোর এ প্রতিনিধি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত
সমস্যা বর্তমান বিশ্বে আলোচিত একটি বিষয়। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর
মাত্রাতিরিক্ত পরিবেশ দূষণ ও রাসায়নিক তেজষক্রিয়তা এর জন্য অনেকাংশে দায়ী
হলেও ভৌগলিক কারণে এর ক্ষতির শিকার বাংলাদেশ ও এদের মানুষ।
জলবায়ু
পরিবর্তনজনিত সমস্যা বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বেশি প্রভাব ফেলেছে উল্লেখ
করে উয়েনডি জেকবস্ বলেন, উৎপাদন কম ও আয়ের উৎস্য না থাকায় কাজের সন্ধানে
দেশের বিভিন্ন স্থানসহ উপকূলীয় এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা দেশের বিভিন্ন
স্থানেসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে সিজনাল মাইগ্রেশন করছে। পরিবারের একমাত্র
অভিভাবক পুরুষ চলে যাওয়ায় এ সময় অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়ে ঐ পরিবার। এ সময়
পরিবারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে না পারায় পারিবারিক সম্প্রীতির উপর
বিরূপ প্রভাব পড়ে। এমনকি সময়মত উপার্জিত অর্থ পাঠাতে না পারায় পুষ্টিকর
খাবার খেতে পারে না বাড়ীতে রেখে যাওয়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। অভিভাবক
শূন্যতায় মারাত্মক ব্যাহত হয় এ সকল পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া।
উপকূলীয় এলাকার মাইগ্রেশনকৃত পরিবারগুলোর উপর পরিচালিত চলমান গবেষণায় এ
ধরণের তথ্য উপাত্ত উঠে এসেছে বলে মন্তব্য করেন ইউনেস্কোর এ প্রতিনিধি। এ
ব্যাপারে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির
উপর গুরুত্বারোপ করেন উয়েনডি জেকবস্।