Monday, September 9, 2013

কয়রা-পাইকগাছায় নেই পর্যাপ্ত পরিমান সাইক্লোন শেল্টার

সুন্দরবন ঘেষে অবস্থিত কয়রা-পাইকগাছার প্রায় ৭ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী রয়েছে ঝুঁকির মুখে। আশংকা করা হচ্ছে যে কোন সময় বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানতে পারে। ফলে এখানে পর্যাপ্ত পরিমান সাইক্লোন শেল্টার না থাকায় কয়রা-পাইকগাছার প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষের জীবন ও সম্পদ রয়েছে হুমকীর মুখে।

অভিযোগ আছে, আইলা বা সিডরে কোটি কোটি টাকার সরকারি অনুদান এলেও এর সিংহভাগ টাকা লুটপাট হয়েছে। ফলে উপকূলের এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে জেঁকে বসেছে ভীতি ও আতংক।

তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, পরিবেশ বিপর্যের কারণে আশাংঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। ভৌগলিক কারনে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। আর এই ঝুঁকির অন্যতম এলকার মধ্যে দক্ষিণ উপকূলীয় বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী সুন্দরবনের কোলঘেঁষা অবস্থিত কয়রা-পাইকগাছা। দেশের সর্ববৃহৎ ঝুঁকিপূর্ণ এই দু’টি উপজেলায় প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। অথচ তাদের প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নির্মিত হয়েছে মাত্র ২টি সাইক্লোন শেল্টার ও ৩৭টি সাইক্লোন শেল্টার কাম প্রাইমারী স্কুল।

তথ্যমতে, বিভিন্ন দূর্যোগে এই অঞ্চলের প্রায় দু’শতাধিক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতি হয়েছে শত শত কোটি টাকার সম্পদ। অথচ সরকারিভাবে নেয়া হয়নি আজও কোন কার্যকর পদক্ষেপ। খুলনার দক্ষিণ উপকূলীয় ১৭টি ইউনিয়ন ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত কয়রা-পাইকগাছা উপজেলা। এক সময় এ অঞ্চল ছিল সবুজের সমারোহ। ছিল গোয়াল ভরা গরু ও গোলা ভরা ধান। ছিল কৃষক কিষানীর মনে আনন্দ। কৃষিতে সমৃদ্ধি, বসবাসের জন্য ছিল স্বাস্থ্যসম্মত মনোরম নির্মল পরিবেশ।

ষাটের দশকের পরে এ অঞ্চলে বৃদ্ধিপায় পরিবেশ বিধ্বংসি লবণ পানির চিংড়ি চাষ। সমুদ্রের মাত্রারিক্ত লবণ পানি গ্রাস করে সর্বত্র। দেখা দেয় পরিবেশ বিপর্যয়, বিরূপ প্রভাব পড়ে জীব বৈচিত্রের উপর। ওয়াপদার বাঁধ কেটে অবাধে ঢোকানো হয় লবন পানি। এতে করে হুমকির মুখে পড়ে ওয়াপদার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সূচনা ঘটে এই বেড়িবাঁধের ভাঙ্গনের কারনে।

অন্যদিকে হ্রাস পেতে থাকে নদীর নাব্যতা। গত ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারীর দিকে মহামান্য হাইকোর্ট উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষি জমিতে লবণ পানি উত্তোলন বন্ধসহ চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ করলেও মাঠ পর্যায়ে এর কোন সফলতা আসেনি। এতে করে জলবায়ুর পরিবর্তন ও চিংড়ি চাষের বিরূপ প্রভাবে আশির দশক হতে শুরু হয় এ অঞ্চলে প্রাকৃতিক দূর্যোগের খেলা। যা এ অঞ্চলের মানুষের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে।

কয়রা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন গত ২০০৯ সালে ২৫মে আইলার আঘাতে প্লাবিত হয়ে গৃহহীন হয় ২ লক্ষাধিক মানুষ। একইভাবে পাইকগাছার ৫টি ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অতিদ্রুত ভূ-মন্ডল উত্তপ্ত হওয়ার ফলে এ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বঙ্গোপসাগরের পানির স্তর খুব বেড়ে যাবে এবং তলিয়ে যাবে বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ। বিশেষজ্ঞদের এ ধারণা সত্যি হলে উপকূলীয় এই দু’টি উপজেলা সম্পূর্ণ তলিয়ে যাবে। আর এই ধরণের দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে অগ্রিম কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করলে ঝুঁকি ও আতংকের মধ্যে থাকবেন দু’টি উপজেলার প্রায় ৭ লক্ষাধিক মানুষ।

সূত্রমতে, উপকূলীয় পাইকগাছার দেলুটি, লতা, হরিঢালী, গড়ইখালী, রাড়ুলী ইউনিয়নে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাইক্লোন সেন্টার না থাকায় ঝুঁকির মধ্যে আছেন এই জনপদের মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি দূর্যোগ মোকাবেলায় সরকার এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করলে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে লাখ লাখ পরিবার। সম্পদের ক্ষতি হবে কয়েশ কোটি টাকার।

২০১১ সালের অনার্স পার্ট-২ পরীক্ষার ফলাফল আজ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য ২০১১ সালের অনার্স পার্ট-২ পরীক্ষার ফলাফল আজ (০৯/০৯/১৩) সকাল ১০:০০ টায় প্রকাশ করা হবে। ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (www.nuadmission.info) এবং (www.nubd.info) থেকে জানা যাবে।