Wednesday, December 20, 2017

পাইকগাছায় ক্লিনিকের টাকা পরিশোধে নবজাতক কন্যাকে বিক্রি

অভাবের সংসারে তৃতীয় কন্যা সন্তান, তাই নবজাতক শিশু কন্যাকে বিক্রি করে ক্লিনিকের পাওনা পরিশোধ করল পাইকগাছার এক দম্পতি। নবজাতকের সুন্দর ভবিষ্যতের চিন্তায় এবং ক্লিনিকের পাওনা টাকা পরিশোধের কথা ভেবে জন্মের পরের দিন পাইকগাছা পৌর এলাকার এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে ৪ হাজার ২০০ টাকায় নবজাতক শিশুটিকে বিক্রি করে তার বাবা মা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।


জানা গেছে, পাইকগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সরল গ্রামের দিলিপ সরদারের স্ত্রী সুভাসী সরদার গত ১২ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ফারিন হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। কিন্তু এ পরিবারে আরও ২টি কন্যা সন্তান থাকায় নবজাতকের প্রতি চরম অবহেলা ও অযত্ন দেখা দেয়।

বিষয়টি জানার পর পৌরসভার সরল গ্রামের লক্ষ্মণ সরদারের স্ত্রী কবিতা রাণী সরদার সকালে হাসপাতালে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে শিশুটি নেয়ার জন্য আগ্রহ দেখায়। 

অভাবের সংসারে পরপর ৩টি কন্যা সন্তান হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েন দিলিপ দম্পতি। একদিকে অভাবের সংসারে সন্তানের ভবিষ্যতের চিন্তা অন্যদিকে ক্লিনিকের পাওনা টাকা পরিশোধের চিন্তা। তাই শেষমেশ নবজাতক কন্যা সন্তানকে ৪ হাজার ২০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন এই দম্পতি। 

এ ব্যাপারে শিশুটির পিতা দিলিপ সরদার জানান, অভাবের কারনেই শিশুটিকে বিক্রি করতে হয়েছে।

এদিকে লক্ষ্মণ চন্দ্র সরদার নবজাতক কেনার কথা স্বীকার করে জানান, আমরা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নবজাতককে নিয়ে আসিনি। দিলিপ দম্পতি ক্লিনিকের পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য ৪ হাজার ২০০ টাকার বিনিময়ে তাদের নবজাতক কন্যা সন্তানকে আমাদের কাছে দিতে রাজি হয়। আমাদের কোন সন্তান না থাকায় শিশুটিকে পেয়ে তারা অনেক খুশি।

ফারিন হাসপাতালের মিন্টু জানান, জন্মের পরের দিন ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করে সন্তান নিয়ে তারা চলে যায়। বিক্রি করেছে কিনা এ বিষয়টি আমার জানা নেই।

প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত দম্পতি

পাইকগাছায় মন্দিরের জায়গা জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় এক দম্পতি গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহতের স্বামী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছে।


মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গদাইপুর রাধাকৃষ্ণ সেবাশ্রম মন্দিরের সম্পত্তি ও মন্দিরে জমিদাতা মৃত রণজিৎ ঘোষের ছেলে নারায়ন চন্দ্র ঘোষের সাথে প্রতিপক্ষ একই এলাকার মৃত মনিন্দ্রনাথ বিশ্বাসের ছেলে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ঘটনার কিছু দিন পূর্বে প্রতিপক্ষরা মন্দিরের সামনে বাথরুম তৈরী করার চেষ্টা করলে প্রতিপক্ষদের সাথে মন্দির কমিটি ও নারায়ণ ঘোষের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন গত শুক্রবার বিকেলে প্রতিপক্ষরা নারায়ণ ঘোষের সম্পত্তির ঘেরা-বেড়া ও মন্দিরের আসবাব পত্র ভাংচুর করতে থাকলে এ সময় বাঁধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন নারায়ণ ঘোষ (৫৫) ও তার স্ত্রী বীথিকা ঘোষকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। আহতদের মধ্যে বীথিকা ঘোষের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বীথিকার মাথার ক্ষতস্থানে কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস সহ ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে। যার নং-১৯, তাং-১৬/১২/১৭ ইং।

বাড়ি ফেরা হলো না দুই বন্ধুর

সাতক্ষীরায় মোবাইল ফোন কিনতে গিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না পাইকগাছার দুই বন্ধুর। একজনের ঠিকানা হয়েছে পরপারে। আরেকজনের হাসপাতালে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর সাতক্ষীরার ভোমরায় মালবাহী ট্রাক চাপায় ঘটনাস্থলে নিহত হন উজ্জ্বল সরদার (৩০)। আর গুরুতর আহত হন বন্ধু কাউন্সিলর রবি শংকর মন্ডল (৩০)।

উজ্জ্বল সরদার ও রবি শংকর মন্ডল
সূত্র জানায়, ঘটনার দিন মঙ্গলবার কাউন্সিলর রবি শংকর তার দোকানের মোবাইল ফোন কিনতে বন্ধু পাইকগাছা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল সরদারকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে সাতক্ষীরার ভোমরায় যান। সন্ধ্যার পর ভোমরার একটি চায়ের দোকানের সামনে মোটরসাইকেলটি রেখে তারা দু'জনই চা পান করছিলেন। এমন সময় একটি মালবাহী ট্রাকের চাকা বাস্ট হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাদেরকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই উজ্জ্বলের মৃত্যু হয় এবং কাউন্সিলর রবি শংকরের হাত-পা ভেঙ্গে গুরুতর আহত হয়। আহত রবিকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

হাসপাতালে আহত রবি শংকর মন্ডল
রবি শংকর পাইকগাছা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সরল গ্রামের মৃত কৃষ্ণপদ মন্ডলের ছেলে এবং উজ্জ্বল সরদার ৯নং ওয়ার্ডের বাতিখালী গ্রামের অনাথ বন্ধু সরদারের ছেলে। মৃত্যুর খবরে উজ্জ্বলের পরিবারের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন রবির পরিবার।

নিহত উজ্জ্বল সরদার
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উজ্জ্বলের মৃতদেহ সাতক্ষীরা থেকে বাড়িতে আনার প্রক্রিয়া চলছিল। 

অপরদিকে, গুরুতর আহত কাউন্সিলর রবিকে দেখতে মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে পৌর পরিষদের সদস্যবৃন্দ অবস্থান করছিলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

আরও পড়ুন :: ভোমরায় ট্রাক চাপায় নিহত পাইকগাছার উজ্জ্বল; আহত কাউন্সিলর রবি