Tuesday, March 14, 2017

দুর্ভোগের আরেক নাম পাইকগাছা-কপিলমুনি সড়ক

মৌসুমের শুরুতেই টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবুজ প্রকৃতি ও কৃষি ফসলের উপকার হলেও যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে পাইকগাছা-খুলনা প্রধান সড়কের উপজেলা সদর থেকে কপিলমুনি পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কে। ইতোমধ্যে সড়কটি দুর্ভোগের জন্য ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।



দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি পরিণত হয় খানা-খন্দে। গত কয়েক বছরের মধ্যে সড়ক সংস্কারের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ফলে উপকূলীয় কয়েকটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষকে প্রতিনিয়তই যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

দীর্ঘদিন পর সড়ক সংস্কারে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এমন খবরে এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি আসলেও সংস্কারের আগেই মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাতে যাতায়াতে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে দুর্ভোগের জন্য পরিচিত সড়কটি। 

গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে সড়কের বড় বড় গর্তে হাঁটু পানি জমে অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যাতায়াতে যেমন ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে যানবাহনের তেমনি দুর্ভোগ বেড়েছে পথচারীদের। গর্ত পার হওয়ার সময় ভারি যানবাহনের ছিটকে দেওয়া পানিতে ভিজে যেতে হচ্ছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষকে।

এলাকার প্রত্যেক মানুষের একটাই প্রশ্ন, আর কতদিন পোহাতে হবে সড়কে এমন দুর্ভোগ !

তালায় পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারযুক্ত কচ্ছপ উদ্ধার

তালা উপজেলায় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটারযুক্ত একটি কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে। কচ্ছপটির ওজন ১২ কেজি। সোমবার সকালে উপজেলার পাখিমারা বিলের জোয়ারাধারে (টিআরএম) মাছ ধরার সময় দোহার গ্রামের শেখ ওহাব উদ্দিন কচ্ছপটি পান। পরে তিনি শ্রীমন্তকাটি নতুন বাজার মাছের আড়তে কচ্ছপটি জীবিত অবস্থায় বিক্রির জন্য নিয়ে আসলে বিষয়টি জানাজানি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে তালা থানায় নিয়ে যায়। কচ্ছপটি সেখানেই রক্ষিত আছে।



শ্রীমন্তকাটি নতুন বাজারের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ও কাইয়ুম শেখ বলেন, কচ্ছপটির পিঠে অ্যান্টেনার মতো একটি যন্ত্রাংশ দেখে কেউ তা কিনতে রাজি হয়নি। একপর্যায়ে স্থানীয়দের পরামর্শে ওহাব উদ্দিন কচ্ছপটি বাড়ি নিয়ে যান। এ সময় অনেক মানুষ কচ্ছপটি দেখতে ভিড় করে। খবর পেয়ে তালা উপজেলার খেশরা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মাজেদ হাওলাদার কচ্ছপটি উদ্ধার করে তালা থানায় পাঠিয়ে দেন। 

কচ্ছপটির পিঠে লাগানো অ্যান্টেনায় লেখা রয়েছে, আডি-১৬৫৩৩৭-চ ০২৭৯১, প্রজেক্ট-বাটাগুর বাসকা, ভিয়েনা-জু, বাংলাদেশ-২০১৬, স্যারট্রাক (PROJECT-BATAGURBASKA, VIENNA-ZOO, BANGLADESH-2016, SIRTRACK)।

শেখ ওহাব উদ্দিন বলেন, সকালে পাখিমারা বিলের জোয়ারাধার এলাকায় সড়কের পাশে কচ্ছপটি দেখে বাড়ি নিয়ে যান। পরে তা বিক্রির জন্য এলাকার নতুন বাজার মাছের আড়তে নিয়ে যান। সেখানে স্থানীয়রা তাঁকে জানান, এটি কোনো পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত কচ্ছপ। তাই তিনি কচ্ছপটি বিক্রি করে আবার বাড়ি নিয়ে যান। পরে পুলিশ কচ্ছপটি নিয়ে যায়।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের টারটেল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা জু এবং প্রকৃতি জীবন ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্রে কুমির ও হরিণের পাশাপাশি কচ্ছপ প্রজননকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে মূলত বিপন্ন বাটাগুর বাসকা কচ্ছপ নিয়ে গবেষণা চলছে। এর অংশ হিসেবে বাটাগুর বাসকার স্বভাব, খাদ্যাভ্যাস, বিচরণক্ষেত্র ও জীবনযাপন সম্পর্কে জানতে দুটি কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার সিস্টেম স্থাপন করে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ছেড়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি একটি কচ্ছপের কোনো সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যটি সাগর ও সুন্দরবন ঘুরে ছবি পাঠাচ্ছে। দ্রুত কচ্ছপটির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কচ্ছপটি সুন্দরবন থেকে কীভাবে ৫০ কিলোমিটার দুরে চলে গেল তা বোঝা যাচ্ছে না।

সাইদুল ইসলাম আরও বলেন, এই প্রজাতির প্রাপ্তবয়স্ক কচ্ছপের ওজন ২৫ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত হয়। বাঁচে ৭০ থেকে ৮০ বছর।



তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বেলা দুইটার দিকে বন বিভাগের ওয়াইল্ড লাইফ প্রকল্পের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ খুলনা বিভাগের রেঞ্জার লুৎফর রহমান এবং বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা আজেদুল হাসানের কাছে কচ্ছপটি হস্তান্তর করা হয়েছে।

ওয়াইল্ড লাইফ প্রকল্পের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ রেঞ্জার লুৎফর রহমান বলেন, কচ্ছপটি সুস্থ আছে। সুন্দরবনের করমজলে বন বিভাগের নির্দিষ্ট স্থানে এখন এটি রাখা হবে। ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সেটিকে আবার সুন্দরবনের নদীতে ছাড়া হবে।