ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় পাইকগাছার যুবক রিমুর ৮ মাস হাজতবাস
মাসুদুর রহমান রিমু। ৩৫ বছর বয়সী যুবক। পাইকগাছা উপজেলা সদরের চা বিক্রেতা। একটি চুরি মামলায় হাজতবাসকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে রাস্তার পাশে গাছ কাটা মামলা দেওয়া হয়। এ মামলার বাদী পুলিশ। গাছকাটা মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক বলে জেল সুপার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
এদিকে কারা পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী পরিষদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার পাঠানো প্রতিবেদনে রিমুুর নামে দায়েরকৃত মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক এবং জেলখানায় আটক অবস্থায় হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
পাইকগাছা উপজেলা সদরের বাতিখালী গ্রামের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান রিমু। তিনি মনসুর আলীর পুত্র। সংশ্লিষ্ট এলাকায় একটি চুরি মামলায় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর পুলিশ তাকে হাজতে প্রেরণ করে। এ বছরের ২৭ জানুয়ারি চুরি মামলায় তার জামিন হয়। হাজতবাসকালীন সময়ে ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বরে পাইকগাছা থানা পুলিশ রাস্তার পাশে গাছ কাটা মামলায় তাকে আসামি করে।
জেলা কারাগারের ৫৮৩/১৪ নম্বরের এ হাজতী হওয়া সত্বেও গাছ কাটা মামলায় তার আসামি হওয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে এবং তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গত ২৩ ফেব্রুয়ারি জেল সুপারের কাছে আবেদন করে। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেল সুপার মোঃ নুরুন্নবী ভূঁইয়া এ মামলা থেকে এজাহারভূক্ত আসামিকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য পাইকগাছার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেন।
এদিকে গত ৩ আগস্ট জেলা কারাগার পরিদর্শন শেষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিস মাহমুদ এ মামলাটি ষড়যন্ত্রমূলক এবং জেলখানায় আটক অবস্থায় তাকে আসামি করা হয়েছে বলে মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
এ হাজতি জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আক্রোশমূলকভাবে তাকে আসামি করেছেন। চুরি মামলায় জামিন পাওয়ার পরও গাছ কাটা মামলায় তিনি জামিন পাচ্ছেন না। পরিবারের একমাত্র সক্ষম মানুষ বলে তিনি দাবি করেন।
এ মামলা প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, হাজতির আবেদন সত্যি হলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকায় তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
উপজেলা গদাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চু জানান, বাতিখালী গ্রামের এ যুবক মিথ্যা মামলায় হাজতবাস করছে। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ রাস্তার পাশে গেল ডিসেম্বরে গাছ কাটা মামলায় একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করেছে। এ হাজতির বৃদ্ধ মাতা নানা অসুখে ভুগছে। এ মামলার চার্জশীট এখনও দেওয়া হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানার সাব-ইন্সপেক্টর জালালউদ্দিন মামলার তদন্তকারী কমকর্তা।