Monday, May 27, 2013

পৌর-প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে বাজার ও আশপাশ এলাকা প্লাবিত

পুর্ণিমার অস্বাভাবিক জোয়ারে পাইকগাছার পৌর-প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে বাজার ও তার আশপাশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উৎকন্ঠায় পড়েছে পৌরসভা বাজারের ব্যবসায়ীমহল সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। আগামী দু’একদিন পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রবিবার দুপুরে পুর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে তা পৌর-প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচে কাঁচা বাজার, কাঁকড়া মার্কেট, চাউলের পট্রি সহ একাধিক অলি গলি, এমনকি বাজারের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মেইন সড়কেও হাঁটু পরিমান পানি জমে। এ সময় ব্যাবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ভোগান্তি বাড়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারনের। বেলা ২ টার পর থেকে পানি সরতে শুরু করে। অভিজ্ঞ জনেরা জানিয়েছেন সৃষ্টি নিম্ন চাপের কারনে এবং নদ নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে অস্বভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি আগামী দু’একদিন এ পানি আরো বৃদ্ধি পাবে বলে তারা ধারনা করছেন।

স্থানীয়রা এবং বাজার ব্যবসায়ীরা অতি দ্রুত পৌর শহর প্রতিরা বাঁধ সম্প্রসারন ও উঁচু করার দাবী জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপরে নিকট। পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, পৌর-প্রতিরক্ষা বাঁধ উঁচু ও সম্প্রসারন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে জোর চেষ্ঠা করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্র এ কাজ করা সম্ভব হবে।

পাইকগাছায় টার্মিনালের অভাবে জনভোগান্তি চরমে

পাইকগাছায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান সড়কটি বাসমালিকরা টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহার করায় প্রতিনিয়ত সড়ক দূর্ঘটনা ও জনভোগান্তি বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোররাতে একটি মালবাহী ট্রাক সড়কের উপর রাখা বাস অতিক্রম করার সময় খাদে পড়ে যায়। টার্মিনাল না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে বলে বাস মালিকরা জানিয়েছেন।

সুত্রমতে, উপজেলার পাইকগাছা-খুলনা রুটে ১২৪, কয়রা রুটে ৪৪, বেতবুনিয়া রুটে ৩০ এবং অমিট ১২৪ সহ খুলনা বিভাগীয় বাস মালিক সমিতির ৩২২টি মিনিবাস রয়েছে। বাসগুলো পার্কিং করার জন্য নেই তেমন কোন টার্মিনাল।   
 
তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. সম. বাবর আলী ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে উপজেলা পরিষদের পাশেই দেড় বিঘা জায়গার উপর বাসস্টান্ড তৈরী করেন। গত প্রায় ৩ দশকে অসংখ্য গাড়ী বৃদ্ধি পেলেও টার্মিনাল কিংবা স্ট্যান্ডের জায়গা সম্প্রসারণ করা হয়নি। ফলে বাস মালিক ও শ্রমিকরা টেলিফোন অফিস হতে আসিফ ফিলিং স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১ কিলোমিটার প্রধান সড়কের অর্ধেক জায়গা জুড়ে সারিবদ্ধভাবে টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহার করায় যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পেতে হয়।

পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহন অতিক্রম করার সময় হয় খাদে পড়ে যায়, না হয় দূর্ঘটনার শিকার হয়। গত কয়েকমাসে এ ধরনের কয়েকটি দূর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানাযায়। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার দিকে খুলনা মেট্রো-ট-১১০৩৩৭ নম্বর চাউলবাহী ট্রাক স্থানীয় শাপলা ক্লিনিকের সামনে পার্কিং করা বাস অতিক্রম করার সময় খাদে পড়ে গিয়ে উল্টে যায়।

জন ভোগান্তির কথা জেনেও জায়গা স্বল্পতার কারনে অনেকটা বাধ্য হয়ে সড়কের উপর বাস রাখতে হচ্ছে বলে বাসমালিক সমিতির লাইন সেক্রেটারী জাহিদুল ইসলাম জানান।

বিষয়টি বারবার মেয়র এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত এমনকি মাসিক আইনশৃংঙ্খলা সভায় একাধিকবার উপস্থাপন করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়নি বলে তিনি জানান। বিকল্প একটি টার্মিনাল স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে পৌরমেয়র সে

পাইকগাছায় শিশু অধিকার সংরক্ষন ফোরামের মতবিনিময় সভা

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব খলিলুর রহমান কাগজী মন্ত্রণালয়ের গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে ও সুরক্ষায় সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ ঢাকার ৩টিসহ দেশের ৬টি শিশু বিকাশ কেন্দ্র মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যস্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে শিশু উন্নয়নে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকার শিশু বিকাশ কেন্দ্রের মাধ্যমে দেশের অনাথ ও পথশিশুদের থাকা-খাওয়া, শিক্ষা, খেলাধুলা ও চিত্তবিনোদনের সু-ব্যবস্থা করেছেন বলে তিনি জানান।


তিনি এলাকার নারী ও শিশু উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতাসহ কর্মজীবী শিশুদের জন্য মন্ত্রণালয় হতে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধু শিশু গ্রন্থসহ বিভিন্ন বই, পুস্তক প্রদানের আশ্বাস দেন। তিনি সোমবার সকালে প্রদীপন পাইকগাছা কেন্দ্রে শিশু অধিকার সংরক্ষন ও সাংবাদিক ফোরামের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসবকথা বলেন। এর আগে প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পৌরসভায় শিখন ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন, বাজেটে শিশুদের জন্য বরাদ্দ, বাল্য বিবাহ বন্ধ ও শিশুমেলা উদযাপনসহ ফোরাম এবং এনএসএ প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।

শিশু অধিকার সংরক্ষন ফোরামের সভাপতি এ্যাড. শফিকুল ইসলাম কচির সভাপতিত্বে ও এনএনএসএ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী আজমল-আল নূর পাভেলের পরিচালায় সভায় বক্তব্য রাখেন এ্যাড. এফএমএ রাজ্জাক, এ্যাড. মোজাফফার হাসান, এ্যাড. সেলিনা আক্তার, প্রভাষক আবু রাসেল কাগজী, সাংবাদিক স্নেহেন্দু বিকাশ, তৃপ্তি রঞ্জন সেন, আব্দুল আজিজ, এন ইসলাম সাগর, শিক্ষক শ্রদ্ধা রাণী সরকার, উদয় শংকর রায়, শফিয়ার রহমান ও রাজু আহমেদ।

পাইকগাছায় বিপাকে তরমুজ চাষীরা

পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও ঘন ঘন হরতাল, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, বিক্রয়মূল্য কম ও চাহিদা না থাকায় বিপাকে পড়েছে তরমুজ চাষীরা। সম্প্রতি ‘ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাব ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে পানি জমে প্রায় ৩০ শতাংশ তরমুজ নষ্ঠ হয়েছে বলে চাষীরা জানান।

সুত্রমতে, উপজেলার দেলুটি ও গড়ইখালীতে ১৮৫ হেক্টর জমিতে ভিক্টর সুপার, ওয়াল্ড পেইন, চাইনিজ হাইব্রিড ও ওয়াল্ড কুইনসহ কয়েকটি উন্নত জাতের তরমুজের আবাদ হয়েছে। বাম্পার ফলন হলেও মৌসুমের শেষদিকে এসে ঘন ঘন হরতাল, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বাজারে চাহিদা না থাকায় তরমুজ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ৪ শতাধিক কৃষক।

দেলুটি ২২ নং পোল্ডারের কৃষক তারাপদ মন্ডল জানান চলতি বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে তরমুজের আবাদ করছেন হেক্টর প্রতি ৪৫ টন উৎপাদন হলেও ঘন ঘন হরতালের কারনে বিগত বছরের তুলনায় পাইকারী ক্রেতা কম থাকায় সময়মত তরমুজ বিক্রি করতে পারেনি। অপরদিকে সম্প্রতি ঘুর্নিঝড়ের প্রভাব ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে প্রায় ৩০ শতাংশ তরমুজ ক্ষেতে নষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।

পাটনিখালী গ্রামের তোফাজ্জেল ঢালী জানান অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে স্থানীয় বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় তরমুজ এখন গবাদি পশুর খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। চলতি বছর প্রত্যেকটি তরমুজ চাষীকে চরম লোকসান দিতে হবে বলে তিনি জানান। খুচরা ব্যবসায়ী পরিমল জানান বিগত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি ৫ টাকা কমে বিক্রি করা হলেও তেমন কোন ক্রেতা নেইবলে তিনি জানান। উপজেলা কৃষি অফিসার বিভাষ চন্দ্র সাহা জানান-গরমের সময় তরমুজের চাহিদা একটু বেশি থাকে, চলতি বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে চাহিদা কমে যাওয়ার কারনে বাজার মূল্য কম হওয়ায় অন্যতম কারন বলে তিনি জানান। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১০ হেক্টর জমির তরমুজ ফসল নষ্ঠ হয়েছে বলে তিনি জানান।

পাইকগাছায় হরতালে পিকআপ ভাংচুর; নিস্ক্রিয় বিএনপি নেতাকর্মীরা

পাইকগাছায় বিক্ষিপ্ত ভাংচুরের মধ্য দিয়ে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হরতালের শুরুতেই খুলনা থেকে ছেড়ে আসা খুলনা মেট্রো-ট-১১-০০২২ নং একটি পিকআপ বোয়ালিয়া মোড় নামকস্থানে পৌছালে জামায়াত-শিবির সমর্থিত পিকেটাররা ইট, পাটকেল ছুড়ে পিকআপটি ভাংচুর করে।

এসময় পিকআপের ভিতরে থাকা মাছ ব্যবসায়ী সুমন আহমেদ ইটের আঘাতে সামান্য আহত হয় বলে চালক সোহরাব হোসেন জানান। এর আগে খুব ভোরে জামায়াত-শিবিরের অর্ধশত নেতাকর্মী কোট মসজিদ হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে দ্রুত গতিতে টিএন্ডটি অফিসের সামনে গিয়ে শেষ করে। হরতালে দুরপাল্লার কোন যানবাহন চলাচল করেনি, সকালের দিকে দোকানপাট কিছুটা বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে অধিকাংশ দোকনপাট খুলে রাখে। অফিস আদালতের উপস্থিতি ও ব্যাংক, বীমার লেনদেন ছিল স্বাভাবিক। এবারের হরতালে ১৮ দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি’র বিবাদমান দু’গ্র“পের নেতাকর্মীরা ছিল অনেকটাই নিস্ক্রিয়। স্থানীয় পরিবহন চত্ত্বর ও কপোতাক্ষ মার্কেট চত্ত্বরে কিছু নেতাকর্মীকে বসে থাকাছাড়া তেমনকোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। নাশকতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে মোতায়েন করা হয় পুলিশ।

পাইকগাছায় ভেজাল বিরোধী অভিযানে জরিমানা আদায়

পাইকগাছায় ভ্রাম্যমান আদালত ভেজাল বিরোধী অভিযান চালিয়ে নগদ সাড়ে ৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও ফরমালিনযুক্ত ৩ মন আম বিনষ্ট করেছে। শনিবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী আতিয়ুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে উপজেলার গদাইপুরের রুস্তম আলীর ফরমালিন মেশানোর অভিযোগে ৩মন আম জব্দ পূর্বক বিনষ্ট এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। 


এরপর নতুন বাজার শংকর ঘোষের নিকট হতে ৫শ, কনক অধিকারী ৫শ, স্বপন বিশ্বাস ৫শ, মা বেকারী ১ হাজার, মুক্তর সেট পাইকগাছা বাসস্ট্যান্ড ৫শ, কনক ঘোষ ৫শ টাকা আদায় করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর উদয় মন্ডল, পেশকার দিপংকর মন্ডল।