Thursday, December 7, 2017

পৌর সদরে নসিমনের ধাক্কায় আহত ২

এবার পাইকগাছা পৌর সদরে নসিমনের ধাক্কায় পথচারী এক মহিলা ও এক মাদ্রাসা ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে মাদ্রাসা ছাত্রীর অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার সোলাদানার চৌরাস্থা মোড়ে নসিমন উল্টে নদীতে পড়ে দুই কলেজ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার খোদ পাইকগাছা পৌর সদরেই নসিমনের ধাক্কায় দুই পথচারী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটল।


সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার সরল গ্রামের মৃত হযরত আলী সানার স্ত্রী রিজিয়া বেগম (৪০) ও আলমতলা গ্রামের মোঃ ইসমাইল শেখের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে নাজমা খাতুন (১৫) পৌর সদরের ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে রাস্তা পার হওয়ার সময় পিছন দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী নসিমন তাদেরকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে তারা অচেতন হয়ে যান।

পরে এক ভ্যান চালক তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মাদ্রাসা ছাত্রী নাজমার অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, পাইকগাছায় একের পর এক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে নসিমন-করিমনের মত যানবাহনগুলো। বুধবার সকালেও আবু হোসেন কলেজ সংলগ্ন চৌরাস্থা মোড়ে নসিমন উল্টে নদীতে পড়ে ফসিয়ার রহমান মহিলা কলেজের দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।

যাত্রীরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ঝুঁকিপূর্ণ কাঠামোর এসব অনুমোদনহীন যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

নদীতে বাঁধ, পাইকগাছায় থমকে গেছে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ

পাইকগাছার সোলাদানায় নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সরকারি মরাকুচিয়া নদীতে বাঁধ থাকায় মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় কোটি টাকা ব্যয়ে দীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ থমকে গেছে। মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা।


উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি উত্থাপনের পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাঁধটি অপসারণের জন্য মতামত ব্যক্ত করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে।

উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সোলাদানায় দীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিত্যক্ত হওয়ার পর নির্ধারিত স্থানে সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪ তলা ফাউন্ডেশনের ৪ রুম বিশিষ্ট একতলা ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। খুলনার এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী হারুনার রশিদ চরম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নদীতে বাঁধ থাকায় মালামাল বহনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় এ টেন্ডারের কাজটি জনৈক প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে বিক্রি করে বিদায় নেন।

অভিযোগ উঠেছে, একদিকে আমুরকাটার রাস্তা দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অন্যদিকে পূর্ব দীঘা সরকারি পুকুর সংলগ্ন দক্ষিণ কাইনমুখী স্থানে মরাকুচিয়া নদীতে বাঁধ থাকায় নদীপথে নির্মাণ সামগ্রী আনতে না পারায় নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

একটি সূত্র জানিয়েছেন, এলাকার চিংড়ি ঘের মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় পানি ধরে রাখার জন্য এ বাঁধটি দেওয়া হয়েছে।

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাতায়াতের জন্য জেলা পরিষদ সদস্য গাজী আব্দুল মান্নানের তত্ত্বাবধানে এ বাঁধটি দিয়েছেন।

এ অভিযোগ সম্পর্কে জেলা পরিষদ সদস্য মান্নান গাজী বলেন, আমি কোন বাঁধ দেইনি।

ইউপি চেয়ারম্যান এস,এম, এনামুল হক আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে বিষয়টি উত্থাপনের কথা বলে জানান, এলাকার স্বার্থে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়া খুবই জরুরি। তাই বাঁধটি অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ স্থানীয় দ্বন্দের কথা উল্লেখ করে বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে বাঁধ কেটে মালামাল বহনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে মতামত দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফকরুল হাসান বলেন, এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে। তার নির্দেশিত তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।

মেহগনি বীজ থেকে তেল উদ্ভাবন করল পাইকগাছার আজিজুর

বসে নেই পাইকগাছার কপিলমুনির ক্ষুদে কৃষি বিজ্ঞানী মোঃ আজিজুর রহমান। একের পর এক নতুন নতুন উদ্ভাবন করেই চলেছেন। মেহগনির বীজ হতে তেল আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন এই উদ্ভাবক। তিনি বলেন, এই তেল পরিবেশ সম্মত এবং কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে সবজিতে ব্যবহার করা যাবে। এর খৈল দ্বারা ঘেরের ক্ষতিকর জীবানুমুক্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি প্রতিনিয়ত নতুন উদ্ভাবনের লক্ষ্যে গবেষণায় জীবনের মূল্যবান সময় ব্যয় করলেও তার ভাগ্যে আজও জোটেনি সরকারি স্বীকৃতি।


জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাজীমুছা গ্রামের মোঃ আনছার আলী মোড়লের ছেলে মোঃ আজিজুর রহমান। ছোট বেলা থেকে ছিলেন ভাবুক প্রকৃতির। বাল্যকাল কাটিয়ে উঠে তিনি যখন পা বাড়ালেন শৈশবে, আর তখন থেকেই জীবনটাকে অন্য কায়দায় উপভোগ করার সিদ্ধান্ত নেন। শৈশবে যখন ছেলেদের মনে উদ্যাম বাসনা, সময় কাটে খেলাধূলা করে আর ঘুরে বেড়িয়ে, সে সময় মোঃ আজিজুর রহমান ভেবেছেন বৃহত্তর কৃষকগোষ্ঠীর  জন্য কিছু করার কথা। ভেবেছেন কিভাবে জীবনের মূল্যবান সময় মানুষের জন্য কাজে লাগনো যায়।

তিনি একের পর এক আবিষ্কার করেন জৈব ও বালাই নাশক কুইক কম্পোজ, ইমু, বুকাশি ও ভার্মি সার, কম্পোজ মিশ্র সার, গবাদি পশুর জৈব খাবার। যা ব্যবহারে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয় না।

এই কার্যক্রম পরিদর্শন করে পাইকগাছা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হোসেন মোল্লা বলেন, আজিজুরের উদ্ভাবন নিয়ে পূর্বে ফলাও করে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিশেষ কোটায় আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য আবেদনও করেছেন। আম ও ধানের ভাল ফলনের জন্য ঔষধ ও মাছের জৈব খাবার আবিষ্কার করেছেন। যা ব্যবহার করে এলাকার মানুষ উপকৃত হয়েছেন’।

দঃ সলুয়া গ্রামের আল্লাদ শিকদার, গলডাঙ্গার আব্দুল করিম, বিরাশীর সরদার কামাল, উত্তর সলুয়ার আফছার শেখ ও অর্জুন কর্মকার তার উদ্ভাবিত ঔষুধ ধান ও আমে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছেন।

হরিঢালী আইপিএম এর প্রশিক্ষক আব্দুর রহিম ও আলমগীর হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, মোঃ আজিজুর রহমান তার উদ্ভাবিত ধান ও আমের ওষুধ ব্যবহার করে আমরা অনেক বেশি ফলন পেয়েছি।

হরিঢালী ইউনিয়নের উত্তর সলুয়া গ্রামে অর্জুন কর্মকার বলেন, আমরা মৎস্য ঘেরে মোঃ আজিজুর রহমান এর উদ্ভাবিত জৈব খাদ্য প্রয়োগ করে মাছ অধিক মোটাতাজা হয়েছে।

সম্প্রতি পাইকগাছা কৃষি কর্মকর্তা এইচ এম মোজাহার আলী সরেজমিনে আজিজুরের উদ্ভাবনস্থল ও তার বাড়িতে পরিদর্শনে যান এবং ভূয়সী প্রশংসা ও তার সাফলতা কামনা করেন।

উদ্ভাবন নিয়ে মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার দীর্ঘ দিনের সাধনার ফল ধানের জন্য কুইক কম্পোজ, ইমু, বুকাশি, ভার্মি সার, আম এবং মৎস্য ও গরুর জৈব খাবার উদ্ভাবন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, আমার কর্মের উপর আজও সরকারি স্বীকৃতি ও সাহায্য মেলেনি। এ কার্যক্রম এককভাবে পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মেশিনপত্র প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারি সাহায্যের জন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সুদৃষ্টি চাই।'

--পলাশ কর্মকার, কপিলমুনি, পাইকগাছা।

অজ্ঞাত যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

পাইকগাছার হরিঢালী ইউনিয়নের উলুডাঙ্গা গ্রামের একটি ফসলের ক্ষেত থেকে অজ্ঞাত যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, হরিঢালী ইউনিয়নের উলুডাঙ্গা গ্রামের অচিন্ত দে’র হলুদ ক্ষেতে বুধবার বিকেলে একটি জিয়াল গাছে দড়ি ও প্যান্টের বেল্ট গলায় পেচিয়ে এক অজ্ঞাত এক যুবককে ঝুলতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। এ খবরে হরিঢালী পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

হরিঢালী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু জাফর বলেন, ‘আমরা ফসলের ক্ষেত থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহ উদ্ধর করেছি। তার সুরতহাল করে ধারনা করা হচ্ছে মৃতব্যক্তি মুসলমান সম্প্রদায়ের। আমি পার্শ্ববর্তী কয়েকটি থানায় এ মৃতদেহ সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে দিয়েছি’। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুরে উলুডাঙ্গা এলাকায় ওই যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

পাইকগাছা জাদুঘরে সংরক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের জিনিসপত্রের হদিস নেই

পাইকগাছায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে উপজেলা জাদুঘর। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠার পর মূল্যবান জিনিসপত্র সংরক্ষণ করা হলেও গত কয়েক বছরের ব্যবধানে হদিস নেই জাদুঘরে সংরক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত জিনিসপত্রসহ অনেক কিছুরই। নামে মাত্র কিছু জিনিসপত্র থাকলেও অযত্ন অবহেলায় ময়লার মধ্যে পড়ে রয়েছে সেগুলো।


এক সময় জাদুঘরে সংরক্ষিত জিনিসপত্র দেখতে শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটলেও জাদুঘরের নামটি ভুলতে বসেছে এলাকার মানুষ। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার সচেতন মহল। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জাদুঘরটি পরিচালনা ও যেসব জিনিসপত্রের হদিস নেই তা উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. স ম বাবর আলী তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদের তত্তাবধায়নে উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রেই ১৪ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন জাদুঘর ও লাইব্রেরি। দ্বিতল ভবনের উপরের তলায় ব্যবহৃত হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমীর কার্যক্রম। আর নীচ তলার একটি কক্ষে লাইব্রেরি ও অপর একটি কক্ষ জাদুঘর হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠার পর সেখানে সংরক্ষণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তাক্ত পোশাকসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। সংরক্ষণ করা হয়, বিশ্ববরেণ্য বৈজ্ঞানী আচার্য প্রফুল চন্দ্র রায়ের রানী ভিক্টোরিয়ার দেওয়া (স্যার উপাধি প্রাপ্তির) ১টি তরবারী, ২টি খড়গ, নলিনী কান্ত রায় চৌধুরীর রায় সাহেব উপাধি প্রাপ্তির ১টি তরবারী, বঙ্গবন্ধু শিবিরে ব্যবহৃত জাতীয় পতাকা, সমুদ্রের ফেনা থেকে তৈরী পেট, সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ বিভিন্ন জীব-জন্তুর কঙ্কাল, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওঃ আব্দুল হামিদ খান ভাষানী, জেনারেল এমজি ওসমানী, বিজ্ঞানী পিসি রায়, সু-সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু, দানবীর মেহের মুছুলী, শহীদ এমএ গফুর, দেশের সকল বীর শ্রেষ্ঠসহ বরেণ্য ব্যক্তিদের ছবি। এমনকি বৃটেন, ইন্ডিয়া, পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশের ধাতব মুদ্রা সংরক্ষিত ছিল। সংরক্ষিত ছিল এলাকার শত শত বছর পূর্বের ব্যবহৃত মাটির জিনিসপত্র।

এক সময় জাদুঘরে সংরক্ষিত এ সব মূল্যবান জিনিসপত্র অসংখ্য মানুষ দূর দূরান্ত দেখতে আসতেন। স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জাদুঘর পরিদর্শন করে জানতে পারতেন মুক্তিযুদ্ধসহ ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা অজানা তথ্য।

এদিকে জাদুঘরটি ১৯৮৮ সাল থেকে পৌরসভার তত্তাবধায়নে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের অভাবে অযত্ন অবহেলায় বর্তমানে পড়ে রয়েছে জাদুঘরটি। জাদুঘরের কক্ষটি ভরে আছে ময়লা-আবর্জনায়। অন্ধকার ভুতড়ে পরিবেশ দেখে মনে হবে না জাদুঘরের ওই কক্ষে কেউ কখনো যায়। এমনকি রেজিস্টারে সংরক্ষিত জিনিসপত্রের তালিকা থাকলেও কক্ষে তার অধিকাংশ কিছুই নেই।

জাদুঘরে দায়িত্বরত কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ জানান, আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি তখন থেকেই রেজিস্টারে তালিকাভূক্ত মূল্যবান অনেক জিনিসপত্র হদিস ছিল না। তবে পিসি রায়ের তরবারীটি নিরাপত্তার জন্য পৌরসভায় সংরক্ষিত আছে বলে তিনি জানান।

এ প্রসঙ্গে  উপজেলা চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. স ম বাবর আলী  বলেন, অনেক আশা নিয়ে জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। ওই সময় অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র সংরক্ষণও করেছিলাম কিন্তু সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মূল্যবান জিনিসপত্রের এখন আর কোন হদিস নেই। এ গুলো নিয়ে কেউ ভাবেই না। অথচ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জাদুঘরে সংরক্ষিত জিনিসপত্র গুলো অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত জিনিনপত্র দেখে মুক্তিযুদ্ধের নানা দিক জানতে পারতো।

তবে এখনো যেসব জিনিসপত্রের হদিস নেই, তা উদ্ধার করে জাদুঘরটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত করতে পারলে আবারও জাদুঘরের পূর্বের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন স ম বাবর আলী।

--মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা।