Monday, March 17, 2014

পাইকগাছায় জাতীয় শিশু দিবস পালিত

পাইকগাছায় র‌্যালী, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৪ তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার সকালে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী শেষে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের শহীদ স্মৃতি স্তম্ভে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। 

পরে উপজেলা পরিষদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশু কিশোরদের মধ্যে চিত্রাংঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। “বঙ্গবন্ধুকে জানবো, আদর্শবান মানুষ হব” প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর দিনব্যাপী সমগ্র অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীন।

পৃথক এসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, ওসি এম মসিউর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান, শিক্ষা অফিসার দীলিপ কুমার ঘোষ, প্রকৌশলী এনামুল কবির, সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবাশীষ সরদার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান, সমবায় কর্মকর্তা এএফএম সেলিম আখতার, অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, রমেন্দ্র নাথ সরকার, সরদার মোহাম্মদ আলী, প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া বানু ডলি, অপু মন্ডল, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, এসএম বাবুল আকতার, তৃপ্তি রঞ্জন সেন, এ্যাড. শফিকুল ইসলাম কচি, প্রভাষক ময়নুল ইসলাম, বজলুর রহমান ও খানজাহান আলী।

অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী বিজয়ী শিশু-কিশোরদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রাপ্ত ফলাফল

চেয়ারম্যান ::


১. স.ম. বাবর আলী (দোয়াত-কলম) ---- ৫৯ হাজার ৩০৪ ভোট, (বিজয়ী)
২. মো. রশীদুজ্জামান (আনারস) ---- ৩৮ হাজার ৩৭৮ ভোট,
৩. মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর (ঘোড়া) ---- ৭ হাজার ৩৪২ ভোট,
৪. কৃষ্ণপদ মণ্ডল (কাপ-পিরিচ) ---- ৪ হাজার ৩২ ভোট,
৫. জি এম আবদার রশীদ (চিংড়ি মাছ) ---- ২২৫ ভোট,
৬. শেখ সোহরাওয়াদ্দী (মোটরসাইকেল) ---- ২০৬ ভোট।
   

ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ::


১. মাওঃ কামাল হোসেন (টিউবয়েল) ---- ৬০ হাজার ৪৫৬ ভোট, (বিজয়ী)
২. টিকেন্দ্র নাথ মণ্ডল (মাইক) ---- ৩৫ হাজার ১৫৬ ভোট,
৩. মো. মুজিবর রহমান সানা (তালা) ---- ৭ হাজার ৫৫২ ভোট,
৪. এস এম মুজিবর রহমান (বই) ---- ২ হাজার ৫৭৭ ভোট,
৫. জি এ গফুর (টিয়াপাখি) ---- ১ হাজার ৩৬৫ ভোট,
৬. মো. শাহাজান সিরাজ সাজু (চমশা) ---- ৯৭৪ ভোট,
৭. শেখ শামছুল আরম পিন্টু (উড়োজাহাজ) ---- ৩২৫ ভোট।
   

ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ::


১. শাহানারা খাতুন (কলস) ---- ৫৭ হাজার ৫৫৬ ভোট, (বিজয়ী)
২. দীপ্তি চক্রবর্তী (পদ্ম ফুল) ---- ৩৭ হাজার ৪৫৩ ভোট,
৩. রাবেয়া হোসেন (হাঁস) ---- ৭ হাজার ২৪৩ ভোট,
৪. মোছা. মাছুমা খাতুন (ফুটবল) ---- ৩ হাজার ৪২৬ ভোট।

জামানত হারাচ্ছেন পাইকগাছায় ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ১১ জন

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট ১১ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে। মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের একভাগও না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করবেন রিটার্নিং অফিসার। এদিকে পাইকগাছায় ৩টি পদে মোট ১৪ হাজার ৭৯৪টি ভোট বাতিল হয়েছে।

জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হচ্ছেন, উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, সিপিবি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃষ্ণ পদ মন্ডল, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ সোহরাওয়ার্দী ও জি এম আবদার রশীদ।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুজিবর রহমান সানা, বিএনপির জি এ গফুর ও সামছুর রহমান পিন্টু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের শাহজাহান সিরাজ সাজু এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুজিবর রহমান। আর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী রাবেয়া হোসেন ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মাছুমা খাতুনের।

রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, পাইকগাছা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬০৩ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৯০৬টি ভোট বাতিল হয়। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এ্যাড. স.ম. বাবর আলী ৫৯ হাজার ৩০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের প্রার্থী মোঃ রশীদুজ্জামান ৩৮ হাজার ৩৭৮ ভোট পান।

চেয়ারম্যান পদে জামানত হারানো জাতীয় পার্টির মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর ৭ হাজার ৩৪২ ভোট, সিপিবির কৃষ্ণ পদ মন্ডল ৪ হাজার ৭৩২ ভোট, স্বতন্ত্র শেখ সোহরাওয়ার্দী ২০৬ ভোট এবং জি এম আবদার রশীদ ২২৫ ভোট পান।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ২৯ জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫২৪টি ভোট বাতিল হয়েছে। জামায়াতের মাওঃ কামাল হোসেন ৬০ হাজার ৪৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের টিকেন্দ্র নাথ মন্ডল পান ৩৫ হাজার ১৫৬ ভোট।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুজিবর রহমান সানা ৭ হাজার ৫৫২ ভোট, বিএনপির জি এ গফুর ১ হাজার ৩৬৫ ভোট, বিএনপির সামছুর রহমান পিন্টু ৩২৫ ভোট, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের শাহজাহান সিরাজ সাজু ৯৮৪ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুজিবর রহমান ২ হাজার ৫৭৭ ভোট পেয়েছেন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোট ভোট পড়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৪২টি। বাতিল হয়েছে ৭ হাজার ২৬৪টি ভোট। জামায়াতের শাহানারা খাতুন ৫৭ হাজার ৫৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগের দীপ্তি চক্রবর্তী ৩৭ হাজার ৪৫৩ ভোট পান। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী রাবেয়া হোসেন ৭ হাজার ২৪৩ ভোট ও ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মাছুমা খাতুন ৩ হাজার ৪২৬ ভোট পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

পাইকগাছায় দলীয় কোন্দলে নৌকাডুবি

পাইকগাছায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগের বিপর্যয় ঘটেছে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সাংগঠনিক দুর্বলতাই কাল হয়েছে সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের। অন্যদিকে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি ও জামায়াত জোট আ’লীগের বিরোধকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহজেই পার হয়েছে বৈতরণী।

জাতীয় রাজনৈতিক ইস্যুর কারণেও সুবিধা নিয়েছে বিএনপি। ১৫ মার্চ দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে সব পদে নিরঙ্কুশ জয় পায় ১৯ দলীয় জোটপ্রার্থীরা। পাইকগাছায় আ’লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিশাল ভোটের ব্যবধানে হেরেছে প্রতিপক্ষের কাছে।

চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রশীদুজ্জামান ১৯ দলের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. স.ম. বাবর আলী‘র কাছে হেরেছেন প্রায় ২১ হাজার ভোটের ব্যবধানে। প্রাপ্ত ফলাফলে বাবার আলী (দোয়াত-কলম) পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৩০৪ ভোট এবং মো. রশীদুজ্জামান (আনারস) পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৩৭৮ ভোট।

অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা পেয়েছেন নামমাত্র ভোট। উপজেলা জাপা ও পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর (ঘোড়া) পেয়েছেন ৭৩৪২ ভোট, সিপিবি সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মণ্ডল (কাপ-পিরিচ) পেয়েছেন ৪০৩২ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সোহরাওয়াদ্দী (মোটর-সাইকেল) মাত্র ২০৬ ভোট ও জি এম আবদার রশীদ (চিংড়ি মাছ) পেয়েছেন মাত্র ২২৫ ভোট।

ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের আমির মাওঃ কামাল হোসেন (টিউবয়েল) পেয়েছেন ৬০ হাজার ৪৫৬ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী টিকেন্দ্র নাথ মণ্ডল (মাইক) ৩৫ হাজার ১৫৬ ভোট, আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. মুজিবর রহমান সানা (তালা) পেয়েছেন মাত্র ৭ হাজার ৫৫২ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মুজিবর রহমান (বই) ২ হাজার ৫৭৭ ভোট, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জিএ গফুর (টিয়াপাখি) পান ১ হাজার ৩৬৫ ভোট, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজান সিরাজ সাজু (চমশা) ৯৭৪ ভোট ও শেখ শামছুল আরম পিন্টু (উড়োজাহাজ) পান ৩২৫ ভোট।

ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা পদে জামায়াত সমর্থিত শাহানারা খাতুন (কলস) পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৫৬ ভোট, আ’লীগ সমর্থিত দীপ্তি চক্রবর্তী (পদ্ম ফুল) পান ৩৭ হাজার ৪৫৩ ভোট, বিএনপি সমর্থিত বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রাবেয়া হোসেন (হাঁস) ৭ হাজার ২৪৩ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোছা. মাছুমা খাতুন (ফুটবল) পেয়েছেন ৩ হাজার ৪২৬ ভোট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আ’লীগের তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা আক্ষেপ করে বলেন, পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজ মেয়াদে দলীয় নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। তিনি বিশেষ একটি শ্রেণী ও ব্যক্তি বিশেষের মূল্যায়ন করেছেন। তার পরাজয়ের মূল কারণ এখানেই।

অরো কয়েকজন বলেন, দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া পদধারী অনেক নেতাকর্মীই শুরু থেকেই অবস্থান নেয় দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এর প্রভাব পড়ে ভোটারদের মধ্যে। দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এসব নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় পরাজয় নিকটবর্তী হয়েছে।