Friday, September 12, 2014

সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল গ্রেফতার; ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পাইকগাছার বহুলালোচিত মামলাবাজ গোলক মন্ডল (৩৬) কে মারপিটের অভিযোগে উপজেলার সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম এনামুল হক’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে পৌর সদরস্থ হাসপাতাল সড়ক সংলগ্ন নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে হামলায় আহত গোলক মন্ডলকে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামী করে ২৩ জনের বিরুদ্ধে গতকালই থানায় মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম এনামুল হকের সাথে অত্র ইউনিয়নের খালিয়ারচক গ্রামের মৃত গোবিন্দ মন্ডলের পুত্র গোলক মন্ডলের বিরোধ রয়েছে অনেক আগে থেকে। বিরোধের জের ধরে বিবদমান দু’পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলাও রয়েছে।

সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলক চন্দ্র মন্ডল মোটরসাইকেলযোগে পাইকগাছা সদর থেকে বাড়ি যাবার পথিমধ্যে ভিলেজ পাইকগাছা গ্রামে পৌঁছালে এনামুল হকের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন গোলককে ধরে বেধড়ক মারপিট করে। আকষ্মিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং পুলিশ গোলক মন্ডলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার আককাস আলী বলেন, আহত গোলক চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানী মামলার আসামী হওয়ায় তাকে পুলিশ হেফাজতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় গোলক মন্ডল বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম এনামুল হক’কে প্রধান করে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার অপর আসামীরা হলো আনিস মোল্লা, ইউপি সদস্য মাহাবুব জোয়াদ্দার, আনিস সানা, রাসেল সানা, রেজাউল সরদার, দিলীপ ঢালী, কার্ত্তিক সানা, চৈতন্য মন্ডল, অশেষ ঢালী, রমেশ মন্ডল ও জাহাঙ্গীর হোসেন।

গতকাল রাতে ধৃত ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম এনামুল হককে আদালতে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় গোটা সোলাদানা ইউনিয়নে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

পাইকগাছায় ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীর গালে থাপ্পড় দিলো বখাটে যুবক; অভিভাবরা শঙ্কিত

পাইকগাছার ভোলানাথ সুখদা সুন্দরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দোতলায় উঠে বহিরাগত এক যুবক সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর সাথে অশোভন আচরণ ও গালে থাপ্পড় মারার ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষনিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় স্কুলের ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এ ঘটনায় ছাত্রীর পিতা মিন্টু গাজী সুবিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করেছেন।

আবেদন ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার স্কুল চলাকালীন সময়ে মেল্লেক পুরাইকাটী গ্রামের শেখ নূর আলী ওরফে মেঝ নুনুর বোখাটে পুত্র শেখ হাসান স্কুলের দোতলায় উঠে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় উক্ত ছাত্রী প্রতিবাদ করলে তার কান মুখ বরাবর চড় মারে। এ সময় উপস্থিত তার সহপাঠীরা কোন প্রতিবাদ না করে উল্লাস প্রকাশ করলে উক্ত স্কুল ছাত্রী লজ্জা ও ক্ষোভে কাঁদতে কাঁদতে স্কুল থেকে বের হয়ে বাড়ি চলে আসে এবং তার মা এবং খালাকে জানায়।

পরবর্তীতে তার মা এবং খালা মেয়েকে সাথে নিয়ে ঘটনাটি জানতে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে হাসান, সাগর, সালামিনসহ ১০/১২ জন যুবক তাদের পথ আটকিয়ে বলে, এ বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোমার মেয়েকে রেফ করে ভিডিও করব এবং সেটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেব এবং এসিড মেরে মুখ ঝলসে দেব।

এ ঘটনায় তারা ভীত হয়ে পড়ে এবং বাড়ি ফিরে এসে স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ জাকির হোসেন লিটনকে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে ইউপি সদস্য জাকির হোসেন লিটন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী পাড় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এসএম সৈয়দ আলী সরদারকে অবহিত করেন। ইউপি সদস্যের কাছে এ ঘটনা শুনে তারা বিষয়টি জানে না বলে সন্ধ্যায় মিন্টু বাড়ি যায়। তাকে কিছু না বলে উল্টো তার মেয়ে কেন দোতলায় উঠেছিলসহ বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাকে মানসিক চাপে ফেলে দেয় বলে মিন্টু জানায়। ইতোমধ্যে মিন্টুকে সরাসরি এবং মোবাইল ফোনে অব্যহত হুমকি প্রদান করে চলেছে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে তার মেয়ের স্কুলের আসা যাওয়ার পথে গোপালপুর গ্রামের হিরোইন, ফেনসিডিল ও গাঁজা বিক্রেতা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ঝর্না বেগমের পুত্র সাগর বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছে। মিন্টু তার মেয়ের স্কুলে পড়াশুনা ও তার নিরাপত্তা নিয়ে চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। যে কোন সময় তার মেয়ে ও পরিবারের প্রতি বড় আকারের প্রতিহিংসামূলক কর্মকান্ড ঘটাতে পারে। সে বিষয়ে সুষ্ঠু বিচার ও মেয়ের নিরাপত্তা দাবী করেছে।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী পাড়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা, সন্ধ্যায় শুনে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ মিন্টুর বাড়ীতে গিয়েছিলাম। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী শনিবার উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।

এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এসএম সৈয়দ আলী জানান, শনিবার ম্যানেজিং কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে, মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

স্কুলের দোতলায় উঠে বহিরাগত এক যুব স্কুল ছাত্রীর গালে চড় মারার ঘটনা স্কুল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানে না এ বক্তব্য শুনে স্কুলের ছাত্র/ছাত্রীদের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কপিলমুনিতে ৫ম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি; স্থানীয় শালিসে রফা !

কৌশলে ঘরে ডেকে নিয়ে ৫ম শ্রেলির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে আতিয়ার রহমান (২১) নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে, ৮ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার কপিলমুনির কাশিমনগর গ্রামে। খবর পেয়ে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এক অজ্ঞাত কারনে মামলা হয়নি। সর্বশেষ স্থানীয় ভাবে শালিসে বিষয়টির রফার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
 
অভিযোগে প্রকাশ, ৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাশিমনগর গ্রামের আব্বাজ আলী মোড়লের পুত্র আতিয়ার রহমান (২১) কৌশলে তারই প্রতিবেশী স্থানীয় পূর্ব কাশিমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে অপর এক যুবককে দিয়ে তার ঘরে ডেকে পাঠায়। সেখানে ঐ কিশোরী পৌছানো মাত্রই আতিয়ার ঘরের দরজা বন্ধ করে তার শ্লীলতাহানি ঘটায়।

বিষয়টি ঐ রাতেই বাড়ি ফিরে সে তার মা সহ অন্যান্য স্ব‌জনদের জানায় এবং ফাঁড়ির এস আই হাসমত আলী ঘটনাস্থলে গেলেও এক অজ্ঞাত কারনে মামলা হয়নি। এলাকাবাসী জানায়, ঘটনায় পর থেকে স্থানীয় প্রভাবশালী কথিত এক “গুরে ভাই” বিষয়টি মিমাংসার জন্য দফায় দফায় শালিসি বৈঠাকে মিলিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ফাঁড়ি ইনচার্জ হাসমত আলী জানায়, তারা উভয় পরিবার তাদের বিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানুর রহমান মোড়ল জানান, ঘটনা সত্য তবে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি মিমাংসার জন্য এলাকাবাসী বসাবসি অব্যাহত রেখেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন নিষ্পত্তি হয়নি।

পাইকগাছায় ফের লাঠিয়াল বাহিনীর তান্ডবের শিকার আয়ুব পরিবার

পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে; এলাকার সর্বত্র আতংক !


জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে একাধিকবার হামলা, মামলার শিকার অতঃপর গত বুধবার থানা পুলিশ তদন্ত করে যেতে না যেতেই আবারও প্রভাবশালী সালামউল্লার নের্তৃত্বে অর্ধশতাধিক লাঠিয়াল বাহিনীর তান্ডবের শিকার হলো কপিলমুনি শহরতলীর দক্ষিণ সলুয়া গ্রামের মৃত আত্তাব আলীর পুত্র আয়ুব আলী ও তার অসহায় পরিবার। 

আয়ুব আলীর বৃদ্ধ মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের রক্তাক্ত জখম করে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছপালা কেটে সাবাড় করে দিয়েছে ভুমিদস্যু নামধারী দুর্বৃত্তরা। এ সময় পুলিশি উপস্থিতি টের পেয়ে তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী’সহ এলাকাবাসীর মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ঐ দিন সকাল ৮টায় স্থানীয় প্রভাবশালী সৈয়দ সালামউল্লার নের্তৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক লাঠিয়াল উপজেলার কপিলমুনি শহরতলীর দক্ষিণ সলুয়া গ্রামে আয়ুব আলীর জমি দখল নিতে গেলে বৃদ্ধা মা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাধা দেয়। এমতাবস্থায় লাঠিয়াল বাহিনীর একটি অংশ পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। বাকী অংশের লাঠিয়ালরা জমিতে অবস্থিত বিভিন্ন প্রজাতের গাছপালা কেটে সাবাড় করতে থাকে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

কপিলমুনি ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই হাসমত আলী জানান, উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ পেয়ে আমি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে আবস্থা বিরাজ করছিল। অসহায় আয়ুব আলী জানায়, তার বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশংকাজনক।

পাইকগাছা থানার ওসি শিকদার আককাস আলী জানান, জমি দখল ও সংঘর্ষের বিষয় অবগত হবার সাথে সাথে সেখানে পুলিশ পাঠিয়েছি।

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন একইভাবে সালামউল্লার নের্তৃত্বে প্রায় শতাধিক লাঠিয়াল নিয়ে জমি দখলের জন্য সেখানে অবস্থান নেয়। কিন্তু থানা প্রশাসন ঘটনার বিষয় জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। পরবর্তীতে পরিবার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৬ জুন আয়ুব আলী সালামুল্লাহকে প্রধান করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি করেন। যার নং-২৫৬/১৪। বর্তমানে ভুক্তভোগী আয়ুব আলী’সহ এলাকাবাসীর মাঝে এক অজানা আতংক বিরাজ করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা গেছে।