পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। বর্তমান ৫০ শয্যার হাসপাতালে ২১ জন নার্সের স্থলে কর্মরত রয়েছে ৬ জন। একদিকে নার্স স্বল্পতা অপরদিকে যারা কর্মরত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে দায়িত্ব অবহেলার গুরুতর অভিযোগ। ফলে চিকিৎসা সেবা নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। সাধারণ রোগীদের সেবার পাশাপাশি মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিশু ও প্রসূতি সেবা কার্যক্রম। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হাসপাতালের অতিতের সকল অর্জন ও সুনাম ম্লান হতে চলেছে বলে মনে করছেন সচেতন এলাকাবাসী।
সূত্রমতে, ১৯৯৭ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রেই ৩১ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হয়। জন বহুল এ উপজেলায় সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকার ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর ৩১ শয্যার হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় শুধুমাত্র খাতা-কলম কিংবা ফাইল পত্রেই সিমাবদ্ধ রয়েছে ৫০ শয্যার ব্যবস্থা।
উন্নতকরণের গত ৬ বছরেও বৃদ্ধি করা হয়নি জনবল। ৫০ শয্যার হাসপাতালে নেই ৩১ শয্যারও জনবল। সবচেয়ে বেশি রয়েছে নার্স সংকট। ৫০ শয্যার হাসপাতালে যেখানে ২১জন নার্স থাকার কথা সেখানে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ৬জন নার্স। যার মধ্যে ১জন রয়েছেন মাতৃকালীন ছুটিতে। ফলে ৫জন নার্সকে জরুরী বিভাগ, পুরুষ বিভাগ, মহিলা বিভাগ, ডায়রিয়া বিভাগ ও প্রসূতি বিভাগে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এরমধ্যে দিনের সিংহভাগ সময় দিতে হয় অপারেশন থিয়েটারে। ফলে মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও নার্সদের দেখা মেলেনা বলে অভিযোগ করেন চিকিৎসাধীন সাধারণ রোগীরা। নাজমুন নাহার বেগম জানান, হাসপাতালে নার্স স্বল্পতা যেমন আছে তেমনি যারা কর্মরত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও দায়িত্ব অবহেলার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
কিছু কিছু নার্সদের মধ্যে সেবার মানসিকতা ও আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রসূতি রোগী জানান, অপারেশনের পর ডাক্তারদের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় আমার এন্টিবায়েটিক ইনজেকশন দেওয়ার কথা রয়েছে, অথচ একজন নার্স এসে বলে ইনজেকশন দেওয়া লাগবে না আরেকজন বলেন, ইনজেকশন দিতে হবে। এভাবেই নার্সদের গাফিলাতির কারণে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে মূল্যবান ঔষধ পত্র মিসিং হয়।
এ ব্যাপারে নার্স স্বল্পতার কথা স্বীকার করলেও তাদের গাফিলতার বিষয়টি পরক্ষভাবে এড়িয়ে যান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের অতিতের সুনাম ফিরিয়ে আনতে জরুরী ভিত্তিতে নার্স ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধিসহ কর্মরতদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছেন সচেতন এলাকাবাসী।