Wednesday, April 23, 2014

বিশ্বাস !

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ইন্টারভিউ করার জন্য অপেক্ষা করছিলাম পাইকগাছা উপজেলা পরিষদে। হঠাৎ দেখি একজন বৃদ্ধ লোক উপজেলা পরিষদের গেটের সিড়িতে হাটু গেড়ে মাথা সিড়িতে ছুঁয়িয়ে প্রনাম করছেন। 

কৌতুহলি হয়ে প্রশ্ন করলাম তাকে, "এভাবে এখানে প্রণাম করার করান কি ?" ভদ্রলোক কানে কম শোনেন।

দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করাতে তিনি জানালেন, "আমার জমিজমা নিয়ে মামলা চলছিল এবং আমি একটি ষড়যন্ত্রমূলক হত্যা মামলার ২ নং আসামী। আজ মামলার রায় আমার পক্ষে হয়েছে, তাই এখানে প্রণাম করছি। তাছাড়া আমি সকল হাজিরার তারিখে এখানে প্রণাম করি।"

এছাড়া তিনি তার পরনের ধুতি উচু করে দেখালেন তার দুই পায়ের হাটুতে কালো দাগ পড়ে গেছে এভাবে প্রণাম করতে করতে। একই দাগ স্পষ্ট তার কপালেও। কি ভোগান্তিই না পোহাতে হয়েছে বৃদ্ধ মানুষটিকে !

পাইকগাছায় প্রতিপক্ষ কর্তৃক নার্সারীর গাছের চারা কেটে সাবাড়

পাইকগাছায় আনিছুর রহমান নামের এক নার্সারী মালিকের লাখ লাখ টাকার গাছের চারা কেটে সাবাড় করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গদাইপুর গ্রামের মোঃ কওছার আলী গাজীর পুত্র ও উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির অন্যতম সদস্য মোঃ আনিছুর রহমান গাজী প্রায় ১৫ বছর যাবৎ নার্সারী ব্যবসা করে আসছে। সে বসতবাড়ী সংলগ্ন প্রতিবেশি রবিউল সরদারের নিকট থেকে ১ বৈশাখ ১৪১৯ থেকে ৩১ চৈত্র ১৪২১ সন পর্যন্ত ৩ বছর মেয়াদী ইজারা চুক্তি ও কোবলা দলিলমুলে ক্রয়সুত্রে ১৮ কাঠা জায়গার উপর নার্সারী ব্যবসা পরিচালনা করছে।

বর্তমানে তার নার্সারীতে কুল, লিচু, আম, ছবেদা, বেদানাসহ বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ টাকার গাছের চারা রয়েছে। এদিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষ ওজিয়ার সরদার নামে এক প্রতিপক্ষ গত শনিবার আনিছুর বাড়িতে না থাকার সুযোগে নার্সারীতে প্রবেশ করে বাড়ন্ত গাছের চারা কেটে, উপড়ে সাবাড় করে দেয়। এসময় বাঁধা দিতে গেলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে স্ত্রী তানিয়া বেগম জানান।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোর কুমার পাল জানান।

আজ পাইকগাছার তাপমাত্রা রাজশাহীকেও হার মানালো

পাইকগাছা :: ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজশাহী :: ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এমনই আগুন ঝারানো রোদ্দুরে বোধহয় সুকুমার রায় লিখেছিলেন, 'রোদে ভাজা ইটের পাঁজা'। আলকাতরার মতো চিটচিটে ঘাম, আর ভ্যাপসা গরমেও দেখা নেই মেঘের।

বাঁকা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি আত্মসাতের অপচেষ্টার অভিযোগ

পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলীর বাঁকা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমি আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, প্রায় ১৫০ বছরের পুরানো, বাঁকা শশী ভুষণ দাতব্য চিকিৎসালয়ের জমিতে রাড়ুলী ইউনিয়ন চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র নির্মিত হয়।

বর্তমানে তা বাঁকা উপস্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নামে অত্র এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছে। গত সংসদ নির্বাচনে পাইকগাছা-কয়রা আসনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য এ্যাড. নুরুল হক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সীমানার ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এরই মধ্যে এলাকার কতিপয় স্বার্থন্বেষীর মহল নানাভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ষড়যন্ত্রকারীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমি দখলের চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে !

সুখবর নেই আবহাওয়া বার্তায়। বৈশাখের চলমান প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ যখন বৃষ্টির আশায় ক্ষণ গুনছে তখন আবহাওয়া বার্তা হচ্ছে সপ্তাহখানেক চলবে এ অবস্থা। দিন-রাতের তাপমাত্রা ডিগ্রি হিসাবে যা-ই হোক গরমের মাত্রা বুঝি সহ্য সীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে। হিটস্ট্রোকের শঙ্কা বাড়ছে। কবির ভাষায় 'রুদ্র বৈশাখ' তার রুদ্র রূপই দেখাচ্ছে।

এ অবস্থায় মানুষের দৈনন্দিনের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। শুধু মানুষ বলি কেন-পশুপাখিরও একই হাল। প্রখর রৌদ্রে গাছপালাও নেতিয়ে পড়ছে। ঘরে-বাইরে দু'দন্ড স্বস্তিতে কাটানোর উপায় নেই। বাইরের বাতাসে আগুনের হলকা, ঘরে ফ্যানের বাতাসেও ভ্যাপসা গরম কাটছে। এ সময়টা দুঃসহ হয়ে উঠেছে শ্রমজীবী মানুষের জন্যে। বিশেষ করে ছায়াহীন খোলা মাঠে যাদের কাজ করতে হয় তাদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। গনগনে সূর্যের তাপ, ঘাম ঝরানো গরম-হাঁসফাঁস অবস্থা। শিশু-বৃদ্ধদের জন্যেও যাচ্ছে খারাপ দিন। ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে সর্বত্র। প্রচন্ড গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির কথা জানা সবার। সেজন্যে খাওয়া-দাওয়ায় ব্যতিক্রম ঘটলেই দেখা দিতে পারে বিপত্তি। পানি বেশি করে খাওয়া উচিত, তবে সেই পানি হতে হবে বিশুদ্ধ।

বাইরে থেকে এসে, কায়িক শ্রমের পরপরই গরম তাড়াতে, পিপাসা মিটাতে কোনো মতেই ঢক ঢক করে পানি খাওয়া-বিশেষ করে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাওয়া উচিত নয়। বিশ্রাম নেওয়ার পর শরীর ঠান্ডা হলে পানি পান করা ভালো। রৌদ্রে বাইরে গেলে ছাতা ব্যবহার করা আবশ্যক। এ সময়ে বিশেষ যত্ন-খেয়ালের দাবি করতে পারে শিশু-বৃদ্ধরা।

বৈশাখের এমন রুদ্ররূপ যে নতুন কিছু তা নয়। এমন অভিজ্ঞতা আমাদের প্রায় প্রতি বছরের। এ সময়ের করণীয় বর্জনীয় বিশেষাদি সম্পর্কেও কমবেশি সবার জানা। সাবধানতাই গরমজনিত শারীরিক বিপত্তি এটি থেকে রক্ষা করতে পারে। তাপদাহ চলতে থাকলে হিটস্ট্রোকের শঙ্কাই বাড়বে। সে ব্যাপারেও সাবধান হওয়া উচিত।

প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই। প্রকৃতিকে শাসন করার ক্ষমতা বিজ্ঞানও আয়ত্ত করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচার পথ সাবধানতা। বৃষ্টি হলে তাপদাহ কমতে পারে; কিন্তু চাইলেইতো আশা যায় না, সেতো প্রকৃতির হাতে। সে ক্ষেত্রে প্রার্থনা হতে পারে কেবল 'আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে ছায়া দেরে তুই'।

সুন্দরবনে অপরিকল্পিত মধু আহরণে মৌমাছির প্রজনন ব্যাহত; উৎপাদন হ্রাস

সুন্দরবন থেকে অপরিকল্পিতভাবে মধু ও মোম আহরণ করায় মৌমাছির বংশ বিস্তার ব্যাহত ও মধু উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। বছরের পর বছর মৌয়ালরা সুন্দরবনে সনাতন পদ্ধতিতে মধু ও মোম আহরণ করে আসছেন। সনাতন পদ্ধতিতে মধু আহরণের ফলে লাখ লাখ মৌমাছি আগুনে পুড়ে মারা যায়। ফলে মৌমাছির বংশ বিস্তার ব্যাহত হওয়ায় মধু ও মোম উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে মধু ও মোম সংগ্রহের প্রবণতা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে। পাশাপাশি সরকার এ খাত থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব বঞ্চিত হবে।

পৃথিবীর একক বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন ‘সুন্দরবন’ বাংলাদেশের মোট বনাঞ্চলের ৪৪ শতাংশ জুড়ে বিস্তৃত। এ বনের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। অপরূপ সৌন্দর্যের শত শত প্রজাতির ফুলফলে ভরা সুন্দরবন প্রাণ বৈচিত্রে সমৃদ্ধ। ঋতুচক্রে বসন্তের আগমনে বনে নানা ফুলে ভরে যায়। বাতাসে ফুলের মৌ মৌ সুগন্ধ। এ সময় নানা প্রজাতির পাহাড়ি মৌমাছিরও আগমন ঘটে। মৌমাছি ফুলে ফুলে মধু আহরণ ও মৌচাক তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকে। সুন্দরবনের সুমিষ্ট মধু মহা ঔষধ ও প্রাকৃতিক সম্পদ। বাণিজ্যিকভাবে এ মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তবে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে গিয়ে বাঘ, সাপ, কুমিরের সাথে জীবন বাজী রেখে বন দস্যুদের চাঁদা ও পাশ-পারমিটে নানা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে, পাশাপাশি মৌয়ালদের অসচেতনভাবে মধু আহরণের ফলে তাদের ফেলে রাখা আগুনে বনে আগুন লাগার আশংকা থেকে যায়। যথেচ্ছা ব্যবহারে ফলে প্রাকৃতিক সম্পদের আধার সন্দুরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকি সম্মুখীন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ মৌসুম। এ সময় বন বিভাগের বিভিন্ন স্টেশন থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে মৌয়ালরা বনে যায়। এ ব্যাপারে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগীয় কর্মকর্তা জহিরউদ্দীন আহম্মেদ জানান, প্রতি মাসে ২ বার করে মৌয়ালীদের পাশ পারমিট দেওয়া হচ্ছে। জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। খুলনা বন বিভাগ থেকে ৩ হাজার মণ মধু ও ৮শ মণ মোম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহ করতে প্রতি মণ মধুর জন্য ২শ টাকা ও প্রতি মণ মোমের জন্য ৩ শ টাকা করে বন বিভাগকে রাজস্ব দিতে হয়।

তবে নির্ধারিত সময়ের আগে কিছু চোরা মৌয়াল বন বিভাগের কর্মচারিদের সহযোগিতায় বন থেকে অপরিকল্পিতভাবে মৌচাক কেটে মৌমাছির প্রজননে বাধা সৃষ্টি করে। মধু ও মৌচাক নষ্ট করে মধু উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটায়।

খুলনা বাগেরহাট, সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় এলাকার ১৯/২০টি উপজেলার মৌয়াল পরিবারগুলো জীবন জীবিকার তাগিতে বনে মধু সংগ্রহ করে থাকে। মৌয়ালরা মহাজনের অধীনে প্রতি নৌকায় ৯/১০ জন করে বনে প্রবেশ করে। মৌচাক খুঁজে বের করার জন্য ১জন মৌয়াল থেকে বাকী মৌয়ালরা সারিবদ্ধ হয়ে আগে পিছে সতর্ক দৃষ্টি রেখে মৌচাক খুজতে থাকে। একটি মৌয়াল মৌচাক দেখতে পেয়ে সংকেত দিয়ে বাকিদের জানায়।

পাইকগাছার মৌয়াল বারিক জানান, একটি মৌমাছি শত শত ফুল থেকে মধু পান করে মৌচাকের ছোট কুটুরে মধু ঢালে। মৌমাছির উড়ে যাওয়া গতিবিধি দেখে মৌয়ালরা মৌচাক সন্ধান করে। মৌয়ালদের বাঘ, সাপ, কুমিরের সাথে জীবন বাজী রেখে মধু ও মোম সংগ্রহ করতে হয়। নৌকায় জনপ্রতি বন্যদস্যুদের চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে মারপিট ও অপহরণের শিকার হতে হয়।

মৌয়ালরা সেকেলে পদ্ধতিতে মৌচাক থেকে মধু ও মোম সংগ্রহ করে। তারা মৌচাকে আগুন ও ধোয়া দিতে মৌমাছি সরিয়ে মৌচাক কাচি, দা দিয়ে কেটে আনে। এসময় আগুনে মধু ও মোম নষ্টসহ মৌচাকের হাজার হাজার মৌমাছি আগুনে পুড়ে মার যায়। এতে মৌমাছি প্রজনন ও বংশবৃদ্ধিতে বাধাগ্রস্ত হয়। মৌচাক আগুনে পুড়ে মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়। তাছাড়া অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নভাবে পোকা ও ডিমসহ মৌচাক চেপে মধু আহরণ করায় মধুর গুণগত মান নষ্ট হয়।

মধু দেশের চাহিদা পূরণ করে প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। প্রাকৃতির এ সম্পদ, মধু আহরণে সময় মধু ও মোম নষ্ট না হয়, বাচ্চা ও মৌমাছি আগুনে পুড়ে না মারা যায় তার জন্য মধু অহরণের মৌসুমের আগে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌচাক কাটার পদ্ধতি মৌয়ালদের শেখানো দরকার। এজন্য মৌয়াল পাশ পারমিট নিয়ে যাওয়ার আগে মধু আহরণে আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। মধু আহরণে প্রতি বছর অগুনে পুড়ে লক্ষ লক্ষ মৌমাছির ডিম ও বাচ্চা পুড়ে মারা যাচ্ছে। এতে মৌমাছির প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধিতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই মৌয়ালদের প্রশিক্ষণসহ সচেতনতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বন বিশেষজ্ঞরা।

পাইকগাছায় মৌসুমের শুরুতেই ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছে বাগদা চিংড়ি

পাইকগাছায় মৌসুমের শুরুতেই ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছে বাগদা চিংড়ি। ফলে একদিকে সর্বশান্ত হতে বসেছে চিংড়ি চাষীরা। অপরদিকে বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড তাপদাহে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মনে করছেন। 

এ ধারা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে দ্বায়-দেনার ভারে পথে বসতে হতে পারে অনেক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীকে এবং ভবিষ্যৎ চিংড়ি চাষে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করছে চিংড়ি চাষের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র মতে, ৮০’র দশকে কৃষি অধ্যুষিত এ উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয় লবণ পানির চিংড়ি চাষ। শুরুতেই অধিক লাভজনক হওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে এ চাষ ব্যবস্থা ছড়িয়ে পড়ে গোটা উপজেলায়। এক সময়ের কৃষি অধ্যুষিত এ এলাকা পরিণত হয় চিংড়ি অধ্যুষিত এলাকায়।

১৯৯৫ সালের দিকে প্রথম রোগ বালাইয়ের প্রকোপ দেখা দেয়ায় প্রায় টানা এক দশক লাভের মুখে থাকা চিংড়ি চাষে ধস নামা শুরু হয়। রোগ বালাই ধীরে ধীরে ব্যাপক আকার ধারণ করায় বছরের পর বছর ধরে লোকসানের মুখে পড়তে হয় সংশ্লিষ্ট চাষীদের। দায়-দেনার ভারে দীর্ঘ সময় জর্জরিত হয়ে পড়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় সন্ধাবনাময় চিংড়ি চাষ।

এদিকে দীর্ঘদিন পর গত বছর ভালো উৎপাদন হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই ছাড়িয়ে যায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। হেক্টর প্রতি প্রায ৫’শ কেজি উৎপাদন হয়। যা শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবেও আলোড়ন সৃষ্টি করে। বর্তমানে চিংড়ি অধ্যুষিত এ উপজেলায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৪ সহস্রাধিক চিংড়ি ঘের রয়েছে। গত বছর উৎপাদন ভাল হওয়ায় চলতি বছর সংশ্লিষ্ট চিংড়ি ঘেরগুলোতে মৎস্য অধিদপ্তর ৬ হাজার মেট্টিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও মৌসুমের শুরুতেই ব্যাপক হারে চিংড়ি মাছ মারা যাওয়ায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে নির্ধারিত এ লক্ষ্যমাত্রা।

চিংড়ি চাষী মোমিন সরদার জানান, চাষকৃত চিংড়ি বিক্রয় উপযোগী হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছে। যার ফলে দারুনভাবে লোকসানে পড়তে হতে পারে বলে মাঝারী পর্যায়ের এ চিংড়ি চাষী জানান।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এ,এস,এম, রাসেল জানান, কিছু কিছু চিংড়ি চাষীরা মাছ মারা যাচ্ছে এমন অভিযোগ করলেও মারা যাওয়া চিংড়িতে রোগবালাইয়ের কোন লক্ষ্মণ পাওয়া যায়নি। প্রকৃতপক্ষে, মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টিপাত না থাকায় এবং প্রচন্ড তাপদাহের কারণে গভীরতা কম যে সব ঘেরগুলো সে সব ঘেরের মাছ মারা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ঘেরের পানি বৃদ্ধিসহ ভাইরাসমুক্ত পোনা অবমুক্ত করার জন্য চিংড়ি চাষীদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

কপিলমুনিতে ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা প্রতারিত হচ্ছে মানুষ

কপিলমুনিতে নানা প্রতারক চক্রের ভিড়ে ইলেকট্রিশিয়ান প্রতারক চক্র যুক্ত হয়েছে। আর এই ইলেকট্রিশিয়ান প্রতারক চক্র প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা লুটে নিচ্ছে। এদের কারনে সাধারণ মানুষ যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি বাসাবাড়ীতেই ঝুকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

কপিলমুনি উপ শহরে প্রায় ডজন খানেক ইলেকট্রিশিয়ান রয়েছে। যাদের অধিকাংশই প্রতারণার মাধ্যমে সরল সোজা মানুষকে ঠকিয়েই চলেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকার কোন বাসা বাড়ী, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অয়্যারিং করতে এদের নিয়ে গেলে তাদের পছন্দের ইলেকট্রিকস এর দোকান দেখিয়ে পণ্য সামগ্রীর তালিকা দেয়া হয়। বাড়ী কিম্বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সরল বিশ্বাসে এদের পছন্দের দোকান থেকে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ইলেকট্রিকস সামগ্রী ক্রয় করে।

আর দোকানী এই সুযোগে তাদের নিকট থেকে এসব পণ্য সামগ্রী চড়া মূল্যে বিক্রয় করে মোটা অংকের টাকা মুনাফা করলেও তাদেরকে দেয়া হয় নিন্মমানের ও জোড়াতালি দেয়া পণ্য সামগ্রী। দোকানী ও ইলেকট্রিশিয়ানের মধ্যে পারস্পরিক চুক্তি থাকায় তা বুঝতে না পারায় ইলেকট্রিশিয়ানদের উপর সরল বিশ্বাসের কারনে বাড়ী বা প্রতিষ্ঠান মালিকরা প্রতারিত হচ্ছেন।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন ইলেকট্রিশিয়ান জানান, দশ, বিশ টাকা থেকে শুরু করে কোন কোন ক্ষেত্রে চল্লিশ টাকা পর্যন্ত কমিশনে কিছু অসাধু দোকানীর সাথে এ সব প্রতারক ইলেকট্রিশিয়ানদের গোপন চুক্তি রয়েছে। আর এই চুক্তি অনুয়ায়ী ইলেকট্রিশিয়ানরা নিন্মমানের পণ্য সামগ্রী চড়া দামে মালিকদের ক্রয় করিয়ে দেয়। প্রতারণার মাধ্যমে দোকানী ও ইলেকট্রিশিয়ান লাভবান হলেও নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে অয়্যারিং এর কারনে সে সব জায়গা হয়ে উঠছে অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ। যে কোন সময় তাতে বৈদ্যতিক দূর্ঘটনা ঘটে ব্যপক যান মালের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে একটি সূত্র জানায়, মালিকের ভাব বুঝে ইলেকট্রিশিয়ানরা প্রয়োজনের তুলনায় তাদেরকে অতিরিক্ত সামগ্রী কিনতে বাধ্য করে। আর এই অতিরিক্তি সামগ্রী তারা চুরি করে সংশ্লিষ্ট দোকানেই কমিশনের ভিত্তিতেই সরবরাহ করে। বাসা বাড়ী বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যতিক দূর্ঘটনার জন্য এদেরকে দায়ী করেছেন সচেতন মহল। তাই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।

কয়রায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মান কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে

উপকুলীয় জনপদ কয়রা উপজেলায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মান কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সুন্দরবন উপকুলীয় প্রত্যান্ত এ জনপদে নতুন করে সাইক্লোন শেল্টার নির্মানের ফলে যে কোন দুর্যোগে আশ্রয় সহ শিক্ষা ব্যাবস্থা সম্প্রসারনে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এলজিইডির তদারকিতে আইলা বিধ্বস্ত খুলনার কয়রা ও দাকোপ উপজেলায় ৮২ কোটি টাকা ব্যায়ে ২৪ টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মানের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ও কয়রা সদর ইউনিয়নে ১১ টি সাইক্লোন শেল্টারের নির্মানের কাজ ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে শুরু হয়, ইতিমধ্যে কাজের ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ট ভাবে কাজ তদারকির জন্য বিশ্ব ব্যাংক ও এলজিইডির কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক দায়ীত্ব পালন করছেন।

সরোজমিনে ৫ নং কয়রা কাশীর খালপাড় সাইক্লোন শেল্টার নির্মান কাজ দেখতে গেলে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল খালেক কনস্ট্রাকশনের দায়িত্বরত জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল হাদী রুবেল জানান, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় কাজ যে গতিতে শুরু করা হয়ে ছিল এত দিন কাজের ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার কথা, কিন্তু দুর্গম এলাকায় বার বার মালামাল পরিবহনে সমাস্যা, মাটির নিচে বালুর অংশ অনেক বেশি ও পর্যপ্ত পরিমান জায়গা না থাকার কারনে কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে, তবুও নির্ধারীত সময়ের মধ্যে সুষ্ট ভাবে কাজ সম্পন্নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

কাজের দেখ-ভালের দায়িত্বে নিয়োজিত বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি বাসুদেব সাহা জানান, সুষ্ট ভাবে সুন্দর পরিবেশে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। এলজিইডি উপজেলা প্রকৌশলী বাবুল কুমার দেবনাথ জানান, বিশ্ব ব্যাংকের নিয়োগ কৃত প্রকৌশলী ও এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলীর তদারকিতে শিডিউল অনুযায়ী সুষ্ট ভাবে কাজ এগিয়ে চলেছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়ীতপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা সার্বক্ষনিকভাবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নির্দেশনা মাফিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছি কিন্তু সার্থন্বেশী একটি মহল বিভিন্ন ভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন করার পায়তারা করছে, আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সুষ্টভাবে কাজ সম্পন্নের জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।

পাইকগাছায় ৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ ১ ব্যক্তি আটক

পাইকগাছায় থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ ১ মাদক বিক্রেতাকে আটক করেছে।


জানা যায়, বুধবার সকালে সাতক্ষীরা থেকে আসার পথে উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কাটাখালী নামকস্থানে পৌছালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাইকগাছা থানার এসআই সিরাজ ও এএসআই মফিজুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে সাতক্ষীরা জেলার আড়তদা গ্রামের আব্দুল ওহাবের পুত্র শাহজাহান (৪০) কে ৮০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে।

এ ব্যাপারে মাদক আইনে একটি মামলা করা হয়েছে বলে ওসি সিকদার আক্কাজ আলী জানান।

ওসি আক্কাজ আলীর পাইকগাছা উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা

পাইকগাছা উপজেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন নবাগত ওসি সিকদার আক্কাজ আলী। তিনি সোমবার সন্ধ্যায় থানা ভবনে পাইকগাছা প্রেসকাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ ঘোষনা দেন।

তিনি বলেন, মাদকের সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের প্রশাসনেরও কেউ যদি এ কাজে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাইকগাছায় র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে ২ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪

পাইকগাছায় ২ কেজি গাঁজাসহ ৪ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে র‌্যাব ও পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা ও ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। 

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ডিএডি ওলিউজ্জামানের নেতৃত্বে র‌্যাব-৬-এর একটি টিম ক্রেতা সেজে অভিযান চালিয়ে শিবসা ব্রীজের পশ্চিম পাশ থেকে ২ কেজি গাঁজাসহ গজালিয়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের পুত্র মনিরুল ইসলাম (৩৪) ও ছায়েদ আলী ফকিরের পুত্র মিজানুর রহমান (৩৫) কে আটক করে।

পরে এ ঘটনায় ডিএডি ওলিউজ্জামান বাদী হয়ে আটক দু’ব্যক্তিকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। যার নং- ৪০, তাং- ২১/০৪/১৩।

অপরদিকে এস,আই সোহেল অভিযান চালিয়ে মৌখালী হাইস্কুল মাঠ থেকে গাঁজা সেবন করার সময় ২ পুরিয়া গাঁজাসহ মৌখালী গ্রামের খোকন গাজীর পুত্র বকুল গাজী (২১) ও কমলাপুর গ্রামের মৃত মান্নান গাজীর পুত্র হাবিল গাজী (২২) কে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জরিমানা করা হয় বলে ওসি সিকদার আক্কাজ আলী জানান।

পাইকগাছার গড়ইখালী ক্যাথলিক মিশনে গীর্জা পার্বণ

পাইকগাছার গড়ইখালী ক্যাথলিক মিশনে গীর্জা পার্বণ উপলক্ষে বিশ্বশান্তি ও মানব জাতির কল্যাণ কামনায় অষ্টম প্রহরব্যাপী মহানাম কীর্ত্তণ শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে মহা নামকীর্ত্তনের অধিবাস, বুধবার কীর্ত্তন শোভাযাত্রা, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় নগর কীর্ত্তন ও বিকাল ৪টায় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হবে।

পাইকগাছায় দুই দোকান মালিককে ১১ হাজার টাকা জরিমানা

পাইকগাছায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দুই দোকান মালিককে কম্পিউটারে অশ্লীল ছবি রাখার দায়ে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।

সোমবার বিকালে পাইকগাছা বাজারের কপোতাক্ষ মার্কেটে অবস্থিত বিকাশ মোবাইল সার্ভিসিংয়ের মালিক বিকাশকে ৫ হাজার টাকা ও মিজান মোবাইল সাভির্সিংয়ের মালিক মিজানুর রহমানকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত কপোতাক্ষ মার্কেটে অবস্থিত ভাজার দোকানগুলোকে স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সতর্ক করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবির উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পেশকর দিপংকর মল্লিক ও থানার সঙ্গীয় ফোর্স।