পাইতগাছায় সুসাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হকের ৮৮তম মৃত্যুবাষির্কী পালিত
হয়েছে। এ উপলক্ষে কাজী ইমদাদুল হক স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা
১১টায় প্রেসক্লাব পাইকগাছার কার্যালয়ে পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক প্রকাশ ঘোষ বিধানের সভাপতিত্বে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তৃতা করেন রাড়ুলী সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি পঞ্চানন
সানা, সপ্তদ্বীপা সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি নলিনী কান্ত সানা, কাজী
ইমদাদুল হক স্মৃতি পরিষদের সহ-সভাপতি সমীরণ কুমার ঘোষ, সাংবাদিক আব্দুর
রাজ্জাক, গাজী নজরুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম মনি, মতিউর রহমান, মুনছুর আলী
প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, কাজী ইমদাদুল হক ১৮৮২ সালের ৪ নভেম্বর খুলনা
জেলার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী
আতাউল হক। কাজী ইমদাদুল হক পারিবারিক পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর
খুলনা জেলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৮৯৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ হন। ১৮৯৮ সালে এফএ পাস করেন। কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি
পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্রে ডিগ্রি ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু অসুস্থতার
কারণে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তিনি পাস কোর্সে বিএ পাস করেন।
১৯০৩ সালে তিনি বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হয়ে কলকাতা মাদ্রাসায়
অস্থায়ী শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯০৬ সালে আসামের শিলংয়ে শিক্ষা বিভাগের
ডিরেক্টর অফিসের উচ্চমান সহকারী পদে যোগ দেন। ১৯০৭ সালে ঢাকা মাদ্রাসার
শিক্ষক পদে নিয়োজিত হন। ১৯১১ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভূগোল বিষয়ের
প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৯১৪ সালে তিনি ঢাকা বিভাগে মুসলিম শিক্ষার সহকারী
স্কুল পরিদর্শক নিযুক্ত হন। ১৯১৭ সালে তিনি কলকাতা টিচার্স ট্রেনিং স্কুলের
প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদান করেন। ১৯২১ সালে ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড
প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রথম সচিব নিযুক্ত হন।
শিক্ষা বিভাগের কাজে
গভীর দায়িতবোধ, অসামান্য দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তির স্বীকৃতি স্বরৃপ
তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯১৯ সালে খান সাহেব ও ১৯২৬ সালে খান বাহাদুর
খেতাবে ভূষিত করেন। ১৮৯৬ সালে কাজী ইমদাদুল হক স্কুলে পড়াকালীন কবিতা লেখা
শুরু করেন। ১৯০৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আখি জল প্রকাশিত হয়। নবী
কাহিনী ও কামারের কাণ্ড তার শিশুতোষ গ্রন্থ। তিনি শিক্ষক নামে মাসিক
পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। সাহিত্য সৃষ্টি হিসাবে তার সর্ব শ্রেষ্ঠ কৃতি
আব্দুল্লাহ উপন্যাস।
১৯২৬ সালের ২০ মার্চ তিনি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে
মৃত্যুবরণ করেন। কলকাতার গোবরা কবর স্থানে তার মায়ের কবরের পাশে তাকে কবর
দেওয়া হয়। ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর আব্দুল্লাহ উপন্যাস গ্রন্থাকারে
প্রকাশিত হয়।