পাইকগাছার আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবৈধভাবে এমপিওভুক্ত হওয়া ৩ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে মাউশি। গত ৭ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত এক নির্দেশনার প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর টি এম জাকির হোসেন ৩৭.০২. ৪৭০০.০০০. ০১.০০১.০১. ১৭-২১৭১ স্মারকে অভিযুক্তদের নিয়োগ সংক্রান্ত ও শিক্ষাগত যোগ্যতার যাবতীয় কাগজপত্রসহ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তার কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলেছেন।
এর আগে তারা মাউশির নির্দেশে পর্যায়ক্রমে তাদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা সংশ্লিষ্ট কোষাগারে জমা দিয়ে দেন। তবে এই সংক্রান্ত একটি মামলা উচ্চা আদালতে চলমান অবস্থায় শিক্ষকদের মধ্যে ২ জন, মোঃ বাবর আলী গোলদার ও বিপ্লব কান্তি মন্ডল পুনরায় তঞ্চকতামূকভাবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে তাদের বেতন এমপিও করে নেন। ঠিক এমন অবস্থায় বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে ধরা পড়ায় নতুন করে তদন্ত শুর হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, গত ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি পাইকগাছা উপজেলার আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী শিক্ষক হিসেবে ২ বছরের মধ্যে এমপিও না দেয়ার শর্তে নিয়োগ পান বাবর আলী গোলদার, বিপ্লব কান্তি মন্ডল ও বিধান কুমার বিশ্বাস।
তবে আইলা দুর্গত এলাকা দেখিয়ে ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য ডিও লেটার পাঠান। তার আগে ৫ জুলাই সাবেক প্রধান শিক্ষক মিহির কুমার দাশের পাঠানো আবেদনের প্রেক্ষিতে শর্ত ভঙ্গ করে ২০১৩ সালের মে মাসে উক্ত ৩ শিক্ষকের বেতন এমপিও হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর মাউশির মহাপরিচালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ৩৭.০২.০০০০.১০৭.৯৯.১৮৪.১৬.৯৫৮৮৬/৬ নং স্মারকে বিদ্যালয়ের অবৈধভাবে এমপিওভুক্ত উক্ত ৩ জন শিক্ষকের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। যার প্রেক্ষিতে বিধান বিশ্বাস ছাড়া অন্য ২ জন তাদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ কোষাগারে জমা দিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত ঐসময় সারা বাংলাদেশে এভাবে নিয়োগ ও শর্ত ভঙ্গ করে এমপিওভুক্ত হওয়া ২৮৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে উচ্চা আদালতে তাদের নিয়োগ বাতিলে মাউশি থেকে একটি মামলা করা হয়। যা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন মোঃ বাবর আলী গোলদার ও বিপ্লব কান্তি মন্ডল পুনরায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের অনলাইনে তাদের বেতন এমপিও করে নেন। যার ইনডেক্স নং যথাক্রমে ১০৭৫৮৮২ ও ১০৭৫৮৮৩।
সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিবালয় নির্দেশনা/২০১৪ এর ১৭২ অনুযায়ী তদন্তপূর্বক সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ মতামত প্রেরণের নির্দেশ দিলে মাউশির আঞ্চলিক পরিচালক এই তদন্ত শুরু করেছেন।
এ ব্যাপারে আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন জানান, তার নিয়োগের বেশ পূর্বেই তাদের নিয়োগ হয়েছে, তাই তাদের নিয়োগ ও কাগজপত্র প্রেরণের সাথে তার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
--শেখ দীন মাহমুদ, পাইকগাছা।