Wednesday, December 4, 2013

পাইকগাছায় পেট্রোল সোনার হরিণ; বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়

পাইকগাছায় পেট্রোল উধাও ! যা একটু পাওয়া যাচ্ছে তা আবার চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। পেট্রোল এখন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেকে তেল না পেয়ে ইতোমধ্যে গাড়ী বাসায় রেখে দিয়েছেন।

জানা গেছে ১৮ দলীয় জোটের টানা অবরোধে পাইকগাছায় কোন তেলের গাড়ী না আসতে পারায় তেল পাম্পসহ বিভিন্ন জায়গার তেল বিক্রেতাদের তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয় জ্বালানি তেল ব্যবহারকারীদের। গত দু’দিন যাবত পাম্পসহ বিভিন্ন স্থানের তেল বিক্রেতাদের পেট্রোল ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকে মোটর সাইকেল বাড়ীতে রেখে বিকল্প যানে চলাচল করছেন।

আবার যা একটু তেল মিলছে তার দাম আবার খুব বেশী। বুধবার হঠাৎ করে পৌর জিরো পয়েন্টে সন্ধান মেলে তেলের। জনৈক এক ব্যক্তি তেল বিক্রি করছেন এমন খবর পেয়ে অনেকে হুমড়ি খেয়ে পড়েন তেলের দোকানে। এক লিটার পেট্রোলের দাম ১৫০ টাকা। দামশুনে অনেককে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

গাড়ী চালক কামরুল হাসান জানিয়েছেন, কোথায়ও তেল না পেয়ে গাড়ী বাড়ীতে রেখে দিয়েছি। তেল বিক্রেতা জনৈক তৈয়েবুর জানান, যশোর থেকে অনেক ঝুকি নিয়ে তেল আনতে হয়েছে সে কারনে বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

পাইকগাছা এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী উজ্জ্বাল সরকার জানিয়েছেন, অবরোধের কারনে ১৫ দিন যাবত তেলের গাড়ী না আসায় তেল ফুরিয়ে গেছে। অবরোধে ঝুকি নিয়ে কেহ আসতে চাচ্ছে না সে কারনে আবরোধ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তেল আনা সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

মহান বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে পাইকগাছায় প্রস্তুতি সভা

আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় পাইকগাছা উপজেলা পরিষদ এর উদ্যোগে এক প্রস্তুতি সভা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (পাইকগাছার অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ শামীম হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশীদুজ্জামান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, আনোয়ার ইকবাল মন্টু, রতন ভদ্র, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ বিভাস চন্দ্র সাহা, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শরিফুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিা কর্মকর্তা মোঃ আতিয়ার রহমান, অধ্যক্ষ্ মিহির বরন মন্ডল ও মোঃ রবিউল ইসলাম, প্রধান শিক সুরাইয়া বানু ডলি ও অপু মন্ডল, এস আই খালেক, অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম, প্রভাষক মোমিনুর রহমান, ময়নুল ইসলাম ও মাসুদুর রহমান মন্টু, তৃপ্তি রঞ্জন সেন, স্নেহেন্দু বিকাশ।

সুন্দরবনে অপহৃত ৩ শিশু উদ্ধার

বনদস্যুদের চাঁদার দাবীতে অপহৃত ৩ শিশুকে কৌশলে উদ্ধার করেছে কয়রা থানা পুলিশ। উদ্ধারকৃত শিশুদের তাদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সুস্থ্য আছে বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার রাত ৯টায় কয়রা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ৬নং কয়রা গ্রামের ৩শিশু প্রাইভেট পড়ে বাড়ী ফেরার পথে ফাকা ওয়াপদা রাস্তা থেকে সুন্দরবনের বনদস্যুরা চোখ বেঁধে নৌকা যোগে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। অপহৃত শিশুরা হলো ৬নং কয়রা এলাকার নুরবক্স ঢালীর পুত্র গড়িয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র মেহেদী হাসান (৯), একই গ্রামের গোলাম মোস্তফার পুত্র শাকাবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র মোজাহিদ (১৩), আজিজুল গাজীর পুত্র গড়িয়া বাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র আবু সালেহ (১০)।

অপহৃতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের বনদস্যুরা ৩ শিশুকে অপহরণের ৩ ঘন্টা পর মেহেদীর মায়ের মোবাইলে ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। মেহেদীর মা টাকা দেওয়ার কথা স্বীকার করায় রাত ১২টার পর বনদস্যুরা একই মোবাইল ফোনে চাঁদার টাকা নেওয়ার জন্য ১টি বিকাশ নম্বর দেয়। কয়রা থানা পুলিশ মোবাইল নম্বর ও বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে কৌশলে অপহৃতদেরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এ ব্যাপারে কয়রা থানার ওসি (তদন্ত) সুবীর দত্ত জানান, দিনরাত অভিযান চালিয়ে বনদস্যুদের দেওয়া বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে বুধবার ভোর রাতে সুন্দরবন থেকে কৌশলে শিশুদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত শিশুদের তাদের অভিভাবকের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে এবং তারা সুস্থ্য আছে।

এ ব্যাপারে কাউকে গ্রেফতার কেন করতে পারেনি, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি এড়িয়ে গেলেও অপহরনকৃত বনদস্যুদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। তবে এ বিষয়কে কেন্দ্র করে উপকূলীয় জনপদটির প্রত্যেক অভিভাবক বনদস্যু আতংকে দিনানিপাত করছে।

পাইকগাছায় পুলিশি অভিযান; এক সপ্তাহে ১৮ দলের ১২ নেতাকর্মী আটক

তফশীল ঘোষণার পর গত এক সপ্তাহে পুলিশ এ পর্যন্ত নাশকতার আশংকায় বিএনপি’র পৌর সভাপতিসহ ১৮ দলীয় জোটের কমপক্ষে ১২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। ফলে গা ঢাকা দিয়েও গ্রেপ্তার থেকে শেষ রক্ষা পাচ্ছেন না জোট নেতাকর্মীরা।

পুলিশের এসব অভিযানে সর্বশেষ ৩ ডিসেম্বর আটক হন পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট এম. মাফতুন আহমেদ, জেলা সহ-ত্রাণ ও পুনঃর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক সরদার আব্দুল মতিন, ইউনিয়ন বিএনপিনেতা মোস্তফা গাজী ও জামায়াতনেতা এ্যাডভোকেট মোহতাছিম বিল্লাহ।

এর আগে ২৭ নভেম্বর আটক হন সাবেক কমিশনার বিএনপিনেতা গাজী আব্দুস সালাম, জামায়াতনেতা আবু বকর সিদ্দিক, আব্দুর রহমান, শেখ হাফিজুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান।

২৬ নভেম্বর আটক হন ইসলামী ঐক্যজোট উপজেলা আমীর মাওঃ সোলাইমান হুসাইন নোমানী।

২৫ নভেম্বর আটক হয়েছিলেন জেলা বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আসলাম পারভেজ ও বিএনপিনেতা সরদার মনিরুজ্জামান।

এএসপি সার্কেল (দাকোপ) প্রশান্ত কুমার দে ও ওসি এম. মসিউর রহমান জানান, কাউকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নাশকতা ঘটাতে পারে এমন আশংকায় ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে ইতোমধ্যে কিছু লোককে আটক করা হয়েছে।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী

দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক যে কোন মুহুর্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারেন বলে জানিয়েছেন খুলনা-৬ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর।

দলের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মঙ্গলবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার একদিন পর বুধবার দলীয় চেয়ারম্যানের এ সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে পাইকগাছা উপজেলা জাপার সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

এ প্রসঙ্গে জাপা নেতা মোস্তফা জানান, গণতন্ত্রের ধারা অব্যহত রাখতে নির্বাচনের বিকল্প নেই। আর এ জন্য জাতীয় পার্টি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং খুলনা-৬ আসনে দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এখন দেশের জাতীয় স্বার্থে জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায় এবং পার্টির চেয়ারম্যান যদি মনোনয়ন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দেয় সে ক্ষেত্রে পার্টির চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে বলে তিনি জানান।

এক্ষেত্রে দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও সিদ্ধান্ত পেলেই যে কোন মুহুর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জাপা মনোনীত এ নেতা জানান।

বৃহস্পতিবার পাঁচটা পর্যন্ত বিএনপির আলটিমেটাম

কাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ বুধবার সকালে অজ্ঞাত স্থান থেকে কয়েকটি গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আলটিমেটাম দেন।

ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, আত্মগোপনে থাকা বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে দাবি মানার ঘোষণা না দিলে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’

গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের টানা অবরোধ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

খুলনা-৬ আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থীদের বার্ষিক আয় ও সম্পদের তথ্য

খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থীদের হলফনামা থেকে তাদের বার্ষিক আয় ও সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। মনোনয়নপত্রের সাথে প্রার্থীরা নিজেরাই এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন। গত ১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র-৭ এ হলফনামার এসব তথ্য গণমাধ্যমে সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়।

খুলনা-৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শেখ মোঃ নুরুল হকের বার্ষিক আয় ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। তার সম্পদের মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও অন্যান্য মিলিয়ে ২৮ লাখ টাকা, ৩টি গাড়ি, ৩৫ লাখ টাকার জমি ও দুটি দালান রয়েছে।

এ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীরের বার্ষিক আয় ৪ লাখ টাকা। তার সম্পদ আছে ২৮ লাখ টাকার।

সুন্দরবনে রাডার ও ড্রোন বসাচ্ছে ভারত

বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সুন্দরবন এলাকায় ড্রোন ও নাইটভিশন রাডার বসাচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনী। মঙ্গলবার দেশটির পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের অনলাইন সংস্করণে এ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ ছাপা হয়।

নিবন্ধে বলা হয়, মুম্বাই হামলার ধাঁচে জলপথে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে চালকহীন বিমানের পাশাপাশি নাইটভিশন রাডার বসাচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা কর্তৃপক্ষ। মূলত, বাংলাদেশে জামায়াতের বাড়বাড়ন্ত ভাবিয়ে তুলেছে সেনাবাহিনীকে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই জলপথ ব্যবহার করে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) জঙ্গিরা ফের ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এবং নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। সমীক্ষা অনুযায়ী, সুন্দরবনের ১৩২ কিলোমিটার পথ সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় আছে। চলতি বছরের জানুয়ারি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল সুন্দরবন পরিদর্শনে আসে। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীও নিজে সুন্দরবন ঘুরে দেখেন। এই বিস্তীর্ণ সীমান্ত অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকায় চিন্তিত ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থা। তাই একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার শমশেরনগরে রয়েছে একটি বর্ডার আউটপোস্ট যার দেখাশোনা করে বিএসএফ। যদিও এই আউটপোস্ট মূলত ‘ল্যান্ড আউটপোস্ট’। এই এলাকা থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে যে নদীপথ রয়েছে সেখানে তিনটি ভাসমান আউটপোস্ট রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে নজরদারি চালায় বিএসএফ। একাধিক বাংলাদেশি জলযান প্রতিদিন এই পথ ধরেই ভারতে আসে। প্রথমে জলযানগুলো তল্লাশি করা হয় হেমনগর এলাকায়। তারপর নদীপথে সুন্দরবন হয়ে জলযানগুলো চলে যায় নামখানা বা কলকাতার দিকে। আগে তল্লাশি করা হতো নামখানায়। বিগত বছর থেকে সেই তল্লাশি হচ্ছে হেমনগরে। এর পরেওদেখা যাচ্ছে, বিস্তীর্ণ অংশ অরক্ষিত রয়েছে।

নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট অভিযোগে বলা হচ্ছে, হেমনগরে কাগজপত্র তল্লাশি চালানো হলেও তাতে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। কী রকম ফাঁক ? এক সেনা কর্মকর্তা জানান, জলযানে প্রতিটি কোণ পরীক্ষা করা হয় না। কাগজপত্র দেখা হয়। কিন্তু সত্যিই কী উদ্দেশ্যে এই জলযানের ভারতের জলপথে আসা তার উত্তর মেলে না। এ থেকে নৌবাহিনী আশঙ্কা করছে, কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা অবাধেই বিস্ফোরক নিয়ে প্রবেশ করতে পারে।

অপরদিকে, এই সমস্ত জলযান একাধিক জায়গায় অপেক্ষা করে। বিশেষ করে রাতের বেলা জলযানগুলোতে কারা যাতায়াত করছে তা জানা যায় না। পাড়ের গ্রামগুলো থেকে কারা যাতায়াত করছে তাও জানা যায় না। অভিযোগ উঠেছে, ছোট ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে একাধিক মানুষ সেই বাংলাদেশি জলযানের আশেপাশে যাতায়াত করে। মুম্বাই হামলার ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এই ডিঙি নৌকার ব্যাপারে সচেতন হতে চাইছে নৌ কর্তৃপক্ষ।

কয়রার লবণ-প্রবণ জীবনধারায় নিরব বসন্ত

এখন তারা চালকের আসনে। তারা এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। নিজেদের সমস্যা নিজেরাই চিহ্নিত করছে। পরিকল্পনা করছে তা’ সমাধানের। নিজেরা সংগঠিত হয়েছে। জনসংগঠন তৈরী করে পরনির্ভরশীল মানসিকতা ছিকায় তুলেছে। জনঅংশগ্রহণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সোচ্চার হচ্ছে। তারা আইলাবিধ্বস্ত কয়রার মানুষ।

ঝড়-ঝঞ্জা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের জন্য নিত্যনৈমত্যিক ঘটনা। সমুদ্রঘনিষ্ট উপকূল কয়রার জনপদে জলবায়ু পরিবর্তন নতুন আপদ। দিন যত যাচ্ছে জলবায়ুর বিপদাপন্নতা ততই প্রকট হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দারুনভাবে প্রভাবিত করছে এই জনপদের মানুষকে। এখানকার মাটি, পানি, কৃষিসহ বেঁচে থাকার সব উপাদানই জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থাও বিপদাপন্ন।

পরিবেশ-প্রতিবেশের এতসব বৈরী বাস্তবতার বিপরীতে কয়রার তৃনমূল মানুষ এখন অনেক সংগঠিত। নিজেদের ভালমন্দের বিষয়ে অনেক সচেতন। অন্যায় অবিচারে সোচ্চার। পরনির্ভর চিন্তাচেতনার বাইরে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে মনযোগী। জলবায়ু পরিবর্তনসহ পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জনে দৃঢ়প্রত্যয়ী।

দুর্যোগের ঘনঘটায় সচারচর কাতর কয়রার তৃনমূল সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে বিকল্প জীবনধারায় অভ্যস্থতা আনয়নে উন্নয়ন সংগঠন রূপান্তর এবং ওয়াটার-এইড আইলা পরবর্তী সময় হতে কয়রায় নিবিড় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এই কার্যক্রমে প্রাধান্য পাচ্ছে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধির উন্নয়নসহ সামাজিক অনগ্রসরতা দূরীকরণ। এক কার্যক্রম পরিচালনায় কয়রার ৭টি ইউনিয়নের অন্ততঃ ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও বেশী জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে যা কয়রা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৫ শতাংশ।

এই কার্যক্রমের ড্রাইভিং সিটে রয়েছে ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। ৯টি ইউনিয়নের ৬৩টি কমিটির ১৮৯০ জন সদস্য সকলেই নিজনিজ ওয়ার্ডে এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তারা খুবই সংগঠিত। নিজেদের সমস্যা চিহ্নিত করাসহ তা’ সমাধানে সতেষ্ট। এলাকার যে কোন উন্নয়নমুলক কাজে নিজেরা সরাসরি অংশগ্রহণ করছে। উন্নয়ন বাজেটে নিজেরা অংশগ্রহণ করছে। বৃক্ষরোপন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে। বিভিন্ন সামাজিক কাজেও অংশগ্রহণ করছে।

প্রতিটি কমিটি একটি উদ্ভাবনী কাজ করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা’ হলো- ‘ওয়াশ’ বিপদাপন্ন ম্যাপ। ওয়ার্ডের পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্বাস্থ্যবিধিকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরী এই ম্যাপে এলাকার সার্বিক চিত্র বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। গৃহভিত্তিক পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য এই ম্যাপে অন্তর্ভুক্ত থাকার কারণে এলাকার সমস্যা এখন সহজেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে এবং সাথে সাথে সম্ভাব্য সমাধানসূত্রও আবিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে এই ম্যাপের মাধ্যমে। এ কারণে এই ম্যাপ এখন এলাকায় কর্মরত সকল উন্নয়ন সংগঠনসহ স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে- এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বড় সাফল্য হিসেবে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

এই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সহায়ক গ্রুপ হিসেবে রয়েছে ১৯০টি ইনফরমাল ক্লাব। মাদার্স ক্লাব, স্টুডেন্ট ক্লাব, ইয়ুথ ক্লাব, কিশোরী ক্লাব, পেশাজীবী ক্লাব ইত্যাদি নামে এই ১৯০টি ইনফরমাল ক্লাবের ৪ হাজার ৮শ’ ৭৯ জন নারী-পুরুষ নেতৃত্ব প্রদানে এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এক ধরণের সক্ষমতা অর্জন করেছে যার মাধ্যমে কয়রার ৪৯,২৯১ পরিবারের ২ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে।

কয়রার ৬৩টি ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং ১৯০টি ইনফরমাল ক্লাব এখানকার প্রধান সমস্যা সুপেয় পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ পূরণে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রেখেছে। উন্নয়ন সংগঠন রূপান্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘এডাপটিং ওয়াশ ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ প্রকল্পের প্রধান ‘অনুঘটক’ হিসেবে এই কমিটি কয়রার বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানির শতভাগ চাহিদা মিটাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

মোট কথা, ৬৩টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৮৯০জন সদস্যসহ ১৯০ ইনফরমাল গ্রুপের ৪৮৭৯ জন নারী-পুরুষ তাবৎ কয়রার জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে বিকল্প জীবনপরিকল্পনা প্রণয়নে এক ধরণের জাগরণ তৈরী করতে পেরেছে। অনেকটা নিরব বসন্তের পরিবেশ যেন কয়রার লবণ-প্রবণ জীবনধারায়। এ ধারা অব্যাহত রাখতে দুর্যোগপ্রবণ কয়রার মানুষ এখন অনেক সক্ষম এবং আত্মপ্রত্যয়ীও।

কপিলমুনি রায় সাহেব মৎস্য মার্কেটে সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলা

কপিলমুনিতে রায় সাহেব মৎস্য মার্কেটে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে মোস্তফা বাহিনী। এ সময় মার্কেটের অভ্যান্তরে ঢুকে ক্যাশবাক্স ভাংচুর ও লুটপাট করে নগত ২ লাখ টাকা সহ প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে তারা।

সোমবার রাত ৮টার দিকে বাজারের কপোতাক্ষ সংলগ মৎস্য মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ফাঁড়ি ও থানা পুলিশকে অবহিত করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

প্রত্যাক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, এ দিন কপিলমুনি বাজারের রায় সাহেব মৎস্য মার্কেটে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনের ন্যায় বেচাকেনা শেষে হিসাব নিকাশ করা অবস্থায় স্থানীয় প্রভাবশালী মোস্তফার নের্তৃত্বে খায়রুল, খালেক, শফিকুল, সামাদ, লুৎফরসহ প্রায় শতাধিক লোক মার্কেটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর সহ লুটপাট করতে থাকে। এ সময় আড়ৎ ব্যাবসায়ীরা তাদের তান্ডবলীলায় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে নিরুপায় হয়ে পড়ে।

ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্থ ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যাবসায়ীরা সাংবাদিকদের জানায়, মোস্তফা দীর্ঘদিন ধরে মোটা অংকের টাকা দাবী করে আসছে। ঘটনার দিন কোন কিছুই বুঝে ওঠার আগেই তারা এ হামলা চালায়।

ব্যবসায়ীরা আরোও জানায়, তাদের কালেকশানকৃত ২ লাখ টাকা নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। ঘটনার পর সমগ্র এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় কপিলমুনি ফাঁড়ি দারোগা এস আই হাসমত আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পাইকগাছায় একাধিক কলেজের নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে গেলো

আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারী করায় পাইকগাছায় কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদ থেকে বাদ পড়লেন সংসদ সদস্য ও তার মনোনিত প্রতিনিধিগণ। ফলে ঝুলে গেল প্রক্রিয়াধীন অনেক কলেজের নিয়োগপ্রক্রিয়া।

গত ৩০ নভেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীঃবিঃ/কঃপঃ/৬৯৩৩ নং স্মারকপত্র সুত্রে জানা গেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তক্রমে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিবেচনায় রেখে নির্বাচন কমিশনের ধারাবাহিকতায় অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ের জন্য (পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত) যে সকল কলেজে সংসদ সদস্য অথবা তার মনোনিত প্রতিনিধিগণ গর্ভনিং বডি/এডহক কমিটির সভাপতি ও সদস্য হিসেবে দায়িত্বরত আছেন সে সকল কলেজে সংশোধন সংবিধি ১৯৯৮-এর ৬ ধারামতে ভাইস চ্যান্সেলরের ক্ষমতাবলে জেলা পর্যায়ের কলেজের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ প্রজ্ঞাপন তাৎক্ষনিকভাবে কার্যকর হওয়ার ফলে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা কলেজ, কপিলমুনি কলেজ ও আর কে বি কে হরিশ্চচন্দ্র ইনষ্টিটিউটসহ কয়েকটি কলেজের সভাপতি পদ থেকে বাদ পড়লেন স্থানীয় এমপি এ্যাড, সোহরাব আলী সানা। এদিকে সভাপতি রদবদল হওয়ার কারনে কপিলমুনি কলেজের আলোচিত অধ্যক্ষ পদ ও পাইকগাছা কলেজের গুরুত্বপূর্ণ ৪টি পদে প্রক্রিয়াধীন নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুঁলে গেছে।

কয়রায় ৩ স্কুল ছাত্র অপহরণ

কয়রা উপজেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন কাশিরাবাদ থেকে ৩ জন স্কুল ছাত্রকে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা । অপহৃতরা হলো- উপজেলার আজিজুল গাজীর ছেলে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র আবু সালেহ (১১), নূর বকস ঢালীর ছেলে ৩য় শ্রেণীর ছাত্র হাসান (৯) ও গোলাম মোস্তফা ঢালীর ছেলে ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মোজাহিদ (১৪)।

স্থানীরা জানান, সোমবার রাত ৯টার দিকে তারা প্রাইভেট পড়ে কাশিরাবাদ পুলিশ ক্যাম্পের পাশ দিয়ে ওয়াপদা হয়ে পায়ে হেটে বাড়ি ফিরছিল। পথে বনদস্যুরা তাদের মুখে গামছা পেচিয়ে জোর করে নৌকায় তুলে নিয়ে বনের মধ্যে চলে যায়। পরে দস্যুরা হাসানের বাড়িতে মোবাইল করে হাসানসহ ৩ জনের মুক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা বা জিডি হয়নি বলে তিনি জানান।