Friday, December 19, 2014

পাইকগাছায় ভ্যান চালিয়ে সংসার চলে জীবনযুদ্ধে সংগ্রামী নারী হেনা পারভীনের

আত্মপ্রত্যয়ী ও জীবনযুদ্ধে পাইকগাছার সংগ্রামী নারী ভ্যান চালক হেনা পারভীন ভ্যান চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। হেনা পারভীন পাইকগাছা উপজেলার বিরাশী গ্রামের আব্দুল করিমের কন্যা। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে হেনা পিতার বাড়িতে থেকে সংগ্রামী জীবন যাপন করছেন। তার দুই সন্তানকে নিয়ে বিরাশীর একটি খাস জমিতে খুপড়ি ঘরে বসবাস করেন। তিনি পুরুষের সাথে সমান তালে ভ্যান চালিয়ে রোজগার করেন। 
 

ভ্যান চালানোর পাশাপাশি তিনি গ্রাম থেকে জ্বালানি কাঠ ও শাক-সবজি ক্রয় করে পাইকগাছা পৌরসভায় ফেরি করে বিক্রি করেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর ভূমিহীন পরিবারের এ আত্মপ্রত্যয়ী নারী জীবন যুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম করে চলেছেন।

Tuesday, December 16, 2014

৩য় বছরে পদার্পণ করলো 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'

আজ ১৬ই ডিসেম্বর 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। হাটি হাটি পা পা করে ২টি বছর পার হয়ে গেলো। আজকে সময় পিছু ফিরে দেখার !!!

২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবসের এক রৌদ্র মাখা সকাল ছিল 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র জন্মলগ্ন। জন্মলগ্ন থেকেই ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করে সামনে এগিয়ে চলার চেষ্টা করেছি আমরা। ৭৩০ দিনের এই দীর্ঘ পথ চলা সহজ ছিল না। অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। কিন্তু আপনাদের ভালোবাসাই আমাদের নতুন উদ্দমে পথ চলার অনুপ্রেরনা যুগিয়েছে।

একটি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম আমরা। আমাদের লক্ষ্য ছিল পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি করা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করা এবং পাঠকের সংবাদ তৃষ্ণাকে ত্বরান্বিত করা। এই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে গেছি।

২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই আলোকিত ভোরে আপনি আমাদের ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ আর অভিনন্দন গ্রহণ করুন। অসংখ্য ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। বিগত ২ বছরের মত, সামনের দিন গুলিতেও আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার আশা রাখি।

এই দিনে 'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র ঘোষণা :: আমাদের প্রতিদিনের চেষ্টা থাকবে ইতিবাচক খবরকে আরও গুরুত্ব দেওয়া। ভালোই ডেকে আনবে আরও ভালোকে।

আগামীতে কেমন হওয়া উচিৎ আমাদের কার্যক্রম? দয়াকরে আপনার মূল্যবান মতামত জানাবেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ করব না আপনাদের।

ধন্যবাদ !

Friday, December 12, 2014

খুলনা-পাইকগাছা সড়কে 'গেটলক সার্ভিস' না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ

খুলনা-পাইকগাছা সড়কে 'গেটলক সার্ভিস' না থাকায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। যাত্রীবাহী লোকাল বাসে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে একদিকে যেমন অতিরিক্ত সময় অপচয় হচ্ছে, তেমনি নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। অত্র সড়কের আঠারমাইল থেকে পাইকগাছা ৩৩ কিলোমিটার রাস্তা ভাঙ্গা থাকার কারনে খুলনা-পাইকগাছা ৬৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগছে কমপক্ষে ৪ ঘন্টা। কখনও কখনও এর থেকেও বেশি সময় লাগছে। সব মিলিয়ে অত্র সড়কে চলাচলরত যাত্রী সাধারণগণ বরাবরই বিভিন্নভাবে বৈষম্যের স্বীকার হয়ে আসছেন।

যাত্রীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, খুলনা-পাইকগাছা সড়কের আঠারমাইল থেকে পাইকগাছা ৩৩ কিলোমিটার পথই ভোগান্তির মূল কারণ। দীর্ঘ বছরের ভাঙ্গাচোরা রাস্তাটি গত ২০১১ সালের মে মাসে তালা ব্রীজ মোড় থেকে কাশিমনগর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা পানিতে নিমজ্জিত হবার পর থেকেই রাস্তাটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যদিও এর পর কয়েক দফা সড়ক সংস্কার কাজ হয়েছে, তবে কাজের মান ভালো না হওয়ায় রাস্তা উঁচুনিচু রয়েই গেছে এবং অনেকাংশ ফের ভেঙ্গেও গেছে।

২০১১ সালের বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি চলাচল অযোগ্য হবার কারণে যাত্রীবাহী বাসসহ প্রায় সব ধরনের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়। টানা আড়াই মাস পর পানি সরে গিয়ে রাস্তা কিছুটা চলাচল উপযোগি হয়ে উঠলেও যাত্রীবাহী বাস চলাচলের ক্ষেত্রে নিয়মনীতি উপেক্ষিত হতে থাকে। সেই থেকে অত্র সড়কে ’গেটলক সার্ভিস’ তো নেই , বরং যে লোকাল বাসগুলো চলাচল করছে তাও সংশ্লিষ্টদের ইচ্ছেমত চলছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, পাইকগাছা পৌর বাসষ্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে মাত্র দু’শ’ গজ দূরে জিরোপয়েন্টে গিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করা হয় যাত্রী ওঠাবার আশায়। এরপর বোয়ালিয়া মোড়ে গিয়ে কিছুক্ষণ দেরি করার পর কপিলমুনি বাজারে গিয়ে আবারও ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করা হয়। পেছন থেকে অন্য একটি যাত্রীবাহী বাস এলে তবেই আগের বাসটি ছাড়া হয়। এভাবে পাইকগাছা থেকে খুলনা পৌছাতে ৪ ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে।

একইভাবে খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে গল্লামারী এসে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করা হয়। সেখান থেকে কোনমতে ছেড়ে আসলেও চুকনগরে এসে আবারও অপেক্ষার পালা শুরু হয়। ২০-২৫ মিনিট পর পেছনের বাস এলেই তবে ছাড়া হয় আগের বাসটি। চুকনগর থেকে ছেড়ে এসে আবার তালা বাজারে অপেক্ষা করা হচ্ছে ৫-১০ মিনিট।

অথচ পাইকগাছা-খুলনা সরাসরি যাত্রীবাহী বাসে আসা-যাওয়া করতে সর্বোচ্চ ২ ঘন্টা বা তারও কম সময় লাগার কথা। যা ’গেটলক সার্ভিস’ হলেই সম্ভব। অত্র সড়কে চলাচলরত ব্যস্ততম যাত্রীরা এক ঘন্টা পরপর হলেও খুলনা-পাইকগাছা সড়কে ’গেটলক সার্ভিস’ চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযথ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Tuesday, December 9, 2014

২০১৫ সালের এসএসসি, এসএসসি (ভোকেশনাল), দাখিল ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার সময়সূচি

২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচি ::



২০১৫ সালের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার সময়সূচি ::



২০১৫ সালের দাখিল পরীক্ষার সময়সূচি ::



২০১৫ সালের দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার সময়সূচি ::



সর্বশেষ আপডেট :: গত ২৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখ মঙ্গলবার খসড়া সময়সূচি প্রকাশ করে মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। উক্ত সময়সূচী অপরিবর্তিত রেখে সর্ব সম্মতিক্রমে ১৮ নভেম্বর সোমবার পুনরায় এই সূচী প্রকাশ করা হয়।

আজ ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস

জনতার রায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ১৫৬ রাজাকারের মৃত্যুদন্ডের দিন


আজ ৯ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস। পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিবাসীর জন্য এক গৌরবময় আনন্দের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে কপিলমুনির মুক্তিকামী দামাল ছেলেরা পাকহানাদের পরাজিত করে এলাকাটি শত্রুমুক্ত করে। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে ও মার্তৃভুমির টানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার অকুতভয় দামাল ছেলেরা। যুদ্ধকালীন সময়ে ও তার পুর্বে পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি'সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস্ এবং শান্তি কমিটির দালালরা লুটপাট থেকে শুরু করে ধর্ষণ ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় নিরীহ মানুষের উপর। 

সেদিনের লোমহর্ষক ও বর্বোরোচিত ঘটনার কথা আজও ভুলিনি এলাকার মানুষ। ভয়ংকর রাতের স্মৃতি আর হানাদার বাহিনীর তান্ডবলীলা এখনও প্রবীনদেরকে শিউরে তোলে। উপজেলা সদর হতে ১২ কিঃমিঃ উত্তরে কপোতাক্ষের তীরবর্তী ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনির অবস্থিত। প্রতিষ্ঠাতা দানবীর রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু। সে সময় রায় সাহেবের বিশালাকৃতির বাড়ীটি রাজাকাররা সুরক্ষিত দুর্গ হিসাবে বেঁছে নিয়েছিল। মান্দাতা আমলের ঐতিহ্যবাহী এ বাড়িটিকে ঘিরে যুদ্ধের অনেক স্মৃতিচিহ্ন আজও বহন করে চলেছে।

রাজাকাররা তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রাচীর বেষ্টিত দ্বিতল এ ভবনটি তাদের ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত মনে করে গড়ে তুলেছিল রাজাকার ঘাঁটি। প্রায় ২০০ জন রাজাকার সর্বদা নিয়োজিত থেকে যুদ্ধ করেছিল। এলাকার হিন্দু ও নিরীহ লোকদের ধরে এনে নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে আজও শিহরিত হন প্রবীনরা।

১৯৭১ সালে ১১ জুলাই লেঃ আরিফিনের নের্তৃত্বে সরদার ফারুক আহমেদ, আবুবক্কার, শাহজাহান, মাহতাব, লতিফ, আনোয়ার, মনোরঞ্জনসহ আরোও অনেকে কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমন চালায়। রাত ৩টা থেকে পরদিন বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে একটানা যুদ্ধ।

ঐ সময় খাদ্য, পানীয় ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতার অভাবে প্রথমবারের অভিযানে রাজাকার ঘাটির পতন ঘটানো সম্ভব হয়নি। এরপর সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যমতে শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা। আর এরই মধ্যে রাজাকারদের নিষ্ঠুর নির্যাতনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। কথিত আছে, কপিলমুনি বাজারের কৃষ্ণচুড়া বৃক্ষের নীচে জবাই করে নির্মমভাবে হত্যা করা হতো নিরীহদেরকে। 

রায় সাহেবের বিশালাকৃতির বাড়ীটি রাজাকাররা সুরক্ষিত দুর্গ হিসাবে বেঁছে নিয়েছিল
এদিকে যুদ্ধের নতুন পরিকল্পনার অংশ হিসাবে ১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনীর দক্ষিণ খুলনার সমস্ত ক্যাম্প কমান্ডারদের একত্রিত করে তাদের মতামত ও যুদ্ধের কলাকৌশল নির্ধারণ করে পুনরায় শুরু হয় যুদ্ধ। ঐ সময় চুড়ান্ত পরিকল্পনায় অংশ নেন গাজী রহমত উল্লাহ দাদু, স. ম. বাবর আলী, ইউনুচ আলী, শাহাদাৎ হোসেন বাচ্ছু, আঃ সালাম মোড়ল, আবুল কালাম আজাদসহ আরোও অনেকে।

৬ ডিসেম্বর রাতে আক্রমণ করা হয় কপিলমুনি রাজাকার ঘাটি। দফায় দফায় চলে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ। স্থানীয় প্রতাপকাটি কাঠের ব্রীজের উপর ৮ জন রাজাকার, তার একটু পেছনে আরো ৫ জন রাজাকার যুদ্ধে মারা যায়। একেরপর এক মরতে থাকে পাক দোসর রাজাকারদলের সদস্যরা। ৭ ও ৮ ডিসেম্বর একটানা যুদ্ধের পর ৯ ডিসেম্বর সকাল ১১ ঘটিকায় ১৫৫ জন রাজাকার আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়। 


রাজাকারদের পতন ও কপিলমুনি হাইস্কুল মাঠে আত্মসমর্পন এর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে চতুর্দিক থেকে জড়ো হতে থাকে জনতা। উপস্থিত জনতার সমন্বয়ে একটি গন আদালত গঠন করে ১৫৬ জন রাজাকারের মৃত্যুদন্ড ঘোষনা করা হয়। কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দীরের মাঠে দুপুর ২টায় প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে মৃত্যুদন্ড কার্যকর কারার মধ্যদিয়ে মুক্ত হয় পাইকগাছার কপিলমুনি।

উল্লেখ্য, কপিলমুনি মুক্ত দিবসের সঠিক তারিখ ৭ ডিসেম্বর না ৯ ডিসেম্বর এই বির্তক রয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের এক অংশ এতদিন বলেছে ৭ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্ত দিবস। জানা যায়, ১৯৯২ সালে কপিলমুনি মক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী সহ-অধিনায়ক প্রয়াত মোড়ল আব্দুস সালাম প্রথম এই মুক্ত দিবস পালনের উদ্যোগ নেন এবং ৭ ডিসেম্বর সাড়ম্বরে পালিত হয় ঐতিহাসিক কপিলমুনি মুক্ত দিবস। 

এই মাঠেই জনতার রায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ১৫৬ রাজাকারের মৃত্যুদন্ড কার্যকর কারা হয়

পরবর্তীতে কপিলমুনি মুক্ত দিবসের তারিখ নিয়ে তৎকালীন পাইকগাছা থানা আ‘লীগের সাধারন সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত এ্যাড. স,ম ইউসুফ আলী পত্রিকায় বিবৃতি দেন কপিলমুনির মুক্ত দিবসের সঠিক তারিখ ৯ ডিসেম্বর। ফলে বির্তকের সৃষ্টি হয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে। ফলে দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধারা। স্ব স্ব কর্র্মসূচি নিয়ে ৭ ও ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্ত দিবস পালিত হয় কয়েকবার।

ঐ সময় মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী এক পক্ষের দাবী ছিল, ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর শনিবার রাত ৩ ঘটিকায় অতর্কিতে কপিলমুনি রাজাকারদের এই শক্ত ঘাটিতে আক্রমণ শুরু হয়। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর যুদ্ধ চলে। ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টায় রাজাকাররা আত্মসমর্পনে বাধ্য হয়।

তবে মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম জানান, মুক্ত দিবসের তারিখ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এতদিন যে বিরোধ ছিল তার অবসান ঘটেছে। সবাই বসে তারিখ ঠিক করেছেন ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি মুক্ত দিবস।

Wednesday, November 26, 2014

আত্মহত্যা কোন প্রতিবাদ নয়, অপরাধ

আত্মহত্যা মহাপাপ, একই সাথে কাপুরুষত্বের বহিঃপ্রকাশ


পাইকগাছায় বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা; আতংকিত অভিভাবকরা

আত্মহত্যার প্রবণতা হ্রাসে প্রয়োজন পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক মোটিভেশন এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব ('ভয়েস অফ পাইকগাছা'র বিশেষ প্রতিবেদন) ::


পাইকগাছায় সম্প্রতি আত্মহত্যার প্রবণাতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বত্র উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। বিশেষ করে গত রবিবার ও সোমবার পৃথক ২ যুবক ও ১ কিশোরের আত্মহত্যার ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে অভিভাবক ও সচেতন মহলকে। আত্মহত্যার ঘটনায় একদিকে যেমন আতংকিত অভিভাবকরা অন্য দিকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন পাইকগাছার বিশিষ্ট জনেরা।


ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব, নৈতিক অবক্ষয়, বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন, পারিবারিক ভাবে নৈতিকতা চর্চার অভাব এবং হতাশা সৃষ্টির ফলে এমনটি ঘটছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। এর থেকে ছেলে মেয়েদের রক্ষা করতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘মোটিভেট’ করার চেষ্টা করতে হবে। না হলে একটা সময় আত্মহত্যার প্রবণতা ‘সোশ্যাল ফ্যাক্টর’ হয়ে দাঁড়াতে পারে। 

বিশ্বব্যাপী ১০ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করেন। প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করেন। এটি মানুষের মৃত্যুর কারণগুলোর মধ্যে পঞ্চম। অন্যদিকে বিশ্বের যে কোনো অঞ্চলের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ায় আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি। 

বাংলাদেশ জাতীয় মানসিক সাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত চার বছরে প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন আত্মহত্যা করেছে। আত্মঘাতীদের বড় একটা অংশের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে।

পরিবার ও সমাজের মানুষের সহযোগিতামূলক মনোভাব না পেলে আত্মহত্যার প্রবণতা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন মনোবিজ্ঞানীরা।


উল্লেখ্য, রবিবার ভোরে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশ পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের হরিখালী নামকস্থানের একটি বটগাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের গোপালপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ সানার পুত্র সিরাজুল ইসলাম সানা (২০) এবং চাঁদখালী ইউনিয়নের শরনখালী গ্রামের খগেন্দ্র নাথ মন্ডলের পুত্র অনুপ মন্ডল (১৯) এর বসতবাড়ীর পুকুর পাড়ের নিমগাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে। সোমবার গদাইপুর গ্রামে আম গাছ থেকে রাব্বি ইসলাম (১৪) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধা করে।

এ প্রসঙ্গে ওসি শিকদার আককাছ আলী জানান, মানষিক ভারসাম্যহীনতার কারনে সিরাজুল ইসলাম এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সের ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় অনেকটা হতাশাগ্রস্থ হয়ে অনুপ মন্ডল আত্মহত্যা করেছে। মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় এমন দু’টি চিরকুট দু’যুবকের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।

আদৌও কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে?

প্রতিশ্রুতির ৩২ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা


প্রতিশ্রুতির ৩২ বছরেও বাস্তবায়ন হলো না সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপত আব্দুস ছাত্তারের ঘোষণার সুন্দরবন জেলা। একে একে পার হতে যাচ্ছে প্রতিশ্রুতির ৩২ বছর। আজও বাস্তবায়ন হয়নি প্রস্তাবিত সুন্দরবন জেলা। অবহেলিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সুন্দরবন জেলা দাবী নিষ্ফল ক্রোন্দনে পরিণত হতে চলেছে। প্রত্যেক জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা এ ব্যাপারে জনগণকে বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিলেও পরে বেমালুম ভুলে যান। এবারও তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে না। সর্বমহলের একটাই প্রশ্ন আদৌও কি সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন হবে? না কি সহজ সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোট ব্যাংক মজবুত করা কৌশল মাত্র।

খুলনা জেলা শহর থেকে ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সুন্দরবন কোল ঘেসে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলা অবস্থিত। ১৯৮২ সালে কয়রা থানার জায়গীর মহলে এক বিশাল জনসভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি আব্দুস ছাত্তার জনগণের দাবিরমুখে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি থানা ও পার্শ্ববর্তী থানার কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা দেন। যা আজও প্রস্তাবিত হয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে পাইকগাছা, কয়রা, দাকোপ থানা এবং আশাশুনি ও তালা থানার কয়েকটি ইউনিয়ন। ততকালিন সময় দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ব সাধারণ জেলা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদী হয়েছিল। দীর্ঘ ৩২ বছর যাবত সকলই আশাহত হয়ে আছে। তবে প্রতিটা জাতীয় নির্বাচনের সময় বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বা জোটের প্রার্থীদের সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন করা হবে এমন প্রতিশ্রুতির অন্ত থাকে না।

অপার সম্ভবনাময় সুন্দরবন কোল ঘেষা এ অঞ্চল। উপজেলাবাসীর সুন্দরবন জেলার দাবী কেনো সঠিক এ ব্যপারে যৌতিকতা দেখিয়ে সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটির ও অন্যান্য সামাজিক কমিটি আন্দোলন করে যাচ্ছে। যার মধ্য পাইকগাছা কয়রায় পৃথক আদালত রয়েছে, ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের বিশাল অংশ এ এলাকায় অবস্থিত, হিমায়িত চিংড়িজাত দ্রব্য রপ্তানি করে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব উপার্জন করছে সরকার, পাইকগাছা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম লোনা পানি কেন্দ্র বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, লোনা সহিষ্ণু বীজ উৎপাদন খামার এবং “খ” শ্রেণীর পৌরসভা (পাইকগাছা, দাকোপ)।

এখানে আরও রয়েছে দেশের ১৮টি বৃহত্তম পাইকারী বাজারের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক শহর কপিলমুনি। কয়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের সুযোগ। নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে ১৫/২০ লক্ষ মানুষের বসবাস। যোগাযোগ ব্যবস্তার মধ্যে নৌপথ, সড়ক পথ অন্যতম।

জেলার দাবীতে ৮০’র দশক থেকে সর্ব দক্ষিণে গঠিত হয় সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন কমিটি ও সুন্দরবন জেলা বাস্তবায়ন ছাত্র সংগ্রাম কমিটি। সুন্দরবনজেলা বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। উন্নয়নের পথ প্রদশক ও আধুনিক দেশ গঠনে অগ্রদ্রুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মেয়াদে সুন্দরবন জেলা ঘোষণা করবেন এমনটি প্রত্যাশা সুধিজনের।

Tuesday, November 18, 2014

পাইকগাছার ৩৪টি‘সহ খুলনা জেলায় ১৭.৬৬% প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ

আকাশের নিচে ৪১ হাজার শিশু


খুলনা জেলার ১৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৪১ হাজার শিশু ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, অস্থায়ী চালাঘর আর খোলা আকাশের নিচে পড়াশোনা করছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ওই ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ আর ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে মহানগরীসহ খুলনার নয় উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, অস্থায়ী চালাঘর আর খোলা আকাশের নিচে বসেই পাঠদান চলছে এমন সরকারি ও সদ্য জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৮৬টি।

এগুলোর মধ্যে মহানগরীতে রয়েছে ৬টি, পাইকগাছায় ৩৪টি, কয়রায় ১৯টি, ডুমুরিয়ায় ৩৬টি, তেরখাদায় ১৩টি, দাকোপে ১৯টি, দিঘলিয়ায় ৯টি, বটিয়াঘাটয় ৩৮টি ও রূপসায় ১২টি।

এ হিসাব অনুযায়ী খুলনায় ১৭.৬৬ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী। আর এ বিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত রয়েছে অন্তত প্রায় ৪১ হাজার শিশু। এসব শিক্ষার্থী এ রকম নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে লেখাপড়া করছে।

পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সম্পর্কে ‘আজাদ বার্তা’ ২১তম সংখ্যায় প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ

পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শুভেন্দু কুমার বাহাদুর মনিরামপুর থেকে শাস্তিমূলক বদলী মাথায় নিয়েই পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। উর্দ্ধতন কর্মকর্তার পরামর্শ ছিল এই প্রতিবন্ধী খামখেয়ালী শিক্ষককে একটু বুঝিয়ে শুনিয়ে যাতে চাকুরীর নিয়ম কানুন মেনে চাকুরী করে সে দিকে যেন একটু সহানুভুতির দৃষ্টি দেওয়া হয়।

এরপর পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদানের পরই সে স্কুলে থাকা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে। প্রধান শিক্ষক উর্দ্ধতন কর্মকর্তার পরামর্শে তাকে সহানুভুতির সহিত বুঝানো সত্বেও বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ সহজভাবে ত্যাগ করেনি। এরপরই একটার পর একটা অঘটন ঘটিয়েই চলেছে। এর পেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক কয়েকজন শিক্ষককে তাকে বুঝাতে বলেন। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ পালন করতে গেলে অন্য শিক্ষকগণ তার কাছ থেকে চরমভাবে অপমানিত হন।

যখন আর কোন পথ খোলা থাকলো না তখন বাধ্য হয়ে তাকে শোকজ করতে হয়। এরপর তার বেয়াদবির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে তাকে আরও শোকজ করতে হয়। একটি বাদে সে অন্য কোন শোকজের জবাব দেয়নি। এই সময় তার অশোভনীয় আচরন মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক (মাত্র দুই জন বাদে) তার বদলী চায়। তারই একটি খসড়া কাগজ প্রধান শিক্ষকের টেবিল থেকে চুরি করে পালায় এই শিক্ষক।

এই কাগজ নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক স্থানীয় ‘আজাদ বার্তা’ পত্রিকার সম্পাদকের কাছে গেলে তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক, বানোয়াট, অবাস্তব, ভিত্তিহীন, সম্পুর্ণ মিথ্যা ও প্রতিহিংসামূলক সংবাদ পরিবেশন করে। ঐ সম্পাদকের কমিউনিটির বাইরে অন্য কমিউনিটির কেউ পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসলে তার বিরুদ্ধে তিনি এ ধরনের অবাস্তব, কল্পিত, বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করে আসছেন। আমরা এই বানোয়াট, নোংরা, অবাস্তব সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি এবং ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এখন কোন ট্রেড শিক্ষক নেই, সুতরাং এটা যে কল্পনাপ্রসূত এবং বানোয়াট তা শব্দ দুটি চয়নের মাধ্যমেই বোঝা যায়। আমাদের বিদ্যালয়ে বেসরকারি স্কুলের নিয়োগ পরীক্ষা হয়না বললেই চলে। তারপরও তা নিয়ে আবার কেস ! এতটা মিথ্যা, প্রতারণামূলক, নিচ সংবাদ যে, কেউ পরিবেশন করতে পারে তা আমাদের ভাবতেও লজ্জা হয়।

গাছের ডাল কাটা যাবে না এমন কোন বিধান নেই। বিদ্যালয়ের ছাদ রক্ষার্থে বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী এসে বলেছিলেন ডাল কাটতে। যে দিক দিয়ে ডাল কাটা হয়েছিল সে দিকের ছাদ ভালো আছে। যেখানে উপরে ডাল আছে সেই ছাদের রড মরিচা ধরে নিচে ছাদ খসে পড়ছে। আজ তা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ঐ সম্পাদক আসলে কি চান? প্রকৃতপক্ষে উনি চান স্কুলটি ধ্বংস হয়ে যাক ! বাস্তবে তাইই প্রতিয়মান হচ্ছে। স্কুলে কোন প্রাইভেট পড়ানো হয়না। অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হয়। এই সম্পাদক কি প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে কোন থোজ-খবর রাখেন না?

প্রাক্তন পিয়ন মোঃ নুরুল ইসলাম’এর ভাষ্য মতে, উনি নাকি তার একটি গোপনীয় বিষয়ে খুবই সাহায্য করতেন। ইদানিং তা না করায় মোঃ নুরুল ইসলাম সাহেবের উপর ক্ষেপে গিয়ে এই সংবাদ পরিবেশন করেছে।

একটি মিমাংসিত বিষয় নিয়ে তার লেখার একটাই কারণ, যাতে বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন না ঘটে, স্কুল কোন রকম উপকৃত না হয়। বর্তমানে যে সকল শিক্ষক আছেন তারা কেউই জানেন না যে, উনি কখনও একটি কথা দিয়ে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামান্যতম উপকার করেছেন। যেখানে বিদ্যালয়ের উপর অবিচারের বিরুদ্ধে পুরাতন, বর্তমান সকল ছাত্র এক কাতারে এসে দাড়িয়েছিল, উনি এখনও তার বিপক্ষে অবস্থান করছেন।

আসলে উনি কি চান? এটা সমস্ত অভিভাবক, বর্তমান ও পরাতন ছাত্র এবং বর্তমান শিক্ষকবৃন্দ বুঝতে অপারগ।

 

১ নভেম্বর ‘বাংলার খবর’-এ প্রকাশিত খবরের প্রতিবাদ ::


১ নভেম্বর ২০১৪ ‘বাংলার খবর’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন, অবাস্তব, বানোয়াট ও প্রতিহিংসামূলক। এই পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, শুভেন্দু কুমার বাহাদুর পরমানু শক্তি গবেষণা কেন্দ্র ও বাংলাদেশ পদার্থ বিজ্ঞান সমিতির একজন সদস্য। যে নাকি একটি দরখাস্তও সঠিকভাবে লিখতে পারে না, শেণীকক্ষে ক্লাস নিয়ন্ত্রন করে পাঠদান করতে পারে না, প্রশ্ন করতে পারে না, পরীক্ষার হলে ডিউটি দিতে পারে না, ভদ্র ভাবে কথা বলতে পারে না। পারে নিকৃষ্টতম মুখ খারাপ করতে, অভদ্র ব্যবহার করতে।

শুভেন্দু বাবু শিক্ষকদের মাঝে গল্প দিয়েছেন, টাকা দিয়ে সব হয়। ঐ সদস্যপদ কি তারই নমুনা?

অত্র বিদ্যাপিঠে কোনও কোচিং হয় না, যেটা হয় তা হয়তো তারা বোঝেনই না, কারণ বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে এ সমস্ত রিপোর্টার কোন ধারনা রাখে না। প্রধান শিক্ষকের অনুমতি সাপেক্ষে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের বিধানের মধ্যেই অতিরিক্ত ক্লাস হয়।

শুভেন্দু কুমার বাহাদুর’কে কেউ বলে ’মানসিক প্রতিবন্ধী’, কেউ বলে ’পাগল’, কেউ বলে ’সাইকো’। আসলে তার সম্পর্কে একটি প্রবাদ বাক্যই যথেষ্ঠ ’জাতে মাতাল তালে ঠিক’। কোমলমতি ছাত্রদের সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে উদ্র্ধতন বিভিন্ন অফিসে পাঠিয়েছে। অভিভাবকবৃন্দ জানার পর চরমভাবে তার উপর আক্রোশে ফেটে পড়েছে।

উল্লেখ্য, যদি সুস্থ মস্তিষ্কের ব্যক্তি হতেন তবে, শ্রেণীকক্ষের ব্লাকবোর্ডে বিশ্বকবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর’এর লেখা কবিতাকে ব্যাঙ্গ করে লিখতে ও বলতে পারতেন না, ’’বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবাই আমার ছাত্র, এই এলাকার যত বিবাহযোগ্য কন্যা আছে সব মেয়েরই আমি পাত্র।’’
 
অপু মন্ডল
প্রধান শিক্ষক
পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
পাইকগাছা, খুলনা।

পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় থেকে পাঠানো প্রতিবাদলিপিটি হুবহু সংযুক্ত করা হল।

Monday, November 17, 2014

বেষ্ট অফিসার্স ইনচার্জ শিকদার আককাস আলী

পাইকগাছা উপজেলায় অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় খুলনা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে গত ১৩ নভেম্বর 'বেষ্ট অফিসার্স ইনচার্জ' হিসেবে সম্মাননা পুরষ্কার পাওয়া ছাড়াও আরও কয়েকটি বিশেষ পুরষ্কারে ভূষিত হচ্ছেন পাইকগাছা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শিকদার আককাস আলী।

সংশিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, পাইকগাগছা থানায় শিকদার আককাস আলী ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে আইনশৃঙ্খলার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী করতে ও অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নেন। যার অংশবিশেষ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ৩০ জন বনদস্যু/জলদস্যু অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করেন। উদ্ধার করেন ৩০টি দেশী বিদেশী আগ্নেঅস্ত্র এবং ৬০ রাউন্ড গুলি। সুন্দরবনে বনদস্যুদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারকালে সম্প্রতি ১৩ বনদস্যু নিহত হয়। এসময় তিনি সহ চার পুলিশ সদস্য আহত হন।

মাদকদ্রব্যের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৮২ জনকে আটক করেন। এর মধ্যে ২৭ জনকে সর্ব্বোচ্চ ২ বছর সর্বনিম্ম ৬ মাস মেয়াদে বিনাশ্রম দন্ড, ৩০ জনকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার সর্বনিম্ম ১ হাজার টাকা জরিমানা এবং বাকীদের নামে মামলা হয়েছে। এসময় উদ্ধার হয়েছে ৪২৬ বোতল ফেন্সিডিল, ৫ কেজি গাজা, ৪৫ গ্রাম হিরোইন ও ৩০ লিটার দেশী বিদেশী মদ। ইতিমধ্যে ১৮ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেন। তামিল হয়েছে ৬৬৫টি গ্রেফতারি পরোয়ানা।

এমনিভাবে পাইকগাছা উপজেলায় অপরাধ দমনে বিশেষ অবদান রাখায় খুলনা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে গত ১৩ নভেম্বর 'বেষ্ট অফিসার্স ইনচার্জ' হিসেবে পাইকগাছা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শিকদার আককাস আলী সম্মাননা স্বরুপ ক্রেষ্ট ও সনদপত্র পেয়েছেন।

উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নবাসী বনদস্যুদের দমনে তারা নিরাপদ হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের মাধ্যমে ১৩ই অক্টোবর ক্রেষ্ট ও সনদপত্রের মাধ্যমে সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করেন।

আগামী ২২ নভেম্বর মাওলালানা ভাসানী ফাউন্ডেশন খুলনা (ওসি) শিকদার আককাস আলী‘কে “মাওলানা ভাসানী ন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড-১৪’’ পুরস্কার প্রদানের দিন নির্ধারণ করেছে বলে সংশিষ্ট দপ্তর থেকে প্রেরিত ১৩ নভেম্বরের পত্রে জানা গেছে। এছাড়া ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ তাকে একই রুপ পুরস্কারে ভূষিত করবেন বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন তথ্য সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে শিকদার আককাস আলী তার মতামত ব্যাক্ত কালে বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে হয়রানী নয় প্রকৃত অপরাধীদের দমন করতে পারলে আইন শৃঙ্খলার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব।

পাইকগাছা কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলায় কলেজ ছাত্র আহত

পাইকগাছায় বহিরাগত স্কুল ছাত্রদের হামলায় এক কলেজ ছাত্র আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বোরবার দুপুরে পাইকগাছা কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সরল গ্রামের কৃষ্ণপদ ওরফে বাবু গাইনের স্কুল পড়ুয়া ছেলে সৌরভের বন্ধু সমীরণের সাথে ১ নভেম্বর রাস্তায় চলার পথে সাইড দেয়াকে কেন্দ্র করে ৩নং ওয়ার্ড সরল গ্রামের দলিল লেখক আব্দুস সাত্তার গাজীর ছেলে ও পাইকগাছা কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমানের বাকবিতন্ডা হয়।

বিষয়টি নিরসনের লক্ষ্যে কলেজ ছাত্র রাকিব ও বাদশা ঘটনার দিন রোববার দুপুরে উভয়পক্ষকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বৈঠকে বসে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সৌরভ রড দিয়ে মোস্তাফিজের মাথায় সজোরে আঘাত করে।

এ সময় উপস্থিত কলেজ শিক্ষকরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল জানান, উভয়পক্ষের অভিভাবকদের মুচলেকা নেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নিরসন করা হয়।

Saturday, November 15, 2014

মাছ ধরার টোপ হিসেবে নালসো পিঁপড়ার ডিম ও বাচ্চা ব্যবহার করায় জীববৈচিত্র হুমকির মুখে

পাইকগাছাসহ উপকূল অঞ্চলের বিভিন্ন বাগান থেকে নালসো পিঁপড়ার বাসা ভেঙে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করায় নালসোর বংশ বিস্তার যেমন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে তেমনি জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। সৌখিন মাছ শিকারী বা মাছ শিকারীদের কাছে নালসোর ডিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মাছ ধরার টোপ হিসাবে যে কোন উপাদান থেকে নালসোর ডিম খুব উত্তম। নালসোর ডিমের টোপ বা চারে মাছ দ্রুত এসে ধরে। এ কারণে মাছ শিকারীদের কাছে নালসোর ডিমের চাহিদা থাকায় এলাকার বিভিন্ন বাগান থেকে নালসোর ডিম সংগ্রহ চলছে। সংগ্রহকারীরা নালসোর ডিম সাতক্ষীরা ও যশোরে প্রতিকেজী ৫০০  টাকা পাইকারী দরে বিক্রি করছে। সংগৃহীত ডিম ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় মৎস শিকারীদের কাছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। 

নালসো পিঁপড়া বাগানে বিভিন্ন গাছের পাতা মোড়াইয়ে বাসা তৈরি করে। গাছের পাতা দিয়ে বাসা তৈরির সময় নালসো তাদের লালা দিয়ে পাতার সঙ্গে পাতা মুড়িয়ে গোল বাসা তৈরি করে। পাতার সঙ্গে পাতা মোড়ানো নালসোর লালা টিসুপেপারের মত দেখা যায়। বাসার ভিতরে বিভিন্ন ধাপে ধাপে লালা দিয়ে বাসার ভিতরে কুটরি তৈরি করে।

নালসোর ডিম খুব ছোট থেকে বড় বড় মুড়ির মত তৈরি হওয়ার পর বাচ্চায় পরিণত হয়। ধপধপে সাদা বাচ্চাগুলি হাত পা সহ যেন ঘুমানো অবস্থায় দেখা যায়। ডিম সংগ্রহকারীরা এক একটি বাসা ভেঙে ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ডিম ও বাচ্চা পায়। ডিম সংগ্রহকারীরা লম্বা বাঁশের মাথায় কাপড় গোল পাত্র তৈরি করে বাসা ভেঙে ডিম সংগ্রহ করে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন বাগান থেকে বাসা ভেঙে ৪/৫ কেজি ডিম সংগ্রহ করতে পারে বলে জানা গেছে। 

ডিম সংগ্রহকারী সাতক্ষীরা জেলার বুধহাটা গ্রামের রহিম সরদার, ধুলিয়ারের করিম মোড়ল জানায়, তারা প্রতিদিন পাইকগাছা সহ বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে ডিম সংগ্রহ করে সাতক্ষীরায় নিয়ে পাইকারী বিক্রি করে আসে। এই ডিম যশোর ও ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। সেখানে ডিমের প্রতিকেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয় বলে জানায়। শীত শুরু হলে নালসোর ডিম পাওয়া না যাওয়ায় তারা প্রতিদিন বিভিন্নবাগান থেকে ডিম সংগ্রহ করছে।

নালসো পিঁপড়া বাগানের বিভিন্ন গাছে গাছে দেখা যায়। তারা গাছের পাতা মুড়িয়ে বাসা করে বসবাস করে। নালসো কোন উপকারে না আসলেও তেমন কোন ক্ষতি করে না। তবে বিভিন্ন ফলের মুকুল বা কচি পাতা মুড়িয়ে তারা পোকামাকড় ধরে খায়। 


এলাকার বিভিন্ন বাগান থেকে নালসো পিঁপড়ার বাসা ভেঙে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করায় নালসোর বংশ বিস্তার মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে ও পাশাপাশি জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এভাবে নালসোর বাসা ভেঙে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করলে জীববৈচিত্র থেকে এক সময় নালসো পিঁপড়া হারিয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে।

Friday, November 14, 2014

পাইকগাছায় ডায়াবেটিসে ভুগছে ৩০ হাজার মানুষ

রোগ প্রতিরোধ ও জনসচেতনায় ভূমিকা রাখছে ডায়াবেটিস সেন্টার


পাইকগাছায় প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে উপজেলায় নিরব এ ঘাতকে ভুগছে ৩০ হাজার মানুষ। জটিল এ রোগ প্রতিরোধ ও জনসচেতনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে পাইকগাছা ডায়াবেটিস সেন্টার। আজ ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষ্যে পাইকগাছা ডায়াবেটিস সেন্টারের পক্ষ থেকে র‌্যালী, সেমিনার, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ আয়োজন করা হয়েছে নানান কর্মসূচী। 

পাইকগাছায় প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন ডায়াবেটিস আক্রান্ত !




বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস একটি নিরব ঘাতক। যার কারণে হৃদরোগ, ব্রেণ স্ট্রোক, কিডনী রোগ, পায়ে পচন ধরা, চোখের অসুখ ও যৌণ ক্ষমতা কমে যাওয়া বহুগুণ বেড়ে যায়। বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ হাজার মানুষ নিরব এ ঘাতকে আক্রান্ত।

এক সময় সচেতনার অভাবে এ রোগ পুশে রাখত অধিকাংরাই। নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ত আক্রান্তকারীরা। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে কেউ যাতে মৃত্যুবরণ না করে এ লক্ষ্যেই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদউল্লাহ ২০১৩ সালে উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠা করেন পাইকগাছা ডায়াবেটিস সেন্টার। সেন্টারটিতে গত ১ বছরে নিয়মিত রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪০০ এবং অনিয়মিত রোগীর সংখ্যা হাজারেরও অধিক বলে জানিয়েছেন সেন্টার ইনচার্জ শেখ সেলিম।

সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ডাঃ মোহাঃ শেখ শহীদুল্লাহ জানান, ডায়াবেটিস একটি নিরব ঘাতক। খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা ৬.১ থেকে মিঃ মোল/লিঃ থেকে ৭.০ মিঃ মোল/লিঃ এবং খাওয়ার পর ৭.৮ থেকে মিঃ মোল/লিঃ থেকে ১১.০০ মিঃ মোল/লিঃ এর বেশী হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, যে সকল মানুষ নিয়মিত ব্যায়াম করেন না অপেক্ষাকৃত বেশী ওজনধারী, অপরিমিত খাবার খান, নিয়মিত ধুমপান করেন, বংশে ডায়াবেটিস আছে এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকেন তাদের ডায়াবেটিস জনিত অসুখের পরিমাণ বেশী হয়। ডায়াবেটিস ও ডায়াবেটিস জনিত জটিলতায় প্রতি ৮ সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যায় বলে তিনি জানান।

ডায়াবেটিস সেন্টারের মাধ্যমে গত ১ বছরে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক সময় মানুষ এ রোগ পুশে রাখত। বর্তমানে বছরে একবার হলেও এলাকার মানুষ ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেন। পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে ব্যায়াম বা হাটা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান।

আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বানের মধ্য দিয়ে আজ ১৪ নভেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০১৪। এবারের প্রতিপাদ্য- ‘প্রাতঃরাশেই শুরু স্বাস্থ্যকর খাদ্যের’। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। আর বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪০ কোটি। যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হল বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিশ্বময় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ক্যাম্পেইন, যা প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায়,বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালে ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এদিন বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সঙ্গে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন।

২০০৭ সালে সিদ্ধান্ত হয়, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ অভিযান পরিচালনার থিমটি আরও দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস ২০০৭-০৮ এর থিম নির্ধারিত ছিল ‘শিশু ও তরুণদের মধ্যে ডায়াবেটিস’। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের থিম নির্ধারিত হয়েছে, ‘ডায়াবেটিস শিক্ষা ও প্রতিরোধ’।

এ দিবসের নীল বৃত্তের ‘লোগো’টি ডায়াবেটিসকে পরাভূত করার জন্য বিশ্বব্যাপী লড়াইয়ের সূচক। লক্ষ্য হলো, পৃথিবীতে কোনো শিশুই যেন ডায়াবেটিসে মারা না যায়। ডায়াবেটিসের মতো ক্রনিক রোগ ব্যক্তি, পরিবার, দেশ, এমনকি সারা পৃথিবীর জন্য গুরুতর ঝুঁকি বহন করে -এমন সত্যটি জাতিসংঘ অনুধাবন করে ২০০৬ সালে একে জাতিসংঘ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। পৃথিবীতে ২৫০ মিলিয়ন লোক ডায়াবেটিস নিয়ে জীবন যাপন করছে।

পাইকগাছায় ঔষধ স্বল্পতা এবং অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা

নিরাপদ পানি বঞ্চিত ৩৩ ভাগ মানুষ; সেনিটেশনের বাইরে ১৭ ভাগ


পাইকগাছায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ঔষধ স্বল্পতা এবং অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৫টি এলাকায় এখনো গড়ে উঠেনি কমিউনিটি ক্লিনিক। ফলে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ওই সব এলাকার ৫০ হাজার মানুষ। এলাকাবাসীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনা বৃদ্ধি পেলেও এখনও ১৭ ভাগ মানুষ অস্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার করছে। নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত রয়েছে ৩৩ ভাগ মানুষ। যার কারণে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বাস্তবমুখী পদক্ষেপে গত কয়েক বছর এলাকায় শিশু ও মাতৃ মৃত্যু নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।


সূত্র মতে, জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত পাইকগাছা উপজেলা। উপজেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। উপজেলার বিপুল এ জনসংখ্যার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত হিমসিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, ৪টি ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৬টি সাব উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ৩৪টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২২১টি গ্রামের সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।

সরকারি এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ২৯ প্রকার ঔষধ সরবরাহ করা হয় বলে উপজেলা স্বস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আবুল ফজল দাবী করলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ, যে পরিমাণ ঔষধ সরবরাহ করা হয় সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ঔষধ স্বল্পতার পাশাপাশি রয়েছে অবকাঠামোগত সমস্যা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংকট।

উপজেলার লতার তেতুলতলা, সোলাদানা, সোনাখালী, লস্কর, গড়ইখালী, কুমখালী ও পাতড়াবুনিয়ায় এখনও পর্যন্ত গড়ে উঠেনি কোন কমিউনিটি ক্লিনিক। ফলে স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হয় ৫ হাজার মানুষকে। কুমখালী গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, নিকটবর্তী কোন সেবা কেন্দ্র না থাকার ফলে বাধ্য হয়ে অনেকটা পথ পাড়ী দিয়ে পার্শ্ববর্তী কেন্দ্রে যেতে হয়। এলাকাবাসীর মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনা বৃদ্ধি পাওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রতিদিন ২০০-৩০০ লোকের আগমন ঘটে। ক্লিনিকগুলোতে ১ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইটার সপ্তাহে ৬ দিন, একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী ৩ দিন এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারী ৩ দিন সেবা প্রদান করে থাকেন।

সরকার ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহায়তায় মোট জনসংখ্যার ৮৩% মানুষ স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারের আওতায় আসলেও এখনও ১৭ ভাগ মানুষ খোলা জায়গা ব্যবহার করে আসছে। অগভীর নলকুপ, রেইন ওয়াটার, হারভেস্ট এ টি.এস.এফের মাধ্যমে ৬৭ ভাগ মানুষের নিরাপদ খাওয়ার পানি ব্যবস্থা থাকলেও ৩৩ ভাগ মানুষ অনিরাপদ আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে বলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শেখ সরফরাজ আলী জানান।

সক্ষম দম্পত্তি সহ সাধারণ মানুষকে সচেতন করার ফলে গত কয়েক বছর এলাকায় কোন শিশু ও মাতৃমৃত্যু নেই বলে দাবী করেছেন সাবেক উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুকলাল বৈদ্য।

নতুন নতুন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন, জনবল বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ ও জরাজীর্ণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র সমূহ অবকাঠামো সংস্কার করার মাধ্যমে এলাকার শতভাগ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হোক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

Wednesday, November 12, 2014

শ্রী শ্রী কালি পূজা (ছালুবুনিয়া, পাইকগাছা)

মঙ্গলবার রাতে পাইকগাছার ছালুবুনিয়ায় শ্রী শ্রী কালি পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, কালি প্রতিমার উচ্চতা ১৪ হাত অর্থাৎ প্রায় ২১ ফুট।

Tuesday, November 11, 2014

কয়রা উপজেলার হাতিয়ারডাঙা রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম

কপোতাক্ষের ভয়ানক নয়নাভিরাম রুপ!

ভয়েস অফ পাইকগাছার পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনতিবিলম্বে দুর্নীতিমুক্ত কপোতাক্ষ খনন প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানাই। 

ছবিটি পাইকগাছা ও তালা উপজেলার সীমান্তবর্তী ঘোষনগর থেকে তোলা।

Thursday, November 6, 2014

পাইকগাছায় রাস পূর্ণিমা তিথিতে পূণ্যস্নান করছেন পূণ্যার্থীরা

পাইকগাছায় লতা ইউনিয়নের কাঠামারী গুনখালী নদীতে রাস পূর্ণিমা তিথিতে পূণ্যস্নান করছেন পূণ্যার্থীরা। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে রাস পূর্ণিমা উৎসব পালন করা হয়।

ছবি :: Aziz Sarder

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৪ রুটিন

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর ওয়েবসাইট :: www.dpe.gov.bd

 

দুবলার চরে ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব শুরু

বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে দুবলার চরের আলোরকোলে বসেছে তিন দিনব্যাপী রাসমেলা। বনবিভাগ থেকে মেলায় যাওয়ার জন্য এবং সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার পর নির্ধারিত ৮টি রুটে শত শত নৌকা, ট্রলার, লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানে যোগে দর্শনার্থীরা যাত্রা করে।

রাস উৎসবের আয়োজকরা জানান, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের ভরা পূর্ণিমায় সাগর পাড়ের দুবলার চরে অনুষ্ঠিত হয় ৩ দিনব্যাপী রাস উৎসব। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান ও প্রতিবেশী দেশসহ দেশি-বিদেশী লক্ষাধিক দর্শনার্থী এবং তীর্থ যাত্রীর ঢল নামে দুবলার চরে। এ সময় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার পদচারণায় মুখোরিত হয়ে ওঠে পুরো সাগর পাড় এলাকা।

এবার তিথি অনুযায়ী ৫ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ৭ নভেম্বর প্রত্যুষের জোয়ারে সাগরে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এ মেলা শেষ হবে। মেলায় হস্ত ও কুটির শিল্পের কয়েক’শ দোকানী পসরা সাজিয়ে বসেছে। এছাড়া জারি-সারি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। মেলাকে ঘিরে সাগর-সুন্দরবনে বিপুল সংখ্যক কোস্টগার্ড, র‌্যাব, বন বিভাগ ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Wednesday, November 5, 2014

সু-সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হক’এর ১৩২তম জন্মজয়ন্তী পালিত

পাইকগাছায় সু-সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হক’এর ১৩২তম জন্মজয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স.ম বাবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক। 

বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ কামরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু, ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক মলঙ্গী, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডল, অবঃ অধ্যাপক রমেন্দ্র নাথ সরকার, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া বানু ডলি, প্রধান শিক্ষক হরেকৃষ্ণ দাশ, সমাজসেবা অফিসার দেবাশিষ সরদার, শেখ মনিরুল ইসলাম ও কাজী জামানউল্লাহ।

বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক প্রকাশ ঘোষ বিধান, দাউদ শরীফ, মুনসুর আলী, এ্যাড. শফিকুল ইসলাম কচি, রনজিৎ সরদার, প্রানকৃষ্ণ দাশ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রভাষক মাদুসুর রহমান মন্টু।

উল্লেখ্য, সু-সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হক ১৮৮২ সালের ৪ নভেম্বর খুলনা জেলার পাইকগাছার গদাইপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী আতাউল হক মুক্তরী পাস করে খুলনার ফৌজদারী আদালতে আইন ব্যবসা করতেন। কাজী ইমদাদুল হক পারিবারিক পরিবেশে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর খুলনা জেলা স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন।

১৮৯৬ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৮৯৮ সালে এফএ পাস করেন। কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি পদার্থবিদ্যা ও রসায়নশাস্ত্রে অনার্স নিয়ে ডিগ্রি ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তিনি পাস কোর্সে বিএ পাস করেন। ১৯০৩ সালে তিনি বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসে নির্বাচিত হয়ে কলকাতা মাদ্রাসায় অস্থায়ী শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৯০৬ সালে আসামের শিলংয়ে শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর অফিসের উচ্চমান সহকারী পদে যোগ দেন। ১৯০৭ সালে ঢাকা মাদ্রাসার শিক্ষক পদে নিয়োজিত হন। ১৯১১ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভূগোলে প্রভাষক নিযুক্ত হন। ১৯১৪ সালে তিনি ঢাকা বিভাগে মুসলিম শিক্ষার সহকারী স্কুল পরিদর্শক নিযুক্ত হন। ১৯১৭ সালে তিনি কলকাতা টিচার্স ট্রেনিং স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদে যোগদান করেন। ১৯২১ সালে ঢাকা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রথম সচিব নিযুক্ত হন।

শিক্ষা বিভাগের কাজে গভীর দায়িত্ববোধ, অসামান্য দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তির স্বীকৃতি স্বরূপ তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯১৯ সালে খান সাহেব ও ১৯২৬ সালে খান বাহাদুর খেতাবে ভূষিত করেন।

১৮৯৬ সালে কাজী ইমদাদুল হক স্কুলে পড়াকালীন কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৯০৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ আখি জল প্রকাশিত হয়। নবী কাহিনী ও কামারের কান্ড তার শিশুতোষ গ্রন্থ। তিনি শিক্ষক নামে মাসিক প্রত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। সাহিত্য সৃষ্টি হিসেবে তার সর্বশ্রেষ্ট কৃত্তি আব্দুল্লাহ উপন্যাস।

১৯১৮ সালে কঠিন অন্ত্রপাচারে কাজী ইমদাদুল হক হাসপাতালে থাকাকালীন তিনি আব্দুল্লাহ উপন্যাস রচনা করেন। উপন্যাসে ৪১ পরিচ্ছেদে ৩০ পরিচ্ছেদ রচনা করেন বাকী অংশটুকু খসড়া রেখে মারা যান। পরে কাজী আনারুল কাদিরের দায়িত্বে ৩১ থেকে ৪১ পরিচ্ছেদের খসড়া অংশটি নিয়ে উপন্যাসটির পূর্ণাঙ্গ রুপদান করেন। ১৯২৬ সালের ২০মে তিনি মাত্র ৪৪ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। কলকাতার গোবরা কবর স্থানে তার মায়ের কবরের পাশে তার কবর দেওয়া হয়। ইমদাদুল হকের মৃত্যুর পর আব্দুল্লাহ উপন্যাস গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হয়।

পাইকগাছায় প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে এমপি নূরুল হকের সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছায় আ’লীগ নেতা গাজী মোহাম্মদ আলী ও প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন খুলনা-৬ পাইকগাছা কয়রার এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক। বুধবার সকালে পৌর সদরস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমপি নূরুল হক বলেন, সংসদ সদস্য হিসাবে বিগত ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল মেয়াদে নির্বাচনী এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা হয়। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে বর্তমান মেয়াদেও যাতে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে না পারি এজন্য প্রতিদ্বন্দ্বী চক্ররা আমার অনুপস্থিতির সুযোগে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে চরম মিথ্যাচার করে চলেছে।

তিনি বলেন গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা ছাড়াই মনগড়া, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী, অগ্রহনযোগ্য আহবায়ক কমিটির সভা আহবান করেন। সভায় উপস্থিত ত্যাগী ও জৈষ্ঠ্য ও পদবঞ্চিত নেতৃবৃন্দ আহবায়কের নিকট কমিটি থেকে বাদ দেয়ার কারন জানতে চাইলে গাজী মোহাম্মদ আলী ও মোঃ রশীদুজ্জামান ঐদ্ধত্বপূর্ণ আচারণ করলে নেতাকর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়।

এসময় গাজী মোহাম্মদ আলী কমিটিতে থাকবো না মর্মে লিখিতভাবে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় কিছু নেতাকর্মী লাঠি, সোটা নিয়ে মিছিল আকারে এসে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মারপিট করে। এসময় আমি ও আমার বড় পুত্র মনিরুল ইসলাম নিজ গাড়িতে করে গাজী মোহাম্মদ আলীকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেই।

পরিস্থিতি শান্ত হলে এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ও আমার পুত্র জরুরী চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতের কোলকাতায় যাই। চিকিৎসা শেষে ১ নভেম্বর খুলনায় ফিরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত বানোয়াট, মিথ্যা খবর ও আহবায়কের কথিত সংবাদ সম্মেলন দেখে বিষ্মিত হই।

আ’লীগের কথিত আহবায়ক, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা একত্রিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মনগড়া, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনয়নের চেষ্ঠা করছেন। অথচ ২০০৯ সালে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনী এলাকায় তৃনমূলের সমর্থন সংগ্রহকালে আমাদের অনুপস্থিতিতে আমি ৩৮৭ এবং সোহরাব আলী সানা ৫৭ কাউন্সিলের সমর্থন পান।

সোহরাব আলী সানা নির্বাচিত হওয়ার গত ৫ বছরে তার কাজে আমার পক্ষের কোন নেতাকর্মী বাঁধা সৃষ্টি না করলেও বর্তমানে আমি যাতে সুষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারি সেজন্য আজ তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে মিথ্যার উপর নির্ভর করে আমাদের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করতে একের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনের নামে মিথ্যাচার করছেন।

জেলা নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন বিগত ৬/৭ বছর জেলা আ’লীগের মিটিং সিটিং দূরে থাক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত ছিল না। এমনই অবস্থার প্রেক্ষাপটে গত ৩ আগষ্ট হঠাৎ করে জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহবান করা হয়। সভায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত না নিয়ে শুধুমাত্র তেরখাদা ও পাইকগাছা উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে শরফুদ্দিন বাচ্চু ও গাজী মোহাম্মদ আলীকে আহবায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

পরে আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী পৌর বাজারস্থ সবুর হোটেলে স্থায়ীভাবে রুমভাড়া করে সোহরাব আলী গংদের সাথে মিলে সদস্য সংগ্রহের নামে বানিজ্য শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের সুযোগ পেয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে মোটা অংকের চাঁদা তোলেন। অথচ আমার সাথে আলোচনা না করলেও এ অনুষ্ঠানে আমি ৩০ হাজার ও ৩০ শে আগষ্ট বিশেষ বর্ধিত সভায় ২৫ হাজার টাকা প্রদান করি।

প্রদানকৃত টাকা কাঙ্গালীভোজে খরচ না করে প্রায় ১৫/২০ হাজার টাকা তিনি উদবৃত্ত রেখে দেন। বিশেষ বর্ধিত সভায় জেলা নেতৃবৃন্দ কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে অনেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করে ইচ্ছামত তাদের পছন্দনীয় লোককে আহবায়ক পদে মনোনয়ন দেন।

তিনি বলেন সাবেক সংসদ সদস্য যাদেরকে নিয়ে বিগত দিনে ঘের দেখল, ঘাট দখল, টিআর কাবিখার খাদ্যশষ্য ভাগাভাগি বিক্রয়ের মহাউৎসবে লিপ্ত ছিলেন তাদেরকেই পুনরায় এডহক কমিটিতে অন্তভূক্ত করার মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।

গত ২৬ অক্টোবর কোন সভা না হওয়া সত্ত্বেও হরিঢালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার গোলাম মোস্তফাকে বহিষ্কার করা সম্পূর্ণ বানোয়াট ভিত্তিহীন মনগড়া উল্লেখ করে এমপি হক বলেন, গাজী মোহাম্মাদ আলী এলাকায় না এসে খুলনা সদরে বসে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দল চালানোর কৌশল আয়ত্ত করছেন যা আদৌ কাম্য ও গনতান্ত্রিক নয়।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি গাজী মোহাম্মদ আলীকে ষড়যন্ত্র পরিহার করে সরদার গোলাম মোস্তফার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। আ’লীগের গণ ঐক্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এসময় দলীয় নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পাইকগাছায় দুর্ধর্ষ 'বাবু গাইন'এর বিরুদ্ধে ধর্ষন চেষ্ঠার অভিযোগ

আহত গৃহবধু হাসপাতালে ভর্তি, থানায় মামলা, আটক ১


পাইকগাছায় বহু অপকর্মের হোতা দুর্ধর্ষ যুবনেতা বাবু গাইনের বিরুদ্ধে এবার ধর্ষন প্রচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় সে এলাকার এক গৃহবধুকে ধর্ষনের চেষ্ঠা করে। আহত গৃহবধুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

থানাপুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার শান্তা গ্রামের ইয়াসিন শিকারীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২) বসত ঘরের খাটের উপর শিশু সন্তানকে দুধ পান করাচ্ছিল। এসময় বাাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে গড়ইখালী গ্রামের কেসমত গাইনের পুত্র দুধর্ষ যুবনেতা বাবু গাইন ঘরের ভিতর প্রবেশ করে সৌর বিদ্যুতের আলো বন্ধ করে গৃহবধুর উপর ঝাপিয়ে পড়ে।

এসময় বাঁধা দিতে গেলে বাবু গাইন গৃহবধুকে বিবস্ত্র করে মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষনের চেষ্ঠা করে এবং গৃহবধুকে কিল, ঘুষি, মারপিট করে জখম করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে গৃহবধুর স্বামী ঘরে প্রবেশ করলে তাকে লাথি মেরে পাহারারত সহযোগিদের নিয়ে বাবু গাইন পালিয়ে যায়। ওই রাতেই আহত গৃহবধুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গৃহবধু ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে বাবু গাইন, ভাই কামরুল গাইন, লুৎফর মোড়লের পুত্র রবিউল মোড়ল ও আমিন গাজীসহ ৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা করে, যার নং-৬। তারিখ ৪/১১/১৪। এ ঘটনায় পুলিশ কামরুল গাইনকে গ্রেফতার করেছে।

উল্লেখ্য, দুর্ধর্ষ এ যুবনেতার চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ডে বিগত ৫ বছর এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে ওঠে। উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় তাকে গ্রেফতারের দাবী করা হয়। সাবেক এমপি’র ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন এ নেতা প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরে থাকলেও র‌্যাব একবার তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজি ও বন আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।

এ ব্যাপারে ওসি শিকদার আক্কাস আলী জানান, ধর্ষন চেষ্ঠার ঘটনায় ১ জনকে আটক করা হয়েছে এবং মূল আসামীকে গ্রেফতারের প্রচেষ্ঠা অব্যহত রয়েছে।

Sunday, November 2, 2014

বাহাদুরের অনাকাঙ্খিত বাহাদুরিতে অতিষ্ঠ পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় !

সহকারী শিক্ষক সুভেন্দু বাহাদুর’এর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ


পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভৌতবিজ্ঞান শিক্ষক সুভেন্দু বাহাদুর’এর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর অভিযোগ দিয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক হিসাবে সুভেন্দু বাহাদুর গত ২৯/০৩/২০১৪ ইং তারিখ অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর হতে তিনি ঠিকমত স্কুলে আসেন না এবং সময়মত শ্রেণীকক্ষেও যান না, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন না। এমনকি সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্রও ঠিকমত তিনি করতে পারেন না বলে ছাত্ররা পাঠদান ও পরীক্ষা দিতে অপারাগতা প্রকাশ করে। এসকল অভিযোগের পাশাপাশি তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে অসাদাচারণ করেন।

এসব নানাবিধ অভিযোগে কর্তৃপক্ষ গত ২১/০৮/১৪ এবং ২২/১০/১৪ সহ একাধিকবার শোকজ করেন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে অসদাচারণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর মহা-পরিচালক বরাবর বদলী ও অপসারনের আবেদন করেন।

এসব অভিযোগের পর অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেকে রক্ষা করতে পাশ করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ও ফেল করার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন ছাত্রদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রেণীশিক্ষক (১০ম শ্রেণী) মোঃ ইমরুল ইসলাম জানান, উনি (সুভেন্দু) ছাত্রদের বিপদগামী করতে ব্লাক বোর্ডে অশ্লীল কথাবার্তা লেখেন।

এ ব্যাপারে প্রধান অপু মন্ডল জানান, সুভেন্দু বাহাদুরের আচার-আচারণ এবং ঠিকমত স্কুলে না আসার ফলে বিদ্যালয়ের শৃৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি সুযোগ পেলেই অফিসিয়াল কাগজপত্র তছরোপ করেন এবং ছাত্র, শিক্ষক এবং অভিভাবকরা তার কাজে কর্মে সন্তোষ্টু নয়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বদলীর সুপারিশসহ অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক সুভেন্দু বাহাদুর বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের কাগজটি আমি উদ্ধার করি। অন্যসব অভিযোগগুলো তিনি অস্বীকার করেন।

Tuesday, October 21, 2014

পাইকগাছায় অবহেলিত যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা

১০টি ইউনিয়নে ৩৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, বিদ্যুৎবিহীন ২৪ গ্রাম


স্বাধীনতার গত ৪৪ বছরে এখনো পর্যন্ত কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি খুলনার পাইকগাছা উপজেলায়। ৩৬৫ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। দুইটি ইউনিয়নে এখনো গড়ে উঠেনি কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩৬টি ক্লিনিকের মধ্যে জরাজীর্ণ রয়েছে ১৯টি। ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। এখনো পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছাইনি অনেক ইউনিয়নে। ফলে আধুনিকতার ছোঁয়া থেকে দুরে রয়েছে ২৪ গ্রামের মানুষ।

জানা গেছে, জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে পাইকগাছা উপজেলা। উপজেলা থেকে কৃষি, মৎস্য ও বনজ সম্পদ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার রাজস্ব পেয়ে থাকলেও স্বাধীনতার গত ৪৪ বছরেও কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার।

উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত কাঁচা রয়েছে ৩৬৪.৫৯ কিলোমিটার রাস্তা। নাজুক এ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে দুর্গম এলাকার মানুষ। স্বাস্থ্য খাতে বেশ কিছু উন্নয়ন পরিলক্ষিত হলেও উপজেলার সোলাদানা ও গড়ইখালী ইউনিয়নে এখনো গড়ে উঠেনি কমিউনিটি ক্লিনিক। বর্তমানে ১০ ইউনিয়নে ৩৬টি ক্লিনিক চালু থাকলেও ১৯টি ক্লিনিকের অবস্থা জরাজীর্ণ। ফলে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

আধুনিক জীবনযাপনে বিদ্যুৎ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও লতা ইউনিয়নের গঙ্গারকোনা, কাঠামারী, বাহিরবুনিয়া, পানা, শামুকপোতা, পুটিমারী, গদারডাঙ্গা, হানিরাবাদ, আসাননগর, গোয়াছোবা, রেখামারী, হালদারচক, তেতুলতলা ও দেলুটি ইউনিয়নের বিগরদানা, হাটবাড়ী, গোপীপাগলা, ফুলবাড়ী, সৈয়দখালী, দুর্গাপুর, তেলিখালী, কালিনগর, সেনেরবেড়, হরিণখোলা, দারুনমল্লিক, নোয়াইসহ দুই ইউনিয়নের ২৪টি গ্রামে এখনো পৌঁছাইনি বিদ্যুতের আলো। ফলে আধুনিক জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত রয়েছে দুই ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষ।

অবহেলিত এ উপজেলার যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ খাত সহ সার্বিক উন্নয়নে সরকারের মনোযোগ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

কপিলমুনির কাশিমনগর লোকনাথ মন্দির হয়ে উঠেছে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের সাধনাস্থল

কপিলমুনি শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্রচারী শান্তি নিকেতন এতদাঞ্চলের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যেন সাধনার পিঠস্থল। পূজাপার্বনে অসংখ্য ধর্মপ্রাণ সনাতনীদের অংশ গ্রহণে মন্দিরটি সাধনার অন্যতম স্থানে পরিণত হয়েছে।



জানা যায়, ২০০০ সালে খলিলনগর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বিধান চন্দ্র রায়ের সাথে ঘোষনগর গ্রামের প্রয়াত অঘোর চন্দ্র পালের পুত্র নকুল চন্দ্র পালের পরিচয় হয়। তারা আলোচনার মধ্যদিয়ে কশিমনগর-ঘোষনগর এলাকায় শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্রচারীর একটি দর্শনীয় মন্দির স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এক পর্যায়ে কপিলমুনি ও খলিলনগরের সর্ব সাধারণের সহযোগিতায় ওই বছরই মন্দিরটি স্থপন হয়।

বর্তমানে মন্দিরটি পরিচালনার জন্য ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকারী পরিষদ রয়েছে। কমিটির কর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে একটু একটু করে মন্দিরটির অবকাঠামোগত প্রসার ঘটিয়ে চলেছেন। ২০০৭ সালে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ তলা মন্দিরের ভবন তৈরী করা হয়। ভবনটি শুভ উদ্বোধন করেন আশাশুনি সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমত স্বামী সোমা নন্দজী মহারাজ। ৩ তলা ভবনের ১ম তলায় লোকনাথ মূর্তি, ২য় তলায় শিব-কালি মূর্তি ও ৩য় তলায় রাধাকৃষ্ণ মূর্তি স্থাপন করা হয়।

শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, মন্দির প্রাঙ্গনে ২০১০ সালে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয় যা এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। গত দেড় বছর পূর্বে সমাজ সেবক সুভাষ চন্দ্র পালের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা পায় দাতব্য চিকিৎসালয়, প্রতি শুক্রবার এখানে দু’ জন হোমিও প্যাথিক ডাক্তারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হয়।

প্রতিবছর ৫ দিন ব্যাপী নামযজ্ঞ সহ ধর্মীয় উৎসব পালন করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গনে রয়েছে একটি পুকুর, ফুল বাগান, ১ জন সেবাইত, সীমানা প্রাচীর, দুটি গেট, সুভাষ চন্দ্র পালের অর্থায়নে প্রায় ১৫লাখ টাকা ব্যয়ে প্রধান গেট নির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণাধীন গেটটি খুবই করুকার্যপূর্ণ, সু-উচ্চ ও দর্শনীয় হবে বলে জানান মন্দিরের কর্মকর্তা এ্যাডঃ জয়ান্ত কুমার পাল। মন্দিরটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোন সরকারি অনুদান ছাড়াই নির্মাণে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে জানা যায়।

শিবসা ব্রীজ (নয়নাভিরাম পাইকগাছা)


Sunday, October 19, 2014

জেনে নিন ভয়ংকর ভাইরাস ইবোলা’র আদ্যোপান্ত

পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরেছে ইবোলা ভাইরাস। ইতোমধ্যে বহু লোক মারা গেছে। ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। আশঙ্কার ব্যাপার হলো পশ্চিম আফ্রিকাতে বিভিন্ন শান্তি মিশনে কর্মরত রয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর শান্তিরক্ষীরা। যাদের মাধ্যমে বংলাদেশেও চলে আসতে পারে এই ভাইরাস। তাই এই ভাইরাস সম্পর্কে সবারই জেনে রাখা উচিত, আর এ জন্য ভয়েস অফ পাইকগাছা তুলে ধরছে ইবোলা ভাইরাস সম্পর্কে আদ্যোপান্ত তথ্য ::


এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কৃত হয়নি এখনও। নেই কোনো কার্যকর ওষুধ। তাই নেই তেমন কোনো চিকিৎসাও। এই প্রাণঘাতী 'ইবোলা ভাইরাস' শনাক্ত করার কোনো ধরনের ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেই বাংলাদেশে। বিশেষজ্ঞদের মতে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশ। একজন আক্রান্তের সংস্পর্শে আসলেই আক্রান্ত হচ্ছে অপরজন। মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ঘটাতে পারে স্মরণাতীত কালের ভয়াবহ মহামারী। কারণ এখানে আমরা একই ব্যক্তির জিনিস ব্যবহার করি বহুজন, প্রতি মুহূর্তেই আমরা লেগে আছি কারো না কারো স্পর্শে, অফিসে, রাস্তায়, ফুটপাতে, বাসে, দোকানে।

 

প্রথমে জেনে নেয়া যাক ইবোলা কি?


ইবোলা ভাইরাস আগে রক্তপ্রদাহজনিত জ্বর [Ebola hemorrhagic fever (EHF)] হিসাবেই সমধিক পরিচিত ছিল। ইবোলা মূলত একটি আরএনএ ভাইরাস। যেটির নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গোর ইবোলা নদীর নাম থেকে। ইবোলা ভাইরাস গোত্রের ৫টির মধ্যে ৩টি প্রজাতি মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ করার ক্ষমতা রাখে! বাকি ২টি মানুষের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে জাইরে (Zaire) ইবোলা ভাইরাস (জাইরে হলো একটি জায়গার নাম যেখানে সর্বপ্রথম এই ভাইরাসে কোনো মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলো)। প্রথমবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল শতকার ৯০ শতাংশ! ভয়াবহ এই ভাইরাসটি মানবদেহে রক্তপাত ঘটায়। লিভার, কিডনিকে অকেজো করে দেয়, রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কমিয়ে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত করে।

ইবোলা ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশের পর কয়েকদিন থেকে প্রায় ৩ সপ্তাহ কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই অবস্থান করতে পারে। অর্থাৎ এর লক্ষণসমূহ পরিলক্ষিত হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ২১দিন লাগতে পারে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি এই রোগ নিয়ে চলে যেতে পারেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। আর সেখানে ছড়িয়ে দিতে পারেন নিজের অজান্তেই।

 

ইবোলার লক্ষণ ::


ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নিরীহ ফ্লু’র মতো হালকা জ্বর, মাথা ব্যাথা, শরীর ব্যাথা অনুভব করে। কিছুদিন পর তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা, ত্বকে দানা দানা উঠা, মুখে ঘা, ডায়রিয়া এবং মারাত্মক বমি শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে শরীরের ভিতরে বাইরে রক্তপাত শুরু হতে পারে। এই ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, কিডনি, হার্ট অকেজো করে দেয় যার ফলে রোগীর মৃত্যু ঘটে।

এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ ফ্লু’র মতোই। সর্দি কাশি, মাথা ব্যাথা, বমি, ডায়েরিয়া এবং জ্বর এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। তাই কারো উপরোক্ত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে! রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হ্যাপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনো রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে কিনা!

 

কিভাবে ছড়ায়?


বলা হয়ে থাকে বাদুরের খাওয়া ফল থেকেই ইবোলা ভাইরাস মানুষের দেহে প্রথম প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করে। ইবোলা আক্রান্ত মানুষের দেহরস অপর কোনো মানুষের দেহের স্পর্শে আসলে সেই ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পরও ভাইরাসটি বেশ কয়েকদিন টিকে থাকে।

আশার কথা হলো, রোগটি ফ্লু ও অন্যান্য বায়ুবাহিত রোগের মতো ছড়ায় না, আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে না আসলে এই রোগে সংক্রমিত হবার ভয় নেই।

 

চিকিৎসা ::


রিহাইড্রেশন এবং হালকা বেদনানাশক দিয়ে করা হচ্ছে ইবোলা আক্রান্তের চিকিৎসা। খুব একটা কার্যকরী কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। নেই কোনো প্রতিষেধক টিকাও। তথ্য মতে এই রোগে মৃত্যুর হার ৫০%-৯০%।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই রোগের লক্ষণগুলো অন্য আরো অনেকগুলো রোগের লক্ষণের সাথে মিলে যায়! ফলে রোগ শনাক্ত করতে সময় লেগে যায়!

তাই সঠিক রোগ শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়াটাও অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ! তবে যদি রোগ দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা যায় এবং সঠিক মেডিক্যাল সাপোর্ট দেয়া যায় তাহলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়!

 

আমাদের করণীয় ::


যেহেতু এর কোনো টিকা আবিষ্কৃত হয়নি তাই এই ভাইরাসটি যাতে আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। বিমানবন্দরে কর্তব্যরতদের এই ভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্তকরণের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যদি কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয় তবে তাকে কিভাবে পৃথক করে চিকিৎসা দিতে হবে সেই ব্যাপারেও প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা এমন একটি দেশ যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে হাজারের বেশি মানুষ বাস করি। তাই এই ভয়াবহ ভাইরাসটি যাতে কোনোভাবেই আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন এখনই।

তারপরও সতর্কতা হিসাবে সবসময় সাবান ও গরম পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন হাত না ধুয়ে চোখ, নাক বা মুখে হাত লাগনো না হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছে যাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের কোনো প্রকার তরল যাতে আপনার সংস্পর্শে না আসে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয় তবে সাথে সাথে নিজেকে আলাদা করে ফেলতে হবে যাতে অন্য কেউ এ রোগে আক্রান্ত না হয় এবং ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

 

সরকারের করণীয় ::


বাংলাদেশ সরকারের উচিত এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আফ্রিকার দেশে থেকে আগত যে কাউকে ইমিগ্রেশন পার হবার আগেই মেডিক্যাল চেকআপের ব্যবস্থা করা। মনে রাখতে হবে এটি খুবই সংক্রামক রোগ। তাই এই ব্যাধি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তেও বেশি সময় লাগবে না।

এলাকাবাসী সংঙ্ঘবদ্ধভাবে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে গোটা গ্রাম

পাইকগাছায় ১৩ বনদস্যু নিহতের পরও কাটেনি আতংক


আশংকা প্রতিশোধের নেশায় হানাদিতে পারে ডাকাত দলের অন্যরা


সুন্দরবন উপকূলীয় খুলনার পাইকগাছায় কথিত বন্দুক যুদ্ধে ১৩ বনদস্যু নিহত ও বিপুল পরিমান অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হলেও গত ১৫ দিনেও আতংক কাটেনি জনপদে। কথিত বন্দুক যুদ্ধের গুলির শব্দ বিভৎসতা এখনও তাড়া করে ফিরছে সেখানকার অধিবাসীদের। নদীতে ট্রলার ও রাস্তায় মোটর সাইকেল বা নসিমনের (ইঞ্জিন চালিত ভ্যান) আকস্মিক শব্দে দুর্গম পল্লীবাসীরা।

অনেকের ধারণা বিস্তীর্ণ সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান কাশেম বাহিনীর মাত্র ১৩ দস্যু নিহত হলেও বাকীরা প্রতিশোধ নিতে যে কোন সময় হানা দিতে পারে ঐ পল্লীতে। এমন নানান আশংকায় আতংকিত এলাকাবাসী নিজেদের জানমালের নিরাপত্তায় রীতিমত সংঙ্ঘবদ্ধভাবে রাত জেগে পাহারা বসিয়েছে।

চারদিকে নদী বেষ্টিত দ্বীপ গ্রামটিতে সন্ধ্যা নামতেই তৈরী হচ্ছে এক অন্যরকম ভীতিকর পরিবেশ। দিনের বেলাও যেন পাল্টে গেছে চীরচেনা গ্রামের সাধারণ মানুষের গতি-প্রকৃতি। অপরিচিত কারোর সাথে নুন্যতম কথাটুকু বলতেও যেন অনেক অজানা প্রতিবন্ধকতা। ইতোমধ্যে অপহরণকারীদের হাত থেকে বেঁচে আসা কলেজে প্রভাষক প্রশান্ত কুমার ঢালী পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন। অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন অন্যত্র বসবাসের।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৫ অক্টোবর উপজেলার জিরবুনিয়া গ্রামে সশস্ত্র ডাকাত দলের সাথে পুলিশের দু’দফা কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয় ১৩ জন ডাকাত। ঘটনার রাতে তারা মূূলতঃ সেখানকার জিতেন্দ্র কুমার ঢালী নামের এক স্কুল শিক্ষককে অপহরণ করতে তার বাড়িতে হানা দেয়।

এ সময় ডাকাতদের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি ও তার স্ত্রী বাড়ির পেছন দিক থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও তাকে না পেয়ে তারই ভাই কলেজ শিক্ষক প্রশান্ত কুমার ঢালীকে অপহরণ করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ছেড়ে দিলেও গ্রামবাসীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ডাকাত দলের সবাই আটক হন।

এরপর প্রথমত গণপিটুনি ও পরে পুলিশের সাথে কথিত দু’দফা গুলি বিনিময়ের ঘটনায় আটক ১৩ জন ডাকাতের সকলেই নিহত হয় এবং পাইকগাছা থানার ওসি শিকদার আক্কাস আলী’সহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হন।

ঘটনার পর সেখানে গেলে কলেজ শিক্ষক প্রশান্তকে বাড়িতে না পাওয়ায় কথা হয়, স্থানীয় আলোকদ্বীপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুকৃতি মোহন সরকারের সাথে। তিনি জানান, ঘটনায় প্রশান্ত কুমার ঢালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে থানা পুলিশ, মানবাধিকার কর্মী, গণমাধ্যম সহ নানা সংস্থার কর্মীদের নানাবিধ প্রশ্নের জবাব এড়াতে প্রশান্ত পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন। যদিও তার পারিবারিক সূত্র বলছে, আতংকে তিনি এলাকা ছেড়েছেন।

উপজেলার সংশ্লিষ্ট দেলুটি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মঙ্গল গাইন জানান, কলেজ শিক্ষক অপহরণের পর থেকে দু’জন চৌকিদার ও গ্রামবাসীরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে রাতে লাঠি-সোটা নিয়ে পাহারা দিচ্ছে। পুলিশও তাদের সাথে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা ও এলাকাবাসীর মনোবল বাড়াতে সেখানে রাতে টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে বলে জানান থানার ওসি।

উপজেলার বিগরদানা পুলিশ ক্যাম্পের এ,এস,আই মোঃ আব্দুল কুদ্দুস জানান, গ্রামের অভ্যন্তরে ও জিরবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় সন্ধ্যার পর থেকে বাজারে পুলিশ মোতায়েন নিয়মিত করা হয়েছে।

তবে দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান সমরেশ হালদারের অভিযোগ, ডাকাতদের সোর্স আব্দুস সবুর মোড়লকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলে হয়তো অনেক ঘটনা স্পষ্ট হতো। ঐদিনকার বন্দুক যুদ্ধে এই সবুর মোড়লও নিহত হয়।

প্রসঙ্গত বছরখানেক আগে সর্বশেষ অপহৃতের ভগ্নিপতি ব্রজেন্দ্র নাথ মন্ডলকে অপহরণ করলে উক্ত সবুর মোড়লই অপহরণকারীদের পক্ষে সমন্বয় করে মুক্তিপনের বিনিময়ে তাকে ছাড়িয়ে এনেছিলেন।

সর্বশেষ ঘটনার দিন ভোরে ডাকাতদের আটকের ঘটনায় সবুর মোড়ল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে ছেড়েদিতে সুপারিশ করেছিল বলে জানান, ঐ চেয়ারম্যান সহ অপহৃতের বড় ভাই জিতেনন্দ্র নাথ ঢালী।