Wednesday, February 22, 2017

সাংবাদিকতায় একুশে পদক পেলেন পাইকগাছার কৃতি সন্তান স্বদেশ রায়

'ভয়েস অফ পাইকগাছা'র পক্ষ থেকে দেশবরেণ্য এই সাংবাদিককে অভিনন্দন !


মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিচল থেকে প্রায় সাড়ে তিন দশকের প্রগতিশীল সাংবাদিকতা এবং বিরুদ্ধ সময়ে দাঁড়িয়ে কলামে-সাহিত্যে সাহসী উচ্চারণের স্বীকৃতি পেলেন পাইকগাছার কৃতি সন্তান স্বদেশ রায়। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছরের একুশে পদক পেয়েছেন দেশবরেণ্য ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি পাওয়া এ সাংবাদিক। 

স্বদেশ রায় বলেন, ‘একুশে পদক পেয়ে ভালোই লাগছে। আগামী দিনে এ বিষয়ে আরও বেশি বেশি কাজ করতে ও ভূমিকা-অবদান রাখতে প্রেরণা যোগাবে এ পদকপ্রাপ্তি’।



পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দুঃসহ ক্রান্তিকাল প্রতিরোধে প্রতিবাদে-সংগ্রামে দ্রোহের বন্ধুর পথে হেঁটেছিলেন ১৯৬১ সালের ৫ জুন পাইকগাছায় জন্ম নেওয়া স্বদেশ রায়। খুনিদের হটানোর সশস্ত্র আন্দোলনে সহায়তার পথ ধরে যোগ দেন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। পাইকগাছা, খুলনা, বাগেরহাটের শিক্ষা জীবনকালে এজন্য তার ওপর জারি হয় হুলিয়াও।

এর মধ্যেও ১৯৭৭ সালে পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৮১ সালে বাগেরহাট পিসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন।



এরপর স্বদেশ রায় চলে আসেন ঢাকায় আর ১৯৮৩ সালে এরশাদের স্বৈর শাসনামলে নিজের ভেতরকার দ্রোহের উচ্চারণের অস্ত্র হিসেবে বেছে নেন কলমকে। পরিণত হন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও রক্ষা তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মুক্ত স্বদেশ গড়বার বলিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ, সাহসী সাংবাদিকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় স্নাতক করার পর আইসিএম বিষয়ে এবং এমবিএ পড়েন তিনি। ১৯৮৯ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের মধ্য দিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ হয় তার।  

শুরুতে সে সময়কার জনপ্রিয় ‘সাপ্তাহিক সাংবাদিক’ ও ‘সচিত্র সন্ধানী’তে কিছুদিন রিপোর্টার হিসেবে কাজ করলেও স্বদেশ রায়ের তীক্ষ্ণ কলমের প্রকৃত ধীশক্তি ফুটে ওঠে যায় যায় দিনে। আলোড়িত-আলোচিত সাপ্তাহিক কাগজটিতে তার জনপ্রিয় সংবাদ-প্রতিবেদন, কলাম এবং সম্পাদকীয় নিবন্ধগুলো সে সময় ভিত কাঁপিয়ে দেয় স্বৈরাচার ও তাদের দোসর স্বার্থান্বেষী মুক্তবুদ্ধিবিরোধী বিভিন্ন মহলের।

এরপর দৈনিক রূপালী ও দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায়ও কাজ করেছেন এখনকার দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়।

সুদীর্ঘ এ সাংবাদিকতা জীবনের সব ধাপেই বিরুদ্ধ সময়ে দাঁড়িয়ে তার সাহসী উচ্চারণ সাধারণের মনে আশা জাগিয়েছে। তার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, দিক নির্দেশনা, সমাজ চিন্তা, সংস্কৃতির বোধ ও গবেষণা পাঠককে মুগ্ধ করে রাখে।