Saturday, November 2, 2013

কয়রায় জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে

কয়রা উপজেলার কয়েকটি মৌজায় স্থায়ী জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকরি পদপে না নেয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চলতি আমন মৌসুমের শুরুতেই এসব মৌজার কৃষকরা অনেক কষ্ট করে নিজ নিজ জমিতে আমন চাষাবাদ করলেও জমির পানি নিষ্কাসন করতে না পারায় তা এবারও বিফলে গেছে। যে কারণে গত বৃহস্পতিবার মহারাজপুর ইউনিয়নের কালনা, মাদারবাড়িয়া, মহারাজপুর গ্রামের শ শ কৃষক রাস্তায় নেমে বিােভ প্রদর্শন করেন। এ সময় তারা মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে অবহেলা ও এলাকায় না থাকার কারণে ভোগান্তির নিরসন হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তার অপসারণ দাবি করেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রাকৃতিক বিপর্যায়ের কারণে এলাকার কয়েকটি স্থানে বেড়ি বাঁধ ভেঙে নদীর লোনা পানি প্রবেশ করে। সে সময় গোটা উপজেলায় কৃষকদের ফসলের তে লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। ধীরে ধীরে সব এলাকার বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু সে সময় থেকে কৃষকদের জমির পানি সরবরাহের পথ এলাকার কালভার্ট ও খালগুলো বন্ধ করে কিছু প্রভাবশালী লোকজন লোনা পানির মাছ চাষ করায় টানা চার বছর এলাকার কৃষকরা তিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা আজ পর্যন্ত কোন কার্যকরি উদ্যোগ গ্রহন করতে পারেনি বলে তারা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

উপজেলার কালনা গ্রামের সোবাহান হাওলাদার নামের একজন কৃষক বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ভোটের সময় আমাগের বর্তমান চিয়ারমেন কইছিলো তারে ভোট দিলে কৃষকের সমস্যার সমাধান হবে। আমরা ইউনিয়ন বাসি তারে ভোট দিয়া চিয়ারমেন বানালাম। সে আমাগের সমস্যা ফেলাইয়া নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়িছে। এখন তাকে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়াও পাওয়া যায় না। উনি ব্যবসার কাজে মাসের পর মাস ঢাকায় থাকেন।’

মহারাজপুর গ্রামের কৃষক আবু হানিফ, আবুল সরদার, মোসলেম সানাসহ অনেক কৃষক জানিয়েছেন, মৌজার পানি সরানোর বন্দোবস্তের জন্যে নির্ধারিত খালটিতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে জমির পানি সরানোর পথ বন্ধ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষকরা বার বার ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টির সমাধান চেয়েও পাননি বলে জানান তারা। যে কারনে গত চার বছর ধরে এ মৌজায় কোন ফসল উৎপাদান করা সম্ভব হয়না। গোলাম মোস্তফা নামের একজন কৃষক ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, জমির পানি সরাতে যে চিয়ারম্যানের বছরের পর বছর লাগে এমন চিয়ারম্যানের আমাগের আর দরকার নেই।

ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নের শ শ কৃষক পরিবার। তারা বলেন, বছরের পর বছর জমিতে কোন ফসল ফলাতে না পারায় অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। পেটের দায়ে অনেক গৃহস্থ পরিবারের সদস্যরা দিন মজুরি খেটে সংসার চালাচ্ছেন। তারা দ্রুত এ সমস্যার স্থায়ি সমাধান দাবি করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম হাসান বলেন, কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলার অনেক মৌজার জলাবদ্ধতা নিরসন করা হয়েছে। বাকি মৌজায় সমস্যা নিরসনের চেষ্টা চলছে।