Thursday, January 16, 2014

শীতে কাঁপছে পাইকগাছাবাসী

হাঁড় কাপানো শীতে কাঁপছে পাইকগাছাবাসী। শৈত্য প্রবাহে প্রকৃতিতে জবুথবু অবস্থা। মঙ্গলবার কয়েক ঘন্টা সূর্যের দেখা মিললেও বুধবার দিনভর সূর্যের আলো দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশা আর মেঘের আড়ালে দিনভর লুকোচুরি খেলেছে সুয্যিমামা। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় দিনভর নিতান্ত জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হয়নি।

পৌর সদরের দোকানপাট খোলা থাকলেও রাস্তাঘাট ছিলো ফাঁকা ! একখন্ড গরম কাপড়ের জন্য ফুটপাতে দোকানগুলোতে ছিলো গরীব মধ্যবিত্তদের ভিড়। 
 
হেমন্তের ফসলভরা মাঠ নিঃস্ব রিক্ত হওয়ার পর প্রকৃতির রঙ্গ মঞ্চে কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে জেকে বসেছে শীত। শীতের  নিষ্ঠুর কামড় সহ্য করতে হচ্ছে গরীব- ছিন্নমূল মানুষদের। পত্রিকার পাতায় শীতবস্ত্র বিতরণের ছবি ও খবর দেখলেও বাস্তবে তা চোখে পড়ছে না তাদের। শীতবস্ত্র বিতরণে সরকার ও বিত্তবানদের মুখের দিকে তাঁকিয়ে আছেন তারা।

এদিকে বুধবার দিনভর শৈত্য প্রবাহে জনজীবনে চরম দূর্ভোগে নেমে আসে। হাঁড় কাপানো শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হননি। গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার গুলোও ছিলো অন্যদিনের তুলনায় ফাঁকা।

শীতৈর তীব্রতা পশু-পাখির মধ্যে ও লক্ষ্য করা গেছে। গবাদি পশু গুলোকে চটের বস্তা বা চট দিয়ে গরম রাখার চেষ্টা করছেন মালিকরা। আগুনের কুন্ডলি তৈরি করে উত্তাপ নেয়ার দৃশ্যও ছিলো চোখে পড়ার মতো। শীতের কামড় থেকে রক্ষা পেতে অনেকে লেপ-কাঁথা-কম্বল গায়ে জাড়িয়েছেন। গরীব- অসহায় ছিন্নমূল পরিবারের শিশু ও বয়স্কদের শরীর ঢাকা পড়েছে লেপ কাঁথার আবরনে। কোথাও কোথাও এসব পরিবারের সদস্যদের উদোম গায়ে কাঁপতে দেখা যায়।

আবহাওয়ার এমন অবস্থায় কোন সুখবর দিতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর। শীতের তীব্রতা ও শৈত্য প্রবাহ নাকি আরো কয়েকদিন বলবত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে তীব্র শীতের কারনে শিশুদের নিউ মোনিয়া, সর্দি, কাশি ও জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল ও ক্লিনিক সূত্রগুলো। শিশু জ্বর ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। শিশুদের ঠান্ডাজনিত ডাইরিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব ও দেখা দিয়েছে বলে জানায় সূত্র।

অন্যদিকে তীব্র শীত জেলার বোরো চাষে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশংকা করছেন চাষীরা। কৃষকরা জানান, শীতের তীব্রতায় বোরো ধানের রোপনকৃত চারা লালতে হয়ে মারা যেতে পারে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, আবহাওয়ার এ অবস্থা বলবত থাকলে সদ্য রোপনকৃত এবং দেরি করে ফেলানোর বীজ তলার চারা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ধানের চারা লালচে হয়ে মারা যেতে পারে। তবে সন্ধ্যায় বীজ তলা এবং ধান ক্ষেতের পানি পরিবর্তন করলে এ রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।